জেনে নিন হজে উচ্চারিত কিছু আরবি পরিভাষার অর্থ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নবম হিজরিতে হজের বিধান ফরজ হয়। দশম হিজরিতে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ আদায় করেন। তিনি যেখানে, যে সময়ে, যে তারিখে, যে নিয়মে যেসব আহকাম-আরকান পালন করেন, প্রতিবছর ৮ থেকে ১৩ জিলহজ মক্কা মোকাররমা এবং এর ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নির্দিষ্ট নিয়মে সেভাবেই পবিত্র হজ পালিত হয়।

বিশ্বের নানা প্রান্তের, নানা ভাষার মানুষ হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গমন করেন। হজ ও উমরার সময় ব্যবহৃত হয় কিছু আরবি পরিভাষা, যা থাকলে হজ পালন অনেকটাই সহজ হয়, হজের আচার-আচরণ পালনে ভিন্ন অনুভূতি জাগে মনে। যেহেতু পরিভাষাগুলো আরবি এবং বহুল ব্যবহৃত, তাই সেসব পরিভাষা সম্পর্কে আজকে আলোচনা করা হলো। আশা করি, অনুসন্ধানী হজযাত্রীদের এগুলো উপকারে আসবে।

ইহরাম: হারাম বা নিষিদ্ধ করে নেওয়া। হজ ও ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে সুনির্দিষ্ট কিছু কথা ও কাজ নিজের ওপর নিষিদ্ধ করে নেওয়ার সংকল্প করা। বানানভেদে অনেকেই এটাকে এহরামও বলেন।

তাওয়াফ: প্রদক্ষিণ করা। পবিত্র কাবার চারপাশে প্রদক্ষিণ করাকে তাওয়াফ বলে।

ইজতিবা: ডান বগলের নিচ দিয়ে চাদরের প্রান্ত বাম কাঁধের ওপর উঠিয়ে রাখা। এভাবে ডান কাঁধ খালি রেখে উভয় প্রান্ত বাম কাঁধের ওপর ঝুলিয়ে রাখা। যে তাওয়াফের পর সাঈ আছে পুরুষের জন্য সে তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করা সুন্নত। আর ওই তাওয়াফের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইজতিবা অবস্থায় থাকা পৃথক একটি সুন্নত।

রমল: ঘন পদক্ষেপে দ্রুত হাঁটা। হজ বা ওমরার প্রথম তাওয়াফের সময় প্রথম তিন চক্কর ডান কাঁধ খোলা রেখে বীরের বেশে দ্রুততার হাঁটতে হয়, এটাকে রমল বলে।

তাওয়াফে কুদুম: কদুম অর্থ আগমন করা। সুতরাং এর অর্থ আগমনি তাওয়াফ। মিকাতের বাইরের লোকেরা যখন হজ বা ওমরার উদ্দেশ্যে কাবা শরিফে আসেন, তখন তাদের বায়তুল্লাহ তথা কাবার সম্মানার্থে এ তাওয়াফটি করতে হয়, এটি সুন্নত।

তালবিয়া: সাড়া দেওয়া। আল্লাহতায়ালার ডাকে সাড়া দিয়ে হজ বা উমরার উদ্দেশ্যে আগমনকারীকে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...’ বলে যে কথাগুলো পাঠ করতে হয় তাকে তালবিয়া বলে।

মাকামে ইবরাহিম: হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দাঁড়ানোর স্থান। একটি বড় পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে হজরত ইবরাহিম (আ.) কাবা নির্মাণের কাজ করেন। ওই পাথরে তার পদচিহ্ন পড়ে যায়, যা এখনও বর্তমান। কাবা শরিফের সামনে অবস্থিত এই পাথরকে মাকামে ইবরাহিম বলা হয়।

মাতাফ: তাওয়াফ করার স্থান। কাবা ঘরের চারদিকে সাদা পাথর বিছানো এলাকাকে মাতাফ বলা হয়। এই স্থান দিয়ে তাওয়াফ করা হয়।

মুলতাজাম: হাজরে আসওয়াদ (কালো বেহেশতি পাথর) ও রুকনে ইয়ামানির মাঝখানে অবস্থিত কাবা ঘরের স্থান, যা দোয়া কবুলের স্থান হিসেবে পরিচিত। তাই এখানে সবসময় লোকজনের ভিড় লেগে থাকে।

রুকন: স্তম্ভ, হজের রুকনের অর্থ হজের স্তম্ভগুলো। যার ওপর হজের ভিত্তি। এর কোনোটি বাদ গেলে হজ আদায় হয় না।

রুকনে ইয়ামানি: রুকনে ইয়ামানির অর্থ কাবার সেই স্তম্ভ যেটি ইয়ামান দেশের দিকে স্থাপিত।

হাতিম: কাবাসংলগ্ন উত্তর পাশে খোলা জায়গা, যা হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক নির্মিত মূল কাবার অংশ ছিল।

মাসআ: সাঈ করার স্থান। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী জায়গা, যেখানে লোকজন সাঈ করে।

সাঈ: দৌঁড়ানো। এখানে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানে সাতবার যাওয়া আসা করাকে বোঝায়।

হলক: হজ বা উমরার কাজ সম্পন্ন হলে মাথার চুল কামাতে বা ছোট করতে হয়। মাথা কামানোকে হলক এবং চুল ছোট করাকে কসর বলা হয়।

