আল আকসা যেসব কারণে গুরুত্বপূর্ণ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জেরুজালেম শহর

জেরুজালেম শহর

  • Font increase
  • Font Decrease

যে নামেই ডাকা হোক হাজার বছর ধরে পৃথিবীর অন্যতম পবিত্র নগরীর মর্যাদা জেরুজালেম। ছোট্ট একটি শহরকে ঘিরে তিন ধর্মের মানুষের এমন আবেগ, স্মৃতি বা ঐতিহ্য নেই পৃথিবীর আর কোথাও। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর শহর জেরুজালেম।

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা, ‘ওল্ড সিটি’ খ্যাত শহরটি বিভক্ত মুসলিম, ইহুদি, খ্রিস্টান ও আর্মেনীয় বসতিতে। এখানে রয়েছে এসব ধর্মের অনেক পবিত্র স্থাপনা। তাই এই নগরীর পবিত্রতা নিয়ে মতভেদ না থাকলেও নিয়ন্ত্রণের অধিকার নিয়ে আছে নানা বিতর্ক। আছে দফায় দফায় দখল, পুনর্দখল, ধ্বংস আর পুনর্নির্মাণের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস।

সবচেয়ে বেশি টানাপোড়েন পবিত্র ভূমিকে ঘিরে। চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের কেন্দ্র এ এলাকায় অবস্থিত ইসলামের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল আকসা বা বায়তুল মোকাদ্দাসসহ মুসলিমদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

মুসলমানদের প্রথম কেবল আল আকসা। মেরাজ রজনিতে এখান থেকেই ঊর্ধ্বাকাশের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।

একই জায়গায় অবস্থিত ইহুদিদের পবিত্র ভূমিখ্যাত ‘টেম্পল মাউন্ট’ বা ‘ঈশ্বরের ঘর’। যা ‘কুব্বাত আস সাখরা’ নামে হিসেবে পরিচিত। টেম্পল মাউন্টকে ঘিরে থাকা ‘ওয়েস্টার্ন ওয়াল’ ইহুদিদের কাছে ‘পৃথিবীর ভিত্তিপ্রস্তর’ হিসেবে স্বীকৃত।

এখানে নিয়মিত প্রার্থনায় অংশ নেয় লাখো ইহুদি। যিশু খ্রিস্টের স্মৃতিবিজড়িত গির্জার কারণে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছেও পবিত্রতার দিক থেকে সমান গুরুত্বপূর্ণ জেরুজালেম। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস, এখানেই ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল যিশুকে।

১২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ শহরের সঙ্গে কত ইতিহাস, কত স্মৃতি জড়িত তার ইয়ত্তা নেই। মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি- এ তিন ধর্মের মানুষের কাছেই হাজার বছর ধরে সমান গুরুত্ব জেরুজালেমের।

ইতিহাসসমৃদ্ধ জেরুজালেম স্বাভাবিকভাবেই আজও সমান আলোড়ন তোলে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের হৃদয়ে। পৃথিবীর অন্যতম পুরনো শহরকে নিয়ে টানাপোড়েনও হাজার বছরের, ধর্মীয় যুদ্ধে বারবার যার হাতবদল হয়েছে। কিন্তু নিজেদের অধিকার ছাড়েনি কোনো পক্ষই। যুগে যুগে অসংখ্য ঘটনার ও সহিংসতার সাক্ষী হওয়া পুরো নগরীকে নিজেদের রাজধানী দাবি করে ইসরায়েল। কিন্তু চাইলেই কী আর সম্ভব? অবশ্যই না। জেরুজালেম প্রশ্নে একমাত্র ইসরায়েল ছাড়া পুরো বিশ্ব মুসলমানদের দাবীর সঙ্গে একমত।

প্রশ্ন হলো- আল আকসা এত গুরুত্বপূর্ণ কেনো? এর উত্তর খুঁজেছে আল জাজিরা। সেখানে বলা হয়েছে-

