যেসব কারণে মক্কা-মদিনা মর্যাদাবান



এম মুহাম্মদ আবদুল গাফফার, অতিথি লেখক, ইসলাম
পবিত্র মক্কা ও মদিনা অপ্রতিদ্বন্দ্বী সম্মানের অধিকারী

পবিত্র মক্কা ও মদিনা অপ্রতিদ্বন্দ্বী সম্মানের অধিকারী

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের প্রথম নগরীদ্বয় পবিত্র মক্কা ও মদিনা হলো- অপ্রতিদ্বন্দ্বী সম্মানের অধিকারী। এ সম্মান সে এমনিতেই পায়নি। আল্লাহতায়ালা মক্কার হারাম শরীফকে সম্মানিত তথা মর্যাদাবান ঘোষণা করেছেন বলেই মক্কার হেরেমের এ মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মক্কার এ অবস্থান সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘এ কথা নিঃসন্দেহ যে, মক্কায় অবস্থিত ঘরখানাকেই মানুষের ইবাদতের ঘর হিসেবে সর্বপ্রথম তৈরি করা হয়েছে।’ -সুরা আলে ইমরান : ৯৬

মহান রাব্বুল আলামিনের এ ঘোষণা থেকে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, মক্কায় অবস্থিত মানুষের প্রথম ইবাদতখানা হওয়ার কারণেই তার এত মর্যাদা। এ ঘরের মর্যাদা ও গুরুত্ব বর্ণনা করে আল্লাহতায়ালা আরো ঘোষণা করেন, ‘উহাকে কল্যাণ ও মঙ্গলময় করে দেওয়া হয়েছিল এবং সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়াত লাভের কেন্দ্র বানানো হয়েছিল উহাতে সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ রয়েছে।’ -সুরা আলে ইমরান : ৯৭

আল্লাহতায়ালা মানুষকে পৃথিবীর খলিফা বা প্রতিনিধি করে সৃষ্টি করেছেন। এ মানুষ আল্লাহর দাসত্ব মেনে তার দেওয়া বিধান বাস্তবায়ন করবে এটাই হলো- আল্লাহর ইবাদত বা দাসত্ব। আল্লাহর ইবাদতের কর্মকেন্দ্র হলো কাবাগৃহ বা বায়তুল হারাম। যেখানে এ বায়তুল হারামের অবস্থান সেটাই হেরেম শরিফ যার মর্যাদার কথা স্বয়ং আল্লাহ ঘোষণা করেছেন। মক্কার হেরেমের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা নবী কারিম (সা.)-এর উদ্দেশে ঘোষণা করেন, ‘হে রাসুল! তুমি তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আমাকে এ নির্দেশই দেওয়া হয়েছে যে, এ শহরের রবের দাসত্ব করবো যিনি একে হেরেম বা মহিমান্বিত করেছেন, তিনি সব জিনিসের মালিকও বটে, আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমি মুসলমান হয়ে জীবন যাপন করি।’ -সুরা নমল : ৯১

পবিত্র মক্কা নগরী

 

এ মক্কা ভূমির হেরেমকে সেখানকার লোকদের জন্য শান্তিময় ও নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন। একমাত্র হেরেমের অধিবাসীর অধিকারের জন্য সারাবিশ্বে তাদের মান মর্যাদা ছিল অজস্র। এ মর্মে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা (কাফেররা) বলে, আমরা যদি তোমাদের সঙ্গে এ হেদায়েতের আনুগত্য স্বীকার করে নিই, তাহলে স্বদেশভূমি থেকে অকস্মাৎ বহিষ্কৃত হবো, কিন্তু এটা কি বাস্তব ঘটনা নয় যে, আমি একটি নিরাপদ ও শান্তিময় হেরেমকে তাদের অবস্থানস্থল করেছি যেখানে সব রকমের ফলফলাদি আমার পক্ষ থেকে রিজিক হিসেবে প্রতিনিয়ত এসে জমা হচ্ছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোক এটা অবহিত নয়।’ -সুরা কাসাস : ৫৭

দয়াময় আল্লাহতায়ালা মক্কার ঊষর মরু অঞ্চলে বিচিত্রময় রিজিকের চিত্র উত্থাপন করেছেন। যেখানে পাহাড় পর্বতবেষ্টিত মরুময় অত্যন্ত রুক্ষ একটি জনপদের অবস্থান সেখানে বিভিন্ন রকমের খাদ্যসামগ্রী, ফল-ফলাদি ও জীবন যাপনের প্রয়োজনীয় দ্রব্যসম্ভারের এমন সমারোহের কথা কল্পনাও করা যায় না। অথচ মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমত বরকতে সেখানে অব্যাহতভাবে এসব নেয়ামতের পর্যাপ্ত আমদানি হয়ে থাকে। মক্কার হেরেমের এটাও যে একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য তা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিজেই বর্ণনা করেছেন।

