হজ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কিছু প্রস্তাবনা



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
মসজিদে হারামের প্রবেশ পথ◢

মসজিদে হারামের প্রবেশ পথ◢

  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কা (সৌদি আরব) থেকে: হজপালনের নিমিত্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখ লাখ মুসলমান মক্কাসহ মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফাসহ প্রভৃতি স্থানে একত্র হন প্রতি বছর জিলহজ মাসে। লাখ লাখ মানুষের সমাগম, তাদের চলাফেরা, নিরাপত্তা, আবাসন ও খাওয়া-দাওয়াসহ সব বিষয়ে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হয়।

হজ ব্যবস্থাপনাকে সুন্দর, আধুনিক ও গতিশীল করতে সৌদি কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে চেষ্টা করছে। তার পরও যেহেতু বিপুল সংখ্যক মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কাজসমূহ সমাধা করে থাকেন। এ বিষয়টি সামনে রেখে সৌদি কর্তৃপক্ষের হজ ব্যবস্থাপনা আরও সুন্দর, সহজ ও হাজিদের জন্য উপকারী হয় এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/19/1566175762105.jpg
মসজিদে হারামের দ্বিতীয় তলায় নামাজের সময় ফাঁকা কাতার◢

 

মসজিদে হারামের বাইরের অংশে জুতা ব্যবহার না করা: মসজিদে হারামের বাইরের অংশে জুতা ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কেউ জুতা ব্যবহার করেন, কেউ করেন না। তবে দেখা গেছে, অনেক হাজি টয়লেট থেকে ফিরে কিংবা রাস্তা থেকে এসে ওই জুতা পায়ে দিয়ে চলাফেরা করেন। এটা দৃষ্টিকটু বিষয়। অনেকের মনে এটা নিয়ে পবিত্রতার বিষয়ে সংশয় সৃষ্টি করে। আমরা আশা করি বিষয়টি হাজিরা মনোযোগ দিয়ে ভাববেন। অথবা কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট এলাকায় জুতা ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে পারেন।

মসজিদে হারাম এলাকায় ধূমপান: অনেকেই মসজিদে হারামের প্রবেশ পথে প্রকাশ্যে ধূমপান করেন। আমরা মনে করি, এ এলাকা সম্পূর্ণভাবে ধূমপানমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা দরকার।

জমজমের পানি নেওয়ার স্থানগুলো পিচ্ছিল: কাবা চত্বর থেকে শুরু করে মসজিদের হারামের বাইরে ও ভেতরে জমজমের সুপেয় বরকতময় পানি পান করার জন্য অসংখ্য জায়গায় পানির কন্টেইনার এবং পানির কল দেওয়া আছে। আল্লাহর মেহমানরা প্রাণভরে সেখান থেকে পানি পান করেন এবং বিভিন্ন পাত্রে ভরে নিয়ে যান। পানি পান ও নেওয়ার সময় অসাবধানতাবশত আশপাশে পানি পড়ে অনেক জায়গা পিচ্ছিল হয়ে যায়। পানি পরিষ্কারের জন্য কর্মী নিয়োজিত থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় পরিষ্কার করার আগে অনেকেই পা পিছলে পড়ে যান এবং আহত হন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পানি নেওয়ার স্থানগুলোতে পিচ্ছিলরোধক পাথর বসানো জরুরি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/19/1566175865903.jpg
কাবা চত্বর◢

 

নামাজের আগে দরজা বন্ধ করে দেওয়া: বায়তুল্লাহর অভ্যন্তরে নামাজ আদায় করা প্রত্যেক হাজির একান্ত ইচ্ছা। বায়তুল্লাহর শৃঙ্খলা রক্ষায় অসংখ্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত আছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, মসজিদের অভ্যন্তরভাগ পূর্ণ হওয়ার আগেই মসজিদের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইদানিং তো অনেক দূরের প্রবশেপথগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেক পথ ঘুরে মসজিদে হারামে প্রবেশ করতে হয়। তাতে বৃদ্ধ, নারী ও অসুস্থ হাজিদের ভীষণ কষ্ট হয়। কোনো নিয়মনীতি বা সময় ছাড়া এভাবে চলাচলের গেট বন্ধ করে দেওয়ার ফলে অনেক হাজি মসজিদের অভ্যন্তরে নামাজ আদায় করতে পারেন না। এক্ষেত্রে মসজিদের অভ্যন্তরভাগ মুসল্লিদের দ্বারা পূর্ণ হওয়ার পর ঘোষণা দিয়ে গেট বন্ধ করা হলে কেউ আপত্তি করবে না। এক্ষেত্রে প্রবেশ পথসমূহে মসজিদের ভেতরের দৃশ্য মনিটরে দেখানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। অভিযোগ রয়েছে, নতুন হারাম একটু দূরে, সেখানে মুসল্লিরা যেতে চান না, তাই রাস্তা বন্ধ করে মুসল্লিদের সেখানে নেওয়ার অভিপ্রায় থেকে এমন ব্যবস্থা করা হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/19/1566175946603.jpg
মসজিদে হারামের ভেতরের অংশ◢

