থার্ড ক্যারিয়ার যুক্ত হলে হজযাত্রীদের অর্থ সাশ্রয় হবে, হাব মহাসচিব



জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
হয় বিমান ভাড়া কমিয়ে দেওয়া হোক, নয়তো থার্ড ক্যারিয়ার চালু করা হোক, দাবী হাব মহাসচিবের। ছবি: বার্তা২৪

হয় বিমান ভাড়া কমিয়ে দেওয়া হোক, নয়তো থার্ড ক্যারিয়ার চালু করা হোক, দাবী হাব মহাসচিবের। ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কা মোকাররমা (সৌদি আরব) থেকে: ১৫ আগস্ট ২০১৮। ফ্লাইট বিজি- ৫০৯৩। বাংলাদেশ বিমানের হজ ফ্লাইট। বেলা পৌনে ১টায় উড়াল দেবে জেদ্দার উদ্দেশে। হাব মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম যথাসময়ে পৌঁছে গেছেন বিমানবন্দরে। বোডিং পাশ সংগ্রহ করতে যাবেন, এ সময় জানতে পারলেন হজ এজেন্সির প্রতারণায় ভিসা হওয়া সত্বেও ৯ হজযাত্রী সৌদি আরবে যেতে পারছেন না। টিকেট না করেই গা ঢাকা দিয়েছে দুই এজেন্সির মালিক।

মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। ততক্ষণে যাত্রাসঙ্গী ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও ধর্ম সচিব মো. আনিসুর রহমান উঠে গেছেন বিমানে।

মুহূর্তের সিদ্ধান্তে যাত্রা বাতিল করলেন। কিভাবে হজযাত্রীদের মক্কায় নেওয়া যায়, সেই ভাবনাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তিনি। তড়িঘড়ি করে হজযাত্রীদের পাসপোর্টগুলো সংগ্রহ করলেন। এবার প্রয়োজন টিকেট। অসহায় হজযাত্রীদের মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেই সংগ্রহ করলেন টিকেটের টাকা।

এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়েই ফোন দিলেন সৌদি এয়ারলাইন্সের কান্ট্রি ম্যানেজারকে। ১৭ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এই উড়ান সংস্থাটির হজ ফ্লাইট। জবাব এলো, কোনো ফ্লাইটেই আসন খালি নেই। ভরসা কেবল রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।’ সর্বশেষ ফ্লাইট বিজি-৭০৯৩। ঢাকা ছাড়বে বিকেল ৪ টা ৫১ মিনিটে। হাতে সময় অল্প।

ফোন করলেন বিমানের এমডিকে। যে করেই হোক ৯টি টিকেট চাই। টিকেট মিললো। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পেরিয়ে গেলো- ফ্লাইটেই সময়। দুই ঘন্টা দেরিতে ছাড়লো সর্বশেষ হজ ফ্লাইট।

একে একে নয় হজযাত্রী বিমানে আরোহণ করলেন। সবার শেষে শাহাদাত হোসাইন তসলিম। পাইলট তখন এগিয়ে এসে বুকে জড়িয়ে নিলেন তাকে।

ততক্ষণে বিমান যাত্রার বিলম্বের পেছনে নয় হজযাত্রীকে নিয়ে তসলিমের যুদ্ধের গল্পটা ছড়িয়ে গেছে যাত্রীদের কানে কানে।

শ্বাসরুদ্ধকর এ মিশন যেন হার মানায় মিশন ইম্পসিবলকেও!

চলতি মৌসুমে হজ ব্যবস্থাপনার নিয়ে মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশনে- হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) কার্যালয়ে যখন বার্তা২৪.কমকে এ অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন, তখন কক্ষজুড়ে যেন পিনপতন নীরবতা।

‘আমি বলেছিলাম, ভিসা হলে কোনো হজযাত্রীকে রেখে আমি হজে যাবো না। আমি আমার কথা রেখেছি। আমার বাবা বেঁচে থাকলে এ কথা শুনে অনেক খুশি হতেন।

