আল আকসার প্রতি ভালোবাসা ইমানের অংশ



মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম
আল আকসা কমপ্লেক্সে অবস্থিত ডোম অব রকের সোনালী গম্বুজ

আল আকসা কমপ্লেক্সে অবস্থিত ডোম অব রকের সোনালী গম্বুজ

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনে অবস্থিত বায়তুল মোকাদ্দাস বা মসজিদে আকসা মুসলমানদের প্রথম কেবলা। এটি ইসরা ও মিরাজের স্মৃতি বিজরিত পূণ্যভূমি। আল আকসার প্রতি ভালোবাসা স্থাপন ইমানের অংশ, ইবাদতের অংশ। এই মসজিদের কথা পবিত্র কোরআনে আলোচনা করা হয়েছে। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় মসজিদ। তা কোরআন মাজিদে বর্ণিত (আরদে মোকাদ্দাসসহ) বিশেষ পবিত্র জমিনে অবস্থিত। এই মসজিদের আশেপাশে অনেক নবীদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। অনেক নবী হিজরত করেছেন এই এলাকায়। এমনকি এই মসজিদে অনেক নবী ইমামতি করেছেন। বিশেষত হজরত জাকারিয়া (আ.)।

পবিত্র মেরাজের রাতে সব নবী-রাসুলদের আল্লাহতায়ালা বায়তুল মোকাদ্দাসে একত্রিত করেন কুদরতিভাবে। নবী কারিম (সা.) তখন দুই রাকাত নামাজের ইমামতি করেন।

হাশরের কেন্দ্রস্থল হবে মসজিদে আকসা ও তার আশপাশ এলাকা। এই মসজিদে প্রতি রাকাত নামাজে ২৫০ রাকাতের সওয়াব পাওয়া যায়। যেসব মসজিদে বিশেষ সওয়াবের আশায় সফর করা জায়েজ, এই মসজিদ তার একটি। এই মসজিদ ও তার চতুর্পাশ বরকতময়। এই মসজিদে দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না। এই মসজিদে নামাজ পড়লে তার গোনাহ এমনভাবে মাফ হয়, যেমন সদ্য জন্মলাভকৃত শিশু।

সেই বায়তুল মোকাদ্দাসকে বুকে ধারণ করা ফিলিস্তিন প্রায় সাত-আট দশক ধরে ইহুদিদের দ্বারা দখল হয়ে আছে। দখলদার ইসরাইলিদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে বুলেট ও মিসাইল ব্যবহার, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের কোনো তোয়াক্কা না করে দখলকৃত ভূখণ্ডে বসতি স্থাপন, ফিলিস্তিনিদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ, ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ও ক্ষেত-খামার ধ্বংস করা, জাতিসঙ্ঘের অনেক সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ধারাবাহিক উপেক্ষা, ইত্যাদি ঘটনা ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভকে উসকে দিয়েছে। ফলে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসসহ অন্যান্য সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ সশস্ত্র প্রতিরোধের রূপ নেয়। যা বর্তমানে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

অথচ এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষে দেওয়া প্রস্তাবে আরব পিস ইনিশিয়েটিভ (এপিআই) বা সৌদি ইনিশিয়েটিভ হতে পারে একমাত্র সমাধানের উপায়। এটি মূলত আরব-ইসরায়েল সংঘাত বন্ধ করতে তৎকালীন সৌদি যুবরাজ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ কর্তৃক উত্থাপিত কিছু দাবি। ২০০২ সালের ২৭-২৮ মার্চ লেবাননের রাজধানী বৈরুতে আরব লিগের ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনে এর অনুমোদন দেওয়া হয়। শীর্ষ সম্মেলনের পর অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ‘আরব পিস ইনিশিয়েটিভ’ শিরোনামে আরব লিগের তৎকালীন মহাসচিব আমর মুসা তা পাঠ করে শোনান।

পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, গোলান ভূমি ও লেবাননের ভূমিসহ ইসরায়েল কর্তৃক দখলকৃত স্থান পুরোপুরি প্রত্যাহার, জাতিসংঘের ১৯৪তম ধারা মতে ফিলিস্তিন শরণার্থী সমস্যার ‘ন্যায্য নিষ্পত্তি’ ও পশ্চিম জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করাই পিস ইনিশিয়েটিভের মূলকথা। দাবিগুলো পূরণ হলে আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের স্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরিতে আর কোনো বাধা থাকবে না বলে তাতে মন্তব্য করা হয়। তবে ইসরায়েলকে ১৯৬৭ সালের সীমানায় ফিরতে বলায় তৎকালীন ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারন উদ্যোগটিকে ‘নন স্টার্টার’ অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করেন। ২০০৭ সালে আরব লিগ পিস ইনিশিয়েটিভকে আবার অনুমোদন দিলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট পরিকল্পনাকে কৌশলে স্বাগত জানান।

২০০৯ সালে ইসরায়েলের প্রতি আরব রাষ্ট্রের শান্তি প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন হলে আনন্দ প্রকাশ করেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজ। তখন তিনি এ কথাও বলেন, ‘এই ইনিশিয়েটিভ প্রস্তুতকালে ইসরায়েল এর অংশীদার ছিল না। তাই এর সব শব্দের সঙ্গে একমত পোষণ আবশ্যক নয়।’

দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফা শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের জানাজায় শোকার্তদের ভিড় 

 

২০১৫ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু উদ্যোগকে সমর্থন করলেও ২০১৮ সালে ফিলিস্তিনের সঙ্গে ভবিষ্যৎ আলোচনার ভিত্তি হিসেবে এটিকে প্রত্যাখ্যান করেন।

ফিলিস্তিনের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের পর মাহমুদ আব্বাসও এটি সমর্থন করেন। ফিলিস্তিনের হামাসসহ অনেক দল ইনিশিয়েটিভ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। পরবর্তী সময়ে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৫৭টি রাষ্ট্র এবং বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রপ্রধান এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও তা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। বেশ কিছু দিন আগে ইসরায়েলের সঙ্গে আরব আমিরাতের স্বাভাবিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে আরব পিস ইনিশিয়েটিভের আলোকে ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। এর পর থেকে আবারও তা মুসলিম বিশ্বের আলোচনায় আসে। নিম্নে আরব পিস ইনিশিয়েটিভের মূলকথা তুলে ধরা হলো।

কাউন্সিল অব দ্য লিগ অব আরব স্টেটের ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনের সাধারণ অধিবেশনে উত্থাপিত ‘আরব পিস ইনিশিয়েটিভ’-এ বলা হয়, ১৯৯৬ সালের জুন মাসে কায়রোতে অনুষ্ঠিত আরব শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরব রাষ্ট্রের কৌশলগত বিকল্প হিসেবে পুনর্বিবেচনা করা হয়। আর তা আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে বাস্তবায়ন সম্ভব। এতে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা থাকতে হবে।

সৌদি আরবের যুবরাজ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ কর্তৃক উত্থাপিত ‘আরব পিস ইনিশিয়েটিভ’ বা শান্তি উদ্যোগে ১৯৬৭ সালের জুন মাস থেকে ইসরায়েল কর্তৃক দখলকৃত আরব ভূমি পুরোপুরি প্রত্যাহারের কথা বলা হয়। যা ১৯৯১ সালের মাদ্রিদ সম্মেলনে অনুমোদিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ ও ৩৩৮ ধারা বাস্তবায়ন ও শান্তির বিনিময়ে ভূমি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, পশ্চিম জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে ইসরায়েলের স্বীকৃতিদানের বিনিময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যাপক শান্তিপূর্ণ স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে।

মোটকথা, সংঘাতের মাধ্যমে সামরিক সমাধান কখনো শান্তি বয়ে আনবে না কিংবা কোনো পক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করার বিষয়ে আরব রাষ্ট্রগুলোর একাত্মতা পোষণ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই অধিবেশন প্রত্যাশা করে-

এক. ইসরায়েল যেন নিজেদের নীতিগুলো পুনর্বিবেচনা করে এবং এ ঘোষণা দেয় যে ন্যায়সংগত শান্তি তাদের কৌশলগত বিকল্প নীতি।

