অজু এবং গোসলের বিকল্প বিধান তায়াম্মুম



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
অজু এবং গোসলের বিকল্প বিধান তায়াম্মুম, ছবি: সংগৃহীত

অজু এবং গোসলের বিকল্প বিধান তায়াম্মুম, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহতায়ালা মানবজাতিকে তার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। ইবাদত অপবিত্র অবস্থায় আদায় করা যায় না। পাক-পবিত্র অবস্থায় ইবাদত-বন্দেগি করতে হয়। আর পবিত্রতা অর্জনের জন্য অজু ও গোসলের কোনো বিকল্প নেই। অজু-গোসলের প্রধান মাধ্যম হলো- পানি। আল্লাহতায়ালা তার বিশেষ মেহেরবানীতে বান্দাদের জন্যে প্রচুর পরিমাণে পানির সরবরাহ করে রেখেছেন। তারপরও প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। হতে পারে কোনো স্থানে পানি পাওয়া যাচ্ছে না অথবা গেলেও তা সংগ্রহ করা দুষ্কর বা পেলেও তা ব্যবহার করা দুঃসাধ্য অথবা জীবনের ওপর আঘাত আসতে পারে। এরূপ পরিস্থিতে আল্লাহতায়ালা মেহেরবানী করে মাটি বা মাটি জাতীয় পদার্থ দিয়ে পবিত্রতা অর্জনের অনুমতি প্রদান করেছেন।

সাময়িক পানির অপ্রতুলতার পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন স্বয়ং হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার প্রিয় সাহাবারা। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমরা কোনো এক সফরে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে বের হলাম। আমরা বাইদা কিংবা যাতুল জাইশ নামক স্থানে পৌঁছলে আমার গলার হারটি হারিয়ে যায়। তাই হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তা অনুসন্ধান করার জন্য সেখানে অবস্থান করলেন। আর লোকেরাও তার সঙ্গে রয়ে গেলো। কিন্তু সেখানে পানি ছিলো না এবং তাদের সাথে আনা পানিও অবশিষ্ট ছিলো না। হজরত আবু বকর (রা.) আমার কাছে এসে বললেন, তুমি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এবং অন্যসব লোককে এমন এক জায়গায় আটকে ফেলেছো যেখানে পানি নেই এবং তাদের সঙ্গেও পানি নেই। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, হজরত আবু বকর (রা.) আমাকে তিরস্কার করার পর আমার পার্শ্বদেশে হাত দ্বারা সজোরে আঘাত করলেন। কিন্তু হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ঘুমের ব্যঘাত ঘটার ভয়ে আমি ধৈর্য ধরে স্থির থাকলাম। এ অবস্থায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ভোর পর্যন্ত পানি ছাড়াই ঘুমালেন। ঠিক এই সময় মহামহিম আল্লাহ তায়াম্মুমের আয়াত নাজিল করলেন। লোকেরা সবাই তায়াম্মুম করলো। আক্বাবা রাতের প্রতিনিধিদের একজন উসাঈদ ইবনে হুদাঈর বলে উঠলেন, হে আবু বকরের পরিবার তোমাদের কারণে কেবলমাত্র এটিই প্রথম বরকত নয়। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, অতঃপর আমি যে উটের ওপর ছিলাম সেটিকে উঠালে তার নিচে আমার হারটি পাওয়া গেলো। -সহিহ মুসলিম শরিফ

তায়াম্মুম প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য ওঠো, তখন স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত এবং পদযুগল গিটসহ ধৌত করো। যদি তোমরা অপবিত্র হও, তবে সারাদেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে থাকো অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করো, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও অর্থাৎ স্বীয় মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেলো। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নিয়ামত পূর্ণ করতে চান- যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ -সূরা মায়িদা: ৬

তায়াম্মুমের ফরজ
তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি যথা- ১. তায়াম্মুমের নিয়ত করা, ২. তায়াম্মুমের বস্তুর ওপর উভয় হাত ঘর্ষণ শেষে সমস্ত মুখমণ্ডল একবার মাসেহ করা এবং ৩. কনুইসহ উভয় হাত মাসেহ করা।
 
