চটকদার উমরার প্যাকেজ থেকে সাবধান!



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম
বিভিন্ন এজেন্সির উমরার প্যাকেজ, ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন এজেন্সির উমরার প্যাকেজ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মো. আবেদিন ফারুক। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার খুব ইচ্ছা উমরা পালন করার। সে লক্ষে তিনি খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করলেন। কিন্তু বিভিন্ন উমরা এজেন্সির ঘোষণাকৃত নানা প্যাকেজ দেখে তিনি হয়রান। সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, কী করবেন।

দুই-তিন দিন খোঁজ নিয়ে তিনি যে ধারণা পেলেন, তার সারমর্ম হলো- টাকা বেশি সেবা বেশি, এটা মূখ্য নয়। মূখ্য উমরা এজেন্সি অর্থাৎ সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের মনোভাব। তারা ইচ্ছা করলেই তবে আরামে-স্বচ্ছন্দে উমরা পালন করা সম্ভব; অন্যথায় নয়।

উমরার সফর কয়দিনের হবে, শেয়ারিং বেড, এয়ারলাইনস নির্বাচন ও রোড নির্ধারণ, সৌদি আরবের অভ্যন্তরের বিভিন্ন পরিবহন সেবা, মিটার হিসেবে কাছে কিংবা দূরের হোটেলে থাকা, হোটেল মানের বিষয়ে মতামত দেওয়া, সকালের নাস্তা ও দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা, মক্কা-মদিনার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানগুলো দেখানোর ব্যবস্থা, এজেন্সির গাইডের সেবা, ভিসার জন্য সার্ভিস চার্জ ও ভ্যাট দেওয়ার মতো বিষয়গুলোতে সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়ে আবেদিন ফারুক বেশ চিন্তিত। কারণ, একেক এজেন্সি বিষয়গুলোকে নানাভাবে উপস্থাপন করে বিভিন্ন প্যাকেজ অফার করছে। ভিআইপি, এক্সক্লুসিভ, ডিলাক্স, প্রিমিয়াম ও স্ট্যান্ডার্ডসহ অনেক নাম। আখেরে কোন প্যাকেজটা বেছে নেবেন আবেদিন ফারুক সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

এভাবে আবেদিন ফারুকের মতো হজ-উমরা পালনকারীর ৯০ ভাগ বাধ্য হয়ে স্মরণাপন্ন হন, আগে হজ-উমরা পালনকারী কারো। তিনি দেখিয়ে দেন কোনো হজগাইড অথবা স্থানীয় মুয়াল্লিম বা এজেন্সির প্রতিনিধিকে। তিনি বুঝিয়ে, এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে হজ-উমরার ব্যবস্থা করেন। এভাবে নিজের অজান্তেই আবেদিনরা কোনো না কোনো হজগাইডের সেবা নেন। অর্থাৎ হজ-উমরার ক্ষেত্রে গাইড পদ্ধতি বেশ সনাতন, আপাতত এর কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। কারণ, সরাসরি এজেন্সির কাছে উমরা বা হজ পালনকারী আসে খুব কম। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এজেন্সি কর্তৃপক্ষও দেশের বিভিন্ন জায়গায় এজেন্সির প্রতিনিধি ও পার্টনারসহ নানা পরিচয়ে হজগাইডদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেন।

গলদটা এখানেই। অনেক সময় দেখা যায়, হজ-উমরা পালনকারীর চাহিদা, স্থানীয় গাইডের সুযোগ-সুবিধা ও এজেন্সির মুনাফার সমন্বয় ঘটে না। দেখা দেয় বিপত্তি। তাই জেনে-শুনে-বুঝে বিশ্বস্ত এজেন্সি নির্বাচন করা জরুরি।


এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হলো, হজ-উমরা গমনের আগে স্থানীয় মুয়াল্লিম বা গাইডকে সঙ্গে নিয়ে এজেন্সির মালিকের সঙ্গে সরাসরি আলাপ করে নেওয়া। গাইড আপনাকে কী কী সুবিধা দেবে সেটা এজেন্সির মালিকের উপস্থিতিতে নিশ্চিত হওয়া। তাহলে আর কোনো সমস্যা হবে না। আপনার যাত্রা হবে নির্বিঘ্ন ও আরামদায়ক।