দুই. ইসরায়েলের প্রতি আরো অনুরোধ থাকবে- ক. তারা যেন ১৯৬৭ সালের ৪ জুন থেকে সিরিয়ার গোলান ভূমিসহ ’৬৭ সালের পর থেকে দখলকৃত ভূমি পুরোপুরি প্রত্যাহার করবে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দখলকৃত ভূমিও এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে, খ. ফিলিস্তিন শরণার্থী সমস্যার ন্যায্য সমাধান করতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ১৯৪তম ধারার প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করতে হবে, গ. ১৯৬৭ সালের ৪ জুন থেকে ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকায় পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিন. ওপরের দাবিগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আরব রাষ্ট্রগুলো নিম্নের বিষয়াবলি নিশ্চিত করবে- ক. আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পরিসমাপ্তি এবং এই অঞ্চলের সব রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে আরব রাষ্ট্রগুলো শান্তিচুক্তি সম্পাদন করবে, খ. সর্বাঙ্গীণ শান্তির প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে।

চার. আয়োজক আরব রাষ্ট্রগুলোর বিশেষ পরিস্থিতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক ফিলিস্তিনের সব ধরনের জাতীয়তাবোধ প্রত্যাখ্যানের নিশ্চয়তা প্রদান করবে।

পাঁচ. শান্তির সম্ভাব্য পথ অবলম্বনে রক্তপাত বন্ধে করতে ইসরায়েল সরকার ও ইসরায়েলবাসীকে কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগটি গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়। এতে আরব রাষ্ট্রগুলো ও ইসরায়েল নিরাপদে ও উত্তম প্রতিবেশী হয়ে বসবাস করতে পারবে এবং পরবর্তী প্রজম্মকে নিরাপদ, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ প্রদান করতে পারবে।

ছয়. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সব রাষ্ট্র ও সংস্থাকে এই উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানাতে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

সাত. এই শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতির কাছে আবেদন করা হয়, যেন তিনি আগ্রহী সদস্য রাষ্ট্র ও আরব লিগ মহাসচিবের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেন, যারা জাতিসংঘ, নিরাপত্তা পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র, রুশ ফেডারেশন, মুসলিম রাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ অন্যদের কাছ থেকে এই উদ্যোগের সব রকম সমর্থন আদায়ে জরুরি যোগাযোগ সম্পন্ন করবে।

   

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর, ছবি : সংগৃহীত

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় নির্মিত মসজিদে নূর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। নান্দনিক সৌন্দর্যের এ মসজিদটি কাছে টানছে দর্শনার্থীদের। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মুসল্লিরা আসেন এখানে নামাজ আদায় করতে।

শতবর্ষের পুরোনো কোনো মসজিদ না হলেও এর সৌন্দর্যের কথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মসজিদটিতে আসা মুসুল্লিদের দাবি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগে এমন সুন্দর নান্দনিক মসজিদ আর নেই।

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর

মসজিদের দায়িত্বে থাকা ইমাম জানান, মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মসজিদের কাঠামো। যা দেশের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।

জানা গেছে, হজে যাওয়ার পর মদিনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মসজিদটি নির্মাণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক চিশতী (ওরফে বাবুল চিশতী)। তিন দরজাবিশিষ্ট মসজিদের ছাদের মাঝখানে আছে বড় একটি গম্বুজ। যার ভেতরের অংশেও আছে সুন্দর নকশার সমাহার। আর চারপাশে পিলারের ওপর নির্মিত হয়েছে সাতটি গম্বুজসহ চারটি বড় মিনার। মসজিদটির সৌন্দর্য দেখতে প্রায় প্রতিদিনই দেখতে দূরদূরান্ত থেকে আসেন দর্শনার্থীরা।

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর

বকশীগঞ্জের শহরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে এই মসজিদটি। পৌরসভার দড়িপাড়ায় ব্যক্তিগত অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে নান্দনিক সৌন্দর্য ভরা মসজিদে নূর। তুরস্কের আদলে তৈরি করা মসজিদটি দ্বিতলবিশিষ্ট ও সম্পূর্ণ কারুকার্যমণ্ডিত। এই মসজিদে দুই হাজার ৫০০ মুসুল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