 

মসজিদে নববীর মতো স্বয়ংক্রিয় ছাতার ব্যবস্থা করা: সৌদি আরবের তীব্র গরমে আল্লাহর মেহমানরা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। মসজিদে হারামের বাইরের অংশে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় কষ্টকর হয়ে ওঠে। তাই গরমের প্রচণ্ডতা উপলব্ধি করে মসজিদে নববীর বাইরের অংশের মতো স্বয়ংক্রিয় ছাতার ব্যবস্থা করা করা যেতে পারে। অনুরূপভাবে বায়তুল্লাহর খোলা চত্বরের (মাতাফ) চারদিকে স্বয়ংক্রিয় ছাতার ব্যবস্থা হলে আল্লাহর মেহমানরা প্রশান্তির সঙ্গে নামাজ আদায় ও অন্যান্য ইবাদত সম্পন্ন করতে পারবেন।

মিনা ও আরাফাতে পর্যাপ্ত টয়লেটের অভাব: মিনা, আরাফাত এবং মুজদালিফায় হাজিদের অবস্থান হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এসব স্থানে সাধারণ হাজিদের জন্য ব্যবহৃত টয়লেটের সংখ্যা খুবই কম। তার ওপর যা আছে তাতে অনেক সময় পানি না থাকায় নোংরা হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। এ সময় হাজিরা ইহরাম অবস্থায় থাকেন। তাই সময় বিবেচনায় এসব স্থানে আরও টয়লেট বাড়ানো দরকার।

আরাফাতের ময়দানে গোসল করলে অতিরিক্ত সওয়াব মেলে। কিন্তু এখানে গোসলের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই হাজিসাহেবদের সুবিধার্থে পৃথকভাবে পর্যাপ্ত টয়লেট এবং গোসলখানার ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/19/1566176004186.jpg
দোতলা দিয় তাওয়াফ করছেন হাজিরা◢

 

আরাফাতের ভাষণ শোনার ব্যবস্থা করা: মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেওয়া হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো- মসজিদের নামিরার কাছাকাছি উপস্থিত হাজি ব্যতীত কেউ তা শুনতে পান না। যদি গোটা ময়দানব্যাপী উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ডিজিটাল সিস্টেমে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়, তবে কাছে ও দূরের হাজিরা একযোগে হজের খুতবা শুনতে পাবেন। এ ব্যবস্থা করা সম্ভব হলে গোটা ময়দানের লোক একযোগে এক জামাতে হজের খতিবের সঙ্গে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করার সুযোগ পাবেন। তাতে করে আরাফাতের তাবুতে নামাজ নিয়ে জটিলতা কমবে, আরাফাতের ময়দানে একটা ইবাদতের পরিবেশ সৃষ্টি হবে। যে যার তো মাসয়ালা বলা ও আমল করার প্রবণতা বন্ধ হবে।

পরিবহন সংকট: হজের দিনগুলোতে মক্কা থেকে মিনা, মিনা থেকে আরাফাত, আরাফাত থেকে মুজদালিফা, মুজদালিফা থেকে জামারা, জামারা থেকে মক্কা এলাকায় পরিবহন সংকট দেখা দেয়। ফলে হাজিদের অবর্ণনীয় কষ্টের মুখোমুখি হতে হয়। একে সুযোগ মনে করে স্থানীয় গাড়ির মালিকরা ২০ রিয়ালের ভাড়া ১০০ রিয়াল পর্যন্ত আদায় করতে দ্বিধা করেন না। আবার অনেক ড্রাইভার রাস্তা না চেনা হাজিদের এক জায়গায় নামানোর কথা বলে অন্য জায়গায় নামিয়ে দেন। এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেই সঙ্গে হাজিদের চলাচলের সুবিধার্থে সার্বক্ষণিক বাসসেবা চালু রাখা এবং গাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/19/1566176073028.jpg
মধ্যরাতে মসজিদে হারামে প্রবেশের জন্য হাজিদের অপেক্ষা◢

