মুমিন জীবনের সফলতা যে পথে



মাহমুদা নওরিন, অতিথি লেখক, ইসলাম
পবিত্র কোরআনের সূরা মুমিনুনে আল্লাহতায়ালা মুমিনের গুণাবলি তুলে ধরেছেন, ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র কোরআনের সূরা মুমিনুনে আল্লাহতায়ালা মুমিনের গুণাবলি তুলে ধরেছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র কোরআনের সূরা মুমিনুনে আল্লাহতায়ালা মুমিনের গুণাবলি তুলে ধরেছেন। ওই সূরায় কয়েকটি গুণের কথা বিশেষভাবে বলা হয়েছে। ওইসব গুণ নিজের ভেতরে ধারণ করতে পারলে ইহকাল ও পরকালে সফলতা অর্জন করা সম্ভব।

মানুষের সফলতা দুই ধরনের। এক. দুনিয়ার সফলতা। অর্থাৎ সৎ পথে উপার্জন করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা, হালাল-হারাম মেনে চলা। সর্বোপরি কোরআন-হাদিস অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা।

দুই. পরকালীন সফলতা। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুপারিশ লাভ করা। আমলনামা ডান হাতে পাওয়া, হাউজে কাউসারের পানি পান করা। পুলসিরাত পার হওয়া, আরশের নিচে স্থান পাওয়া এবং জান্নাত লাভ করা।

কোরআনে কারিমে আরও বলা হয়েছে, ‘যারা পাপ কাজ থেকে বিরত তারাই প্রকৃত সফলকাম।’ -সূরা আলা: ১৪

কোরআনে কারিমে অন্যত্র আরও বলা হয়েছে, ‘তোমরা দুনিয়াকে পরকালের ওপর প্রাধান্য দিয়ে থাকো, অথচ দুনিয়ার তুলনায় পরকাল উত্তম; কারণ সেখানেই আসল সফলতা।’ -সূরা আলা: ১৬-১৭

এখানে মুমিনের গুণাবলি সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো।

মুমিনের প্রথম গুণ ঈমানদার হওয়া। এটি মৌলিক বিষয়। এর পর মুমিনের গুণ হলো, খুশুখুজুসহ (একাগ্রতা) নামাজ আদায় করা। এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা নিজেদের নামাজ খুশুখুজুসহ আদায় করে।’ -সূরা মুমিনুন: ২

ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, নামাজে খুশুখুজুর অর্থ হলো- স্থির থাকা, অনর্থক নড়চড় না করা। আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর কল্পনাকে অন্তরে ইচ্ছাকৃতভাবে উপস্থিত না করা। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বান্দার প্রতি তার নামাজের দণ্ডায়মান থাকাকালীন পর্যন্ত রহমতের দৃষ্টিপাত করতে থাকেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সে অন্যদিকে দৃষ্টিপাত না করে। যখন সে অন্যদিকে দৃষ্টিপাত করে, তখন আল্লাহতায়ালাও তার থেকে রহমতের দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন। -সুনানে নাসায়ি: ১১৯৫

মুমিনের দ্বিতীয় গুণ অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকা। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকে।’ -সূরা মুমিনুন: ৩

অনর্থক কথাবার্তা বলতে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা। অর্থাৎ যাতে কোনো উপকার নেই, বরং ক্ষতি বিদ্যমান। এর থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যখন অনর্থক বিষয় ত্যাগ করে, তখন ওই ব্যক্তির ইসলাম সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়।

মুমিনের তৃতীয় গুণ জাকাত দেওয়া। ইরশাদ হয়েছে, যারা জাকাত দিয়ে থাকে। -সূরা মুমিনুন: ৪


জাকাত ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। এটি বিত্তবানদের ওপর ফরজ। শরিয়ত নির্ধারিত সম্পদ এক বছর পূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে নির্দিষ্ট শর্তসহ দান করাকে জাকাত বলে। ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) জাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। পবিত্র কোরআনে নামাজ এবং জাকাতের কথা ৮২ বার উল্লেখ করা হয়েছে।


