যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওবায়দুল করিমের মামলার নথির হদিস এখনো মেলেনি
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হয়েও বহাল তবিয়াতে রয়েছেন ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম। তার মামলার নথি গায়েব হয়েছে এমন চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে ওবায়দুল করিমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সংশ্লিষ্ট মামলার গায়েব হওয়া নথির হদিস এখনো পাননি আদালত। বিভিন্ন স্থানে তন্নতন্ন করে খুঁজেও সোমবার পর্যন্ত নথিটি পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
গত ২০ এপ্রিল ‘ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতে যাবজ্জীবন সাজা: ওরিয়ন গ্রুপ চেয়ারম্যানের মামলার নথি গায়েব’ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর দ্রুত নথি খুঁজে বের করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দেন। এরপর ছয় দিন ধরে সংশ্লিষ্ট সবাই নথি খুঁজতে রাতদিন পার করছেন।
জানতে চাইলে বিচারিক আদালতে নিয়োজিত দুদক আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মামলার নথিটি এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে তন্নতন্ন করে নথিটি খোঁজা হচ্ছে। নথিটি গায়েব হওয়ার সুযোগ নেই। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নথিটি সরিয়ে রাখতে পারে। বিচারক ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বিচারিক আদালত থেকে একবারে নথি গায়েবের ঘটনা ঘটেনি। ইতঃপূর্বে দু-একটি মামলায় নথির ক্ষেত্রে এ ধরনের অভিযোগ উঠলে পরবর্তী সময়ে ওইসব নথি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাই এই মামলার নথিটিও একসময় ঠিকই পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মতিঝিল থানায় মামলাটি করা হয়। ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক মো. ফিরোজ আলম এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিমকে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারায় দোষী করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা জরিমানা এবং জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম করাদণ্ড দেওয়া হয়। অপর পাঁচ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করা হয়। এছাড়া ব্যাংক থেকে আত্মসাৎকৃত সমুদয় অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। এরপর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ না করেই রায় ঘোষণার পরের বছর তা বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন আসামি ওবায়দুল করিম। রুল শুনানি শেষে ২০০৮ সালের ৪ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল (আপিল নং-৩৬/২০০৯) করে দুদক। এরপর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ বাতিল করেন। একই সঙ্গে ওবায়দুল করিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: ওরিয়ন গ্রুপ চেয়ারম্যানের মামলার নথি গায়েব
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওবায়দুল করিমের মামলার নথি গায়েবের তদন্ত হবে