এ হেরেম বা বায়তুল্লাহ শরিফে আল্লাহর বান্দা পৃথিবীর সকল মুসলমানের সমানভাবে প্রবেশাধিকার রয়েছে। এখানে ধনী-গরিব, কালো-সাদা, উঁচু-নিচু, ফকির-বাদশা, মালিক-শ্রমিক, পুরুষ ও নারীর প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো ভেদাভেদ নেই। যারা এ হেরেমে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে মূলত তারাই যে বিশ্বে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, মানবতাবিরোধী ও সন্ত্রাসী জনসমষ্টি তাতে আর সন্দেহের কী থাকতে পারে? যে ব্যক্তি আল্লাহকে একমাত্র রব ও মহানবীকে তার রাসুল হিসেবে মেনে নেবে তিনিই হেরেমে প্রবেশের অধিকার লাভ করবেন। এ মর্মে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা কুফরি করেছে এবং আল্লাহর পথে চলতে বাধা দিচ্ছে এবং মসজিদে হারামে যাবার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যে মসজিদে হারামকে আমি সকল মানুষের জন্য তৈরি করছি এবং যেখানে স্থানীয় ও বহিরাগত লোকের অধিকার সমান, তাদের আচরণ নিশ্চিতভাবেই শাস্তি প্রদানের মত আচরণ, এতে (মসজিদে হারামে) সেই সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে জুলুমের পথ ধরবে, আমি তাকে কঠিন শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করাবো।’ -সুরা হজ : ২৫

মক্কা তথা পবিত্র হেরেম শুধু মানুষের জন্য নিরাপদ নয় এটা প্রতিটি প্রাণীর জন্যই নিরাপদ কেবলমাত্র মানুষকে কষ্ট দেয় এমন পাঁচটি জীব ব্যতিরেকে। এ প্রসঙ্গে একাধিক হাদিস বর্ণিত আছে। একটি হাদিস এ রকম- ‘হজরত হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- (হেরেমে) কাক, চিল, ইঁদুর, বিচ্ছু ও ক্ষেপা কুকুর এ পাঁচ প্রকারের জন্তুকে কেউ হত্যা করলে কোনো দোষ নেই। -সহিহ বোখারি : ১৬৯৬

আল্লাহতায়ালা মক্কা তথা হেরেমকে এমনই সম্মানিত করেছেন সেখানে উপর্যুক্ত পাঁচ প্রকারের জীব ব্যতীত শুধু মানুষ নয় সকল জীব এমনকি অনেক উদ্ভিদের জন্যও নিরাপদ করেছেন। এ মর্মে একটি হাদিস এভাবে বর্ণিত হয়েছে, ‘হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেছেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন বলেছিলেন- এ শহরকে আল্লাহ মহিমান্বিত ও মর্যাদাসম্পন্ন করেছেন। এর কাঁটা (গাছকে)ও কাটা যাবে না, শিকার তাড়া করা যাবে না, রাস্তায় পড়ে থাকা জিনিসকে যে ব্যক্তি তার বলে প্রচার করবে সে ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ কুড়িয়ে নিতে পারবে না। -সহিহ বোখারি : ১৪৮৩

পবিত্র মদিনা মোনাওয়ারা

 

পবিত্র মক্কার এ মর্যাদা আল্লাহর দান, তারই বিশেষ অনুগ্রহ ও পরিকল্পনায় মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) এর দোয়ার কারণেই। ইরশাদ হয়েছে, ‘ওই সময়ের কথা স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম এ বলে দোয়া করেছিল, হে আমার রব! এ শহরকে (মক্কা) তুমি নিরাপত্তার শহর বানাও আর আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তিপূজা থেকে দূরে রাখ। হে প্রভু! ওই সব মূর্তি বহু লোককে পথভ্রষ্ট করেছে। সুতরাং তাদের মধ্যে যে আমার প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করবে সে আমার পথ অনুসরণকারী হবে। যদি কেউ অমান্য করে তাহলে তুমি তো ক্ষমাশীল ও মেহেরবান। প্রভু হে! আমি একটি ঊষর মরু প্রান্তরে আমার সন্তানদের এক অংশকে তোমার মহিমান্বিত ঘরের পাশে এনে রেখে যাচ্ছি। হে রব! যাতে তারা এখানে সালাত কায়েম করে, সুতরাং ওদের প্রতি মানুষের মন আকৃষ্ট করে দাও এবং তাদেরকে ফলমূলের খাদ্য দান করো তারা তোমার শোকরগোজার (কৃতজ্ঞ) বান্দা হতে পারে।’ -সুরা ইবরাহিম : ২৪-২৭