তায়াম্মুমের সুন্নত
তায়াম্মুমের সুন্নত ৬টি যথা- ১. বিসমিল্লাহ বলে তায়াম্মুম আরম্ভ করা, ২. মাটি বা মাটি জাতীয় বস্তুর ওপর দু’হাত চাপড় মারা, ৩. হাত ঝেড়ে নেওয়া, ৪. প্রথমে মুখমণ্ডল মাসেহ করা, ৫. তারপর ডান হাত, পরে বাম হাত তারতিবের সঙ্গে মাসেহ করা এবং ৬. পরপর ধারাবাহিকভাবে মাসেহ করা।

তায়াম্মুম করার পদ্ধতি
পাক মাটি, চুন, সুরকি, পাথর, ঘরের দেয়াল জাতীয় পদার্থে ওপর আঙ্গুলগুলো ফাঁক রেখে দুই হাতের তালু এমনভাবে মারতে হবে যেন ধুলা উড়ে আঙ্গুলগুলোর ফাঁকেও প্রবেশ করে। এ সময়ে পবিত্র হওয়ার নিয়ত করতে হবে। এরপর দু’হাত সমস্ত মুখমণ্ডলের ওপর মাসেহ করতে হবে। চুল ও লোমকূপের মধ্যে ধুলি পৌঁছার জন্য অতিরিক্ত চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই। আঙ্গুলে আংটি থাকলে খুলে নিতে হবে।
 
এরপর আঙ্গুল ফাঁক রেখে পুনরায় পূর্বের মতো মাটির ওপর হাতের তালু আঘাত করতে হবে। এবার হাত তুলে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী ব্যতীত অন্যান্য আঙ্গুলগুলোর ওপর ডান হাতের আঙ্গুলগুলোর পৃষ্ঠে স্থাপনপূর্বক বাম হাতের আঙ্গুলগুলোর পেট দ্বারা ডান হাতের আঙ্গুলগুলোর পৃষ্ঠদেশে অগ্রভাগ হতে আরম্ভ করে ধীরে ধীরে মাসেহ করতে করতে কনুইর ওপর পর্যন্ত আনতে হবে। পরে সেখান থেকে বাম হাতের তালু ডান হাতের ভেতরের দিকে কনুইর ওপর হতে আঙ্গুলের দিকে আস্তে আস্তে মাসেহ করে শেষভাগে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলোর পেট দ্বারা ডান হাতের আঙ্গুলগুলোর পিঠ মুছে ফেলতে হবে। এভাবে ডান হাত দ্বারা বাম হাত মুছতে হবে।
 
এরপর উভয় হাতের তালু পরস্পর ঘর্ষণ করতে হবে এবং এক হাতের আঙ্গুলগুলো অপর হাতের আঙ্গুলগুলোর ফাঁকে ফাঁকে প্রবেশ করে ঘর্ষণ করতে হবে। এ পদ্ধতিতে তায়াম্মুম সম্পন্ন করে তা দ্বারা এক ওয়াক্তের ফরজ নামাজ এবং সুন্নত ও নফল নামাজ যতো ইচ্ছা পড়া যাবে। তবে অন্য ওয়াক্তের ফরজ নামাজের জন্য পুনরায় তায়াম্মুম করতে হবে।
 
তায়াম্মুম ভঙ্গের কারণসমূহ
যে সব কারণে অজু ভঙ্গ হয়, সে সমস্ত কারণে তায়াম্মুমও ভঙ্গ হয়ে যায়। যে সমস্ত কারণে গোসল ফরজ হয়, সেসব কারণে তায়াম্মুম নষ্ট হয়। এ ছাড়া পানি পাওয়া গেলে, তায়াম্মুম করার পর নামাজ শুরু করার পরে পানি পাওয়া গেলে কিংবা কূপ হতে পানি ওঠানোর পাত্র পাওয়া গেলে তখন তায়াম্মুম ও নামাজ উভয়ই ভঙ্গ হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় অজু করে পুনরায় নামাজ পড়তে হবে। তবে নামাজ শেষ হওয়ার পরে পানি পাওয়া গেলে নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে না।