আমার বাবা নেই। বাবার বয়সী এই মানুষগুলোর মলিন মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। তাদের অনিশ্চিত যাত্রাকে নিশ্চিত করতে পেরেছি- এটাই আমার প্রাপ্তি।’

অবশ্য শাহাদাত হোসাইন তসলিমের জন্যে এ অভিজ্ঞতা নতুন নয়। আগেরবার ‘নিবিড় হজ-ওমরা অ্যান্ড ট্যুরিজম’ নামের এক এজেন্সি মালিকের প্রতারণায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে ৪৪ জনের হজযাত্রা। সেবার নিজেই সৌদি অ্যাম্বাসিতে ছুটে গিয়ে টানা দুই ঘণ্টা বসে থেকে ৪৪ হজযাত্রীর ভিসা করিয়ে আনেন শাহাদাত হোসাইন তসলিম।

কুমিল্লার সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের মরহুম মাওলানা রশিদ আহমেদের ছেলে তসলিম। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার বড় তসলিম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে উচ্চ শিক্ষার্থে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে।

বিশ্বের অন্যতম সেরা সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউইর্য়ক থেকে পড়াশোনা শেষ করে নিজেকে গড়ে তোলেন উদ্যোক্তা হিসেবে।

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে আমদানি- রপ্তানি বাণিজ্য। প্রথমে দেশ থেকে গ্রে টিশার্ট আমদানী, সময়ের ব্যবধানে নানা দেশ থেকে ফ্রোজেন ও ড্রাই ফুড আমদানি। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ডাইনেস্টি ট্রাভেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসাইন তসলিম হাবের নেতৃত্বে আসেন ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল। রাজধানীর নয়াপল্টনে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) নির্বাচনে সরকার সমর্থিত গণতান্ত্রিক ঐক্য ফ্রন্টের প্যানেলে মহাসচিব নির্বাচিত হন তিনি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/31/1535705624632.jpg

নির্বাচিত হয়েই প্রথমে যে কাজটা করি, সেটা হলো- ট্রলি নিয়ে দুর্নীতির পাহাড়ে গুড়িয়ে দেওয়া। ট্রলির জন্যে প্রতি হজযাত্রীর কাছ থেকে ২৫শ’ টাকা নেওয়া হতো।

বিনিময়ে হাজার টাকার নিচে নিম্নমানের ট্রলি গছিয়ে দিয়ে লোপাট করা হতো- কোটি কোটি টাকা।

ধরেন, হাজীদের কাছ থেকে নেওয়া হলো- ৩০/৩১ কোটি টাকা। কেনা হলো- ৮ কোটি টাকার ট্রলি। টেন্ডারের নামে অবশিষ্ট টাকা লোপাট।

প্রথম চিঠিতেই ধর্ম মন্ত্রণালয়কে জানালাম, এটা চলতে দেওয়া যায় না। ট্রলি ব্যবসার সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

নানা হুমকি, চোখ রাঙানি, প্রচ্ছন্ন ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে সিদ্ধান্তে অটল থাকলাম। বন্ধ হলো- ট্রলি কারবারে দুর্নীতি।

প্রশিক্ষণের জন্যে হজযাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হতো জনপ্রতি ২শ’ টাকা।

আমি বললাম, এটা হাজীদের হক। তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। জেলায় জেলায় শুরু হলো- হাজীদের প্রশিক্ষণ। আমি প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে ইন্দোনেশিয়া সফরকালে দেখলাম, তারা হাজীদের খুঁটিনাটি বিষয় থেকে শুরু করে প্রতীকী কাবা ঘর তৈরি করে কিভাবে সেখানে তাওয়াফ করতে হবে সে প্রশিক্ষণটাও দিচ্ছে। আমাদের দেশে যে প্রশিক্ষণটা শুরু হলো, আশা করছি, একদিন আমরাও হজযাত্রীদের সে রকম নিবিড় প্রশিক্ষণ দিতে পারবো।

মক্কায় আগে হাবের অর্থে জমজম টাওয়ার বা হিলটনের মতো পাঁচ তারকা মানের হোটেলে থাকতেন হাবের শীর্ষ নেতৃত্ব।