মুমিনের চতুর্থ গুণ লজ্জাস্থান সংযত রাখা। ইরশাদ হয়েছে, যারা নিজেদের লজ্জাস্থান সংযত রাখে। -সূরা মুমিনুন: ৫

সাহাবি হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী অঙ্গ (জিহবা) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী অঙ্গ (গুপ্তাঙ্গ) সম্বন্ধে নিশ্চয়তা দেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা দেবো। -সহিহ বোখারি: ৬৪৭৪

পবিত্র কোরআনে নির্দেশিত হারাম নারীকে বিয়ে করা এ বিধানের অন্তর্ভুক্ত। স্ত্রীর সঙ্গে স্রাব চলাকালীন অবস্থায় কিংবা অস্বাভাবিক পন্থায় সহবাস করা, জীব-জন্তুর সঙ্গে মিলন, সমকামিতা ও হস্তমৈথুনও এর অন্তর্ভুক্ত।

মুমিনের পঞ্চম গুণ আমানত রক্ষা করা। পবিত্র কোরআনে মুমিনের গুণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, যারা নিজেদের ওয়াদা এবং আমানত রক্ষা করে। -সূরা মুমিনুন: ৮

আমানত দুই ধরনের। এক. আল্লাহ প্রদত্ত, দুই. বান্দা সম্পর্কীয়। আল্লাহ প্রদত্ত আমানত হলো- ক্ষমতা, অর্থ সম্পদ এবং মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গের সদ্ব্যবহার করা। আর বান্দা সম্পর্ক আমানত হলো- কেউ টাকা-পয়সা গচ্ছিত রাখলে তা যথাসময়ে বুঝিয়ে দেওয়া, কেউ কোনো গোপন কথা বললে অবশ্যই তা গোপন রাখা। অধীনস্থ কর্মচারীদের পাওনা যথাসময়ে দিয়ে দেওয়া। কর্মচারীকে মালিকের কাজ সঠিকভাবে আদায় করা।

মুমিনের ষষ্ঠ গুণ ওয়াদা রক্ষা করা। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, (মুমিনগণ) ওয়াদা করলে তা পূর্ণ করে। -সূরা মুমিনুন: ৮

অঙ্গীকার বলতে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বুঝায়, যা কোনো ব্যাপারে উভয়পক্ষ অপরিহার্য করে নেয়। এরূপ চুক্তি পূর্ণ না করা প্রতারণার শামিল। এটা হারাম কাজ। আরেক প্রকার অঙ্গীকার হলো, একতরফাভাবে একজন অন্যজনকে কিছু দেওয়া অথবা অন্যজনের কোনো কাজ করে দেওয়ার চুক্তি করা। হাদিসে বলা হয়েছে, ওয়াদা একপ্রকার ঋণ। আর এ ঋণ আদায় করা যেমন ওয়াজিব, ওয়াদা পূরণ করাও তেমন ওয়াজিব। শরিয়তের কোনো কোনো কারণ ছাড়া এর খেলাপ করা কবিরা গোনাহ।

মুমিনের সপ্তম গুণ নামাজে যত্নবান হওয়া। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, তারা (মুমিনগণ) নিজেদের নামাজে যত্নবান। -সূরা মুমিনুন: ৯

নামাজে যত্নবান হওয়ার অর্থ হলো- নামাজ যথাসময়ে যথানিয়মে আদায় করা। পবিত্র কোরআনের সূরা মাউনে বলা হয়েছে, ধ্বংস ওইসব নামাজির, যারা তাদের নামাজে বেখবর। -সূরা মাউন: ৪-৫

নামাজের ব্যাপারে উদাসীনদের কঠিন ধমক ও জাহান্নামের হুমকি দেওয়া হয়েছে। লক্ষণীয় যে, বর্ণিত সাতটি গুণের শুরু এবং শেষ উভয়টা হয়েছে নামাজ দিয়ে। এর থেকে বুঝা যায়, নামাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। একজন মানুষ যখন আরকান-আহকামসহকারে নামাজ আদায় করে তখন তার অন্য কাজগুলো আপনা আপনি ঠিক হয়ে যায়।