   

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির মালিকের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়াকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাঃ আবু তাহির সাক্ষরিত এত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সনের হজ মৌসুমে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হ.লা, ০৬৭২) এর অধীন ৪৪৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত রয়েছে। উক্ত এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে অদ্যাবধি কোন ভিসা করা হয়নি। তথাপি এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এতে এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীগণ প্রতারিত হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে এবং তাঁদের এ বছর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (ই.লা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং একইসাথে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হলা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া এর দেশ ত্যাগ রোধ করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি ৪৪৪ জন হজ যাত্রীর কারোরই ভিসার জন্য আবেদন করেনি। এমতাবস্থায় এই এজেন্সিসহ আরও ৫টি এজেন্সিকে শোকজ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। গত বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম।

অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে না পারায় জন্য, ১২টি এজেন্সিকে ব্যাখ্যা প্রদানের পাশাপাশি সচিবালয়ে ডেকে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজকের মধ্যে এই ১২টির মধ্যে ৯টি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব এজেন্সি ভিসা করতে না পারার ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে মন্ত্রণালয়ের কাছে।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

আন্তরিক তওবার একটি অশ্রুকণা পাপকে মুছে দেয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে, ছবি: সংগৃহীত

আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুনিয়ার নানাবিধ সমস্যায় নিরাশ হয়ে আমাদের কতজনই না নিদ্রাহীন রাত অতিবাহিত করি, নানা নেশায় জড়িয়ে যাই। একবারও মনে হয় না, সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আমাকে ডাকো, আমি সাড়া দেবো।’ আমরা আল্লাহকে ডাকতে পারি না। জানেন এর কারণ কী?

আমাদের হৃদয়মন পৃথিবীর সঙ্গে খুব বেশি মাত্রায় যুক্ত হয়ে গেছে। তাই প্রয়োজনীয় সময়ে আল্লাহর কথা স্মরণ হয় না। উচিৎ ছিলো, এটা মনে করা- দুনিয়ায় আমরা কেবলই ভ্রমণকারী। কোনো কিছুই স্থায়ী হয় না, মানুষের স্মৃতিও না।

ছোট পাপ বলে কিছু নেই
‘ছোট’ পাপ, এটা এমন কিছু না- এমন ভাবনাকে প্রশ্রয় দেবেন না। সাদামাটা মিথ্যা কথা এবং গসিপগুলো প্রায়ই আমাদের পতনের কারণ হয়। অজুহাতের আশ্রয় নেবেন না। কেবল আপনি মুখে মুখে অনুতপ্ত হবেন আর কাজে কোনো পরিবর্তন আসবে না তাতে লাভ হবে না। হৃদয় থেকে অনুশোচনা করুন। এটা অনুভব করুন। আপনি এটি যে আন্তরিকভাবে করছেন তার প্রতিফলন ঘটান।

হৃদয়ের রোগ নিরাময়ের অন্যতম উপায়
আপনি যদি অনুভব করেন যে, শয়তান গতকাল আপনাকে পরাজিত করেছে, আজ তাকে পরাস্ত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। আরও নেক আমল করুন, বেশি বেশি অনুশোচনা করুন এবং সর্বশক্তিমানের সান্নিধ্য লাভ করুন। মনে রাখবেন, প্রার্থনা হলো হৃদয়ের রোগ নিরাময়ের অন্যতম সেরা উপায়। আপনার হৃদয় এবং আত্মার সঙ্গে কথা বলুন। সর্বশক্তিমানের নিকটবর্তী হন। তিনি আপনাকে স্বস্তি দেবেন।

