নবীর আদর্শই শান্তির উৎস



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নবীর আদর্শই শান্তির উৎস, ছবি: সংগৃহীত

নবীর আদর্শই শান্তির উৎস, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৪৪০ হিজরি সনের ১২ রবিউল আউয়াল আজ। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এ দিনে মক্কার কোরাইশ বংশে বাবা আব্দুল্লাহ ও মা আমেনার ঘরে জন্মলাভ করেন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। ইসলামের সুমহান দ্বীন প্রচার শেষে ৬৩ বছর বয়সে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে ১১ হিজরির ঠিক এ দিনেই তিনি আল্লাহ প্রদত্ত রিসালাতের সব দায়িত্ব পালন শেষে আল্লাহতায়ালার ডাকে সাড়া দিয়ে মাওলার সান্নিধ্যে গমন করেন।

তাই তারিখ হিসেবে আজ বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। এ জন্য দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বের মুসলমানেরা প্রতি বছর ১২ রবিউল আউয়াল দিনটি পালন করেন হজরত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শকে স্মরণে এনে এবং সে আদর্শ ব্যক্তিগত, সমাজ ও জাতীয় জীবনে পালনের অঙ্গীকারের মাধ্যমে।

 

এখন প্রশ্ন আসে, কী তার আদর্শ? উত্তর, আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে তাকে মানবতার মুক্তির দূত হিসেবে কোরআনে কারিমের বর্ণনা মোতাবেক সমগ্র মানবজাতির জন্য একমাত্র যে আদর্শ জীবনবিধান আল্লাহ দিয়েছেন সেটিই তার জীবনের আদর্শ।

সার কথা হচ্ছে- নবী জীবনের শিক্ষা হচ্ছে, নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে সমূলে বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত হওয়া। সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালার নির্দেশিত পথে, সত্য ও ন্যায়ের পথে হাঁটাই ছিল তার জীবনের পরম আদর্শ।

তার শিক্ষা হলো- পৃথিবীর মানুষকে তার ন্যায্য মানবিক অধিকার দিতে হবে, রাজা-বাদশাহ-আমির-ফকির কেউ ছোট, কেউ বড় নয়। কেউ কারো চেয়ে শ্রেষ্ঠ নয়। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে কোনো অবস্থাতেই মাথা নোয়ানো যাবে না। তিনি প্রচার করেছেন, মানুষের প্রকৃত মর্যাদা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে আল্লাহর নির্দেশিত পথে সারা জীবন চলার মধ্যে। মানুষ ইহকালে যে কাজ করবে, পরকালে আল্লাহর কাছে এ জন্য জবাবদিহি করতে হবে। যারা আল্লাহ, তার প্রেরিত আসমানি কিতাব, নবী-রাসূল এবং আখেরাতে এবং শেষ বিচারের দিনের প্রতি বিশ্বাস রেখে ন্যায় ও কল্যাণের পথে হাঁটবে, তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পুরস্কার হিসেবে শাশ্বত শান্তিময় স্থান বেহেশত। তারা সেখানে মৃত্যুর পর অনন্তকাল বসবাস করবেন। যারা সত্যের পথে চলবে না, তাদের জন্য রয়েছে চরম শাস্তির চিরন্তন স্থান দোজখ।

এসব বিশ্বাসকে সম্বল করেই নবী করিম (সা.) সারা জীবন পথ চলেছেন। তার প্রতিটি কাজের লক্ষ্য ছিল মানুষের কল্যাণ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি। তিনি এ পথে শত্রুকে করেছেন মিত্র। আরবের অন্ধকার যুগের মানুষকে টেনে এনেছেন আলোর জগতে। তিনি মানুষের আস্থার মূল্য দিতেন। সেই সূত্রে তার সময়ের আরব দুনিয়ায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আল-আমিন বা বিশ্বাসী নামে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অসি হাতে যুদ্ধ করেছেন; কিন্তু অন্যায়ভাবে সামান্য আঘাতও দেননি। যুদ্ধবন্দীদের দিয়েছেন অভাবনীয় মানবাধিকার। তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘যার হাতে মানুষ নিরাপদ নয়, সে প্রকৃত মুসলমান নয়।’ তিনি আমাদের সর্বাঙ্গীণ আদর্শ। অপরাধীদের ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য আমাদের তাগিদ দিয়েছেন। ওয়াদা রক্ষায় ছিলেন শত ভাগ আন্তরিক।