উল্লেখিত গুণসম্পন্ন মুমিনদের সুসংবাদ জানিয়ে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, তারাই উত্তরাধিকারী লাভ করবে এবং জান্নাতুল ফেরদাউসের বাসিন্দা হবে, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। -সূরা মুমিনুন: ১০-১১

এখানে উত্তরাধিকারী বলার কারণ হলো, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি যেমন উত্তরাধিকারীদের মালিকানায় আসে। তেমনি জান্নাত নামক সম্পত্তিতে আমাদের উত্তরাধিকারের অংশ রয়েছে। আমাদের উত্তরাধিকারীরা হলেন- নবী-রাসূলগণ। আমরা যদি উত্তরাধিকারীদের রেখে যাওয়া পথে চলতে পারি, তাহলে আমরা আমাদের উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তি তথা জান্নাত লাভ করবো- ইনশাআল্লাহ।

   

সৌদি পৌঁছেছেন ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

সৌদিতে যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার গেছেন ১৭ হাজার ৩১৬ জন।

বাংলাদেশ থেকে ৫৩টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ১৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ১৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২০ জুন এবং শেষ হবে ২২ জুলাই।

;

৬ এজেন্সিকে শোকজ

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্ধারিত সময়ের পরও দুই দফায় সময় বাড়ানো হয় হজযাত্রীদের ভিসা করার জন্য। এরপরও কোনো হজযাত্রীর ভিসা আবেদন করেনি ৫টি এজেন্সি। আর একটি এজেন্সি মাত্র ৫ জনের ভিসার আবেদন করেছে। ফলে এসব এজেন্সির ১৮৭০ জন হজযাত্রী শেষ পর্যন্ত হজ করতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। আগামীকাল বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে।

একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন না পাঠানোসহ বেশি কিছু অনিয়মের জন্য বেসরাকরি হজ এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ার করার পাশাপাশি হজ ফ্লাইট ডাটা যথাসময়ে এন্ট্রি করার জন্য এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে হজযাত্রীদের নিকট থেকে কোরবানির অর্থ না নেওয়ার জন্য তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।

রোববার (১২ মে) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জুম প্লাটফর্মে সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের জেদ্দা এয়ারপোর্ট সার্ভিসের মহাপরিচালক আবদুর রহমান ঘ্যানামের সঙ্গে সভা শেষে এসব নির্দেশনা জারি করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ওই সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছাড়াও বাংলাদেশ হজ অফিস, মক্কা ও জেদ্দার কর্মকর্তা এবং হজ এজেন্সির মালিকেরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় সৌদি আরবের পক্ষ থেকে হজ এজেন্সি কর্তৃক ফ্লাইট ডাটা সঠিকভাবে ও নিয়মিত সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সভায় বলা হয়, হজ ফ্লাইট ডাটা এন্ট্রি না দেওয়ার কারণে মদিনা ও জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারছে না সৌদি কর্তৃপক্ষ। ফলে কোন ফ্লাইটে কতজন হজযাত্রী আসছে, তারা কোন মোয়াল্লেমের হজযাত্রী এবং কোন হোটেল বা বাড়িতে তাদের আবাসন ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া হজযাত্রী ও তাদের লাগেজ পরিবহনের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। মোয়াল্লেমের প্রতিনিধিও হোটেল বা বাড়িতে সার্ভিস দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকছে না। এ কারণে হজযাত্রীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না এবং রুট-টু-মক্কার সুবিধা থেকে হজযাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

সভায় হজ ফ্লাইট যাত্রা শুরুর পূর্বেই সঠিকভাবে ফ্লাইট ডাটা সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি করার অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সভায় আরও বলা হয়, হজ প্যাকেজে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের নিকট থেকে হজে গমণের পূর্বে কোরবানি বাবদ অর্থ নিচ্ছেন। হজযাত্রী তার ইচ্ছা মাফিক সৌদি সরকারের ব্যাংকের কূপন ক্রয় করে বা তার নিজের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি সম্পন্ন করবেন। এজেন্সি কোনোভাবেই কোরবানির টাকা নিতে পারবে না। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি পত্র জারি করেছে। পত্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ এজেন্সিগুলোকে আরও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বলা হয়েছে, অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের সঙ্গে হজগাইড বা প্রতিনিধি না পাঠানোর কারণে হজযাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

