মাদক মামলায় ভারতীয় যুবকসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মাদক মামলায় ভারতীয় যুবকসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

মাদক মামলায় ভারতীয় যুবকসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

সিলেটে পৃথক দুটি মাদক মামলায় ভারতীয় এক যুবকসহ ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ দুটি মামলার রায় ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মৃত আফতাব আলীর ছেলে আব্দুস শহীদ। তিনি জকিগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত একটি মাদক মামলায় দণ্ডিত হন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া ওসমানীনগরে অপর একটি মাদক মামলায় বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের কালিজুরি গ্রামের মৃত মুহিবুর রহমানের ছেলে সায়েক মিয়া (৪০) ও ভারতের ত্রিপুরা জেলার পশ্চিম থানার জয়পুর এলাকার মোহন বর্মণের ছেলে কৃষ্ণ বর্মণ (৩৩) দণ্ডিত হন।

আদালত সূত্রে জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের পরিত্যক্ত মিলঘরে অভিযান চালালে আব্দুস সাহিদকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেহ তল্লাশি করে ৫ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। এসময় তার সঙ্গে থাকা নজরুল ইসলাম ও সাহেদুজ্জামান পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৭ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (নং-২৯৭) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) শাহিনুর রহমান।

মামলাটি বিচারের জন্য অত্র আদালতে গেলে দায়রা ৪২৯/২২ মূলে রেকর্ড করা হয়। গত ২০২২ সালের ১২ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। দীর্ঘ শুনানিতে ১২ জন সাক্ষির মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক এ রায়ে আব্দুস সহিদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম দণ্ড দেন।

মামলায় পলাতক দুই আসামি নজরুল ইসলাম ও সাহেদুজ্জামানকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

অপরদিকে, ওসমানীনগর থানার দায়েরকৃত মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৮ জুলাই ভারত থেকে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া হয়ে মিথাইল অ্যামফেটামিন মিশ্রিত ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আসে আসামি সায়েক মিয়া ও কৃষ্ণ বর্মণ।

গোপন সংবাদে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মৌলভীবাজার সার্কেলের পরিদর্শক অমর কুমার সেন ওইদিন সন্ধ্যায় ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে স্বাদ মিষ্টি দোকান থেকে তাদের আটক করে। এসময় সায়েক মিয়ার কাছ থেকে ৪ হাজার পিস মিথাইল অ্যামফেটামিন মিশ্রিত ইয়াবা ট্যাবলেট, ৫শ’ টাকার ৪টি ভারতীয় নোট ও মোবাইল জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় অপর আটককৃত কৃষ্ণ বর্মণের কাছ থেকে ৬ হাজার পিস মিথাইল অ্যামফেটামিন মিশ্রিত ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক অমর কুমার সেন বাদি হয়ে ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত শেষে অধিদফতরের উপ পরিদর্শক (এসআই) কাকন রায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ১৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ৭ জন সাক্ষির জবানবন্দির প্রেক্ষিতে আদালতের বিচারক সায়েক মিয়া ও কৃষ্ণ বর্মণকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন এবং আসামি সায়েকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট রাজু ভৌমিক ও কৃষ্ণ বর্মণের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ তারেক।

এছাড়া ওপর মামলায় দণ্ডিত আব্দুস সহিদ ও পলাতক নজরুল ইসলামের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহরিয়ার উজ জামান পলাশ এবং সাহেদুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন অ্যডভোকেট মো.রুহুল আমিন।