মুসলমানেরা যখন ইসলামের স্বর্ণযুগে তার আদর্শ ও ন্যায়ের পথে ছিলাম দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তখন সাফল্য আমাদের হাতের মুঠোয় এসেছিল। যখন তার আদর্শ পালনে আমরা গাফেল হয়ে উঠতে শুরু করি, তখন থেকেই মুসলমানের পতনের শুরু। আজ তার আদর্শচ্যুত হয়ে মুসলিম উম্মাহ পতনের চরম পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। আমরা যদি তার আদর্শে ফিরে যেতে না পারি, তবে এ অধঃপতন থেকে উত্তরণের কোনো সম্ভাবনা নেই।

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেকে সমগ্র মানবজাতির আদর্শ হিসেবে আল্লাহ দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। মানবজাতি সে আদর্শ অনুসরণ করলে আজকের দুনিয়ার অশান্তি, অনাচার, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের অবসান হতে পারে।

   

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির মালিকের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়াকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাঃ আবু তাহির সাক্ষরিত এত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সনের হজ মৌসুমে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হ.লা, ০৬৭২) এর অধীন ৪৪৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত রয়েছে। উক্ত এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে অদ্যাবধি কোন ভিসা করা হয়নি। তথাপি এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এতে এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীগণ প্রতারিত হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে এবং তাঁদের এ বছর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (ই.লা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং একইসাথে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হলা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া এর দেশ ত্যাগ রোধ করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি ৪৪৪ জন হজ যাত্রীর কারোরই ভিসার জন্য আবেদন করেনি। এমতাবস্থায় এই এজেন্সিসহ আরও ৫টি এজেন্সিকে শোকজ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। গত বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম।

অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে না পারায় জন্য, ১২টি এজেন্সিকে ব্যাখ্যা প্রদানের পাশাপাশি সচিবালয়ে ডেকে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজকের মধ্যে এই ১২টির মধ্যে ৯টি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব এজেন্সি ভিসা করতে না পারার ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে মন্ত্রণালয়ের কাছে।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

আন্তরিক তওবার একটি অশ্রুকণা পাপকে মুছে দেয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে, ছবি: সংগৃহীত

আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুনিয়ার নানাবিধ সমস্যায় নিরাশ হয়ে আমাদের কতজনই না নিদ্রাহীন রাত অতিবাহিত করি, নানা নেশায় জড়িয়ে যাই। একবারও মনে হয় না, সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আমাকে ডাকো, আমি সাড়া দেবো।’ আমরা আল্লাহকে ডাকতে পারি না। জানেন এর কারণ কী?

আমাদের হৃদয়মন পৃথিবীর সঙ্গে খুব বেশি মাত্রায় যুক্ত হয়ে গেছে। তাই প্রয়োজনীয় সময়ে আল্লাহর কথা স্মরণ হয় না। উচিৎ ছিলো, এটা মনে করা- দুনিয়ায় আমরা কেবলই ভ্রমণকারী। কোনো কিছুই স্থায়ী হয় না, মানুষের স্মৃতিও না।

ছোট পাপ বলে কিছু নেই
‘ছোট’ পাপ, এটা এমন কিছু না- এমন ভাবনাকে প্রশ্রয় দেবেন না। সাদামাটা মিথ্যা কথা এবং গসিপগুলো প্রায়ই আমাদের পতনের কারণ হয়। অজুহাতের আশ্রয় নেবেন না। কেবল আপনি মুখে মুখে অনুতপ্ত হবেন আর কাজে কোনো পরিবর্তন আসবে না তাতে লাভ হবে না। হৃদয় থেকে অনুশোচনা করুন। এটা অনুভব করুন। আপনি এটি যে আন্তরিকভাবে করছেন তার প্রতিফলন ঘটান।

হৃদয়ের রোগ নিরাময়ের অন্যতম উপায়
আপনি যদি অনুভব করেন যে, শয়তান গতকাল আপনাকে পরাজিত করেছে, আজ তাকে পরাস্ত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। আরও নেক আমল করুন, বেশি বেশি অনুশোচনা করুন এবং সর্বশক্তিমানের সান্নিধ্য লাভ করুন। মনে রাখবেন, প্রার্থনা হলো হৃদয়ের রোগ নিরাময়ের অন্যতম সেরা উপায়। আপনার হৃদয় এবং আত্মার সঙ্গে কথা বলুন। সর্বশক্তিমানের নিকটবর্তী হন। তিনি আপনাকে স্বস্তি দেবেন।

