জিলহজ মাসের প্রথম দশক, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দশক



ইউসুফ নুর, অতিথি লেখক, ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

হিজরি বর্ষের সর্বশেষ মাস জিলহজ। এ মাসের প্রথম দশক অত্যন্ত বরকতময় ও গুরুত্বপূর্ণ। এ দশকের রাতগুলো মুসলিম উম্মাহর জন্য নেকি ও পূণ্য অর্জনের মৌসুম বলা চলে। আল্লাহ প্রদত্ত এ সুযোগের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে পরকালের পাথেয় সংগ্রহ করা মুসলমানদের দায়িত্ব।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারোটি। তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটি সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এ মাসগুলোতে তোমরা নিজেদের প্রতি (পাপাচারের মাধ্যমে) অবিচার করো না।’ –সূরা আত-তাওবা: ৩৬

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণনা অনুযায়ী চারটি সম্মানিত। ওই মাসগুলো হচ্ছে- জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব

ইমাম জাসসাস রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘তোমরা এ মাসগুলোতে নিজেদের প্রতি অবিচার করো না’ কোরআনের এই বাক্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, এ মাসগুলোর এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে- যার ফলে এতে ইবাদত করা হলে বছরের বাকি মাসগুলোতে ইবাদতের তওফিক ও সাহস লাভ করা যায়। অনুরূপ এ মাসগুলোতে পাপাচার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারলে বছরের অন্যান্য মাসগুলোতেও পাপাচার থেকে বিরত থাকা সহজ হয়। তাই এমন সুযোগের সদ্ব্যবহার থেকে বঞ্চিত থাকা হবে অপূরণীয় ক্ষতি। -আহকামুল কুরআন

জিলহজ মাসের প্রথম দশককে ঈমানি আবেগ দিয়ে বরণ করে নেওয়া পূণ্যের প্রথম ধাপ। এ ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হলো-

তওবা
ইবাদতের রাতগুলোকে তওবা ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে স্বাগত জানাতে হয়। তওবা দ্বারা গুনাহ মাফ হয় এবং ইবাদতের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। তওবা দুনিয়ার উন্নতি ও আখেরাতের মুক্তির চাবিকাঠি। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ –সূরা আন নুর: ৩১

ইবাদতের দৃঢ় সংকল্প
বরকতময় রাতগুলোতে ইবাদত করার দৃঢ় সংকল্প থাকা চাই। ভালো কথা বলার ও ভালো কাজ করার অদম্য আগ্রহ থাকলেই আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়। যে ব্যক্তি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর দিকে অগ্রসর হবে, আল্লাহ তার জন্য আমলের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেবেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা আমার জন্য সাধনা করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করবো। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে আছেন।’ –সূরা আল আনকাবুত: ৬৯

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/14/1534258979073.jpg

গুনাহ না করা
কল্যাণের এ দিনগুলোতে পাপাচারে লিপ্ত হওয়া নিজের ওপর চরম অবিচার করার শামিল। গুনাহের কারণে আল্লাহর অভিশাপ নেমে আসে। তার দয়া ও করুণার পথ বন্ধ হয়ে যায়। পাপাচারে লিপ্ত ব্যক্তি ইবাদত ও নেক আমলের অনুরাগ হারিয়ে ফেলে। আপাদমস্তক পাপাচারে নিমজ্জিত থেকে মুক্তির আশা করা বাতুলতামাত্র।

হজরত মুআজ (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে আছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকো। কারণ, গুনাহের কারণে আল্লাহর আজাব নেমে আসে।’ -মুসনাদে আহমদ: ২১৫৭০

বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত দশক
মহিমান্বিত জিলহজের প্রথম দশকের কতিপয় বৈশিষ্ট্য এখানে তুলে ধরছি-

১. আল্লাহতায়ালা এ দিনগুলোর শপথ করেছেন: তিনি বলেন, ‘শপথ ফজরের, শপথ দশ রজনীর।’ –সূরা আল ফজর: ১-২

অধিকাংশ তাফসিরবিদের মতে, এখানে জিলহজের প্রথম ১০দিনের কথা বলা হয়েছে। ইমাম ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এটাই বিশুদ্ধতম মত।

২. আল্লাহকে স্মরণ করার নির্ধারিত রাত: এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘যাতে নির্ধারিত দিনগুলোতে তারা আল্লাহকে স্মরণ করে।’ –সূরা আল হজ: ২৮

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)সহ সংখ্যাগরিষ্ঠ তাফসিরবিদের মতে আয়াতে নির্ধারিত দিনগুলো দ্বারা জিলহজের প্রথম ১০ দিন বোঝানো হয়েছে। -তাফসিরে ইবনে কাসির

৩. পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দশক: হজরত জাবির (রা.) বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলো হলো- জিলহজের প্রথম দশক।’ –ইবনে হিব্বান

৪. আরাফার দিন: ৯ জিলহজ, আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর কাছে আরাফার দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ আর কোনো দিন নেই।’ -ইবনে হিব্বান

আরাফার দিন, মহামুক্তির মহান দিবস। মুমিনের কাঙ্খিত দিন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এমন কোনো দিন নেই যেদিনে আরাফার দিন হতে অধিক বান্দাকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। তিনি এদিন বান্দার খুব কাছে চলে আসেন ও তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন, এরা কি চায়? শুধু আরাফার দিনের বৈশিষ্ট্য মর্যাদা ও ফজিলতের ব্যাপারে আলোকপাত করার জন্য স্বতন্ত্র রচনা প্রয়োজন। আলেমরা বলেন, জিলহজের প্রথম দশকের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য আরাফার দিনই যথেষ্ট।

