কবুল হজের বিনিময় জান্নাত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হজ ইসলামের একটি অন্যতম স্তম্ভ। এখানে স্মরণ রাখা দরকার, হজ তিন প্রকারের; যার জন্য যে প্রকার হজ প্রযোজ্য- তা করলেই হজ আদায় হয়ে যাবে। এতে ফজিলতগত কোনো পার্থক্য নেই।

হজের উদ্দেশ্য
নবী-রাসূলের স্মৃতি জাগানিয়া স্থানসমূহে কান্নাকাটি করে গোনাহ মাফ করিয়ে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনসহ মানবতার খেদমতই হজের মূল উদ্দেশ্য।

হজের পুরস্কার সমূহ
গোনাহ মাফ: সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, হজরত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করল এবং ওই সফরে সব ধরনের যৌনাকাঙ্ক্ষা, পাপাচার ও ঝগড়াঝাটি থেকে বিরত থাকল, সে এ অবস্থায় ফিরে এলো যেন এই মাত্র মাতৃগর্ভ থেকে আগমন করল। অর্থাৎ মাসুম শিশুর মতো হয়ে গেল।

জান্নাতের সুসংবাদ: তিনি আরও বর্ণনা করেন নবী করিম (সা.) বলেন, ‘মাবরুর হজের (কবুল হজ) বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।’ এর ব্যাখ্যায় বিশিষ্ট তাবেয়ি হাসান বসরি (রহ.) বলেন, ‘হজ আদায়ের পর দুনিয়ার প্রতি অনাগ্রহ ও আখেরাতের কর্মকাণ্ডে আগ্রহ সৃষ্টিই হলো- মাবরুর হজের পরিচয়।’

দারিদ্র্যতা দূর হওয়া: হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) বর্ণিত নবী করিম (সা.) বলেন, ‘হজ ও উমরা গোনাহসমূহ মুছে দিয়ে দারিদ্র্যতা দূর করে দেয়, আগুন যেমন সোনা, রুপা ও লোহার ময়লা দূর করে ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে তোলে।’

দোয়া বা সুপারিশ কবুলের অধিকার

নবী করিম (সা.) বলেন, প্রকৃত হাজীগণের দোয়া বা সুপারিশ কবুল করা হয়। এক বর্ণনায় এসেছে, একজন হাজি নিজ পরিবার-পরিজনের ৪শ’ লোকের জন্য দোয়া বা সুপারিশের অধিকারী হন। মাসুম শিশুর বায়না যেমন বাবা-মা ফেলতে পারে না, তেমনি মাসুম হাজির দোয়াও আল্লাহতায়ালা কি করে ফেলবেন? তিনি তো পিতার চেয়ে লক্ষ গুণ বেশি মায়াময় দয়াময় রাহমান এবং রাহিম।

হজ না করার ভয়ংকর হুশিয়ারি

হজরত নবী করিম (সা.) বলেন, হজ ফরজ হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি হজ না করে মারা গেল সে কি ইহুদি না নাসারা হয়ে মারা গেল সে দায়িত্ব আমার নয়। অন্য বর্ণনায় এসেছে, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে অবহেলা করে হজ তরক (ছেড়ে দেয়) করে আমি জানি না তার মৃত্যু ঈমানের ওপর হবে কি না।’

হজের আগে মক্কায় অবস্থানকালীন আমল
যার ওপর হজ ফরজ তার ওপর উমরা ওয়াজিব। নিজের ওয়াজিব উমরা আদায় হয়ে গেলে সম্ভব হলে নিজ পিতামাতা, নিকটাত্মীয়-স্বজনদের পক্ষে উমরা করে নিতে পারেন। হজের পরে এ সুযোগ নাও পেতে পারেন। ওই সময় প্রচণ্ড ভিড় হয়। উমরার ইহরাম বাঁধার জন্য মক্কাবাসীর মিকাত তানঈম এলাকার আয়েশা মসজিদে যেতে হয়। এর অবস্থান মসজিদে হেরেম থেকে ৪ মাইল উত্তরে। হেরেমের চারদিকেই প্রাইভেট পরিবহন চালকরা আয়েশা আয়েশা বলে ডাকে জনপ্রতি ৫/৮ রিয়াল বাড়া নিয়ে যাওয়া যায়।