পবিত্র কোরআনের এ বর্ণনা থেকে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়, আল্লাহর ইচ্ছায় একটি জনমানবহীন মরুময় এলাকায় মানববসতির সূচনাসহ আল্লাহর ঘরের পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে যাবতীয় ইসলামি কর্মকান্ডের কর্মকেন্দ্র চালু করাই হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর মূল লক্ষ্য ছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বহুবিধ কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়েছে। হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার বংশধরদের অনুকরণ ও অনুসরণের ধারাবাহিকতায় মক্কায় কাবাগৃহ ও তৎসন্নিহিত অঞ্চল হেরেম বা সংরক্ষিত সম্মানিত এলাকা হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। এটা আল্লাহর নির্দেশক্রমে হজরত ইবরাহিম (আ.) করেছিলেন যা অদ্যাবধি বলবত রয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। এ হেরেমের সম্মানিত হবার মূল টার্গেট হলো- আল্লাহর ঘর যেখানে অবস্থিত সেখানে তার হুকুম বাস্তবায়নের কেন্দ্র হবে এবং সেখানে যেমন যাবতীয় অবৈধ কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে তেমনি এখান থেকে একমাত্র আল্লাহর হুকুম বাস্তবায়নের প্রশিক্ষণ ও দীক্ষা তার বান্দাগণ লাভ করে তা বিশ্বময় প্রচার প্রসারের ব্রত গ্রহণ করবে।

আল্লাহর রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর দেওয়া সে দায়িত্বেরই পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে গিয়ে অবর্ণনীয় জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেও শেষ পর্যন্ত জন্মভূমি ত্যাগ করে মদিনায় স্বীয় কর্মকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে আল্লাহ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব সুসম্পন্ন করেন। যে জায়গাটি আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের কর্মকেন্দ্র হয় তার মর্যাদা যে পৃথিবীর সকল স্থানের চেয়ে অনেক বেশি হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। এ দিক দিয়ে বিচার করলে দেখা যায় মদিনাতুল মোনাওয়ারার মর্যাদাকে আল্লাহতায়ালা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন।

এ মর্মে নবী কারিম (সা.)-এর একটি হাদিস এভাবে এসেছে, ‘হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, হজরত ইবরাহিম (আ.) মক্কাকে সম্মানিত ঘোষণা করেছিলেন এবং এর জন্য দোয়া করেছিলেন, সুতরাং হজরত ইবরাহিম (আ.) যেমন মক্কাকে সম্মানিত ঘোষণা করেছিলেন আমিও অনুরূপ মদিনাকে সম্মানিত ঘোষণা করলাম এবং মুদ ও সায়ের জন্য দোয়া করলাম যেমন হজরত ইবরাহিম (আ.) মক্কার জন্য করেছিলেন।’ -সহিহ বোখারি : ১৯৮১

নির্ভরযোগ্য হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায়, কেয়ামতের আগ মুহূর্তে দাজ্জালের ফেতনা থেকেও এ দুই নগরী মুক্ত থাকবে। ওই সময় ফেরেশতারা এই দুই নগরীর পাহারায় নিয়োজিত থাকবেন, ফলে দাজ্জাল সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না।

   

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর, ছবি : সংগৃহীত

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় নির্মিত মসজিদে নূর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। নান্দনিক সৌন্দর্যের এ মসজিদটি কাছে টানছে দর্শনার্থীদের। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মুসল্লিরা আসেন এখানে নামাজ আদায় করতে।

শতবর্ষের পুরোনো কোনো মসজিদ না হলেও এর সৌন্দর্যের কথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মসজিদটিতে আসা মুসুল্লিদের দাবি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগে এমন সুন্দর নান্দনিক মসজিদ আর নেই।

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর

মসজিদের দায়িত্বে থাকা ইমাম জানান, মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মসজিদের কাঠামো। যা দেশের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।