গেলো বার আমি হিলটনে নিজের অর্থে রুম বুকিং দিলাম। মনে হলো- আরে আমি যে হিলটনে থাকছি, সবাই তো ভাববে হাবের অর্থে থাকছি।

তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে হিলটন ছেড়ে এলাম। হজযাত্রীর সংখ্যানুপাতে হাবের একটা বাজেট থাকে। ২০১৬ সালে ব্যয় হয়েছে ৫৪ লাখ টাকা। আমি দায়িত্ব নেবার পর গত বছর ব্যয় হয়েছে মাত্র ১৭ লাখ টাকা। এবার তো ব্যয়ই দেখছি না।

আমি ব্যবসায়িক কাজে লন্ডন, নিউইর্য়ক, টরোন্টোতে যেসব হোটেলে থাকি, আপনি আমার সাথে মক্কায় আমার রুমে চলেন। কিছুতেই সে হিসাব মেলাতে পারবেন না। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হাজীদের জন্যে যে ১ ভাগ বাড়ি ফাঁকা থাকে, আমরা সেখানে উঠেছি।

লক্ষ্য একটাই দেশের অর্থ সাশ্রয় করা।

আমি যুদ্ধ করছি, বিমান পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিয়ে। হজযাত্রী পরিবহনে মাত্র দু’টি বিমান সংস্থার পরিচালনায় আমাদের আপত্তি রয়েছে।

হয় বিমানের ভাড়া কমিয়ে দেওয়া হোক, নয়তো থার্ড ক্যারিয়ার হিসেবে নতুন বিমান সংস্থাকে যুক্ত করা হলে এই খাতে মনোপলি ব্যবসা থাকবে না। প্রতিযোগিতা এলে হজযাত্রীদের অর্থের সাশ্রয় হবে।

ধরুন, বিমান যদি ভাড়া কমিয়ে দেয়, তাহলে সৌদি এয়ারলাইন্সকে হয় সে ভাড়ায় যাত্রী টানতে হবে- না হয়, ব্যবসা ছেড়ে যেতে হবে। তখন থার্ড ক্যারিয়ার হিসেবে অনেক পরিবহন সংস্থার ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ আসবে।

হজ নিয়ে সমন্বয় সভায় যখন আমি এসব কথা বলি, তখন অনেকে মন খারাপ। কিন্তু আমি বলেই যাবো। আমার কাছে দেশের মানুষের স্বার্থ আগে।

আমি হয়তো সুপারম্যান হতে পারবো না, কিন্তু সততা আর সাহস থাকলে যে অনেক কিছুতেই ঝলক দেখানো যায়- তা প্রমাণ করে দেবো।

নিজের সংগঠনের অনেক এজেন্সির বিরুদ্ধে তো নানা অভিযোগ। তাদের বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি?

আমি দায়িত্ব নেবার পর অভিযোগ কমে এসেছে। এটাকে শূন্যের কোটায় আনার কাজ চলছে। হজ নীতিমালা থেকে হজ আইন হচ্ছে। এই আইনটা হলে দেখবেন অনেক কিছুই স্বচ্ছ হয়ে যাবে।

ব্যবসার পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে কাজ করার ব্যস্ততায় আর গাঁটছড়া বাঁধার সময় হয়নি শাহাদাত হোসাইন তসলিমের। অকৃতদার বলেই কি এত সাহস?

না, আসলে ঠিক তা না নয়। বলতে পারেন আমার পারিবারিক আদর্শ, ঐতিহ্য আর বাইরে উচ্চ শিক্ষার প্রভাব।

রাজনৈতিক উচ্চবিলাস?

না, নেই। কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসনের সাংসদ, সফল পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের জন্যে আমরা গর্বিত।

অঢেল স্নেহ আর মমতায় তিনিই আমাকে গড়ে তুলেছেন। তার কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই আমার।

পুণরায় হাবের নেতৃত্বে আসার স্বপ্ন?

এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে এটা হলফ করে বলতে পারি যে, হাবের জন্যে আমার ব্যক্তিজীবনকে জলাঞ্জলি দিয়েছি।

   

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;