কষ্ট ও অভাব অপেক্ষা করছে কৃপণদের জন্য



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআনে বলা হয়েছে, কষ্ট ও অভাব অপেক্ষা করছে কৃপণদের জন্য, ছবি: সংগৃহীত

কোরআনে বলা হয়েছে, কষ্ট ও অভাব অপেক্ষা করছে কৃপণদের জন্য, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১. শপথ রাতের যখন সে আচ্ছন্ন করে, ২. শপথ দিনের যখন সে আলোকিত হয়, ৩. এবং শপথ তার, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন, ৪. নিশ্চয় তোমাদের কর্ম প্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের; ৫. অতএব, যে দান করে এবং আল্লাহভীরু হয়, ৬. এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে, ৭. আমি তাকে সুখের বিষয়ের জন্যে সহজ পথ দান করব; ৮. আর যে কৃপণতা করে ও বেপরওয়া হয়, ৯. এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে, ১০. আমি তাকে কষ্টের বিষয়ের জন্যে সহজ পথ দান করব; ১১. যখন সে অধঃপতিত হবে তখন তার সম্পদ তার কোনোই কাজে আসবে না, ১২. আমার দায়িত্ব পথ প্রদর্শন করা, ১৩. আর আমি মালিক ইহকালের ও পরকালের, ১৪. অতএব, আমি তোমাদেরকে প্রজ্বলিত অগ্নি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছি, ১৫. এতে নিতান্ত হতভাগ্য ব্যক্তিই প্রবেশ করবে, ১৬. যে মিথ্যারোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়; ১৭. এ থেকে দূরে রাখা হবে আল্লাহভীরু ব্যক্তিকে, ১৮. যে আত্মশুদ্ধির জন্যে তার ধন-সম্পদ দান করে, ১৯. এবং তার ওপর কারও কোনো প্রতিদানযোগ্য অনুগ্রহ থাকে না, ২০. তার মহান পালনকর্তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ ব্যতীত, ২১. সে সত্বরই সন্তুষ্টি লাভ করবে। -সূরা আল লাইল এর অনুবাদ

সূরা আল লাইল কোরআনে কারিমের ৯২তম সূরা। হিজরতের আগে মক্কায় এ সূরাটি নাজিল হয়। সূরায় ২১টি আয়াত রয়েছে। সূরা লাইলের প্রথমে রাত-দিনের শপথ নিয়েছেন আল্লাহতায়ালা। এরপর শপথ নিয়েছেন নর-নারীর স্রষ্টা হিসেবে নিজের। এরপর খোদাভীরু ও দানশীল এবং কৃপণ মানুষের পরিণতি সম্পর্কে বক্তব্য এসেছে। বলা হয়েছে, কৃপণদের জন্য অপেক্ষা করছে দুর্ভাগ্য ও কষ্ট এবং অভাব। অন্যদিকে দানশীলদের জন্য অপেক্ষা করছে সুদিন, সৌভাগ্য ও স্বাচ্ছন্দ্য। আল্লাহতায়ালাই যে মানুষকে সুপথ দেখান ও অস্তিত্ব জগতের সবকিছুর ওপর রয়েছে আল্লাহর কর্তৃত্ব ও মালিকানা তা উল্লেখ করা হয়েছে এ সূরায়।


পাপী ও আল্লাহর নিদর্শনকে অস্বীকারকারী এবং দোজখের প্রজ্জ্বলিত আগুন থেকে মুক্তিপ্রাপ্তদের সম্পর্কে বক্তব্য রয়েছে সূরা আল লাইলে। আল্লাহতায়ালা এ সূরায় বদান্যতার প্রশংসা ও কৃপণতার নিন্দা করে বলেছেন, মৃত্যুর পর ধন-সম্পদ কোনো কাজে আসবে না। এ সূরায় আরও বলা হয়েছে, ধর্ম তথা শরিয়তের কর্তব্য কেবল পথ প্রদর্শন করা, আর পরহেজগার ব্যক্তি এবং দানশীল ও উদার ব্যক্তিকে জাহান্নাম হতে রক্ষা করা হবে।


