ইসলামি আইন সমগ্র মানব জাতির কল্যাণের উৎস



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত সংখ্যালঘুর মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার বিশ্ব সম্প্রদায় আইনগত ও সামরিক-বেসামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার আহাজারি থামাতে পারছে না। বরং ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকার পরেও মুসলিমরাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। ‘ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার’ সম্পর্কে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা: পর্ব- ৮

ইসলামে অমুসলিম ও সংখ্যালঘুদের সমানাধিকার, সম্মান, মর্যাদা, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত হওয়ার পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা ধর্মীয় নৈতিকতা ও বিধিবদ্ধ আইন দ্বারা স্বীকৃত এবং তা পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের অংশ হিসাবে ইসলামি শাসন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়িত্বশীলতার আদর্শের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কযুক্ত। ইসলামে শাসন ব্যবস্থার মূল কথা হচ্ছে- তাওহিদের ভিত্তিতে সকল প্রশ্নের মীমাংসা করা এবং সকল নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার ও সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য শাসনকর্তার মধ্যে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য ও ভয়, জ্ঞানবত্তা, ন্যায়পরায়ণতা, জনসাধারণের অভাব-অভিযোগ ও আশা-আকাঙ্খা-প্রত্যাশা সম্পর্কে জ্ঞান থাকার প্রতিও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

বস্তুত পক্ষে, আল্লাহর ভয় সমস্ত কল্যাণের উৎস ও সমস্ত সুখের চাবিকাঠি। সফিউদ্দিন মুহম্মদ বিন আলী বিন তাবা, যিনি সাধারণে ইবনে তিকতাকা নামে পরিচিত এবং ‘শাসনকর্তাদের আচরণ ও ইসলামী শাসন বংশ’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ‘রাজা যখন আল্লাহর উপস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকেন, তখন আল্লাহর বান্দারা শান্তি ও নিরাপত্তার আর্শীবাদ উপভোগ করতে পারে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘শাসনকর্তাকে ক্ষমা গুণের অধিকারীও হতে হবে। কারণ এটিই হচ্ছে সব সদগুণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।’

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শাসিতদের উপকারের জন্য শাসকদের সদা-জাগ্রত বাসনা থাকতে হবে আর তাদের অভাব-অভিযোগ সম্পর্কে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কারণ হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময় তার সাহাবাদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। আর আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে বলেছেন, ‘তাদের সঙ্গে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা কর।’

প্রশাসনিক ব্যাপারে শাসকের কর্তব্য হচ্ছে- সরকারী আয়ের তত্ত্বাবধান করা, শাসিতের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করা, শান্তি রক্ষা করা, দুস্কৃতিকারীদেরকে সংযত করা, ক্ষতি প্রতিরোধ করা। তাকে সব সময় তার কথা রক্ষা করতে হবে। অন্যদিকে, শাসিতদের কর্তব্য হচ্ছে আনুগত্য, কিন্তু কোনো শাসিত ব্যক্তিই উৎপীড়ককে মানতে বাধ্য নয়। ইবনে রূশদ উৎপীড়কের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উক্তি করেছেন, ‘উৎপীড়ক হচ্ছে সে, যে ব্যক্তি নিজের জন্য শাসন করে, জনগণের জন্য নয়।’

যেখানে নিজের জন্য শাসন করারই সুযোগ নেই, সেখানে নিজের ভাষা, বর্ণ, বংশ, অঞ্চল বা অন্য কোনো প্রয়োজনে শাসনকে পথভ্রষ্ট করার সুযোগ ইসলামে নেই। এরচেয়ে বড় সমানাধিকারের নিশ্চয়তা আর কি হতে পারে? মূলত সমতার নীতিভিত্তিক আর সরলতা ও স্পষ্টতার দিক দিয়ে অসাধারণ-উজ্জ্বল ইসলামি শাসন ব্যবস্থা ও আইন-কানুন এমন কোনো আনুগত্য দাবি করে না, যা কষ্টসাধ্য। ফলে মুসলমানরা যে সকল দেশে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে, সে সকল দেশ সামন্ততান্ত্রিক অমানবিকতার সর্বনাশা কুফল থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং সে সকল দেশের মানুষ ভূমি দাসের শৃঙ্খল থেকে বেঁচেছে। এবং ইসলামি আইন দু’টি অনবদ্য ফল উৎপন্ন করেছে। তা হলো-

১. মানব রচিত আইনগুলো যে সকল মিথ্যা ও অত্যাচারের বোঝা চাপিয়েছিল, সেগুলো থেকে মানবাত্মার মুক্তি; ও
২. অধিকারের পূর্ণ সমতা সম্পর্কে ব্যক্তিকে নিশ্চয়তা দান।