 

হারাম এলাকার মসজিদের মাইকের আওয়াজ নিয়ন্ত্রণ করা: মসজিদে হারামের কাছাকাছি মিসফালা রোড, হিজরা রোড, দাখেলা রোড থেকে শুরু চারপাশে প্রচুর ছোট ছোট মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদের নিয়মিত আজান ও জামাতে নামাজ হয়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, এসব মসজিদের নামাজের তাকবির, কেরাত- মসজিদের হারামের কেরাতে ও তাকবিরের আওয়াজের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। ফলে মসজিদের হারামের জামাতে শরিক হওয়া রাস্তায় দাড়ানো মুসল্লিরা দ্বিধায় পরে যান। এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হলো- ছোট ছোট এসব মসজিদের আওয়াজ নিয়ন্ত্রণ করা, অথবা জামাতের সময় একটু আগে-পিছে করে দেওয়া।

রাস্তায় নামাজ: মসজিদে হারামের জামাতে অংশ নিতে বহুদূর থেকে হাজিরা আসেন। কিন্তু রাস্তা বন্ধ কিংবা জামাতের সময় ঘনিয়ে আসার কারণে অনেকেই রাস্তায় নামাজ আদায় করেন। তবে কিছু মানুষ ইচ্ছা করেই, শুধুমাত্র হাটার ভয়ে রাস্তায় নামাজের জন্য জায়নামাজ বিছিয়ে বসে পড়েন, দেখা যায়, তার সাথে প্রচুর জায়গা ফাঁকা এমতাবস্থায় রাস্তাও বন্ধ থাকে, জামাতের কাতারের ধারাবাহিকতাও থাকে না। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত।

মোবাইল বিড়ম্বনা: তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে মানুষের হাতে হাতে মোবাইল। ফলে হজপালনে আসা সবাই চান পরিবারের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখতে। কিন্তু সৌদি আরবে এসে হাজি মোবাইল রিচার্জ নিয়ে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। একে তো অনেক কোম্পানী, প্রচুর অফার। কে কোন কোন অফার নেবেন তা স্পষ্টভাবে বুঝা মুশিকল হয় ভাষাগত জটিলতার কারণে। ফলে ইন্টারনেট রিচার্জ, টকটাইম রিচার্জ নিয়ে এক ধরণের জটিলতায় ভুগতে হয় অনেককে। এ সুযোগে অনেক রোহিঙ্গা (আগে থেকে সৌদিতে থাকা) ও পাকিস্তানি দোকানদার ১৫ রিয়ালের কার্ড ১৭ রিয়ালে, ৫০ রিয়ালের কার্ড ৬০ রিয়ালে বিক্রি করে। মোবাইল নিয়ে জটিলতা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক।

নামাজের কাতার সোজা করার ঘোষণা আরও আগে দেওয়া: মসজিদে হারামে ইকামতের পর কাতার সোজা করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর আর সময় তেমন দেওয়া হয় না। তাকবির বলে নামাজ শুরু করে দেওয়া হয়। তাতে উপস্থিত মুসল্লিরা কাতার সোজা করার তেমন সুযোগ পান না। ফলে কাতারের মাঝে বেশ ফাঁকা থাকে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের ভাবা দরকার।

উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়া কাবা চত্বর থেকে শুরু করে দোতলা, তিনতলায় দাড়িয়ে সেলফি কিংবা ছবি উঠানো, মূল মাতাফে হুইল চেয়ারে তাওয়াফের বিষয়েও ভাবা দরকার। এক্ষেত্রে মসজিদে হারাম কর্তৃপক্ষের বিধি-নিষেধের পাশাপাশি হজপালনকারীদের সচেতনতা কাম্য। 

হজ পৃথিবীর সব অঞ্চল, বর্ণ ও ভাষার মুসলমানকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার শিক্ষা দেয়। তাই মুসলমানদের শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ জীবন প্রতিষ্ঠায় হজের বিকল্প নেই। সে হিসেবে বর্ণিত বিষয়গুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হলে সম্মানিত হাজিরা উপকৃত হবেন বলে আমরা আশা করি।

   

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;