মুমিনের বাসাবাড়ি যেমন হবে



মাওলানা আবদুল আলিম, অতিথি লেখক, ইসলাম
একজন মুমিনের ঘরে অবশ্যই শরিয়ত পালনের পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে

একজন মুমিনের ঘরে অবশ্যই শরিয়ত পালনের পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে

  • Font increase
  • Font Decrease

একজন মুমিনের বাসাবাড়িতে ইবাদত, জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত থেকে শুরু করে ইবাদত-বন্দেগি পালনের আদর্শ-পরিবেশ থাকবে। কেননা, জিকির থেকে বিমুখ বাসাবাড়িকে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে আল্লাহর জিকির করে আর যে জিকির করে না, উভয়ের উদাহরণ মৃত ও জীবন্ত মানুষের মতো।’ -সহিহ বোখারি : ৬৪০৭

অর্থাৎ যারা আল্লাহর জিকির করে তারা জীবিত আর যারা আল্লাহর জিকির করে না তারা মৃতের মতো। কেননা যারা জীবিত তাদের সব কার্যকলাপ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্যই হয়, পক্ষান্তরে যারা মৃত তারা কোনো কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। সুতরাং জীবিত থেকেও আল্লাহর জিকির করেন না তারা মৃতের মতো।

পর্দা ও লজ্জাশীলতার পরিবেশ
একজন মুমিনের ঘরে অবশ্যই শরিয়ত পালনের পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে। বিশেষভাবে নামাজ ও হিজাবের উপযোগী পরিবেশ থাকতে হবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার স্মরণার্থে নামাজ কায়েম করো।’ -সুরা ত্বহা : ১৪

অনুরূপভাবে একজন মুমিনের ঘরে পর্দা ও লজ্জাশীলতার পরিবেশ থাকবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ -সুরা আহজাব : ৫৯

হিজাব পালনের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- নারীরা যথাসম্ভব ঘরে থাকবে। বিশেষ প্রয়োজনে বের হতে হলে শরীর ও সৌন্দর্য জিলবাব দ্বারা এমনভাবে ঢেকে রাখবে যাতে কোনোভাবেই পরপুরুষের সামনে প্রকাশ না পায়।

বাড়িতে দ্বীনি তালিমের ব্যবস্থা
একজন মুমিনের বাড়িতে দ্বীনি তালিম তথা কোরআন–সুন্নাহ, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা–মানহাজ, আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সিরাতসহ অন্যান্য জরুরিয়াতে দ্বীনের শিক্ষাদানের পরিবেশ বিদ্যমান থাকবে। যেহেতু মানুষের প্রাথমিক শিক্ষাগার ও প্রশিক্ষণ স্থান হলো ঘর। তাই পিতামাতা যাতে সন্তানদের এবং স্বামী যাতে স্ত্রীকে হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে শেখায় এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে, ইসলাম সেদিকে তাদের দৃষ্টি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।’ -সুরা তাহরিম : ৬

বর্ণিত আয়াতের অর্থ হজরত আলী (রা.) এভাবে করেছেন, ‘তোমরা নিজেরা শেখো এবং পরিবারবর্গকে শেখাও সমস্ত কল্যাণময় রীতিনীতি এবং তাদের আদব শিক্ষা দাও এবং এসব কাজে অভ্যস্ত করে তোল।’ -আল্লামা শাওকানি, ফাতহুল কাদির : ৫/২৪৬

মেহমানদের যত্ন করা
মানুষ থাকলে তার আত্মীয়-স্বজন থাকবে। বাড়িতে মেহমানও আসবে। তাই মেহমানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহে রাখা জরুরি। প্রকৃত মুমিনের বাড়িতে অবশ্যই মেহমানদারির ব্যবস্থা থাকবে। সেই সঙ্গে আরেকটা বিষয়ের প্রতি তাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, তার দ্বারা তার প্রতিবেশিরা যেন কষ্ট না পায়। কেননা, হজরত রাসুলুল্লাহ (সাল.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানের সম্মান করে। -সহিহ বোখারি : ৬০১৮