সূরার চতুর্থ আয়াতে বলা হয়েছে, নিশ্চয় তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের। এ আয়াতের শানে নুজুল হলো- এক ধনী আনসারি সাহাবির একটি খেজুর গাছের কিছু শাখা এক প্রতিবেশীর ঘরে ঝুঁকে পড়েছিল। আর সেই প্রতিবেশী স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অত্যন্ত কষ্টে জীবন কাটাত। যখন সেই আনসারি ওই গাছের খেজুর সংগ্রহ করত তখন এক-আধটা খেজুর পড়ে গেলে প্রতিবেশীর সন্তানরা সেগুলো কুড়িয়ে নিত। কিন্তু সে তাদের কাছ থেকে সেসব খেজুর কেড়ে নিত, এমনকি কখনও কখনও শিশুদের মুখ থেকেও বের করে নিত। ওই প্রতিবেশী একদিন নবী করিম (সা.)-কে এ ব্যাপারে নালিশ করেন। তিনি সেই কৃপণকে ডেকে বললেন, তুমি যদি এই গাছকে জান্নাতের খেজুর গাছের বিনিময়ে বিক্রি করো তাহলে আমি তা কিনব। সে তার খেজুর গাছগুলোর মধ্যে ওই গাছের খেজুরই উৎকৃষ্ট বলে অজুহাত দেখিয়ে রাজি হলো না।

তখন আবু বিজদা নামের এক সাহাবি বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি যদি এই গাছ কিনে দেই তবে কি এর বিনিময়ে আমাকে জান্নাতের খেজুর গাছ দেওয়া হবে? তিনি বললেন, অবশ্যই।

এ অবস্থায় আবু বিজদা বহু অনুরোধ করে চল্লিশটি খেজুর গাছের বিনিময়ে আনসারির সেই বিশেষ খেজুর গাছটি কিনে নিয়ে লোকদের তার সাক্ষী করেন এবং গাছটি নবীকে (সা.) উপহার দেন। এরপর নবী করিম (সা.) আবু বিজদাকে জান্নাতের গাছের প্রতিশ্রুতি দানের বিনিময়ে ওই খেজুর গাছটি আনসারির সেই দরিদ্র প্রতিবেশীকে মালিক বানিয়ে দেন। এ অবস্থায় আবু বিজদার প্রশংসায় ও সেই আনসারির নিন্দায় নাজিল হয় সূরা লাইলের চতুর্থ আয়াত এবং দানশীলতার সুফল ও কৃপণতার কুফল তুলে ধরা হয় এ সূরায়।

সূরা লাইলের তৃতীয় আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, শপথ তার, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন। নর ও নারী আল্লাহর অনন্য সৃষ্টি কৌশলের সাক্ষ্য। নর-নারীর যুগল প্রজাতি রয়েছে মানুষ, উদ্ভিদ ও অন্যান্য জীবের মধ্যেও। নর-নারীর প্রকৃতি ও কর্ম তৎপরতার মধ্য রয়েছে ভিন্নতা।

এরপর মানুষের প্রচেষ্টাগুলোর ভিন্নতার কথা এসেছে সূরা লাইলে। মানুষের স্বভাব, সখ ও প্রকৃতির আলোকে তাদের তৎপরতাও হয় ভিন্ন। আল্লাহর দেওয়া জীবন বা আয়ু নামক পুঁজিটি যেন পণ্ডশ্রমের শিকার না হয় বা খুব কমমূল্যে বিসর্জন না দেওয়া হয় সে সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে এখানে। জীবন যদি কাটে ভালো কাজে ও আল্লাহর পছন্দনীয় পথে তাহলেই তা হবে স্বার্থক ও তা বয়ে আনবে সৌভাগ্য।

সূরা লাইলের পঞ্চম আয়াত অনুযায়ী মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত। একদল খোদাভীরু ও সৎকর্মশীল এবং দানশীল আর অন্য দল কৃপণ ও খোদায়ি পুরস্কারকে মিথ্যা বলে মনে করে। অন্য দলটি বেছে নিয়েছে যন্ত্রণা ও জাহান্নামের পথ। পরকালে তাদের পার্থিব সম্পদ কোনো কাজে আসবে না। ওইসব সম্পদ তারা যেমন সঙ্গে করে পরকালে আনতে পারবে না তেমনি যদি আনতেও পারত তবু তা জাহান্নামের আগুন থেকে তাদের রক্ষা করতে পারত না।