অর্থহীনতায় সময় নষ্ট করবেন না
চারদিকের হইচই শুনে বিভ্রান্ত হবেন না। বিরতি নিন এবং প্রতিচ্ছবি দেখুন। আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার চারপাশের সব অর্থহীনতায় আপনি কতটা সময় নষ্ট করেছেন। আর সেই সঙ্গে আপনি বারবার তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অতীতপাপের জন্য, সেসব পাপ যার কথা আপনি ভুলে গেছেন অথবা উপেক্ষা করেছেন তার জন্য। করুণাময়ের কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করুন, এ জন্য তিনি যেন আপনাকে শাস্তি না দেন।

পাপহীনতার পথে ফিরে আসুন
এখন যা ঘটছে তাই সর্বোত্তম। এটি আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে। এটি আপনি এ মুহূর্তে উপলব্ধি নাও করতে পারেন, তবে যদি তার ওপর আস্থাবান হন তবে পুরস্কার আপনি পাবেন। আর কখনও ছোট পাপকে ছোট হিসাবে নেবেন না। বিপদটি হলো- এটি করতে করতে তা অভ্যাসে পরিণত হয় এবং একসময় এটাকে স্বাভাবিক মনে হতে থাকবে। পাপকে স্বীকৃতি দিন, আর পাপহীনতার স্বাভাবিক পথে ফিরে আসুন।

কোনো দ্বিধা নয়, তওবা করুন
আপনার আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে। সর্বশক্তিমান ক্ষমা করতে ভালোবাসেন! দ্বিধা করবেন না, অনুতাপ প্রকাশ করুন। পাপের হাজার আনন্দবিন্দুকে আন্তরিক অনুতাপের একটি অশ্রুবিন্দু সর্বশক্তিমানের কৃপায় মুছে দিতে পারে।

আমরা কাঁদি, তিনি শুনেন। আমরা আহত হই, তিনি নিরাময় করেন। আমরা ডাকি, তিনি জবাব দেন। আমরা অনুতাপ করি, তিনি ক্ষমা করেন। সবকিছুর জন্য, সব সময় সর্বশক্তিমানের কাছেই চান, তার কাছেই প্রার্থনা করুন।

মানুষের কাছে অভিযোগ নয়
আপনার যেকোনো সমস্যা সম্পর্কে সবার কাছে অভিযোগ করাকে অভ্যাসে পরিণত করবেন না। বেশিরভাগই এ জন্য কিছু করার কথা ভাবে না। সর্বশক্তিমানের সঙ্গে কথা বলুন, সবকিছুতে নিয়ন্ত্রণ তার। তিনি আপনার পাপের পরিমাণ কত বেশি তা নিয়ে পরোয়া করেন না। আপনি কতটা এ জন্য অনুতপ্ত হচ্ছেন, সেটি দেখেন তিনি। আপনার পাপ যেন আপনাকে হতাশ না করে!

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি বলুন, সত্যিই কি তোমরা সেই মহাপ্রভুকে অস্বীকার করছ! যিনি পৃথিবীকে মাত্র দুদিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার অংশীদার নির্ধারণ করছ? তিনি তো সমস্ত জগতের প্রতিপালক। যিনি পৃথিবীতে তার উপরাংশে পাহাড় স্থাপন করেছেন এবং জমিনের ভিতরাংশ বরকতপূর্ণ করেছেন আর ভূগর্ভে সুষমরূপে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছেন মাত্র চার দিনে। সব যাচনাকারীর জন্য সমানভাবে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন আর তা ছিল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।’ -সুরা ফুসিসলাত : ৯-১১

হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াকে মহব্বত করল সে তার পরকালকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। আর যে ব্যক্তি পরকালকে মহব্বত করল সে তার দুনিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। সুতরাং তোমরা অস্থায়ী বস্তুর ওপর চিরস্থায়ী বস্তুকে প্রাধান্য দাও।’ -মুসনাদে আহমাদ

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যা করলে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষেরাও আমাকে ভালোবাসবে। তিনি বললেন, দুনিয়া ত্যাগ করো, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষের কাছে যা আছে, তার প্রতি লালসা করো না, তবে লোকেরা তোমাকে ভালোবাসবে। -জামে তিরমিজি

;

শান্তির শহরে হাজিদের স্বাগত জানায় শান্তির পায়রা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মক্কার কবুতর, ছবি: সংগৃহীত

