শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন
বরিশালে শিশু তন্নি আক্তার (৯) ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় পৃথক দুটি রায়ে ৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এবং শিশু আদালতের বিচারক মো. ইয়ারব হোসেন সোমবার (১৪ আগস্ট) এই রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হুমায়ুন কবির।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হল, নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড নবগ্রাম রোড খান সড়ক এলাকার শাহরিয়ার খান শাকিল, বাছেদ প্যাদা ওরফে বাঁঘা ও ইমাম হোসেন হাওলাদার। ঘটনার সময় ইমাম হোসেন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তার বিচার হয় শিশু আদালতে এবং অপর দুই আসামির বিচার হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।
রায় ঘোষণার সময় শাহরিয়ার শাকিল ও ইমাম হোসেন কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও অপর আসামি বাছেদ প্যাদা পলাতক ছিল।
নিহত তন্নি বরগুনার লাকুরতলা এলাকার টুনু পালোয়ানের মেয়ে। তার পরিবার নবগ্রাম রোড খান সড়কের খালেক খানের বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিল। তন্নি স্থানীয় ফজলে উলুম মাদরাসায় নার্সারি শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের বেঞ্চ সহকারি হুমায়ুন কবির মামলার উদ্বৃতি দিয়ে জানান, ১০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশু তন্নিকে একই এলাকার শাহরিয়ার শাকিল ফুঁসলিয়ে তার বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে শাকিল, বাছেদ ও ইমাম পালাক্রমে শিশুটিকে ধর্ষণ এবং এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পরে অটোরিকশা যোগে তার লাশ ওই এলাকার আল আমিনের বাড়ির পাশে ডোবায় ফেলে দেয়। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর ডোবা থেকে তন্নির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। এ ঘটনায় তন্নির বাবা টুনু পালোয়ান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক মশিউর রহমান জানান, ২০১৭ সালের ২২ জুন ওই ৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলার এক আসামি ইমাম হোসেন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তার বিচার হয় শিশু আদালতে এবং অপর দুই আসামির বিচার হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।
২০২০ সালে ইমাম প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ১৭ জনের সাক্ষ্য-প্রমাণে শিশু তন্নিকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিশু তন্নির বাবা রিকশাচালক টুনু পালোয়ান ও রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি ফয়জুল হক ফয়েজ।