শেরপুর থেকে শাউন মোল্লা নামের এক দর্শনার্থী পরিবারকে নিয়ে এই মসজিদ দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, আমার অনেক বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশী এই মসজিদ সম্পর্কে বলেছে। আসবো আসবো করে আসা হয় না। এবা সুযোগ বের করে পরিবার নিয়ে এসেছি, নামাজও পরলাম।

সৌন্দর্য ছড়ানো জামালপুরের মসজিদে নূর

স্থানীয় বাসিন্দা লাভলু মণ্ডল জানান, মাহবুবল হক চিশতী অনেক সময় ধরে এই মসজিদ তৈরি করেছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে মসজিদ তৈরির উপকরণ নিয়ে আসা হয়েছে।

মসজিদের মোয়াজ্জিন মো. মিজানুর রহমান বলেন, এই মসজিদের মূল ক্যাম্পাসের পবিত্রতা রক্ষার জন্য চারপাশে আছে দেয়াল। আঙিনাজুড়ে রয়েছে সারিবদ্ধ ঝাউ গাছ। ফুলের বাগানে ঘেরা এই মসজিদের পাশে বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, মাদরাসাসহ দৃষ্টিনন্দন একটি অজুখানা রয়েছে। অজুখানাটিও দেখতে বেশ সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন।

মসজিদের নূরের ইমাম মো. বেলাল হোসেন বলেন, পাঁচ একর জায়গাজুড়ে এই মসজিদে ২০১৮ সালের ১১ মে প্রথম জুমার নামাজের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নামাজ আদায় করা শুরু হয়।

;

গরমে কোরবানির পশু নিয়েও ভাবতে হবে



সাকী মাহবুব, অতিথি লেখক, ইসলাম
পশুর খামার, ছবি : সংগৃহীত

পশুর খামার, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানিতে পশু লাগতে পারে এক কোটি ত্রিশ লাখের মতো। অন্যদিকে এবার চাহিদার অতিরিক্ত পশু রয়েছে ত্রিশ লাখ। কাজেই কোরবানিতে পশুর কোনো অভাব হবে না। অতএব কোরবানির পশু নিয়ে দুর্ভাবনার কোনো কারণ নেই।

কিন্তু চলমান তাপপ্রবাহের প্রভাবে খামারিদের গরু-ছাগলের প্রাণহানি কিংবা ওজন কমে যাওয়ার বিষয়টিকে নিছক গোষ্ঠীবিশেষের বিড়ম্বনারূপে দেখার সুযোগে নেই। যখন খামারিরা আসন্ন কোরবানির জন্য তাদের পশু প্রস্তুত করছেন, তখন এরূপ ক্ষয়ক্ষতির জেরে ভোক্তাসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি আক্রান্ত হতে বাধ্য।

সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, গরুকে বারবার গোসল করিয়ে, টিনের চালে পাটের ভিজা বস্তা বিছিয়ে, স্যালাইন ও গ্লুকোজ খাইয়ে এবং বৈদ্যুতিক পাখা চালিয়েও পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ খামারিরা। এ রকম দুর্দিনে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর শুধু পরামর্শ দিয়ে দায় সারতে পারে না।

রিপোর্টে প্রকাশ, গরমে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে দুগ্ধ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। আসলে সারাদেশের চিত্র এমনই হতাশাজনক। তাপপ্রবাহে পশুর নানাবিধ সমস্যার সঙ্গে দুধের উৎপাদন ব্যাহত হবার মাধ্যমেও খামারিদের সংকটের অবস্থা স্পষ্ট। বিশেষত ঈদুল আজহায় নিজস্ব পশু দিয়ে কোরবানি করার যে সক্ষমতা দেশ অর্জন করেছে, সেখানে তাপপ্রবাহের চোখ রাঙানি লক্ষণীয়। যেহেতু খামারিদের হাতে সময় কম, সেহেতু তাদের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে তাপপ্রবাহসৃষ্ট ক্ষতিরোধ করা সম্ভব।