ঘর একটু বড় হওয়া
মুমিনের বসবাসের ঘর প্রশস্ত ও বড়োসড়ো হওয়া উচিত। তবে অবশ্যই তা সামর্থানুপাতে হবে। কারণ তাতে ইবাদতের জায়গা, হিজাবের সুব্যবস্থা ও মেহমানদারীর সুযোগ থাকতে হবে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সৌভাগ্যের বিষয় চারটি- সতীসাধ্বী স্ত্রী, প্রশস্ত বাড়ি, সৎকর্মশীল প্রতিবেশী ও আরামদায়ক বাহন।’ -সহিহ আত তারগিব : ২/৬৮৮

ঘর নির্মাণে প্রতিযোগিতা ও অহংকার না করা
একজন মুমিন বাসাবাড়ি নির্মাণে অবশ্যই প্রতিযোগিতা ও অহংকার পরিহার করবে। বাড়িঘর, অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা কাম্য নয়। হজরত জিবরাইল (আ.) কেয়ামতের আলামত সম্পর্কে প্রশ্ন করলে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘দাসী তার আপন মুনিবকে প্রসব করবে, তুমি আরো দেখতে পাবে- নগ্নপদ বিবস্ত্র হতদরিদ্র মেষ রাখালেরা বড় বড় দালান-কোঠা নিয়ে গর্ব ও অহংকার করবে।’ -সহিহ মুসলিম : ৮

বিসমিল্লাহ বলে প্রবেশ করা
মুমিনের বৈশিষ্ট্য হলো, বাড়িতে প্রবেশের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। কেননা, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশকালে ও খাবার গ্রহণকালে আল্লাহর নাম স্মরণ করলে শয়তান (তার সঙ্গীদের) বলে, তোমাদের রাত্রি যাপন ও রাতের আহারের কোনো ব্যবস্থা (এ ঘরে) হলো না; কিন্তু কোনো ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশকালে আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়তান বলে, তোমরা রাত্রি যাপনের জায়গা পেয়ে গেলে। আহারের সময় আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়তান বলে, তোমাদের রাতের আহার ও শয্যা গ্রহণের ব্যবস্থা হয়ে গেল।’ -সহিহ মুসলিম : ২০১৮

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহর জিকির করে আর যে জিকির করে না, উভয়ের উদাহরণ মৃত ও জীবন্ত মানুষের মতো

 বাসা থেকে বের হওয়ার সময়ও বিসমিল্লাহ বলা
একজন মুমিন ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ও ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে। কেননা, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যদি কেউ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে, বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’, তবে তাকে বলা হয়- তুমি হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়েছো, (আল্লাহতায়ালা) তোমার জন্য যথেষ্ট, তুমি হেফাজত অবলম্বন করেছো (অনিষ্ট থেকে)। তাতে শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায়। -সুনানে তিরমিজি : ৩৪২৬

ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দেওয়া
একজন মুমিন ঘরে প্রবেশকালে সালাম দেবে। কেননা, সালাম দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তবে যখন তোমরা কোনো ঘরে প্রবেশ করবে তখন তোমরা পরস্পরের প্রতি সালাম করবে অভিবাদনস্বরূপ যা আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্ৰ।’ -সুরা আন নুর : ৬১

এই আয়াতের আলোকে, নিজ ঘরে অন্যের ঘরে প্রবেশের কিছু আদব বর্ণনা করা হয়েছে। তা হলো- ঘরে প্রবেশের সময় বাড়ির লোকদেরকে সালাম দেওয়া। মানুষ নিজের স্ত্রী-সন্তানদেরকে সালাম দেওয়াকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে। কিন্তু ইমানদার ব্যক্তির জন্য জরুরি আল্লাহর আদেশ পালন করে সালাম দেওয়া। নিজের স্ত্রী-সন্তানদের শান্তির দোয়া দেওয়া থেকে কেন বঞ্চিত রাখা হবে?