প্রতিবছর বিশ্বের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ উমরা পালন করেন। বাংলাদেশ থেকে গত বছর এক লাখ বিশ হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ উমরা পালন করেছেন। চলতি বছর মহররম মাসের ৫ তারিখ থেকে উমরা পালনকারীরা সৌদি আরব গমন করছেন। নানা জটিলতা ও প্রক্রিয়া শেষে চলতি সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশ থেকে উমরা যাত্রী যাওয়া শুরু করেছেন।

সৌদি আরবে বাংলাদেশি উমরা যাত্রীদের বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য সৌদি আরবের বিভিন্ন হজ-উমরা পরিচালনা কোম্পানির সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি করতে হয়। এ চুক্তির আওতায় উমরা যাত্রীদের জেদ্দা বিমান বন্দর থেকে মক্কার নির্দিষ্ট হোটেলে প্রেরণ, মক্কা থেকে মদিনা, পরে মদিনা থেকে এয়ারপোর্ট (মদিনা কিংবা জেদ্দা) যাতায়াতে গাড়ীর ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। যাত্রী সংখ্যাভেদে যাতায়াতের এই সেবায় ঘটে তারতম্য। এখানে বাংলাদেশি এজেন্সির কোনো হাত নেই।

উমরা যাত্রীর ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে, অন্যান্য সেবার বিষয়গুলো স্থানীয় এজেন্সি দিয়ে থাকেন। যেমন ফ্লাইটের রুট ও ধরণভেদে টিকিট, হোটেল নির্বাচন ও খাবার ব্যবস্থা। মোটাদাগে এই হলো- উমরার খরচ।

এ বছর উমরা যাত্রীদের নতুন নিয়মের কারণে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা বেশি গুনতে হবে। একই সঙ্গে যেনতেনভাবে থাকার হোটেল ও যাতায়াতের গাড়ির বুকিং দেখিয়ে আর ভিসা করা যাচ্ছে না। হোটেল বুকিং, যাতায়াতের টাকা আন্তর্জাতিক ব্যাংক হিসাবের (আইবিএএন) মাধ্যমে ভিসার আবেদনের সময় পরিশোধ করতে হচ্ছে।

সৌদি সরকার উমরার ভিসা ফি নতুন করে ৩০০ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ প্রায় ছয় হাজার ৬০০ টাকা আরোপ, সৌদি উমরা কোম্পানির সার্ভিস চার্জ ১০৫ রিয়াল ও ভিসা সার্ভিস বাবদ ৯৪ রিয়াল সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার কারণে এই খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।

উমরার অফারসমূহ
বিভিন্ন এজেন্সির উমরার প্যাকেজ, ছবি: সংগৃহীত

 

সৌদি সরকার উমরার জন্য যে ফি ও অন্যান্য চার্জ নির্ধারণ করেছে তাতে হোটেল এবং যাতায়াতের খরচ বাদ দিয়ে আগের তুলনায় অতিরিক্ত ৩৫০ রিয়ালের কমবেশি প্রদান করতে হচ্ছে। এর আগে উমরা ভিসার জন্য এজেন্সিগুলোকে মাত্র ২০০ থেকে ২৫০ রিয়াল পরিশোধ করতে হতো। এই অর্থ সৌদি কোম্পানিগুলোর সার্ভিস চার্জসহ অন্যান্য কিছু চার্জের নামে নেওয়া হতো। সৌদি উমরা কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতামূলকভাবে তাদের ভিসা প্রতি সার্ভিস চার্জ ৪০ রিয়াল থেকে শুরু করে ১০০ রিয়াল পর্যন্ত গ্রহণ করতো। গাড়ি ভাড়া বাবদ গ্রহণ করত আরও ৫০ থেকে ৭০ রিয়াল। এক্ষেত্রে ভিসা প্রদান করা ছাড়া সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের অন্য কোনো দায় দায়িত্ব ছিলো না এবং কোনো রকমের ফিও নিতো না। আগের নিয়মে একটি হোটেল দেখিয়ে দিলেই হতো। কেউ চাইলেই কোনো উমরা এজেন্সি থেকে তাদের সার্ভিস চার্জসহ ৭ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ করে উমরা ভিসা নিয়ে নিজের উদ্যোগে উমরা পালনে চলে যেতে পারত। এ বছর থেকে সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না।