এছাড়া ‘সেপ্টেকো’ কোম্পানির লাল রংয়ের বাস, ‘নাফেল’ কোম্পানির সাদা রংয়ের বড় বাস জনপ্রতি ২ রিয়াল ভাড়ায় চলাচল করে। সেপ্টেকো জাবালে উমরের কাছে, নাফেল মেসফালা এলাকায় পাওয়া যায়। এসব যানবাহনে আয়েশা মসজিদ গিয়ে অজু গোসল সেরে ইহরামের কাপড় পরে মসজিদে ইহরামের সুন্নত নামাজ শেষে উমরার নিয়ত করে তালবিয়া পড়তে পড়তে হেরেম শরিফে এসে আবার পূর্বের নিয়মে উমরার কাজ সমাপ্ত করে হালাল হয়ে বাকি সময়টুকু বিভিন্ন ইবাদত-বন্দেগিতে কাটিয়ে দিন।

শরীরে কুলালে প্রতিদিন ফজরের পর থেকে রোদের প্রখরতা বাড়ার আগেই উমরার কাজ সমাধা করতে পারেন।

নফল তাওয়াফ, উমরা সুযোগ পেলেই করুন এর সওয়াব বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, স্ত্রী, পুত্র-কন্যা এবং নিজ মুরুব্বি-উস্তাদ, পীর-বুজুর্গের নামে উৎসর্গ করুন। এতে মনে এক ধরনের শান্তি পাবেন আর মানসিক শক্তি বাড়বে।

   

মক্কা প্রবেশে কঠোর বিধি-নিষেধ, ১৩৮ ভাষার অনুবাদ ডিভাইস



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মক্কার একটি চেকপয়েন্ট, ছবি: সংগৃহীত

মক্কার একটি চেকপয়েন্ট, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবের স্থানীয় হিসাবে বৃহস্পতিবার জিলকদ মাসের ১৫ তারিখ। আজ থেকে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে প্রবেশে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ শুরু হয়েছে। পবিত্র হজের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ নির্দেশনা জারি করেছে দেশটির জননিরাপত্তাবিষয়ক অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে, ১৫ জিলকদ) থেকে শুরু হওয়া এ বিধি-নিষেধ হজের পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে। এ সময়ে স্থানীয়দের মক্কায় প্রবেশে প্রয়োজন হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন।

আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আসন্ন হজের প্রস্তুতি এবং হজযাত্রীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে বিনা অনুমতিতে মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে হজের স্থানগুলোতে কাজ করার অনুমোদন, মক্কায় বসবাসকারীর আইডি ও হজের অনুমোদন ছাড়া মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, অনুমোদন ছাড়া যারা মক্কায় প্রবেশ করতে চাইবে তাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ফিরিয়ে দেবে।

সব ধরনের ভিজিট ভিসায় মক্কায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধুমাত্র হজ ভিসাধারীরা মক্কায় প্রবেশ করতে পারবেন। ভিজিট ভিসার ধরন যাই হোক না কেন, এটি হজ পারমিট নয় এবং এই ধরনের ভিসাধারী ব্যক্তিদের হজ করার অনুমতি নেই'। মন্ত্রণালয় সতর্কতা জারি করে আরও বলেছে, কোনো ভিজিট ভিসাধারী যদি মক্কায় থাকে, তাদের অবিলম্বে চলে যেতে হবে। হজ ভিসা ব্যতীত অন্য যেকোনো ধরণের ভিসাধারীরা মক্কায় প্রবেশের চেষ্টা করলে বা মক্কার ভেতরে পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৩৮ ভাষায় তাত্ক্ষণিক অনুবাদ ডিভাইস
সৌদি পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন বিভাগের মুখপাত্র মেজর নাসির আল ওতাইবি জানিয়েছেন, ‘বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের সেবা করার জন্য, কর্মকর্তাদের ১৩৮ ভাষায় দ্রুত অনুবাদের ডিভাইস সরবরাহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হজযাত্রীদের সম্ভাব্য সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে বিভিন্ন দেশ থেকে ৩ লাখের বেশি হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

;

৬৫ বছর বয়সী ভ্যানচালকের উমরার স্বপ্নপূরণ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী, ছবি: সংগৃহীত

ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে ছিল সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহতায়ালার ঘর তওয়াফ ও মদিনা শরিফে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবরক জিয়ারত করার, রাসুলের রওজায় সালাম পেশ করার। অবশেষে লালিত সেই স্বপ্ন ২০২৪ সালের ২ মে পূরণ করেছেন ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী। ৬৫ বছর বয়সী এই ভ্যানচালক বরিশালের মুলাদী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বড়চর মাধবপুরের মো. আ. রব বেপারীর ছেলে।