মক্কার কবুতর, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কার কবুতরের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের হজ ও উমরাযাত্রীদের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। মক্কার রাস্তায় ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ানো পায়রাগুলো লম্বা গলা ও আকর্ষণীয় রঙের জন্য পরিচিত। মসজিদে হারামের পথে এই কবুতরগুলোর দেখা মেলে। সেখানে আসা মানুষ তাদের খাবার খাওয়ায়। তাদের ছবি তোলে।

কবুতরের আধিক্যের কারণে মিসফালার একটি এলাকার নাম কবুতর চত্বর বলে পরিচিত পেয়েছে। এখানে প্রচুর আফ্রিকান নারী কবুতরের খাবার বিক্রি করেন। পবিত্র নগরী মক্কার ‘মসজিদে হারামের’ চত্বরে ঘুরে বেড়ানো ‘শান্তির পায়রা’ যেন হজ ও উমরা পালনে আসা মানুষকে স্বাগত জানায় ডানা ঝাপটে।

আরও পড়ুন : লোকশূন্য মক্কায় অভুক্ত নেই কবুতরগুলো

আরব নিউজের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, মক্কায় ব্যাপক লোকসমাগম হলেও কবুতরগুলো ভয় পায় না। জনশ্রুতি আছে, এসব কবুতর পবিত্র কাবা ও আশপাশের এলাকায় মলত্যাগ করে না। এ কারণে হজ ও উমরাপালনে আসা মানুষ এবং স্থানীয়দের আরও প্রিয়পাত্রে পরিণত হয়েছে কবুতরগুলো।

মক্কায় ব্যাপক লোকসমাগম হলেও কবুতরগুলো ভয় পায় না, ছবি: সংগৃহীত

মক্কার ইতিহাস গবেষক সামির আহমেদ বারকা বলেন, গ্র্যান্ড মসজিদের বিভিন্ন স্থানে কবুতরসহ নানা জাতের পাখি ঘুরে বেড়ায়। মক্কায় তারা নিরাপদে, নিশ্চিন্তে বসবাস করছে। এসব পাখি ও কবুতর শিকার করতে শরিয়তে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

পৃথিবীর অন্য পাখি ও কবুতরদের চেয়ে এগুলো আলাদা। তাদের বৈশিষ্ট্য হলো- সুন্দর আকৃতি, চমৎকার রং, টানাটানা চোখ আর লম্বা গলা।

মক্কার খুব জনপ্রিয় বিষয়গুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে এসব পাখি। কোনো দয়ালু ব্যক্তি যদি খাবার দেন, এই আশায় প্রায়ই ডানা ঝাপটে ওড়াউড়ি করতে কিংবা দালানকোঠার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাদের। এই কবুতর ও পবিত্র নগরীতে আসা মানুষের মধ্যে এই চমৎকার সম্পর্ক চলে আসছে শত শত বছর ধরে।

সুন্দর আকৃতি, চমৎকার রং, টানাটানা চোখ আর লম্বা গলা এসব কবুতরের বৈশিষ্ট্য, ছবি: সংগৃহীত

বারকা আরও বলেন, ‘কেউ কেউ এই সংরক্ষিত কবুতরগুলোর সঙ্গে যোগসূত্র খুঁজে পান সে সব কবুতরের, হজরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার সময় যারা বাসা বেঁধেছিল সাওর পর্বতের গুহার মুখে। পুরস্কার হিসেবে ওই কবুতর এবং এদের বংশধরদের মক্কার পবিত্র নগরীতে নিরাপদে বসবাসের সুযোগ করে দেন সৃষ্টিকর্তা।’ যদিও এই মত নিয়ে অনেকের আপত্তি রয়েছে।

ঐতিহাসিক শেখ মোহাম্মদ তাহির আল-কুরদি বলেন, এই কবুতরগুলো আবাবিল পাখির বংশধরও হতে পারে। কোরআন মাজিদের বর্ণনা অনুযায়ী, আবরাহা আল-আশরামের বাহিনীকে ধ্বংস করতে আল্লাহ এদের পাঠিয়ে ছিলেন।

ওই বাহিনী কাবাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, তবে এই পাখির ঝাঁক তাদের ওপর ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করে। এতে আল-আশরামের বাহিনী ধ্বংস হয়ে যায়। আল-আশরাম ও তার বাহিনী হাতির বাহিনী নামে পরিচিত। কোরআন মাজিদে উল্লেখ আছে তাদের কাহিনি।

এই পাখিগুলোর বিশেষ গুরুত্ব আছে, ছবি: সংগৃহীত

বারকা বলেন, ‘অনেকে বিশ্বাস করেন, এই সংরক্ষিত পাখিরা হজরত নূহ (আ.)-এর জাহাজে থাকা দুটি কবুতরের বংশধর। ঐতিহাসিক বিভিন্ন বইয়ে এর উল্লেখ আছে, এ বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।’