জানা গেছে, হজে যাওয়ার পর মদিনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মসজিদটি নির্মাণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক চিশতী (ওরফে বাবুল চিশতী)। তিন দরজাবিশিষ্ট মসজিদের ছাদের মাঝখানে আছে বড় একটি গম্বুজ। যার ভেতরের অংশেও আছে সুন্দর নকশার সমাহার। আর চারপাশে পিলারের ওপর নির্মিত হয়েছে সাতটি গম্বুজসহ চারটি বড় মিনার। মসজিদটির সৌন্দর্য দেখতে প্রায় প্রতিদিনই দেখতে দূরদূরান্ত থেকে আসেন দর্শনার্থীরা।

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর

বকশীগঞ্জের শহরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে এই মসজিদটি। পৌরসভার দড়িপাড়ায় ব্যক্তিগত অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে নান্দনিক সৌন্দর্য ভরা মসজিদে নূর। তুরস্কের আদলে তৈরি করা মসজিদটি দ্বিতলবিশিষ্ট ও সম্পূর্ণ কারুকার্যমণ্ডিত। এই মসজিদে দুই হাজার ৫০০ মুসুল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

শেরপুর থেকে শাউন মোল্লা নামের এক দর্শনার্থী পরিবারকে নিয়ে এই মসজিদ দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, আমার অনেক বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশী এই মসজিদ সম্পর্কে বলেছে। আসবো আসবো করে আসা হয় না। এবা সুযোগ বের করে পরিবার নিয়ে এসেছি, নামাজও পরলাম।

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর

স্থানীয় বাসিন্দা লাভলু মণ্ডল জানান, মাহবুবল হক চিশতী অনেক সময় ধরে এই মসজিদ তৈরি করেছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে মসজিদ তৈরির উপকরণ নিয়ে আসা হয়েছে।

মসজিদের মোয়াজ্জিন মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই মসজিদের মূল ক্যাম্পাসের পবিত্রতা রক্ষার জন্য চারপাশে আছে দেয়াল। আঙিনাজুড়ে রয়েছে সারিবদ্ধ ঝাউ গাছ। ফুলের বাগানে ঘেরা এই মসজিদের পাশে বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, মাদরাসাসহ দৃষ্টিনন্দন একটি অজুখানা রয়েছে। অজুখানাটিও দেখতে বেশ সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন।

মসজিদের নূরের ইমাম মো. বেলাল হোসেন বলেন, পাঁচ একর জায়গাজুড়ে এই মসজিদে ২০১৮ সালের ১১ মে প্রথম জুমার নামাজের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নামাজ আদায় করা শুরু হয়।

;

গরমে কোরবানির পশু নিয়েও ভাবতে হবে



সাকী মাহবুব, অতিথি লেখক, ইসলাম
পশুর খামার, ছবি : সংগৃহীত

পশুর খামার, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানিতে পশু লাগতে পারে এক কোটি ত্রিশ লাখের মতো। অন্যদিকে এবার চাহিদার অতিরিক্ত পশু রয়েছে ত্রিশ লাখ। কাজেই কোরবানিতে পশুর কোনো অভাব হবে না। অতএব কোরবানির পশু নিয়ে দুর্ভাবনার কোনো কারণ নেই।

কিন্তু চলমান তাপপ্রবাহের প্রভাবে খামারিদের গরু-ছাগলের প্রাণহানি কিংবা ওজন কমে যাওয়ার বিষয়টিকে নিছক গোষ্ঠীবিশেষের বিড়ম্বনারূপে দেখার সুযোগে নেই। যখন খামারিরা আসন্ন কোরবানির জন্য তাদের পশু প্রস্তুত করছেন, তখন এরূপ ক্ষয়ক্ষতির জেরে ভোক্তাসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি আক্রান্ত হতে বাধ্য।

সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, গরুকে বারবার গোসল করিয়ে, টিনের চালে পাটের ভিজা বস্তা বিছিয়ে, স্যালাইন ও গ্লুকোজ খাইয়ে এবং বৈদ্যুতিক পাখা চালিয়েও পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ খামারিরা। এ রকম দুর্দিনে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর শুধু পরামর্শ দিয়ে দায় সারতে পারে না।