পবিত্র উমরার স্বপ্নপূরণ প্রসঙ্গে ফরিদ বেপারী বলেন, ‘ভালো কাজের নিয়ত করলে আল্লাহতায়ালা তার ব্যবস্থা করে দেন। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতেই আমার উমরা পালন করা সম্ভব হয়েছে।’

জানা গেছে, ভ্যান চালিয়ে মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় করেন। সংসারের খরচ চালানোর পরে হাতে কিছুই থাকে না। তার পাঁচ ছেলে সন্তান রয়েছে। ছোট ছেলে তার সঙ্গে থাকে। বাকি ছেলেরা আলাদা সংসার করে। নিজের আয় দিয়েই উমরা পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জন্য তিনি দিন-রাত ভ্যান চালিয়ে টাকা সংগ্রহ করেন।

গত ৩০ বছর ধরে তিনি ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছেন। স্ত্রীর শরীরের অবস্থা ভালো না থাকায় উমরা পালনে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি বলে মনে অনেক দুঃখ তার। উমরা পালন করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। উমরা পালন করতে কোনো ঋণ করেননি তিনি। কষ্ট করে ভ্যান চালিয়ে টাকা উপার্জন করে উমরা পালন করেছেন তিনি।

ফরিদ বেপারী আবারও উমরা পালন করার আশা করছেন। এ জন্য সবার দোয়াও কামনা করেন তিনি।

;

ইন্দোনেশিয়ান নারীর ২২ বার হজ-উমরার অবিস্মরণীয় স্মৃতি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইন্দোনেশিয়ান হজযাত্রী মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির, ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ান হজযাত্রী মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৬৪ সালে ছয় বছর বয়সী ইন্দোনেশিয়ান মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো হজপালন করতে সৌদি আরব যান। তারপর থেকে তিনি উমরা এবং হজপালনের জন্য আরও ২২ বার মক্কা-মদিনা ভ্রমণ করেছেন।

সুরাবায়া বিমানবন্দরের মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ হলে মরিয়ম মুনির তার ২২ বার সৌদি আরব ভ্রমণের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে আলাপ করছিলেন সৌদি প্রেস এজেন্সির এক প্রতিনিধির সঙ্গে।

আলাপকালে তিনি বলেন, আজ থেকে ৬০ বছর আগে, তার পরিবার হজ করার জন্য প্রথম ভ্রমণ করেন, ভ্রমণটি ছিল বেশ ব্যয়বহুল। একটি পুরোনো জাহাজে করে সৌদি আরব আসতে পাঁচ থেকে আট মাস সময় লেগেছিল।

জাহাজগুলো প্রথমে জাকার্তা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। পরে ভারত, আরব সাগর এবং লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে জেদ্দা বন্দরে পৌঁছায়। তিনি বলেন, যাত্রাটি বিপদ, চ্যালেঞ্জ এবং ভয়ে পরিপূর্ণ ছিল। তবে, ফরজ ইবাদতপালনের বাধ্যবাধকতার জন্য তার পরিবারের ইচ্ছা ও সাধনা পথের কষ্ট সেভাবে দাগ কাটেনি। বরং এ সময়টা আমাদের আরও শক্তি জুগিয়েছে। কাবা দেখার ইচ্ছাকে প্রবল করেছে। মসজিদে নববিতে যাওয়ার এবং রাসুলের রওজা জিয়ারতের ভালোবাসা সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, মক্কা নগরিতে পৌঁছার পর আমাদের শরীর পুরোপুরি সতেজ হয়ে উঠে। আর মসজিদে নববিতে যেয়ে মনে হতো, আত্মা যেন সতেজ হয়ে উঠছে।

মুনির অতীতে হজকে ঘিরে ইন্দোনেশিয়ানদের বিভিন্ন ঐতিহ্য সম্পর্কেও কথা বলেন।

ইন্দোনেশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ হজপালনে সৌদি আরব যান

মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির বলেন, হজযাত্রীরা সবাই জাকার্তায় জড়ো হবেন এবং যাত্রার আগে তাদের পরিবারের সদস্যদের বিদায় জানাবেন- এটাই আমাদের রীতি। হজ শেষ করে দেশে ফেরার পর হজযাত্রীদের পরিবার তাদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন এবং তাদের ধর্মীয় যাত্রার পরিপূর্ণতা উদযাপন করে বিভিন্ন উপহার দিয়ে উষ্ণভাবে স্বাগত জানায়।