একই চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, কিছু হজ এজেন্সি তাদের হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন পাঠিয়েছে, যা জেদ্দা বিমানবন্দরে আটক হয়েছে। এতে দেশের সম্মান নষ্ট হচ্ছে।

এর আগে জেদ্দার সহকারী মৌসূমি হজ অফিসার এবং হজ কাউন্সেলর চিঠির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানান, গত ১১ মে ঢাকা থেকে সাউদিয়া এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটযোগে হজপালনের জন্য সৌদি গমনকারী দুই নারী হজযাত্রীর ৪টি সুটকেস ভর্তি পর্যাপ্ত পরিমাণ জর্দাসহ নানাপ্রকার তামাকপাতা থাকায় স্থানীয় কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সেগুলো জব্দ করেন।

পরবর্তীতে কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ সুটকেসে থাকা মালামাল জব্দ করে খালি সুটকেসগুলো হজ টার্মিনালে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিসে হস্তান্তর করে। ওই দুই হজযাত্রী উল্লাস ট্যুরস্ এন্ড ট্রাভেলস্ (লাইসেন্স নম্বর: ১২৭৭)-এর মাধ্যমে হজপালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমন করেছেন। সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহনে কাষ্টমস্ রুলস্ অনুসরণের পাশাপাশি বর্ণিত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছেন। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

;

৯৪ দিনে হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের অক্টোবরে সাড়ে ৫ মাসে ৮ বছর বয়সী কিশোর সাফায়াত মুকতাদির প্রান্ত কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। সেই সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মাত্র ৯৪ দিনে কোরআন মাজিদের হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর নুসাইব কুদরতি। এই দুই মেধাবী শিক্ষার্থী মিরপুরের (রূপনগর) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।

নুসাইব কুদরতী খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা নিয়ামত আলী কুদরতীর ছেলে। ছেলের এমন সাফল্যে খুশি বাবা নিয়ামত আলী। তার আশা, নুসাইব একসময় বড় আলেম হবে এবং ইসলামের খেদমত করবে।

নুসাইব কুদরতীর শিক্ষক হাফেজ কারি ফরহাদ বিন নাসেরী বলেন, ‘মহাগ্রন্থ কোরআন মাজিদের অলৌকিক মুজিজায় এমন ঘটনা বিশ্বে প্রায় ঘটছে- আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের ছাত্র নুসাইব কুদরতী মাত্র ৯৪ দিনে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করেছে। কোরআন মুখস্থ করার বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। এর পেছনে শিক্ষক থেকে শুরু করে বাবা-মায়ের অনেক চেষ্টা শ্রম ও আত্মত্যাগ প্রয়োজন। একজন কোরআনে হাফেজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহতায়ালা এ শিশুকে দীনের জন্য কবুল করুন।’

তিনি আরও জানান, নুসাইব শুরুতে দুই পৃষ্ঠা করে সবক দিলেও শেষের দিকে দিনে ১০ পৃষ্ঠা করে সবক দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা প্রত্যেকটি বাচ্চাকে টার্গেট ফিক্সড করে পড়াশোনা করাই। সেই টার্গেট অনুযায়ী নুসাইব আন্তরিকতার সঙ্গে মেহনত করেছে এবং শিক্ষক তার পেছনে সর্বস্ব ব্যায় করে তাকে যোগ্য করে গড়ে তুলেছে। আমাদের প্রতিটি ছাত্রকে এভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান দিয়ে থাকি।

ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মামুনুর রশীদ বলেন, এ ছেলেটি পাঁচ বছর বয়স থেকে আমাদের এখানে পড়াশোনা করছে। তার বাবা একজন চাকুরীজীবী। এমন অনেক বাচ্চা আমাদের এখানে আছে। দীন ও ইসলাম শিক্ষা অর্জন করছে। কোরআনে হাফেজ হচ্ছে, পাশাপাশি স্কুলের পড়াও চালিয়ে যাচ্ছে।

;