রাতে ও সন্ধ্যায় বাসায় এই বিষয়গুলো পালন করা
একজন মুমিন শয্যা গ্রহণের সময় দরজা বন্ধ করবে, আগুন (চুলা) নিভিয়ে নিবে ও খাবার পাত্র ঢেকে রাখবে। ঘুমানোর আগে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এ জাতীয় কিছু কাজ করতে বলেছেন, প্রত্যেক পরিবারের জন্য তা মেনে চলা জরুরি। কেননা এতে বহু উপকারিতা রয়েছে।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন সন্ধ্যা হয়, তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকে রাখো। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু অংশ অতিক্রম করলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পারো। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে, কমপক্ষে পাত্রগুলোর ওপর কোনো বস্তু আড়াআড়ি করে রেখে দিয়ো। আর (শয্যা গ্রহণের সময়) তোমরা তোমাদের প্রদীপগুলো নিভিয়ে দেবে।’ -সহিহ বোখারি : ৫৬২৩

   

দোষীদের শাস্তি না হলে কওমি মাদ্রাসা ধ্বংস হয়ে যাবে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের জরুরি বৈঠক, ছবি : সংগৃহীত

আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের জরুরি বৈঠক, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মাদ্রাসার দায়িত্ব থেকে কাউকে বহিষ্কারের জন্য নৈতিক স্খলন, আর্থিক কেলেঙ্কারি ও যোগ্যতার অভাব থাকতে হয়। কিন্তু মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযার অপরাধ কী? আমরা এখানে মাওলানা ওবায়দুল্লাহর পক্ষে কথা বলতে আসিনি, আমি মজলুমের পক্ষে এসেছি। দোষীদের শাস্তি না হলে কওমি মাদ্রাসাসমূহ ধ্বংস হয়ে যাবে। পটিয়া মাদ্রাসার ঘটনা কোনো মতানৈক্য নয়, এটা হিংসুকদের হিংসা; এটা মেনে নেওয়া যায় না।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম মিয়াখান নগরস্থ জামিয়া মোজাহেরুল উলুমে আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস (বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড)-এর সাধারণ পরিষদ, মজলিসে শূরা ও পরীক্ষা কমিটির এক জরুরি যৌথ-অধিবেশনে পটিয়া মাদ্রাসার মজলিসে শূরার সদস্য ও আল্লামা সুলতান আহমদ নানুপুরী (রহ.)-এর সাহেবজাদা মাওলানা এমদাদুল্লাহ নানুপুরী এসব কথা বলেন।

বোর্ড সভাপতি, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার পৃষ্ঠপোষক ও মজলিসে শূরার সভাপতি আল্লামা সুলতান যওক নদভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন মাদ্রাসার তিন শতাধিক প্রতিনিধি, বিভিন্ন স্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, মজলিসে শূরার সদস্য ও দেশের শীর্ষ আলেমরা উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।

সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা সুলতান যওক নদভী বলেন, আমি পটিয়ার সন্তান, মুরব্বিদের সান্নিধ্য পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা ইত্তেহাদের মহাসচিব ও পটিয়া মাদ্রাসার বৈধ মুহতামিম।

সভায় উপস্থিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিগত ২৮ অক্টোবর পটিয়া মাদ্রাসায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা নজিরবিহীন, এ ঘটনা মাদ্রাসার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ভূলণ্ঠিত করেছে। মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযার বিরুদ্ধে অন্যায় হয়েছে, এর বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণে তাকে সহযোগিতা এবং মাদ্রাসার হেফাজতে সকলে কাজ করুন।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মাওলানা সগির আহমদ চৌধুরী কর্তৃক পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়। বোর্ড মহাসচিবের নির্দেশক্রমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের জরুরি যৌথ-অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধিবেশনে পটিয়া মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার নিন্দা, দোষীদের তদন্তপূর্বক শাস্তি এবং মজলিসে শূরার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

সভায় জামিয়া সিলোনিয়া ফেনীর নায়েবে মুহতামিম মুফতি আহমদুল্লাহ কাসেমী বলেন, কওমি মাদ্রাসাসমূহ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একটা দুষ্কৃতিকারী মহল উস্তাদদের সঙ্গে বেয়াদবি করে নিজেদের বিপ্লবী বলে জাহের করছে। তাদেরকে এখনই রুখে না দিলে কওমি মাদ্রাসাসমূহ ধ্বংস হয়ে যাবে। পটিয়ার ঘটনায় উস্তাদদের সঙ্গে বেয়াদবির পথ খুলে দেওয়া হয়েছে, যারা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় ইন্দন যুগিয়েছে তারা যত বড়োই হোক না কেন তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