আল আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সটি ৩৫ একর জমির ওপর নির্মিত। এটি মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ। আল্লাহর নবী হজরত ইবরাহিম (আ.) থেকে আসা তিনটি ধর্মের কাছেই এই মসজিদ অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ।

১৯৬৭ সালে ইসরায়েল পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যাকাসহ পুরোনো শহর পূর্ব জেরুজালেম দখল করার পর পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে সবচেয়ে বিরোধপূর্ণ একখণ্ড জমি হচ্ছে এই মসজিদ কমপ্লেক্স। যদিও ইসরায়েল সৃষ্টির বহু আগ থেকেই জেরুজালেম নিয়ে সঙ্ঘাত চলছে।

ব্রিটিশের দখলে থাকার সময় ১৯৪৭ সালে ঐতিহাসিক ভূখণ্ড ফিলিস্তিনকে বিভক্ত করার পরিকল্পনা করে জাতিসঙ্ঘ। এর একাংশে প্রধানত ইউরোপ থেকে আমদানি করা ইহুদিদের দেওয়া হয় এবং অন্য ছোট অংশ সেখানকার আদিবাসী ফিলিস্তিনিদের দেওয়া হয়। ইসরায়েলকে দেওয়া হয় ফিলিস্তিনের ৫৫ শতাংশ এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ভাগে রাখা হয় ৪৫ শতাংশ।

আর আল আকসা মসজিদের নগরী জেরুজালেমকে জাতিসঙ্ঘের প্রশাসনাধীনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য রাখা হয়। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর বংশধরদের তিনটি ধর্মের মানুষের জন্য এ নগরীকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে ইরায়েলের হামলায় ধ্বংস হওয়া গাজার একটি এলাকা

 

১৯৪৮ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের ৭৮ শতাংশ এলাকা দখল করে নেয়। পশ্চিমতীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজার বাকি এলাকা মিসর ও জর্ডানের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল তার দখল আরও সম্প্রসারিত করে। ইসরায়েল এ যুদ্ধে আল আকসা মসজিদ ও ওল্ড সিটিসহ পূর্ব জেরুজালেম দখল ও পরে একীভূত করে নেয়। যদিও ওল্ড সিটিসহ পূর্ব জেরুজালেমের ওপর ইসরায়েলের অবৈধ দখল আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

জেরুজালেমের মালিকানা এবং ভৌগোলিক ও জনসংখ্যা তাত্ত্বিক অবস্থার পরিবর্তনে ইসরায়েলের অপচেষ্টাকে বিশ্বের কোনো দেশ এখনও স্বীকৃতি দেয়নি। প্রায় চার লাখ ফিলিস্তিনির জেরুজালেমে স্থায়ী বসবাসের মর্যাদা রয়েছে তারা সেখানে জন্ম নিলেও তাদের নাগরিকত্ব নেই। অথচ ইহুদিদের ক্ষেত্রে এর উল্টো নিয়ম।

১৯৬৭ সাল থেকে নানা শর্ত ও অজুহাতজুড়ে দিয়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের জেরুজালেম ছাড়া করে। ইসরায়েল নগরীতে ১২টি সুরক্ষিত ইহুদি বসতি গড়ে তুলেছে। তাতে ২ লাখ ইহুদি বসবাস করে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর নির্মাণের কোনো অনুমতি দেয় না এবং অবৈধভাবে তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করছে।

১৯৬৭ সালে জর্ডান ও ইসরায়েল এ মর্মে চুক্তিবদ্ধ হয় যে, কম্পাউন্ডের অভ্যন্তরের সব কিছু দেখভাল করবে ওয়াকফ বা ইসলামি ট্রাস্ট। আর ইসরায়েল এটির বাইরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। অমুসলিমরা শুধু পরিদর্শনে যেতে পারবেন। তবে সেখানে প্রার্থনা করতে পারবেন না। প্রার্থনা করার অনুমতি কেবল মুসলিমদের।