অর্থহীনতায় সময় নষ্ট করবেন না
চারদিকের হইচই শুনে বিভ্রান্ত হবেন না। বিরতি নিন এবং প্রতিচ্ছবি দেখুন। আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার চারপাশের সব অর্থহীনতায় আপনি কতটা সময় নষ্ট করেছেন। আর সেই সঙ্গে আপনি বারবার তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অতীতপাপের জন্য, সেসব পাপ যার কথা আপনি ভুলে গেছেন অথবা উপেক্ষা করেছেন তার জন্য। করুণাময়ের কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করুন, এ জন্য তিনি যেন আপনাকে শাস্তি না দেন।

পাপহীনতার পথে ফিরে আসুন
এখন যা ঘটছে তাই সর্বোত্তম। এটি আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে। এটি আপনি এ মুহূর্তে উপলব্ধি নাও করতে পারেন, তবে যদি তার ওপর আস্থাবান হন তবে পুরস্কার আপনি পাবেন। আর কখনও ছোট পাপকে ছোট হিসাবে নেবেন না। বিপদটি হলো- এটি করতে করতে তা অভ্যাসে পরিণত হয় এবং একসময় এটাকে স্বাভাবিক মনে হতে থাকবে। পাপকে স্বীকৃতি দিন, আর পাপহীনতার স্বাভাবিক পথে ফিরে আসুন।

কোনো দ্বিধা নয়, তওবা করুন
আপনার আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে। সর্বশক্তিমান ক্ষমা করতে ভালোবাসেন! দ্বিধা করবেন না, অনুতাপ প্রকাশ করুন। পাপের হাজার আনন্দবিন্দুকে আন্তরিক অনুতাপের একটি অশ্রুবিন্দু সর্বশক্তিমানের কৃপায় মুছে দিতে পারে।

আমরা কাঁদি, তিনি শুনেন। আমরা আহত হই, তিনি নিরাময় করেন। আমরা ডাকি, তিনি জবাব দেন। আমরা অনুতাপ করি, তিনি ক্ষমা করেন। সবকিছুর জন্য, সব সময় সর্বশক্তিমানের কাছেই চান, তার কাছেই প্রার্থনা করুন।

মানুষের কাছে অভিযোগ নয়
আপনার যেকোনো সমস্যা সম্পর্কে সবার কাছে অভিযোগ করাকে অভ্যাসে পরিণত করবেন না। বেশিরভাগই এ জন্য কিছু করার কথা ভাবে না। সর্বশক্তিমানের সঙ্গে কথা বলুন, সবকিছুতে নিয়ন্ত্রণ তার। তিনি আপনার পাপের পরিমাণ কত বেশি তা নিয়ে পরোয়া করেন না। আপনি কতটা এ জন্য অনুতপ্ত হচ্ছেন, সেটি দেখেন তিনি। আপনার পাপ যেন আপনাকে হতাশ না করে!

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি বলুন, সত্যিই কি তোমরা সেই মহাপ্রভুকে অস্বীকার করছ! যিনি পৃথিবীকে মাত্র দুদিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার অংশীদার নির্ধারণ করছ? তিনি তো সমস্ত জগতের প্রতিপালক। যিনি পৃথিবীতে তার উপরাংশে পাহাড় স্থাপন করেছেন এবং জমিনের ভিতরাংশ বরকতপূর্ণ করেছেন আর ভূগর্ভে সুষমরূপে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছেন মাত্র চার দিনে। সব যাচনাকারীর জন্য সমানভাবে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন আর তা ছিল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।’ -সুরা ফুসিসলাত : ৯-১১

হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াকে মহব্বত করল সে তার পরকালকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। আর যে ব্যক্তি পরকালকে মহব্বত করল সে তার দুনিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। সুতরাং তোমরা অস্থায়ী বস্তুর ওপর চিরস্থায়ী বস্তুকে প্রাধান্য দাও।’ -মুসনাদে আহমাদ

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যা করলে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষেরাও আমাকে ভালোবাসবে। তিনি বললেন, দুনিয়া ত্যাগ করো, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষের কাছে যা আছে, তার প্রতি লালসা করো না, তবে লোকেরা তোমাকে ভালোবাসবে। -জামে তিরমিজি

;