খবরে আরও বলা হয়েছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে কোরবানির গরু-ছাগল অজ্ঞাত নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও কাঁপুনির লক্ষণ স্পষ্ট হওয়ার পর পশুগুলো ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করার কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মারাও যাচ্ছে। অনেক খামারি গরু-ছাগল আক্রান্ত হওয়ায় লোকসানে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এমন বিপদে খামারিদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো প্রয়োজন। এ সময় যেখানে আক্রান্ত পশুগুলোর চিকিৎসা বিনামূল্যে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, সেখানে উল্টো খামারিরা অভিযোগ করেছেন, আগে গরু অসুস্থ হলে ভেটেরিনারি চিকিৎসক মোটরসাইকেলে খামারে আসতেন। তাকে তখন যত অর্থ দিতে হতো, এখন ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকের বড় গাড়ি আসার কারণে কয়েক গুণ ফি পরিশোধ করতে হয়। এ চিত্র কেবল হতাশাজনক নয়; বরং নিকৃষ্ট উদাহরণ।

পরিস্থিতির আলোকে আধুনিক খামারিরা পূর্বপ্রস্তুতি নিতে সক্ষম হলেও প্রান্তিক খামারি অধিকাংশই জানেন না, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কী করতে হবে। তাই খামারিদের ক্ষতি পোষানো, আক্রান্ত পশুর চিকিৎসা প্রদানসহ দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়াতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরকেই সবার আগে তৎপর হতে হবে। গবাদি পশু রক্ষা করতে পরিস্থিতির আলোকে পদক্ষেপ নিতে সচেতনতা বৃদ্ধির বার্তা খামারিদের কাছে পৌঁছাতে হবে।

চলমান তাপপ্রবাহে আক্রান্ত পশুর দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ সংকটকালীন বিনামূল্যে চিকিৎসার বিষয় বিবেচনাযোগ্য। খামারিদের সহায়তায় বেসরকারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয়রাও পাশে দাঁড়ালে সংকট দূর হবে এবং কোরবানির সক্ষমতায় কোনো ছেদ পড়বে না। বিষয়টি সবাইকে ভাবতে হবে।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব যেসব পদক্ষেপ নিল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুধুমাত্র হজ ভিসায়ই পবিত্র হজপালন করা যাবে, এছাড়া হজযাত্রীদের মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সেই সঙ্গে নিবন্ধন ও যথাযথ অনুমতি ছাড়া কেউ মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না। সুষ্ঠুভাবে হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে নতুন ব্যবস্থাপনার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। নতুন এসব বিধান-প্রবিধানের মাধ্যমে পবিত্র স্থানগুলোতে হজযাত্রীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও তাদের নিরাপত্তা সুসংহত করাই কর্তৃপক্ষের মূল উদ্দেশ্য।

শনিবার (৪ মে) সৌদি আরবের জেনারেল ডিরেক্টরেট অফ পাবলিক সিকিউরিটির এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রিবিহীন হজপালন কমাতে মক্কায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক সৌদি নাগরিকদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি গ্রহণ বাধ্যতামূলক। আইনটি শনিবার (৪ মে) থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।

বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয়েছে, মক্কার প্রবেশপথে থাকা চেকপয়েন্টগুলোতে সৌদি নিরাপত্তা কর্মীরা যথাযথ অনুমতি ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না। শুধুমাত্র হজ ও উমরার ভিসাধারী, আবাসিক বাসিন্দা এবং ওয়ার্ক পারমিটধারীরা মক্কায় প্রবেশ করতে পারেবেন।

উমরা ভিসায় হজ করা যাবে না
উমরা ভিসায় হজ করা যাবে না মর্মে আইন পাস করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় বলেছে, উমরা ভিসায় হজ করা যাবে না। বরং হজের জন্য আলাদা ভিসা করতে হবে। এ ছাড়া টুরিস্ট ভিসা, ট্রানজিট ভিসায়ও হজপালন করা যাবে না- মর্মে জানানো হয়েছে।

ইসলামিক ইনফরমেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাদের উমরার ভিসা রয়েছে, তাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। উমরার ভিসায় হজযাত্রীরা হজ করতে পারবেন না। তাদের অবশ্যই আলাদাভাবে হজের ভিসা গ্রহণ হবে।