আল আকসা ফিলিস্তিনের ছোট্ট একটি অংশ, কিন্তু এটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধের প্রতীক। মসজিদ মুসলমানদের কাছে অতি পবিত্র স্থান এবং বিশেষ করে আল আকসা। এমনকি আল আকসার পবিত্রতা ক্ষুন্ন করার ইহুদি তৎপরতার বিরুদ্ধে সেখানকার খ্রিস্টানরাও প্রতিবাদ জানায়; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই স্থাপনার মর্যাদা ক্ষুন্ন করার চেষ্টাকে মুসলিমরা তাদের প্রতি ইসরায়েল সরকারের অব্যাহত অবিচার ও নিপীড়নের প্রতীক বলে বিবেচনা করেন।

   

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহর তায়ালার প্রিয় বান্দা হওয়ার মাধ্যম হলো তার মহান হুকমগুলো পালন করা। তার হুকুমগুলোর মধ্যে থেকে অন্যতম হুকুম হলো নামাজ। আর এই নামাজের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর প্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে নফল নামাজ বান্দাকে আল্লাহর এতটা প্রিয় করে তোলে যে, সে যখন আল্লাহর কাছে কিছু চাই তখন মহান আল্লাহ তাকে ফিরিয়ে দেন না। বরং তার চাওয়াকে পাওয়াতে রুপান্তরিত করে দেন ।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব।

আমি যা কিছু আমার বান্দার ওপর ফরজ করেছি, তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে।

আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চাই, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই।

আমি কোনো কাজ করতে চাইলে তা করতে কোনো দ্বিধা করি না, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপছন্দ করি। (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)

তাই যেকোনো সংকটপূর্ণ অবস্থায় কিংবা যেকোনো প্রয়োজনীয় মুহূর্তে নফল নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমাদের জন্য উচিত হলো, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারই কাছে ফেরা। তাতে মহান রবের ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জন হবে ইনশাআল্লাহ ।

খুব গুরুত্ব সহকারে ফরজ ও সুন্নত নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ আদায় করা। আর নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ (নফল) নামাজ আদায় করাকে সর্বোত্তম আমল বলে আখ্যা দিয়েছেন।

আবদুল্লাহ ইবনু হুবশী আল-খাস’আমী রা. সূত্রে বর্ণিত। একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সর্বোত্তম কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৪৯)

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর হুকুমগুলো আদায়ের মাধ্যমে, তাঁর প্রিয় বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন আমিন।

;

হজ ফ্লাইট শুরু ৯ মে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ ফ্লাইট আগামী ৯ মে থেকে শুরু হবে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি ফ্লাইট শিডিউল।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান এতথ্য জানান।

তিনি বলেন, আগামী ৯ মে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। দ্রুতই যাত্রীদের ফ্লাইট শিডিউল জানানো হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এক লাখ ১৯ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রীকে বহন করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া) ও সৌদির বেসরকারি এয়ারলাইন্স ফ্লাইনাস মোট ৩৩৫ হজ ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা করে। চুক্তি অনুযায়ী, মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বাকি অর্ধেক বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ার। এবারও এই তিন এয়ারলাইনস হজযাত্রীদের বহন করবে।

চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করেছিল সৌদি আরব। কিন্তু কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে গাইড ও মোনাজ্জেমসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন।

এদিকে, পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

;

দারিদ্র্য বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দারিদ্রতা বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল

দারিদ্রতা বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল

  • Font increase
  • Font Decrease

একবার একজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া আমার প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে। ইরশাদ করলেন: তোমার কি ঐ তাসবিহ স্মরণ নেই, যে তাসবিহ ফেরেশতা এবং মাখলুকের, যার বরকতে রুজি প্রদান করা হয়। যখন সুবহে সাদিক উদিত (শুরু) হয় তখন এ তাসবীহ ১০০ বার পাঠ কর:

তাসবিহটি হলো : সুবহানাল্লাহি অ-বিহামদিহি,সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযিম, অ-বিহামদিহি আস্তাগফিরুল্লাহ।

অর্থ: মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য; মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি সমুচ্চ, মহান; এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।

যদি তুমি এই তাসবিহটি ১০০ বার পড়, তাহলে দুনিয়া তোমার নিকট অপমানিত হয়ে আসবে। ঐ সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু চলে গেলেন। কিছুদিন পর পুনরায় হাজির হয়ে, আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! দুনিয়া আমার নিকট এত বেশি আসছে, আমি হতবাক! কোথায় যাব, কোথায় রাখব! (সূত্র: আল খাছায়িছুল কুবরা, ২য় খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)

এই তাসবিহটি যথাসম্ভব সুবহে সাদিক (শুরু) হওয়ার সাথে সাথে পাঠ করা নতুবা ফজরের, জামাআত যদি শুরু হয়ে যায় তবে জামাআতে শরীক হয়ে যাবে এবং পরে সংখ্যা পূর্ণ করে নিবে। আর যদি নামাযের পূর্বে কোনো কারনে তা পাঠ করতে না পারে বা পাঠ করতে ভুলে যায়,তাহলে সূর্য উদিত হওয়ার আগে আগেই তা পাঠ করে নিতে হবে। (সুত্র: মলফুজাতে আ’লা হযরত, ১২৮ পৃষ্ঠা)

উক্ত তাসবীহ পাঠ করার সাথে সাথে সকাল সন্ধ্যায় তিনবার এই আয়াতটিও পাঠ করতে পারেন।

উচ্চারণ: ওয়া মাই-ইয়াত্তাকিল্লাহা ইয়াজ আল্লাহু মাখরাজা। ওয়া ইয়ারযুকহু মিন হাইসু লা ইয়াহ তাসিব।ওয়া মান ইয়া তা ওয়াক্কাল আলাল্লাহি ফাহু ওয়া হাসবুহু ইন্নাল্লাহা বালিগু আমরিহি কাদযায়াল্লাহু লিকুল্লি শাইয়িন কাদরা।

অর্থ: আর যে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য (সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার) কোন না কোন পথ বের করে দিবেন। এবং তাকে ওই স্থান থেকে জীবিকা দেবেন, যেখানে তার কল্পনাও থাকে না এবং যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তবে তিনি তার জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয় আল্লাহ তার কাজ পরিপূর্ণকারী। নিশ্চয় আল্লাহ তায়াল প্রত্যেক বস্তুর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখেছেন। (সূরা-ত্বালাক, আয়াত - ১, ২)

দারিদ্রতা দূর করার আরো একটি আমলের কথা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সূরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দারিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হযরত ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তাঁর মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন।([বাইহাকি : শুআবুল ঈমান-২৪৯৮)

তবে একটি বিষয় আমাদেরকে অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে, দোয়া কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হল হালাল উপার্জন। হালাল উপার্জন ছাড়া দোয়া কবুল হওয়ার আশা করা বোকামি।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দারিদ্রতা বা অভাব দূর করে, সচ্ছলতাকে জীবনসঙ্গী বানিয়ে দিন আমিন।

;

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুমিন মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, তার আয়-উপার্জন, জীবন-মৃত্যু এবং সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়; যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটই পুনরুত্থান।’ -সুরা আল মুলক : ১৫

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল ও উপায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখান থেকে ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো-

তওবা-ইস্তেগফার : তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তেগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা : যেসব আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে, তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ -সুরা সাদ : ৩৫

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩৪৪

সময়মতো নামাজ আদায় এবং ইবাদতের জন্য নিজেকে মুক্ত করা : সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ -সুরা ত্বহা : ১৩২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো, আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৬৬

রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সুরা জুমা : ১০

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৮০

;