প্রথম দিকে কিছু মিডিয়ায় উমরার খরচ কমবে মর্মে ভুল তথ্য পরিবেশিত হওয়ার কারণে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এ কারণে উমরার যাত্রীরা এজেন্সির ঘোষিত প্যাকেজে আস্থা রাখতে পারছেন না। বাস্তবতা হলো- এর আগে তো উমরার ওপর সৌদি সরকারের কোনো ফি ছিলো না। এখন নতুন করে ৩০০ রিয়াল ধার্য করা হয়েছে।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উমরা এজেন্সিগুলোর জন্য এ বছর সৌদি সরকার ১০৫ রিয়াল সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করে দিয়েছে। সৌদি সরকার অনুমোদিত সংস্থা মুয়াচ্ছাছার মাধ্যমে উমরাযাত্রীদের পরিবহন, হোটেল বুকিং এবং ভিসা ফি গ্রহণ করে অনলাইনে উমরা মোফা ইস্যু হবে। এক্ষেত্রে উমরা এজেন্সিগুলো এয়ারপোর্টে উমরা যাত্রীদের রিভিস করে গাড়িতে ওঠিয়ে দেওয়া এবং ফেরার সময় সময়মতো গাড়ির জন্য মুয়াচ্ছাছার সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করে দেওয়া ছাড়া বড় ধরনের কোনো কাজ নেই। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, সৌদি আরবের গাড়ির ব্যবস্থাপনা কোম্পানী (নাকাবা)-এর প্রতিনিধিদের সেভাবে বিমান বন্দরে পাওয়া যায় না। ফলে উমরা যাত্রীদের নিজ খরচে মক্কা যেতে হয়। চলতি সপ্তাহে একাধিক উমরাযাত্রী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-এর কাছে এ অভিযোগ করেছেন। এমতাবস্থায় করণীয় কী সেটাও অস্পষ্ট।

সৌদি সরকার হজ ও উমরা ভিসার জন্য নতুন করে ৩০০ রিয়াল ধার্য করলেও তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার উমরার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ২০০০ রিয়াল প্রদানের যে বাধ্যবাধতা ছিল তা রাষ্ট্রীয় আদেশের মাধ্যমে তুলে নিয়েছেন। ফলে এখন কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত ফি প্রদান করে যেকোনো সময়ই একাধিকবার উমরা পালন করতে পারবেন।

   

সৌদিগামীদের উমরা পালনের সুযোগ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজের প্রস্তুতি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য উমরার ভিসা ইস্যু বন্ধ রেখেছে সৌদি আরব। দেশটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের জন্য হজ ভিসা ইস্যু শুরু করেছে। আর যেসব যাত্রীর উমরা ভিসা রয়েছে তারা ৮ মে পর্যন্ত দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। কিন্তু তাদেরকে অবশ্যই ২৯ জিলকদ (৬ জুন) এর মধ্যে সৌদি আরব ত্যাগ করতে হবে।

এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরবগামীদের জন্য নতুন সুসংবাদ দিয়েছে দেশটি। এখন থেকে যেকোনো ভিসা নিয়ে উমরা পালন করা যাবে। গত ২৪ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর বার্তায় দেশটির হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

তাতে বলা হয়, যেকোনো ভিসা নিয়ে যেকোনো দেশ থেকে এলে সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্যে উমরা পালন করতে পারবেন। আপনার ভিসা যে ধরনেরই হোক, আপনি উমরা করতে পারবেন। চাই তা ফ্যামিলি, ট্রানজিট, লেবার ও ই-ভিসা হোক, তা দিয়ে উমরা করতে কোনো বাধা নেই।