জরুরি অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে ২৮ অক্টোবর পটিয়া মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী হামলা ও মহাপরিচালককে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনার নিন্দা জ্ঞাপন করা হয় এবং ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে গত ৩ নভেম্বর পটিয়ার ডাক বাংলোয় অনুষ্ঠিত মাদ্রাসার মজলিসে শূরার সিদ্ধান্তসমূহ অবিলম্বে বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

অধিবেশনে সিদ্ধান্ত হয়, চট্টগ্রাম শহরে অস্থায়ী কার্যালয় থেকে ইত্তেহাদের যাবতীয় কার্যক্রম চলবে, যথানিয়মে বোর্ডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং অস্থায়ী কার্যালয় নির্ধারণ ও পরীক্ষা গ্রহণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কার্যনির্বাহী পরিষদকে ক্ষমতা দেওয়া হয়।

বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযার স্বাগত বক্তব্য দিয়ে শুরু হওয়া অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন জামিয়া মোজাহের উলুমের মহাপরিচালক মাওলানা লোকমান হাকিম, ইত্তেহাদের সহ-সভাপতি ও জামিয়া পটিয়ার মজলিসে শূরার সদস্য মাওলানা মুফতি কেফায়েতুল্লাহ শফীক, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আল-মোবারক, ফেনী সিলোনিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা সাইফুদ্দীন ও জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার মজলিসে শূরার সদস্য মাওলানা এমদাদুল্লাহ নানুপুরী ও মাওলানা হাসান মুরাদাবাদী প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন ইত্তেহাদের সহ-সভাপতি মাওলানা ফুরকান উল্লাহ খলীল, মাওলানা হাফেজ সালাহুল ইসলাম, মাওলানা মুসলিম উদ্দীন, মাওলানা আফসার উদ্দীন চৌধুরী, মাওলানা মুফতি এনামুল হক, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা মুহসিন শরীফ ও মাওলানা মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

;

সম্পর্ক রক্ষা না করার পরিণাম ভয়াবহ



মুফতি আতিকুর রহমান
মানুষে মানুষে যে রক্তের বন্ধন ও আত্মার সংযোগ তা ছিন্ন করলে পরাক্রমশালী আল্লাহর অভিসম্পাত অবধারিত, ছবি : প্রতীকী

মানুষে মানুষে যে রক্তের বন্ধন ও আত্মার সংযোগ তা ছিন্ন করলে পরাক্রমশালী আল্লাহর অভিসম্পাত অবধারিত, ছবি : প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

সমাজে সম্পর্কহীনতা বাড়ছে। বাড়ছে বিচ্ছিন্নতা। মানুষ সংযোগহীন হয়ে পড়ছে আপন মানুষ থেকে। পরস্পর মুখ দেখা হয় না। কথা বন্ধ দীর্ঘদিন। ঝগড়া-কলহ ও বিবাদ-বিরাগে বিদ্বেষপ্রসূত কার্যক্রম মানুষকে শুধু মানুষ থেকেই বিচ্ছিন্ন করছে না, বিচ্ছিন্ন করছে মহান আল্লাহ থেকেও।

সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালা মানুষের মাঝে নানাভাবে বন্ধন স্থাপন করেছেন। তিনি মানুষের মাঝে স্থাপিত বন্ধনকে সম্বোধন করে বলেছেন, ‘(হে বন্ধন!) যে ব্যক্তি তোমাকে সংযুক্ত রাখবে আমি তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখব। আর যে ব্যক্তি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করবে আমিও তার সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করব।’ -সহিহ বোখারি

অনেক সময় সামান্য মান-অভিমানে পরস্পরে কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায়শই দেখা যায়- ভাই ভাইয়ের সঙ্গে, বোন ভাইয়ের সঙ্গে, সন্তান পিতা-মাতার সঙ্গে, বন্ধু বন্ধুর সঙ্গে কিংবা সহকর্মী সহকর্মীর সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না। শরিয়তে গ্রহণীয় কারণ ছাড়া কোনো মুসলমানের জন্য অন্য মুসলমানের সঙ্গে এভাবে তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা বৈধ নয়। এতে হিংসা-বিদ্বেষ বৃদ্ধি পায় এবং উভয় জগতে বয়ে আনে ভয়াবহ পরিণাম।