কসর: সংক্ষিপ্ত করা। চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজগুলো দুই রাকাত করে আদায় করা।

জাবালে আরাফা: আরাফায় অবস্থিত পাহাড়, যাকে সাধারণ মানুষ জাবালে রহমত বা রহমতের পাহাড় বলে থাকে।

তাওয়াফে জিয়ারা: ১০ জিলহজ কোরবানি ও হলক-কসরের পর থেকে ১২ জিলহজের মধ্যে কাবা শরিফের তাওয়াফ করাকে তাওয়াফে ইফাজা বা তাওয়াফে জিয়ারা বলে। এ তাওয়াফ ফরজ।

আইয়ামে তাশরিক: জিলহজ মাসের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখকে আইয়ামে তাশরিক বলা হয়।

ইয়াওমুত তারবিয়া: জিলহজ মাসের ৮ তারিখ মিনায় যাওয়ার দিন।

ইয়াওমু আরাফা: আরাফা দিবস। জিলহজ মাসের ৯ তারিখ সূর্য হেলে যাওয়ার পর থেকে সূযাস্ত পর্যন্ত ফরজ হিসেবে আরাফায় অবস্থান করতে হয়। এ দিনকে ইয়াওমু আরাফা বলে।

উকুফ: অবস্থান করা। আরাফা ও মুজদালিফায় অবস্থান করাকে যথাক্রমে উকুফে আরাফা ও উকুফে মুজদালিফা বলা হয়।

জামরা: শাব্দিক অর্থ পাথর। মিনায় অবস্থিত প্রতীকী শয়তানের স্তম্ভকে পাথর মারার স্থান। জামরার সংখ্যা তিনটি।

দম: হজ ও উমরা আদায়ে ওয়াজিব ছুটে যাওয়া, ভুলত্রুটি হলে তার কাফফারাস্বরূপ একটি পশু জবাই করে গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হয়; এই পশু জবাইকে বলে দম দেওয়া।

ফিদইয়া: সাধারণ কোনো অপরাধ হয়ে গেলে তিনটি কাজের যে-কোনো একটি করতে হয়। ছয়জন মিসকিনকে এক কেজি দশ গ্রাম পরিমাণ খাবার প্রদান কিংবা তিন দিন রোজা পালন করা অথবা ছাগল জবাই করে গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া।

মাবরুর: হাদিসে কবুল হজকে মাবরুর হজ বলা হয়েছে।

হারাম: নিষিদ্ধ বস্তুকে হারাম বলে। আবার সম্মানিত স্থানকেও হারাম বলে। মক্কা ও মদিনার নির্দিষ্ট সীমারেখাকে হারাম বলে।

হালাল: ইহরাম শেষ হওয়ার পর মুক্ত অবস্থাকে হালাল হওয়া বলে।

রওজা: হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিজ মিম্বর ও ঘরের মাঝখানের অংশকে রওজাতুম মিন রিয়াজিল জান্নাত বা জান্নাতের একটি বাগান বলে অভিহিত করেছেন। নবী করিম (সা.) তার ঘরের মাঝে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

হজ্জে আকবার: জিলহজের ১০ তারিখের দিনকে কোরআনে কারিমে ‘ইয়াওমুল হাজ্জিল আকবার’ তথা বড় হজের দিন বলা হয়েছে। জিলহজের ৯ তারিখ তথা আরাফা দিবস যদি শুক্রবারে হয় তাহলে আরাফা দিবস ও জুমাবার- উভয়ের ফজিলত লাভ হয়। তবে এটি আকবরি হজ নামে যে লোকমুখে প্রচলিত- ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই, এগুলো মানুষের বানানো কথা।

হজ বিষয়ে জানতে আরও পড়ুন

** হজ: আল্লাহপ্রেমিকদের মিলনমেলা

** হিসাব রক্ষক ও ফিল্ড সুপারভাইজার এখন সরকারি হজগাইড!

** শ্রেষ্ঠ আমল হজ, বিনিময়ে জান্নাত

** নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ?

** যেসব পদ্ধতিতে হজ আদায় করা যায়

** বদলি হজের লোক বাছাইয়ে সর্তক থাকুন

   

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির মালিকের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়াকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাঃ আবু তাহির সাক্ষরিত এত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সনের হজ মৌসুমে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হ.লা, ০৬৭২) এর অধীন ৪৪৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত রয়েছে। উক্ত এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে অদ্যাবধি কোন ভিসা করা হয়নি। তথাপি এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এতে এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীগণ প্রতারিত হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে এবং তাঁদের এ বছর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (ই.লা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং একইসাথে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হলা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া এর দেশ ত্যাগ রোধ করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি ৪৪৪ জন হজ যাত্রীর কারোরই ভিসার জন্য আবেদন করেনি। এমতাবস্থায় এই এজেন্সিসহ আরও ৫টি এজেন্সিকে শোকজ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। গত বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম।

অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে না পারায় জন্য, ১২টি এজেন্সিকে ব্যাখ্যা প্রদানের পাশাপাশি সচিবালয়ে ডেকে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজকের মধ্যে এই ১২টির মধ্যে ৯টি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব এজেন্সি ভিসা করতে না পারার ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে মন্ত্রণালয়ের কাছে।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;