পবিত্র হজের অনুমোদন দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব। গত ২৪ এপ্রিল থেকে দেশটির স্থানীয় বাসিন্দা ও সেখানে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের হজের অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়। এতে আবাসন সুবিধা বিবেচনায় ৪ হাজার ৯৯ সৌদি রিয়াল থেকে শুরু করে ১৩ হাজার ২৬৫ রিয়াল পর্যন্ত চারটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।

সৌদি আরব গত বছর থেকে উমরা-সংক্রান্ত নীতিমালা শিথিল করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সৌদি আরবের নেওয়া উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে উমরা ভিসার মেয়াদ ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করা, স্থল, বিমান ও সমুদ্রপথের যেকোনোটির মাধ্যমে মুসল্লিদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া এবং নারীদের জন্য পুরুষ অভিভাবক সঙ্গে রাখার বাধ্যবাধকতা বাতিল করা। উমরা ভিসায় সৌদি আরব ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া।

এ ছাড়া দেশটি উমরার অনুমতি পেতে আগ্রহীদের নুসুক অ্যাপ ব্যবহার করতে এবং মসজিদে হারাম ও নববিতে পালনীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময় মেনে চলতে উৎসাহিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম, বিশেষ করে যারা শারীরিক বা আর্থিক কারণে হজ পালনে আসতে পারেন না, তাদের উমরা পালনের সুযোগ করে দেওয়াই এসব উদ্যোগের লক্ষ্য।

;

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহর তায়ালার প্রিয় বান্দা হওয়ার মাধ্যম হলো তার মহান হুকমগুলো পালন করা। তার হুকুমগুলোর মধ্যে থেকে অন্যতম হুকুম হলো নামাজ। আর এই নামাজের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর প্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে নফল নামাজ বান্দাকে আল্লাহর এতটা প্রিয় করে তোলে যে, সে যখন আল্লাহর কাছে কিছু চাই তখন মহান আল্লাহ তাকে ফিরিয়ে দেন না। বরং তার চাওয়াকে পাওয়াতে রুপান্তরিত করে দেন ।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব।

আমি যা কিছু আমার বান্দার ওপর ফরজ করেছি, তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে।

আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চাই, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই।

আমি কোনো কাজ করতে চাইলে তা করতে কোনো দ্বিধা করি না, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপছন্দ করি। (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)

তাই যেকোনো সংকটপূর্ণ অবস্থায় কিংবা যেকোনো প্রয়োজনীয় মুহূর্তে নফল নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমাদের জন্য উচিত হলো, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারই কাছে ফেরা। তাতে মহান রবের ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জন হবে ইনশাআল্লাহ ।

খুব গুরুত্ব সহকারে ফরজ ও সুন্নত নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ আদায় করা। আর নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ (নফল) নামাজ আদায় করাকে সর্বোত্তম আমল বলে আখ্যা দিয়েছেন।

আবদুল্লাহ ইবনু হুবশী আল-খাস’আমী রা. সূত্রে বর্ণিত। একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সর্বোত্তম কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৪৯)

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর হুকুমগুলো আদায়ের মাধ্যমে, তাঁর প্রিয় বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন আমিন।

;

হজ ফ্লাইট শুরু ৯ মে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ ফ্লাইট আগামী ৯ মে থেকে শুরু হবে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি ফ্লাইট শিডিউল।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান এতথ্য জানান।

তিনি বলেন, আগামী ৯ মে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। দ্রুতই যাত্রীদের ফ্লাইট শিডিউল জানানো হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এক লাখ ১৯ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রীকে বহন করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া) ও সৌদির বেসরকারি এয়ারলাইন্স ফ্লাইনাস মোট ৩৩৫ হজ ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা করে। চুক্তি অনুযায়ী, মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বাকি অর্ধেক বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ার। এবারও এই তিন এয়ারলাইনস হজযাত্রীদের বহন করবে।

চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করেছিল সৌদি আরব। কিন্তু কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে গাইড ও মোনাজ্জেমসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন।

এদিকে, পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

;

দারিদ্র্য বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দারিদ্রতা বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল

দারিদ্রতা বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল

  • Font increase
  • Font Decrease

একবার একজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া আমার প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে। ইরশাদ করলেন: তোমার কি ঐ তাসবিহ স্মরণ নেই, যে তাসবিহ ফেরেশতা এবং মাখলুকের, যার বরকতে রুজি প্রদান করা হয়। যখন সুবহে সাদিক উদিত (শুরু) হয় তখন এ তাসবীহ ১০০ বার পাঠ কর:

তাসবিহটি হলো : সুবহানাল্লাহি অ-বিহামদিহি,সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযিম, অ-বিহামদিহি আস্তাগফিরুল্লাহ।

অর্থ: মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য; মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি সমুচ্চ, মহান; এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।

যদি তুমি এই তাসবিহটি ১০০ বার পড়, তাহলে দুনিয়া তোমার নিকট অপমানিত হয়ে আসবে। ঐ সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু চলে গেলেন। কিছুদিন পর পুনরায় হাজির হয়ে, আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! দুনিয়া আমার নিকট এত বেশি আসছে, আমি হতবাক! কোথায় যাব, কোথায় রাখব! (সূত্র: আল খাছায়িছুল কুবরা, ২য় খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)

এই তাসবিহটি যথাসম্ভব সুবহে সাদিক (শুরু) হওয়ার সাথে সাথে পাঠ করা নতুবা ফজরের, জামাআত যদি শুরু হয়ে যায় তবে জামাআতে শরীক হয়ে যাবে এবং পরে সংখ্যা পূর্ণ করে নিবে। আর যদি নামাযের পূর্বে কোনো কারনে তা পাঠ করতে না পারে বা পাঠ করতে ভুলে যায়,তাহলে সূর্য উদিত হওয়ার আগে আগেই তা পাঠ করে নিতে হবে। (সুত্র: মলফুজাতে আ’লা হযরত, ১২৮ পৃষ্ঠা)

উক্ত তাসবীহ পাঠ করার সাথে সাথে সকাল সন্ধ্যায় তিনবার এই আয়াতটিও পাঠ করতে পারেন।

উচ্চারণ: ওয়া মাই-ইয়াত্তাকিল্লাহা ইয়াজ আল্লাহু মাখরাজা। ওয়া ইয়ারযুকহু মিন হাইসু লা ইয়াহ তাসিব।ওয়া মান ইয়া তা ওয়াক্কাল আলাল্লাহি ফাহু ওয়া হাসবুহু ইন্নাল্লাহা বালিগু আমরিহি কাদযায়াল্লাহু লিকুল্লি শাইয়িন কাদরা।

অর্থ: আর যে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য (সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার) কোন না কোন পথ বের করে দিবেন। এবং তাকে ওই স্থান থেকে জীবিকা দেবেন, যেখানে তার কল্পনাও থাকে না এবং যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তবে তিনি তার জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয় আল্লাহ তার কাজ পরিপূর্ণকারী। নিশ্চয় আল্লাহ তায়াল প্রত্যেক বস্তুর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখেছেন। (সূরা-ত্বালাক, আয়াত - ১, ২)

দারিদ্রতা দূর করার আরো একটি আমলের কথা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সূরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দারিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হযরত ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তাঁর মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন।([বাইহাকি : শুআবুল ঈমান-২৪৯৮)

তবে একটি বিষয় আমাদেরকে অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে, দোয়া কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হল হালাল উপার্জন। হালাল উপার্জন ছাড়া দোয়া কবুল হওয়ার আশা করা বোকামি।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দারিদ্রতা বা অভাব দূর করে, সচ্ছলতাকে জীবনসঙ্গী বানিয়ে দিন আমিন।

;