কার্পণ্য আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাস থেকে উৎসারিত হয়। এই অবিশ্বাসের কারণেই তাদের জন্য সৎ কাজ করা ও বিশেষ করে দান করা হয় খুবই কষ্টকর বা অপছন্দনীয় কাজ। অন্যদিকে খোদাভীরুদের জন্য সৎ কাজ ও দান-খয়রাত করা আনন্দদায়ক ও প্রাণ সঞ্জীবক।


সূরা লাইলের ১২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন, সুপথে পরিচালনা তারই কাজ। বিশ্বের প্রতিটি বস্তু এবং অনু-পরমাণু খোদায়ী বিধান মেনে চলে ও নিখুঁতভাবে বিশেষ নিয়ম মেনে চলেই তারা এগিয়ে যায় নির্ধারিত পূর্ণতায়। একইভাবে আল্লাহ মানুষকে দেখান সুপথ এবং আল্লাহ নিজের জন্য এ কাজ অপরিহার্য করে নিয়েছেন। কিন্তু সুপথ পেতে চাইলে মানুষকেও তা চাইতে হবে, এ পথে সচেষ্ট হতে হবে যাতে তারা পায় কল্যাণ ও সৌভাগ্য।

   

সৌদি পৌঁছেছেন ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

সৌদিতে যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার গেছেন ১৭ হাজার ৩১৬ জন।

বাংলাদেশ থেকে ৫৩টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ১৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ১৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২০ জুন এবং শেষ হবে ২২ জুলাই।

;

৬ এজেন্সিকে শোকজ

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্ধারিত সময়ের পরও দুই দফায় সময় বাড়ানো হয় হজযাত্রীদের ভিসা করার জন্য। এরপরও কোনো হজযাত্রীর ভিসা আবেদন করেনি ৫টি এজেন্সি। আর একটি এজেন্সি মাত্র ৫ জনের ভিসার আবেদন করেছে। ফলে এসব এজেন্সির ১৮৭০ জন হজযাত্রী শেষ পর্যন্ত হজ করতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। আগামীকাল বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে।

একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন না পাঠানোসহ বেশি কিছু অনিয়মের জন্য বেসরাকরি হজ এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ার করার পাশাপাশি হজ ফ্লাইট ডাটা যথাসময়ে এন্ট্রি করার জন্য এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে হজযাত্রীদের নিকট থেকে কোরবানির অর্থ না নেওয়ার জন্য তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।

রোববার (১২ মে) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জুম প্লাটফর্মে সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের জেদ্দা এয়ারপোর্ট সার্ভিসের মহাপরিচালক আবদুর রহমান ঘ্যানামের সঙ্গে সভা শেষে এসব নির্দেশনা জারি করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ওই সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছাড়াও বাংলাদেশ হজ অফিস, মক্কা ও জেদ্দার কর্মকর্তা এবং হজ এজেন্সির মালিকেরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় সৌদি আরবের পক্ষ থেকে হজ এজেন্সি কর্তৃক ফ্লাইট ডাটা সঠিকভাবে ও নিয়মিত সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সভায় বলা হয়, হজ ফ্লাইট ডাটা এন্ট্রি না দেওয়ার কারণে মদিনা ও জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারছে না সৌদি কর্তৃপক্ষ। ফলে কোন ফ্লাইটে কতজন হজযাত্রী আসছে, তারা কোন মোয়াল্লেমের হজযাত্রী এবং কোন হোটেল বা বাড়িতে তাদের আবাসন ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া হজযাত্রী ও তাদের লাগেজ পরিবহনের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। মোয়াল্লেমের প্রতিনিধিও হোটেল বা বাড়িতে সার্ভিস দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকছে না। এ কারণে হজযাত্রীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না এবং রুট-টু-মক্কার সুবিধা থেকে হজযাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

সভায় হজ ফ্লাইট যাত্রা শুরুর পূর্বেই সঠিকভাবে ফ্লাইট ডাটা সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি করার অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সভায় আরও বলা হয়, হজ প্যাকেজে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের নিকট থেকে হজে গমণের পূর্বে কোরবানি বাবদ অর্থ নিচ্ছেন। হজযাত্রী তার ইচ্ছা মাফিক সৌদি সরকারের ব্যাংকের কূপন ক্রয় করে বা তার নিজের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি সম্পন্ন করবেন। এজেন্সি কোনোভাবেই কোরবানির টাকা নিতে পারবে না। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি পত্র জারি করেছে। পত্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ এজেন্সিগুলোকে আরও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বলা হয়েছে, অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের সঙ্গে হজগাইড বা প্রতিনিধি না পাঠানোর কারণে হজযাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

