ফরিদপুরের গেরদায় নবীর সা. কেশ ও বড় পীরের জুব্বা



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
গেরদা জামে মসজিদ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

গেরদা জামে মসজিদ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফরিদপুর থেকে ফিরে: হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.) ইরাক থেকে ভারতবর্ষ আসার সময় দুষ্প্রাপ্য কিছু সম্পদ সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। এর মধ্যে রয়েছে, হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র কেশ, হজরত আলী (রা.)-এর গোঁফ, হজরত ইমাম হাসান (রা.) ও হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর জুলফ (কানের দু'পাশের দাড়ির ওপরের অংশের চুল) এবং বড়পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর গায়ের জোব্বা।

এই বরকতময় জিনিসগুলো এখনও ফরিদপুরের গেরদার একটি মসজিদ সংলগ্ন বিশেষ রুমে সংরক্ষিত রয়েছে।

গেরদা জামে মসজিদে সংরক্ষিত দুষ্প্রাপ্য জিনিসের একাংশ
গেরদা জামে মসজিদে সংরক্ষিত দুষ্প্রাপ্য জিনিসের একাংশ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সুলতানি আমলে বাংলাদেশে যে কয়েকজন মুসলিম সুফি-সাধকের আগমন ঘটেছিল, তাদের অন্যতম হলেন হজরত শাহ আলী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে শাহ আলী (রহ.) ৮১৩-১৪ হিজরিতে (১৪১২ খ্রিস্টাব্দে) বাগদাদ থেকে ৪০ জন মতান্তরে শতাধিক আত্মীয়-স্বজন, ধর্মীয় সাধক ও শিষ্যসহ দিল্লি হয়ে ফরিদপুরের (ফতেহাবাদ) গেরদাতে আসেন। স্থানীয়দের কাছে ঢোলসমুদ্র বলে খ্যাত নদী তীরবর্তী জঙ্গলময় স্থান গেরদা। পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুরে আস্তানা স্থাপন করেন। সেখানেই তিনি ইন্তেকাল করেন। মিরপুরে হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর মাজার অবস্থিত।

গেরদা জামে মসজিদের বাইরের অংশ
গেরদা জামে মসজিদের বাইরের অংশ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ঢোলসমুদ্র বলতে মূলত নদী সংলগ্ন বিল এলাকাকে বুঝানো হয়। স্থানীয়ভাবে এটাকে বাওর বলা হয়। আর গেরদা শব্দটি ফারসি। এর অর্থ- উপশহর বা শহরতলি। যেহেতু স্থানটি ফরিদপুর শহর থেকে দক্ষিণ পশ্চিমে কিছুটা (তিন মাইল) দূরে অবস্থিত, তাই এটাকে উপশহর বলা হয়।

উপশহর হলেও গেরদা এখনও অনেকটা নিভৃত পল্লীর মতো। ফরিদপুর শহর ঘেঁষে বেয়ে চলা কুমার নদের তীরবর্তী পিচঢালা পাকা রাস্তা সংযুক্ত করেছে গেরদাকে। হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর আগমনের কারণে গেরদা বিশেষ স্থানের মর্যাদায় আসীন। তার সম্মানে তৎকালীন দিল্লির সুলতান ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত ঢোলসমুদ্র নামক স্থানের বার হাজার বিঘা ভূমিকে করমুক্ত বলে ঘোষণা করেছিলেন।

মসজিদে লাগানো সুলতানি আমলের শিলালিপি
মসজিদে লাগানো সুলতানি আমলের শিলালিপি, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

মসজিদটির বর্তমান নাম ‘ঐতিহ্যবাহী গেরদা দরগাহ বাড়ি জামে মসজিদ।’ জনশ্রুতি আছে, এখানে শাহ আলী বাগদাদী (রহ.) একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। তার মৃত্যুর পর সেই মসজিদের ভগ্নাবশেষের ওপর আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করা হয় হিজরি ১০১৩ সনের দিকে। কালের আবর্তনে সেই মসজিদটিও ধ্বংস হয়ে যায় নদীগর্ভে এবং স্থানটি ধীরে ধীরে জঙ্গলে ঢাকা পড়ে। দীর্ঘদিন পর নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

মসজিদের ভেতরের অংশ
মসজিদের ভেতরের অংশ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