রিপোর্টে প্রকাশ, গরমে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে দুগ্ধ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। আসলে সারাদেশের চিত্র এমনই হতাশাজনক। তাপপ্রবাহে পশুর নানাবিধ সমস্যার সঙ্গে দুধের উৎপাদন ব্যাহত হবার মাধ্যমেও খামারিদের সংকটের অবস্থা স্পষ্ট। বিশেষত ঈদুল আজহায় নিজস্ব পশু দিয়ে কোরবানি করার যে সক্ষমতা দেশ অর্জন করেছে, সেখানে তাপপ্রবাহের চোখ রাঙানি লক্ষণীয়। যেহেতু খামারিদের হাতে সময় কম, সেহেতু তাদের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে তাপপ্রবাহসৃষ্ট ক্ষতিরোধ করা সম্ভব।

খবরে আরও বলা হয়েছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে কোরবানির গরু-ছাগল অজ্ঞাত নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও কাঁপুনির লক্ষণ স্পষ্ট হওয়ার পর পশুগুলো ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করার কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মারাও যাচ্ছে। অনেক খামারি গরু-ছাগল আক্রান্ত হওয়ায় লোকসানে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এমন বিপদে খামারিদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো প্রয়োজন। এ সময় যেখানে আক্রান্ত পশুগুলোর চিকিৎসা বিনামূল্যে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, সেখানে উল্টো খামারিরা অভিযোগ করেছেন, আগে গরু অসুস্থ হলে ভেটেরিনারি চিকিৎসক মোটরসাইকেলে খামারে আসতেন। তাকে তখন যত অর্থ দিতে হতো, এখন ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকের বড় গাড়ি আসার কারণে কয়েক গুণ ফি পরিশোধ করতে হয়। এ চিত্র কেবল হতাশাজনক নয়; বরং নিকৃষ্ট উদাহরণ।

পরিস্থিতির আলোকে আধুনিক খামারিরা পূর্বপ্রস্তুতি নিতে সক্ষম হলেও প্রান্তিক খামারি অধিকাংশই জানেন না, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কী করতে হবে। তাই খামারিদের ক্ষতি পোষানো, আক্রান্ত পশুর চিকিৎসা প্রদানসহ দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়াতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরকেই সবার আগে তৎপর হতে হবে। গবাদি পশু রক্ষা করতে পরিস্থিতির আলোকে পদক্ষেপ নিতে সচেতনতা বৃদ্ধির বার্তা খামারিদের কাছে পৌঁছাতে হবে।

চলমান তাপপ্রবাহে আক্রান্ত পশুর দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ সংকটকালীন বিনামূল্যে চিকিৎসার বিষয় বিবেচনাযোগ্য। খামারিদের সহায়তায় বেসরকারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয়রাও পাশে দাঁড়ালে সংকট দূর হবে এবং কোরবানির সক্ষমতায় কোনো ছেদ পড়বে না। বিষয়টি সবাইকে ভাবতে হবে।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব যেসব পদক্ষেপ নিল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুধুমাত্র হজ ভিসায়ই পবিত্র হজপালন করা যাবে, এছাড়া হজযাত্রীদের মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সেই সঙ্গে নিবন্ধন ও যথাযথ অনুমতি ছাড়া কেউ মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না। সুষ্ঠুভাবে হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে নতুন ব্যবস্থাপনার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। নতুন এসব বিধান-প্রবিধানের মাধ্যমে পবিত্র স্থানগুলোতে হজযাত্রীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও তাদের নিরাপত্তা সুসংহত করাই কর্তৃপক্ষের মূল উদ্দেশ্য।

শনিবার (৪ মে) সৌদি আরবের জেনারেল ডিরেক্টরেট অফ পাবলিক সিকিউরিটির এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রিবিহীন হজপালন কমাতে মক্কায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক সৌদি নাগরিকদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি গ্রহণ বাধ্যতামূলক। আইনটি শনিবার (৪ মে) থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।

বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয়েছে, মক্কার প্রবেশপথে থাকা চেকপয়েন্টগুলোতে সৌদি নিরাপত্তা কর্মীরা যথাযথ অনুমতি ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না। শুধুমাত্র হজ ও উমরার ভিসাধারী, আবাসিক বাসিন্দা এবং ওয়ার্ক পারমিটধারীরা মক্কায় প্রবেশ করতে পারেবেন।

উমরা ভিসায় হজ করা যাবে না
উমরা ভিসায় হজ করা যাবে না মর্মে আইন পাস করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় বলেছে, উমরা ভিসায় হজ করা যাবে না। বরং হজের জন্য আলাদা ভিসা করতে হবে। এ ছাড়া টুরিস্ট ভিসা, ট্রানজিট ভিসায়ও হজপালন করা যাবে না- মর্মে জানানো হয়েছে।