৫. কোরবানির দিন: ১০ জিলহজ, কোরবানির দিন। বছরের সর্বোৎকৃষ্ট দিন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সর্বাধিক সম্মানিত দিন হচ্ছে- কোরবানির দিন।’ -আবু দাউদ ও নাসায়ি

আরও পড়ুন: ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার প্রতিষ্ঠিত বিষয়

ফজিলতপূর্ণ দশক
জিলহজের প্রথম দশকে ইবাদতের মর্যাদা ও সওয়াব অনেক বেশি। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘এমন কোনো দিন নেই, যে দিনগুলোর নেক আমল আল্লাহর কাছে জিলহজের এই ১০ দিনের অপেক্ষা অধিক প্রিয়। সাহাবারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদ করাও কি এতো প্রিয় নয়? হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও এর চাইতে অধিক প্রিয় নয়। তবে কোনো ব্যক্তি যদি নিজের সত্ত্বা ও সম্পদ নিয়ে আল্লাহর পথে বেরিয়ে যায় এবং এ দু’টির কিছু নিয়ে আর ফিরে আসতে না পারে তবে তার ব্যাপার ভিন্ন। (অর্থাৎ শহিদের মর্যাদা স্বতন্ত্র)। -তিরমিজি

ফজিলতপূর্ণ জিলহজের প্রথম দশকের কতিপয় আমল-
১. হজ-ওমরা: হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা পরপর হজ ও ওমরা করো। কেননা, হজ ও ওমরা দারিদ্র ও গুনাহ মিটিয়ে দেয়, যেমন হাপরের আগুনে লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা দূর হয়। কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।–তিরমিজি: ৭৫৭

২. নফল রোজা ও নামাজ: জিলহজের প্রথম দশদিনের নফল রোজা রাখার অনেক সওয়াব। আল্লাহতায়ালা তা খুব পছন্দ করেন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এমন কোনো দিন নেই, যে দিনের ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের ১০ দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়। প্রতিটি রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য এবং প্রতিটি রাতের ইবাদত শবেকদরের ইবাদতের সমতুল্য। -সুনানে তিরমিজি: ৭০৬

তবে আরাফার দিনের রোজার ফজিলত স্বতন্ত্র। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি আল্লাহর কাছে আশা করি যে, তিনি আরাফার দিনের রোজার বিনিময়ে পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন।’ –সুনানে তিরমিজি: ৬৯৭

৩. জিকির: কল্যাণের এ দশকে অধিকহারে আল্লাহর জিকির ও তসবিহ পাঠের জন্য হাদিস শরিফে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জিলহজের ১০ দিনের চাইতে আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদাবান দিন নেই। আর এমন কোনো দিন নেই, যে দিনের ইবাদত আল্লাহর কাছে এ ১০ দিনের ইবাদত অপেক্ষা অধিক প্রিয়। অতএব, তোমরা এ দিনগুলোতে বেশি বেশি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার ও আলহামদুলিল্লাহ পড়োভ’ –আহমদ

এ দশকে যেকোনো সময়ে একাকী ও সমবেতভাবে তাকবির দেওয়া সুন্নত। তবে ৯ জিলহজের ফজর থেকে ১৩ জিলহজের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবির বলা সুন্নত।

৪. কোরবানি: সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এছাড়া নফল কোরবানিও করা যায়। কোরবানি প্রভুপ্রেমের নিদর্শন। এর বিনিময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে অশেষ সওয়াব ও বিপুল ক্ষমার আশ্বাস। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত ফাতেমা রাযিয়াল্লাহু আনহাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হে ফাতেমা! তুমি তোমার কোরবানির কাছে যাও এবং তা দেখো। কেননা, কোরবানির পশুর রক্তের প্রথম ফোটার বিনিময়ে তোমার অতীত সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।’ –আত তারগিব ওয়াততারহিব: ৬২৪

এ ছাড়া পূণ্যময় এ দশকে প্রত্যেক নেক আমলের সওয়াব বিপুলভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই আল্লাহর সন্তোষ ও করুণা অর্জনের উদ্দেশে যার যার সাধ্যমতো সৎ কাজ বেশি বেশি করা। এ ছাড়া দান-সদকা, কোরআন তেলাওয়াত, কোরআন শিক্ষা, ইসলামি জ্ঞান ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা, মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, দুঃস্থ ও অসহায় লোকদের সেবায় আত্মনিয়োগ, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, দাওয়াত ও জনহিতকর কর্মসূচির মাধ্যমে কল্যাণময় এ দশক উদযাপন করার সুযোগ রয়েছে।

লেখক: ইমাম ও খতিব, কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয়, কাতার।

   

সৌদিতে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে গিয়ে মো. মোস্তফা (৮৯) নামে আরও এক হজ যাত্রী মারা গেছেন। শনিবার (১৮ মে) মক্কায় মারা যান তিনি।

রোববার (১৯ মে) রাত ২টার হজ পোর্টালের আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, গত বুধবার (১৫ মে) চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের প্রথম বাংলাদেশি এক হজযাত্রী মারা যান। মো. আসাদুজ্জামান নামের ওই ব্যক্তি মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন।

এ দিকে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত (১৮ মে রাত ১টা ৫৯ মিনিট) সৌদি পৌঁছেছেন ২৮ হাজার ৭৬০ জন হজযাত্রী। মোট ৭২টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২৫ হাজার ১৩ জন। এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।

হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত মোট ৭২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর গত মধ্যরাত পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু হয়েছে। সে হিসেবে এখনো ৩ হাজার ৩৯৫ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। সর্বশেষ শনিবার (১৮ মে) মো. মোস্তফা নামের ৮৯ বছর বয়সী হজযাত্রী মক্কায় মারা যান।

;

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;