অতএব, মুসলমান, অমুসলমান, সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু, সকল মানুষের শারীরিক ও আত্মীক মুক্তি আর মৌল-অধিকারের তত্ত্বগত ও ব্যবহারিক নিশ্চয়তার অপর নাম ইসলাম। সামগ্রিক ইসলামি জীবন ব্যবস্থার অংশ হিসাবে ইসলামি রাষ্ট্র-সমাজ-অর্থ ব্যবস্থায় নিহিত রয়েছে ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-অঞ্চল-লিঙ্গ-সংস্কৃতি নির্বিশেষে আপামর মানবতার উজ্জ্বল উদ্ধার; জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণ, শান্তি ও মুক্তি।

যদিও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো- এটাই যে, সকল ধরণের সংখ্যালঘুকে কার্যকর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিয়েছিল ইসলামি সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং ইসলামের মতাদর্শে সুস্পষ্টভাবে সংখ্যালঘুর স্বার্থ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত রয়েছে, তথাপি বর্তমান বিশ্বে নির্যাতিত-নিপীড়িত জাতিসত্ত্বার নাম ইসলাম। বিশ্বের যেসব দেশে মুসলমানরা সংখ্যালঘু ও দুর্বল, সেখানেই তাদেরকে পিষে মারা হচ্ছে। ভাষা, জাতীয়তা, ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদি দিক থেকে বহু রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুরূপে বসবাসকারী মুসলমানরা চরমভাবে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হচ্ছে। মুসলমানের মানবাধিকারের নূন্যতম অধিকারকেও স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। রক্ত, মৃত্যু, গৃহত্যাগ মুসলমানের নিয়তিতে পরিণত করেছে ক্ষমতাসীন-সবল জনগোষ্ঠী।

শুধু সংখ্যালঘু হিসাবেই নয়, যেসব দেশে মুসলমানরা সংখ্যালঘু, সেখানেও চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যুদ্ধ, বিগ্রহ, দাঙ্গা, হাঙ্গামা। বিশ্বের দেশে দেশে বয়স্ক ও সাবালক মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নিধনের পর শিশু-কিশোরদেরকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুও মিছিলে। সকল ধরনের অমানবিক ও বর্বর যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে- মুসলিম তরুণী ও নারীদের। নিজস্ব ঘর-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে শরণার্থী শিবিরে। বিশ্বের মোট শরণার্থীর ৮০%ভাই মুসলিম।

এ হলো ইতিহাসের নির্মম পরিহাস যে, একদা যারা মানবতাকে রক্ষা করেছে, তারাই অমানবিক নির্যাতন ও জুলুমের শিকার। যারা সংখ্যালঘু ও দুর্বলকে বাঁচিয়েছে, হেফাজত করেছে, সেই মুসলমানরাই আজ সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীন এবং হত্যা ও নির্যাতনের মুখোমুখি।

কি কারণ রয়েছে এর পেছনে? কেন শুধু মুসলমান জনগোষ্ঠীই বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় চরম ক্ষতির সম্মুখীন? কেন মানবতার নিরাপত্তা প্রদানকারী ধর্মানুসারীরা পাচ্ছে না শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি? কেন বেছে বেছে শুধুমাত্র মুসলিম দেশগুলোতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা-বিভেদ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে?

গভীরভাবে এসব প্রশ্নের উত্তর তলিয়ে দেখা আজকে শুধু মুসলমানদের নয়, মানবতাপন্থী ও বিশ্বশান্তি প্রত্যাশী সকলেরই দায়িত্ব। সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের কথা যারা বলেন, তাদেরকে অবশ্যই এসব প্রশ্নে উত্তর খুঁজে বের করে হানাহানি ও রক্তপাতে প্লাবিত বিশ্বকে বাঁচাতে হবে; রক্ষা করতে হবে মানুষ ও মানবতাকে।

আরও পড়ুন: পর্ব-৭: ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার প্রতিষ্ঠিত বিষয়

   

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির মালিকের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়াকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাঃ আবু তাহির সাক্ষরিত এত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সনের হজ মৌসুমে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হ.লা, ০৬৭২) এর অধীন ৪৪৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত রয়েছে। উক্ত এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে অদ্যাবধি কোন ভিসা করা হয়নি। তথাপি এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এতে এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীগণ প্রতারিত হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে এবং তাঁদের এ বছর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (ই.লা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং একইসাথে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হলা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া এর দেশ ত্যাগ রোধ করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি ৪৪৪ জন হজ যাত্রীর কারোরই ভিসার জন্য আবেদন করেনি। এমতাবস্থায় এই এজেন্সিসহ আরও ৫টি এজেন্সিকে শোকজ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। গত বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম।

অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে না পারায় জন্য, ১২টি এজেন্সিকে ব্যাখ্যা প্রদানের পাশাপাশি সচিবালয়ে ডেকে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজকের মধ্যে এই ১২টির মধ্যে ৯টি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব এজেন্সি ভিসা করতে না পারার ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে মন্ত্রণালয়ের কাছে।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;