মরিয়মের মতে, উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মক্কায় ভ্রমণ এখন অনেক সহজ হয়েছে, যার ফলে পবিত্র নগরীতে উমার ও হজপালনকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। অতীতের হজযাত্রাকে বর্তমান যাত্রার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় ভিন্নতার জগৎ।

তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে তারা এখানে (ইন্দোনেশিয়া) বসে মক্কায় পৌঁছেছে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা সৌদি সরকারের একটি অনুকরণীয় অর্জন। এ সময় মুনির সৌদি সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জনসংখ্যার নিরিখে ইন্দোনেশিয়া হলো, সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি হজযাত্রী প্রতিবছর হজপালনে সৌদি আরব যান। চলতি বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে ২ লাখ ৪১ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। ১২ মে থেকে দেশটির হজফ্লাইট শুরু হয়েছে।

;

হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ, ছবি: সংগৃহীত

হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র কাবাঘরের কিসওয়া তথা কালো গিলাফ নিচ থেকে ওপরে তিন মিটার তুলে তাতে সাদা কাপড়ে মোড়ানো হয়েছে। কেউ বলেন, কাবাকে ইহরাম পড়ানো হয়েছে, এর মাধ্যমে হজের প্রস্তুতির স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।

বুধবার ২২ মে (১৫ জিলকদ) প্রতিবছরের মতো এবারের হজের প্রস্তুতি হিসেবে তা করা হয়। কিন্তু প্রতিবছর এভাবে কাবার গিলাফের নিচের অংশ ওপরের তোলার কারণ কী, তা অনেকের অজানা।

মূলত হজের সময় পবিত্র মসজিদে হারামে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। কাবা ঘরের কালো গিলাফের কিছু অংশ ওপরে উঠিয়ে রাখা এর অন্যতম। এর বদলে একটি সাদা কাপড় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেই কাপড়টি আড়াই মিটার চওড়া এবং চার দিকে ৫৪ মিটার দীর্ঘ।

কিসওয়াটি বেশ কয়েকটি পর্যায়ে উত্তোলন করা হয়। প্রথমে চারদিক থেকে কভারের নীচের অংশটি খুলে দেওয়া হয়, ফলে কোণগুলো আলাদা হয়ে যায়। তার পর নীচের দড়ি খুলে ফিক্সিং রিং থেকে সরিয়ে ওপরের দিকে টেনে তোলা হয়।

ইসলামের সূচনাকাল থেকে হজের সময় কাবার গিলাফ সুরক্ষায় এই রীতি চলে আসছে। অতীতে গিলাফের কিছু অংশ হাতের কাছে পেয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে।

অনেকে গিলাফকে নিজের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক বস্তু বলে মনে করে। অনেকে সেই কাপড়ে নিজের নাম লিখে স্বস্তিবোধ করে। অথচ এসব কাজের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তাই হাজিদের ভিড়ের মধ্যেও গিলাফ সুরক্ষিত রাখতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কাবার গিলাফ ওপরে তোলা হচ্ছে, ছবি: সংগৃহীত

আর খালি স্থানে সাদা কাপড় দিয়ে কাবাঘর মোড়ানো হয়। মূলত এর মাধ্যমে হজের সময় ঘনিয়ে আসার কথা স্মরণ করানো হয়। কাবার দেয়ালের সাদা কাপড় হজের পূর্বপ্রস্তুতির জানান দেয়। হজের শেষ সময় পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকে। এরপর আগের মতো পুনরায় কালো গিলাফ নামিয়ে দেওয়া হয়।

প্রতিবছর ১৫ জিলকদ বা এর এক দিন আগে-পরে কাবার গিলাফের অংশ ওপরে তোলা হয়। এরপর থেকেই হাজিদের ভিড় ও তাওয়াফ শুরু হয়। প্রচণ্ড ভিড়েরর কারণে তখন আর গিলাফ ওপরে তোলা সম্ভব হয় না।

কাবার গিলাফ ওপরে তুলতে বুধবার রাতে নিরাপত্তা কর্মীরা পবিত্র কাবাকে ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেন। এ সময় বিশেষ প্রযুক্তিগত দল কিসওয়া ওপরে উঠানোর কাজ করে। ১০টি ক্রেনের সাহায্যে ৩৬ জন কর্মী কাজটি সম্পন্ন করেন।

রীতি অনুযায়ী ৯ জিলহজ পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকবে। এরপর হজের দিন নতুন গিলাফ লাগানো হয়।

;