এখনও পুরনো ওই মসজিদের অখণ্ড পাথরের তৈরি পিলারসহ অনেক নিদর্শন অক্ষত রয়েছে। নতুন মসজিদের দুই প্রবেশপথে অখণ্ড পাথরের চারটি পিলারের অংশবিশেষ শোভা পাচ্ছে। এ ছাড়া মসজিদের আশপাশে পুরনো মসজিদের ভাঙ্গা ইট-পাথরের টুকরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। যা থেকে অনুমান করা চলে, এখানে একটি পুরনো মসজিদ ছিল। এ ছাড়া নতুন মসজিদের প্রদর্শনী কক্ষের সামনে একটি পাথর ফলক লাগানো রয়েছে। ওই ফলকে লেখা রয়েছে, ১০১৩ হিজরি। এর দ্বারা অনুমান করা যায়, শাহ আলী বাগদাদী রহ.-এর মৃ্ত্যুর পর এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিংবা হতে পারে হজরত শাহ আলীর আমলের মসজিদটি তখন সংস্কার করা হয়েছিল। তবে ওই মসজিদটিতে জুমার নামাজ হতো। কারণ শিলালিপিতে সূরা জুমার যে আয়াতটি লেখা রয়েছে, ওই আয়াত দ্বারা মানুষকে জুমার নামাজে আসার আহবান জানানো হয়েছে।

হজরত শাহ আলী বাগদাদীর জায়নামাজ
হজরত শাহ আলী বাগদাদীর জায়নামাজ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

আরবি ও ফার্সি ভাষায় লেখা পাথরের ফলকটি (১২ ইঞ্চি X ৩৬ ইঞ্চি) ১০১৩ হিজরি বা ১৬০৪ খ্রিস্টাব্দে লেখা। ফলকটি বর্তমানে নতুন নির্মিত মসজিদের (২২ মি X ১১ মি) পশ্চিম দেয়ালে লাগানো আছে।

মসজিদটির নির্মাণ কাজ ১৯৭৮ সালে শুরু হয়। মসজিদের সামনে থাকা ফলকে লেখা রয়েছে, হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.) কর্তৃক আনীত রাসূলে কারীম (সা.), হজরত আলী (রা.), হজরত ইমাম হাসান (রা.), হজরত ইমাম হোসাইন (রা.), হজরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) এবং অন্যান্য পূণ্যাত্মাদের পবিত্র নিদর্শনাদি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান।

বড়পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর গায়ের জোব্বা
বড়পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর গায়ের জোব্বা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

এই পবিত্র সম্পদগুলোর সঙ্গে যোগ হয়েছে হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর জায়নামাজ, পাগড়ি, মাছের দাতের তসবিহ, চন্দন কাঠের খাবার খাওয়ার পাত্র। রয়েছে হজরত শাহ মাদার (রহ.)-এর গায়ের ফতুয়া।

এগুলো বছরে ৫ বার সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসব বরকতময় জিনিসগুলো দেখতে আসেন। যে পাঁচদিন জিনিসগুলো দেখানো হয়- ১২ রবিউল আউয়াল, শবে মেরাজ, ১১ রবিউস সানি ফাতেহা ইয়াজদাহম (গাউসুল আজম বড় পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর মৃত্যু দিবস), ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন।

হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর খাবার খাওয়ার পাত্র
হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর খাবার খাওয়ার পাত্র, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

এ ছাড়া বিশেষ কেউ আসলে কিংবা আগে থেকে মসজিদ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে স্মৃতিবহ জিনিসপত্রগুলো দেখার সুযোগ মেলে।

মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি সাইয়্যেদ সালিম রেজা। শাহ আলী (রহ.)-এর ১২তম অধস্তন পুরুষ। তার কাছে প্রশ্ন ছিলো এসব জিনিস সম্পর্কে। তিনি বলেন, হজরত শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এসব জিনিস সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি কতদিন গেরদা ছিলেন? এ প্রশ্নের জবাবে সালিম রেজা জানান, তিনি এখানেই থাকতেন। এখানে বিয়ে-শাদি করেছিলেন। দাওয়াতি কাজে মিরপুর যান এবং সেখানে ইন্তেকাল করেন। শাহ আলী বাগদাদী (রহ.)-এর দুই ছেলের কবরও রয়েছে গেরদাতে। মসজিদ সংলগ্ন দিঘীর পশ্চিম পাশে বড় ছেলে শাহ উসমান (রহ.)-এর কবর ও আরেক ছেলে হজরত শাহ হানিফ (রহ.)-এর কবর মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে।

   

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;