ইসলামিক ইনফরমেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাদের উমরার ভিসা রয়েছে, তাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। উমরার ভিসায় হজযাত্রীরা হজ করতে পারবেন না। তাদের অবশ্যই আলাদাভাবে হজের ভিসা গ্রহণ হবে।

সৌদি আরবে যারা আছেন তাদেরও হজপালনের অনুমতি নিতে হবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি
সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণলয় হজ ২০২৪-এর জন্য স্বাস্থ্যবিধি জারি করেছে। সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজযাত্রীদের অবশ্যই হজ পারমিট নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য তারা নুসুক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারবে। বৈধ হজযাত্রার জন্য তা অপরিহার্য। একইসঙ্গে হজযাত্রীদের সেহাত অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। সৌদি বাসিন্দাদের গত পাঁচ বছরের মধ্যে কোভিড-১৯, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং মেনিনজাইটিস ভ্যাকসিন দিতে হবে।

বিধিতে আরও বলা হয়, স্থানীয় হজযাত্রী ছাড়া অন্যদের নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। সেজন্য মক্কা পৌঁছানোর কমপক্ষে ১০ দিন আগে ওই ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করা উচিত।

সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, প্রত্যেক হজযাত্রীকে নিজ দেশ থেকে একটি স্বাস্থ্য শংসাপত্র আনতে হবে। এর মাধ্যমে হজযাত্রী সংক্রামক রোগ থেকে মুক্ত কিনা, তা যাচাই করা হবে।

সিনিয়র স্কলার কাউন্সিল জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নতুন ব্যবস্থাপনা হজের আয়োজনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে। কর্তৃপক্ষ এর মাধ্যমে হজযাত্রীদের জন্য পরিষেবা উন্নত করবে। সবার জন্য একটি নিরাপদ ও অর্থবহ হজ নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য।

উল্লেখ্য, আগামী ৯ (১১ জিলকদ) থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৪ জুন পবিত্র হজের কার্যক্রম শুরু হবে।

;

বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি, ছবি : সংগৃহীত

বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঘৃণা ও বৈষম্যের ক্রমবর্ধমান ঘটনার মধ্যে বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের ও মুসলমান বলে মনে করা লোকদের রক্ষা করতে জার্মান সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। জার্মানি মুসলিমবিরোধী অপরাধের কার্যকর নীতিমালা নেই। সরকারের নেই কোনো নজরদারি ও তথ্য। এর ফলে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পেতে আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপে বর্ণবাদের ওপর গবেষক আলমাজ টেফেরা বলেছেন, মুসলিমদের ঘৃণা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা করতে জার্মান সরকারের ব্যর্থতার কারণ মুসলিমদের ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা।

মুসলমানরা কী কারণে বর্ণবাদ অনুভব করছে যা শুধু কেবল বিশ্বাসভিত্তিক শত্রুতা নয়। জার্মানিতে মুসলিমবিরোধী ঘৃণা, বৈষম্য, বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনা এবং মুসলিমদের ডাটা সম্পর্কে স্পষ্ট বোঝাপোড়া ছাড়া জার্মান কর্তৃপক্ষের যেকোনো প্রচেষ্টা অকার্যকর হবে।

২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৯ মাসে মুসলিম ঘৃণামূলক অপরাধের পরিসংখ্যানে ৬৮৬টি ‘ইসলামবিরোধী’ অপরাধ গণনা করা হয়েছে। ২০২২ সালে ১২ মাসে তা ছিল ৬১০টি।

২০২৪ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সঙ্কট সৃষ্টি হলে অক্টোবর থেকে মুসলিম বিরোধী ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে জার্মান নাগরিক সমাজের দলগুলো।

জার্মানিতে বাস করা প্রায় ৫৫ লাখ মুসলমানের অনেকেই বলছেন, তারা প্রতিদিন ইসলামবিদ্বেষের মুখোমুখি হন৷ যদিও জার্মানির সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা দেওয়া আছে৷

জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিমের মহাসচিব আব্দুস সামাদ আল ইয়াজিদি বলছেন, ইসলামবিদ্বেষ বিষয়টি জার্মান সমাজের মূলধারায় ঢুকে গেছে৷ অর্থাৎ এটি অনেকটা গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে, যা প্রকাশ্যে প্রকাশ করা যায় বলে মনে করেন তিনি৷

তিনি জার্মানিতে মুসলমানদের বিষয় দেখাশোনা করার জন্য একজন কমিশনার নিয়োগ দিতে জার্মানির কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷

;