শরিয়ত মান্যতা দেয়, এমন কারণ থাকলে তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা যাবে। উদাহরণস্বরূপ- কোনো ব্যক্তি লাগাতার কবিরা গোনাহে লিপ্ত হলো কিংবা একেবারেই নামাজ, রোজা বা ইসলামের মৌলিক কোনো বিষয় পরিত্যাগ করল, তাহলে এমন ব্যক্তিকে শরিয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী বুঝাতে হবে। যদি সে এই বিষয়ে নিজেকে সংশোধন না করে তাহলে সংশ্লিষ্ট কারণে তার সঙ্গে তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা বৈধ। এমন কারণ ব্যতিত তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বন্ধ রাখা বৈধ নয়।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর সম্পর্ক ছিন্ন করো না, একে অন্যের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করো না, পরস্পর হিংসা করো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, তোমরা ভাই ভাই হয়ে যাও। কোনো মুসলমানের জন্য তার অপর মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের অধিক কথাবার্তা বন্ধ রাখা বৈধ নয়।’ -সহিহ মুসলিম

পরস্পর সম্পর্ক নষ্ট করার মাধ্যমে মানুষ কেবল নিজের ক্ষতিই করে। নিজের আখেরাত কলঙ্কিত করে। এতে আল্লাহর সঙ্গে যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয় তাতে পরকালের প্রাপ্তির খাতা থাকে সওয়াবশূন্য। কেননা সম্পর্ক ছিন্নকারীর নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ কোনো নেক আমলই মহান আল্লাহ গ্রহণ করেন না। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তানের আমলসমূহ প্রতি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আল্লাহর নিকট উপস্থাপন করা হয়। তখন আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারীর আমল গ্রহণ করা হয় না।’ -সহিহ বোখারি

হাদিসের অপর বর্ণনায় এসেছে, ‘এমন লোকদের আমলসমূহকে অপেক্ষমান রাখা হয়। যদি তারা পারস্পরিক সম্পর্ক সংশোধন করে নেয় তাহলে তা গ্রহণ করা হয়।’ উদাহরণস্বরূপ- কারো সঙ্গে কথাবার্তা বন্ধ রাখা কিংবা সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যাপ্তি যদি পঁচিশ বছর দীর্ঘ হয় তাহলে এই পঁচিশ বছরে আদায়কৃত কোনো ইবাদতই মহান আল্লাহর কাছে কবুল হয়নি। যদি পঁচিশ বছর পর তাদের সম্পর্ক সংশোধন করে মিলমিশ হয়ে যায় তাহলে আল্লাহতায়ালা পঁচিশ বছরের সব ইবাদত কবুল করে নেবেন।

সম্পর্ক ছিন্নকারীর শাস্তি সম্পর্কে মুসনাদে আহমদের বর্ণনায় এসেছে, ‘আল্লাহতায়ালা দুটি অপরাধের শাস্তি দুনিয়াতেই দেবেন। উপরন্তু আখেরাতের শাস্তি তো থাকবেই। অপরাধ দুটি হলো- অত্যাচার ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা।’

মানুষে মানুষে যে রক্তের বন্ধন ও আত্মার সংযোগ তা ছিন্ন করলে পরাক্রমশালী আল্লাহর অভিসম্পাত অবধারিত। বধিরতা ও দৃষ্টিহীনতা এ অপরাধের ঘোষিত দণ্ড। আর পরকালে থাকবে অগ্নিকুণ্ডে অঙ্গার হওয়ার যন্ত্রণা।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারলে সম্ভবত দুনিয়াতে তোমরা বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। আল্লাহ তাদেরকেই করেন অভিশপ্ত, বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন।’ -সুরা মুহাম্মদ : ২২-২৩

মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘তাদের জন্যই রয়েছে মন্দ আবাস (জাহান্নাম)।’ -সুরা রাদ : ২৫