এই পাখিগুলোর বিশেষ গুরুত্ব আছে। মক্কার অধিবাসী বলুন আর হজ, উমরা করতে আসা মানুষ কারোরই এদের মারার অনুমতি নেই। তেমনি তাদের বাসা থেকে এই পাখিদের তাড়িয়ে দেওয়া এবং ডিম ভাঙাও নিষিদ্ধ। এমনকি মক্কা অঞ্চলের লোকজন তাদের ভবনে জানালার পাশে কবুতরের থাকার জন্য বিশেষ মাঁচা বানিয়ে দেয়।

;

৮ হাজার কিলোমিটার হেঁটে ফ্রান্স থেকে মদিনায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মুহাম্মদ বুলাবিয়ার, ছবি: সংগৃহীত

মুহাম্মদ বুলাবিয়ার, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

এক ফরাসি নাগরিক পবিত্র উমরা পালনের জন্য ফ্রান্স থেকে হেঁটে আট মাসে মদিনায় পৌঁছেছেন। পথে অতিক্রম করেছেন ১৩টি দেশ, পাড়ি দিয়েছেন ৮ হাজার কিলোমিটার পথ।

বুধবার (১৫ মে) মদিনায় সৌদি প্রেস এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে মুহাম্মদ বুলাবিয়ার জানান, এই দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দেওয়ার জন্য দুই বছর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি মদিনায় অবস্থান করছেন, তিনি এখন মক্কায় হেঁটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মক্কায় পৌঁছে তিনি পবিত্র উমরার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন। পরে হজের অপেক্ষায় মক্কায় অবস্থান করবেন। মদিনায় তিনি নবী কারিম (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করে পথের সব ক্লান্তি ভুলে গেছেন বলেও জানান।

তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল। আমি পায়ে হেঁটে মক্কায় পৌঁছাব। মদিনায় আসার পর মনে হয়, আমি গত আট মাস পথে ছিলাম। মদিনার পরিবেশ আমাকে সম্পূর্ণরূপে সতেজ করে তুলেছে।

ফরাসি পর্যটক মুহাম্মদ বুলাবিয়ার গত বছরের ২৭ আগস্ট প্যারিসের আইফেল টাওয়ার থেকে যাত্রা শুরু করেন। সৌদি আরব পৌঁছানোর আগে তিনি সুইজারল্যান্ড, ইতালি, স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া, মন্টিনিগ্রো, আলবেনিয়া, মেসিডোনিয়া, গ্রীস, তুর্কিয়ে এবং জর্ডান পাড়ি দিয়েছেন।

ফরাসি নাগরিক মুহাম্মদ বুলাবিয়ারের বাবা তিউনিসিয়ান এবং মা মরক্কোর।

দীর্ঘপথে তার সঙ্গী ছিল একটি মানচিত্র এবং একটি ব্যাগ। যেখানে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল, অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে একটি তাঁবুও তিনি বহন করেছেন। সবমিলিয়ে ২৫ কেজির একটি ব্যাগ তিনি প্যারিস থেকে বহন করেছেন।

বুলাবিয়ার জানান, তিনি বেশিরভাগ রাত রাস্তার পাশের মসজিদে কিংবা উদার অপরিচিতদের সঙ্গে কাটিয়েছেন।

পথের লোকজনের মনোভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি যেখানেই গেছি সেখানেই তারা আমাকে উৎসাহের সঙ্গে স্বাগত জানিয়েছে এবং অগাধ সম্মান দিয়েছে। অনেকে তাদের বাড়িতে থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সৌদি নাগরিকরা খুবই অতিথি পরায়ণ।

পথের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বুলাবিয়ার বলেন, যাত্রার সবচেয়ে কঠিন অংশ ছিল আবহাওয়া। ‘আমি অল্প সময়ে আবহওয়ার কয়েকটি রূপ দেখার সুযোগ পেয়েছি। আমি যখন দেশ ছেড়েছিলাম তখন গরম ছিল। পথে বসন্ত ঋতু চলে গেল, শীত ও শরৎ ঋতু পেরিয়ে যখন গ্রিসের সীমান্তে পৌঁছলাম- তখন প্রচণ্ড তুষার ঝড়ের সম্মুখীন হতে হলো। ফলে দুই সপ্তাহ যাত্রা বন্ধ রাখতে হয়।’

;