একই চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, কিছু হজ এজেন্সি তাদের হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন পাঠিয়েছে, যা জেদ্দা বিমানবন্দরে আটক হয়েছে। এতে দেশের সম্মান নষ্ট হচ্ছে।

এর আগে জেদ্দার সহকারী মৌসূমি হজ অফিসার এবং হজ কাউন্সেলর চিঠির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানান, গত ১১ মে ঢাকা থেকে সাউদিয়া এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটযোগে হজপালনের জন্য সৌদি গমনকারী দুই নারী হজযাত্রীর ৪টি সুটকেস ভর্তি পর্যাপ্ত পরিমাণ জর্দাসহ নানাপ্রকার তামাকপাতা থাকায় স্থানীয় কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সেগুলো জব্দ করেন।

পরবর্তীতে কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ সুটকেসে থাকা মালামাল জব্দ করে খালি সুটকেসগুলো হজ টার্মিনালে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিসে হস্তান্তর করে। ওই দুই হজযাত্রী উল্লাস ট্যুরস্ এন্ড ট্রাভেলস্ (লাইসেন্স নম্বর: ১২৭৭)-এর মাধ্যমে হজপালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমন করেছেন। সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহনে কাষ্টমস্ রুলস্ অনুসরণের পাশাপাশি বর্ণিত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছেন। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

;

৯৪ দিনে হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের অক্টোবরে সাড়ে ৫ মাসে ৮ বছর বয়সী কিশোর সাফায়াত মুকতাদির প্রান্ত কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। সেই সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মাত্র ৯৪ দিনে কোরআন মাজিদের হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর নুসাইব কুদরতি। এই দুই মেধাবী শিক্ষার্থী মিরপুরের (রূপনগর) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।

নুসাইব কুদরতী খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা নিয়ামত আলী কুদরতীর ছেলে। ছেলের এমন সাফল্যে খুশি বাবা নিয়ামত আলী। তার আশা, নুসাইব একসময় বড় আলেম হবে এবং ইসলামের খেদমত করবে।

নুসাইব কুদরতীর শিক্ষক হাফেজ কারি ফরহাদ বিন নাসেরী বলেন, ‘মহাগ্রন্থ কোরআন মাজিদের অলৌকিক মুজিজায় এমন ঘটনা বিশ্বে প্রায় ঘটছে- আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের ছাত্র নুসাইব কুদরতী মাত্র ৯৪ দিনে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করেছে। কোরআন মুখস্থ করার বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। এর পেছনে শিক্ষক থেকে শুরু করে বাবা-মায়ের অনেক চেষ্টা শ্রম ও আত্মত্যাগ প্রয়োজন। একজন কোরআনে হাফেজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহতায়ালা এ শিশুকে দীনের জন্য কবুল করুন।’

তিনি আরও জানান, নুসাইব শুরুতে দুই পৃষ্ঠা করে সবক দিলেও শেষের দিকে দিনে ১০ পৃষ্ঠা করে সবক দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা প্রত্যেকটি বাচ্চাকে টার্গেট ফিক্সড করে পড়াশোনা করাই। সেই টার্গেট অনুযায়ী নুসাইব আন্তরিকতার সঙ্গে মেহনত করেছে এবং শিক্ষক তার পেছনে সর্বস্ব ব্যায় করে তাকে যোগ্য করে গড়ে তুলেছে। আমাদের প্রতিটি ছাত্রকে এভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান দিয়ে থাকি।

ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মামুনুর রশীদ বলেন, এ ছেলেটি পাঁচ বছর বয়স থেকে আমাদের এখানে পড়াশোনা করছে। তার বাবা একজন চাকুরীজীবী। এমন অনেক বাচ্চা আমাদের এখানে আছে। দীন ও ইসলাম শিক্ষা অর্জন করছে। কোরআনে হাফেজ হচ্ছে, পাশাপাশি স্কুলের পড়াও চালিয়ে যাচ্ছে।

;