আল্লাহতায়ালার অভিসম্পাত থেকে বাঁচতে, দুনিয়ার ইবাদত-বন্দেগিকে ফলপ্রসূ করতে এবং পরকালের শাস্তি থেকে রক্ষা পেতে আত্মীয়তার বন্ধন ও পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখা আবশ্যক। কেউ যদি সম্পর্ক রক্ষা না করে তবুও তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সালাম দেওয়ার মাধ্যমে হলেও তোমরা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখো।’ -সহিহ বোখারি

তাই পরস্পর দেখা হলে কমপক্ষে সালাম প্রদান করে কুশল বিনিময় করতে হবে। তাহলে এমন ব্যক্তি সম্পর্ক রক্ষাকারী হিসেবে গণ্য হবে। অপর ব্যক্তি সালামের উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকলে এবং কুশল বিনিময়ে সাড়া না দিলে তার ইহকালের বন্দেগি বৃথা যাবে। পরকাল পণ্ড হবে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তি সম্পর্ক রক্ষাকারী হিসেবে গণ্য হবে না, যার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা হলে সেও সম্পর্ক রক্ষা করে। বরং ওই ব্যক্তি সম্পর্ক রক্ষাকারী হিসেবে গণ্য হবে, যার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হলেও সে সম্পর্ক রক্ষা করে।’ -সহিহ বোখারি

আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার মধ্যে রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের প্রভূত কল্যাণ। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রিজিকের প্রশস্ততা ও আয়ূ বৃদ্ধি করতে চায়, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে।’ -সহিহ বোখারি

অপর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘একজন ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, আল্লাহর ইবাদত করো, তার সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করো না, ভালোভাবে নামাজ আদায় করো, জাকাত দাও এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখো।’ -সহিহ বোখারি

নিকটতম ও ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে সামান্য অভিমানের কারণে যে নীরব দূরত্ব তৈরি হয়, তা দ্রুত দূর করতে না পারলে দিন দিন দূরত্বের পরিধি আরও বাড়ে। এক সময়ের সামান্য অভিমান বেড়ে হয়ে যায় ক্ষোভের পাহাড়। পরকাল বিবেচনায় এটা ভীষণ ভারী। মানুষ এই ভারী পাহাড় নিয়ে দুনিয়াতে দিব্যি ঘুরে বেড়ায়। একটুও কম্পিত হয় না। অথচ পাহাড়সম এই ক্ষোভ মানুষকে পরকালে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবে! নিকটাত্মীয়দের দূরত্ব যদি কারো মনে ভাঙচুর না ঘটায়, সম্পর্ক সংশোধন করতে না ভাবায়- তাহলে এমন মানসিকতা মানুষকে পরকালে গাঢ় অন্ধকারে নিমজ্জিত করবে।

দূরত্বের দুটো কাজ। দূরত্ব হয়তো সাক্ষাতের আকাঙ্ক্ষাকে তীব্র করে অথবা আরো দূরে ঠেলে দেয়। আমাদের নিকটাত্মীয়দের দূরত্ব যেন পরস্পর সাক্ষাতের আকাঙ্ক্ষাকে তীব্র করে। যেন পরস্পর খোঁজ-খবর রাখা যায়। তবে তা দুনিয়ার জীবনে প্রশস্ততা আনবে এবং পরকালে মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভে সহায়ক হবে।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট

;

জনগণকে ‘নিরব প্রতিবাদের’ আহ্বান



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের তালিমি মজলিস, ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের তালিমি মজলিস, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জনমত উপেক্ষা করে নির্বাচন আয়োজন করায় আমরা তা প্রত্যাখান করেছি, দেশের আপামর জনতাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার আহ্বান জানাচ্ছি। ক্ষমতার জোরে নির্বাচনের আয়োজন করলেও জনগণ যদি ভোট দিতে না যায়, নির্বাচনের এই নাটক আলোর মুখ দেখবে না। এমতাবস্থায় জনগণকে ভোটে অংশগ্রহণ না করার মাধ্যমে ‘নিরব প্রতিবাদের’ আহ্বান জানান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের অগ্রসর সংগঠনদের নিয়ে আয়োজিত তালিমি মজলিসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে যুব মজলিসের সভাপতি পরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী বলেন, মাওলানা মামুনুল হককে জেলে নিয়ে সরকার ভুল করেছে। মাওলানা মামুনুল হক কোনো আপস করেননি। আগামীতেও করবেন না। তার সংগঠনও জেল-জুলুমের তোয়াক্কা করে না।

যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিভাগের সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলামের পরিচালনায় তালিমি মজলিসে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হুসাইন মিয়াজী, যুব মজলিসের সংগঠন বিভাগের সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রকাশনা বিভাগের সম্পাদক মাওলানা রাকীবুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ বিভাগের সম্পাদক মাওলানা শরীফ হুসাইন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা নূর মোহাম্মাদ আজিজী ও যুব মজলিস ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জাহিদুজ্জামান।

;

মালয়েশিয়া থেকে সাইকেলে হজযাত্রা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র হজ পালনে সাইকেলে করে মক্কার উদ্দেশে বের হয়েছেন মালয়েয়িশার চার মুসলিম। ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র হজ পালনে সাইকেলে করে মক্কার উদ্দেশে বের হয়েছেন মালয়েয়িশার চার মুসলিম। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন পবিত্র হজ পালন করতে সাইকেলে করে সৌদি আরবের মক্কায় উদ্দেশে বের হয়েছেন মালয়েয়িশার চার মুসলিম। স্থলপথে তাদের সময় লাগবে প্রায় সাত মাস। আগামী বছরের মে মাসে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তারা সৌদি আরবের মক্কায় পৌঁছবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ সময় তারা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, ইরান, আমিরাতসহ ছয় দেশ পাড়ি দেবেন।

মালয়েশিয়াভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম দি সান সূত্রে জানা যায়, সাইকেলে হজযাত্রা শুরু করা এ দলে রয়েছেন দেশটির সংবাদ সংস্থার সাবেক সাংবাদিক চে সাদ নরদিন (৭৩)। অন্যরা হলেন- আহমেদ মোহাম্মদ ইসা (৩৫), নোরাদিলাহ মোহাম্মদ সাপি (৩৬) ও বন গবেষণা কর্মী আবদুল হালিম তালহা (৫৬)।

তারা তাদের সাইক্লিং মিশনের তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফেসবুক পেজ কেমবারা মেমবুরু হিকমাহ (কেএমএইচ) জানাচ্ছেন।

সাদ নরদিন বলেন, মূলত ২০১৯ সাল থেকে সাইকেলে করে আমাদের পবিত্র হজ পালন করার পরিকল্পনা ছিল। তবে পরবর্তীতে কোভিড-১৯ সংকটের কারণে কয়েকবার এ পরিকল্পনা বিলম্ব করতে হয়।

সাইকেল ভ্রমণের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মসহ সবাইকে আমি একটি বার্তা দিতে চাই। তা হলো- একজন মালয়েশিয়ান হিসেবে আমি আমার এ বয়সেও বিভিন্ন দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। আমি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাকে ভ্রমণ করার মতো সুস্বাস্থ্য দিয়েছেন। মক্কা যাওয়ার পুরো ভ্রমণ আমি উপভোগ করতে চাই।

তিনি আরো জানান, গত আগস্ট থেকে অন্য তিন বন্ধুসহ তারা দীর্ঘ ভ্রমণের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ জন্য তারা বীমা ও ভিসা নেওয়ার পাশাপাশি সাইকেল চালানোর অনুশীলন এবং শারীরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তা ছাড়া ভ্রমণকালে তাদের সবাইকে সাইকেলে করে প্রাথমিক চিকিৎসার কিট, ক্যাম্পিং সরঞ্জাম, সোয়েটার, ক্যামেরা ও সাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশসহ আনুমানিক ৬০ কেজি বহন করতে হয়েছে।

সাইকেলে হজযাত্রার একমাত্র নারী সদস্য নোরাদিলা জানান, ২০১৬ সালে তার স্বামীর সঙ্গে তিনিও সাইকেল চালিয়ে ওমরাহ করতে মক্কায় গিয়েছিলেন। তবে আগের তুলনায় এবারের সাইকেল যাত্রা পুরোপুরি ভিন্ন।

কারণ এবার আমরা ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজ পালন করব। ভ্রমণকালে যেসব অতিক্রম করবে সেখানে আমরা একসঙ্গে হানিমুনেও যেতে পারি। তবে তা দলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে হবে।

;