সৌদি আরবে যারা আছেন তাদেরও হজপালনের অনুমতি নিতে হবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি
সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণলয় হজ ২০২৪-এর জন্য স্বাস্থ্যবিধি জারি করেছে। সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজযাত্রীদের অবশ্যই হজ পারমিট নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য তারা নুসুক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারবে। বৈধ হজযাত্রার জন্য তা অপরিহার্য। একইসঙ্গে হজযাত্রীদের সেহাত অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। সৌদি বাসিন্দাদের গত পাঁচ বছরের মধ্যে কোভিড-১৯, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং মেনিনজাইটিস ভ্যাকসিন দিতে হবে।

বিধিতে আরও বলা হয়, স্থানীয় হজযাত্রী ছাড়া অন্যদের নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। সেজন্য মক্কা পৌঁছানোর কমপক্ষে ১০ দিন আগে ওই ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করা উচিত।

সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, প্রত্যেক হজযাত্রীকে নিজ দেশ থেকে একটি স্বাস্থ্য শংসাপত্র আনতে হবে। এর মাধ্যমে হজযাত্রী সংক্রামক রোগ থেকে মুক্ত কিনা, তা যাচাই করা হবে।

সিনিয়র স্কলার কাউন্সিল জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নতুন ব্যবস্থাপনা হজের আয়োজনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে। কর্তৃপক্ষ এর মাধ্যমে হজযাত্রীদের জন্য পরিষেবা উন্নত করবে। সবার জন্য একটি নিরাপদ ও অর্থবহ হজ নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য।

উল্লেখ্য, আগামী ৯ (১১ জিলকদ) থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৪ জুন পবিত্র হজের কার্যক্রম শুরু হবে।

;

বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি, ছবি : সংগৃহীত

বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঘৃণা ও বৈষম্যের ক্রমবর্ধমান ঘটনার মধ্যে বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের ও মুসলমান বলে মনে করা লোকদের রক্ষা করতে জার্মান সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। জার্মানি মুসলিমবিরোধী অপরাধের কার্যকর নীতিমালা নেই। সরকারের নেই কোনো নজরদারি ও তথ্য। এর ফলে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পেতে আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপে বর্ণবাদের ওপর গবেষক আলমাজ টেফেরা বলেছেন, মুসলিমদের ঘৃণা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা করতে জার্মান সরকারের ব্যর্থতার কারণ মুসলিমদের ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা।

মুসলমানরা কী কারণে বর্ণবাদ অনুভব করছে যা শুধু কেবল বিশ্বাসভিত্তিক শত্রুতা নয়। জার্মানিতে মুসলিমবিরোধী ঘৃণা, বৈষম্য, বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনা এবং মুসলিমদের ডাটা সম্পর্কে স্পষ্ট বোঝাপোড়া ছাড়া জার্মান কর্তৃপক্ষের যেকোনো প্রচেষ্টা অকার্যকর হবে।

২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৯ মাসে মুসলিম ঘৃণামূলক অপরাধের পরিসংখ্যানে ৬৮৬টি ‘ইসলামবিরোধী’ অপরাধ গণনা করা হয়েছে। ২০২২ সালে ১২ মাসে তা ছিল ৬১০টি।

২০২৪ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সঙ্কট সৃষ্টি হলে অক্টোবর থেকে মুসলিম বিরোধী ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে জার্মান নাগরিক সমাজের দলগুলো।

জার্মানিতে বাস করা প্রায় ৫৫ লাখ মুসলমানের অনেকেই বলছেন, তারা প্রতিদিন ইসলামবিদ্বেষের মুখোমুখি হন৷ যদিও জার্মানির সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা দেওয়া আছে৷

জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিমের মহাসচিব আব্দুস সামাদ আল ইয়াজিদি বলছেন, ইসলামবিদ্বেষ বিষয়টি জার্মান সমাজের মূলধারায় ঢুকে গেছে৷ অর্থাৎ এটি অনেকটা গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে, যা প্রকাশ্যে প্রকাশ করা যায় বলে মনে করেন তিনি৷

তিনি জার্মানিতে মুসলমানদের বিষয় দেখাশোনা করার জন্য একজন কমিশনার নিয়োগ দিতে জার্মানির কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷

;