শীতে বিপন্ন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ান



আশিকুল হামিদ, অতিথি লেখক, ইসলাম
শৈত্যপ্রবাহ এবং শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও কয়েকদিনের মধ্যে নতুন পর্যায়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে

শৈত্যপ্রবাহ এবং শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও কয়েকদিনের মধ্যে নতুন পর্যায়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে হঠাৎ শীত বেড়েছে। শীতের কারণে নানা ধরনের রোগের প্রকোপ বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্ধৃতি দিয়ে ২৬ ডিসেম্বর (২০২১) বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ১ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে রাজধানীসহ সারাদেশে দুই লাখ ৪৭ হাজার ২৭৩ জন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে রয়েছে করোনার নতুন ভেরিয়্যান্ট ওমিক্রনসহ আরও কিছু রোগ।

এরই মধ্যে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, শৈত্যপ্রবাহ এবং শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও কয়েকদিনের মধ্যে নতুন পর্যায়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবারের প্রতিটি শৈত্য প্রবাহ তিন থেকে চারদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়তে পারে শীতের নানা রোগ-বালাই।

শীতের দিনে শীত বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক হলেও আমরা উদ্বিগ্ন আসলে গরীব এবং সাধারণ মানুষের জন্য। কারণ, মূলত অর্থকষ্টসহ দারিদ্র্যের কারণে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের পক্ষেই শাল, উলের সোয়েটার এবং অন্যান্য গরম কাপড় কেনা সম্ভব নয়। তার ওপর বিগত প্রায় দু’বছর ধরে করোনার কারণে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেছে। ফলে শীতে তাদের কষ্ট সীমা ছাড়িয়ে যাবে- ইতিমধ্যে যেতেও শুরু করেছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে আবহাওয়ায়ও যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯৭০-এর দশক পর্যন্তও একটা সময় ছিল, যখন পৌষ আসতে না আসতেই প্রবল শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবন অচল হয়ে পড়তো। মাঘ এলে তো কথাই ছিল না। মাঘের শীতে তখন আসলেও কম্বল কাঁপতো। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে আবহাওয়ার আচরণে অকল্পনীয় পরিবর্তন ঘটেছে। চলতি বছরের শীতের কথাই ধরা যাক। এবার পৌষের শুরু থেকে শীত পড়তে শুরু করলেও শীতের তীব্রতা কিন্তু তেমন অনুভূত হয়নি। মানুষকে অতীতের মতো কষ্ট করতে হয়নি। ব্যতিক্রমও অবশ্য ছিল। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এবং কুড়িগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গাসহ আরও কিছু এলাকায় প্রচন্ড শীতে জনজীবন প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এমন অবস্থার পেছনে প্রধান কারণ ছিল তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এ সময় কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছিল দেশের অধিকাংশ অঞ্চল। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসে দফায় দফায় শৈত্যপ্রবাহ চলবে। এর অর্থ, পৌষ পেরিয়ে মাঘ মাসেরও বেশিরভাগ সময় দেশে তীব্র শীত থাকবে।

প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে স্বাভাবিক হলেও এবারের শীতে সাধারণ মানুষের জীবনে এরই মধ্যে নানামুখী অসুখ ও বিপদ চেপে বসেছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, সর্দি-কাশি তো হচ্ছেই, একই সঙ্গে ডায়ারিয়া, নিউমোনিয়া ও হাঁপানির মতো রোগ-বালাইও ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলো সাধারণত শীতের সঙ্গে এসে থাকে। প্রচন্ড শ্বাসকষ্টেও ভুগছে অনেকে। পাশাপাশি রয়েছে শীতবস্ত্রের অভাব। খুব কম সংখ্যক মানুষের পক্ষেই সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার ও শাল বা চাদর জাতীয় শীতবস্ত্র কেনা বা যোগাড় করা সম্ভব হয়েছে বা হচ্ছে। তারা লেপ-কম্বলও কিনতে বা যোগাড় করতে সক্ষম হয়নি। ফলে অসম্ভব কষ্টে দিন ও রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাজধানীর মতো বড় বড় শহরে-নগরে যারা দালান বা পাকা ভবনে বসবাস করেন, যাদের যখন-তখন যে কোনো ধরনের শীতবস্ত্র এবং লেপ-কম্বল কেনার সামর্থ্য রয়েছে, তাদের পক্ষে বিশেষ করে গ্রামের মানুষের কষ্টের কথা সহজে কল্পনা করতে পারার কথা নয়।

শুধু গ্রামের কথাই নয়, বিভিন্ন শহরে যে মেহনতী শ্রমিক ও গরীব মানুষের বসবাস, তারাও রয়েছে প্রচন্ড কষ্টের মধ্যে। প্রয়োজনীয় শীত বস্ত্র তো নেই-ই, সেই সঙ্গে তারাই আবার বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত অসুখ-বিসুখে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে, প্রথমত তাদের খুব কম সংখ্যকই সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে। বেশিরভাগ হাসপাতালে সিট পাওয়া দূরে থাকুক, মেঝেতেও জায়গা মিলছে না এমনকি গুরুতর অসুস্থ শিশু ও বৃদ্ধদের। এর পর রয়েছে ওষুধ পাওয়ার পালা। খুব কম সরকারি হাসপাতালেই প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। বিনামূল্যে পাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না, ন্যায্যমূল্যেও ওষুধ পাচ্ছে না মানুষ। ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাইরের দোকান থেকে- যাদের সঙ্গে হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সসহ কর্মচারীদের বিশেষ লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অর্থাৎ প্রচন্ড শীতের মধ্যেও চিকিৎসা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গরীব তথা সাধারণ মানুষেরা। এমন অবস্থা চলছে সারা দেশেই।

শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে অনেকের ভরসা আগুন

 

বলা দরকার, শীতের কারণে সৃষ্ট চরম বিপদের মধ্যে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ন্যক্কারজনক ছিনিমিনি কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সরকারের উচিত বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোর অনিয়ম ও বেআইনি কার্যকলাপের ব্যাপারে দ্রুত তৎপর হয়ে ওঠা। শিশু ও বৃদ্ধ নির্বিশেষে অসুস্থ সব মানুষ যাতে যাওয়া মাত্র ভর্তি ও চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ পায় তার আয়োজন নিশ্চিত করা। সরকারকে একইসঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণ ওষুধও সরবরাহ করতে হবে, যাতে বিপন্ন কোনো মানুষকেই বেশি দাম দিয়ে বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনতে না হয়। ওষুধ ও চিকিৎসা নিয়ে যারা দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

শীতবস্ত্র বিতরণের ব্যাপারেও সরকারের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। সরকার চাইলে সমাজের বিত্তবান মানুষদের কাছ থেকে সোয়েটার, জ্যাকেট, কম্বল, মাফলার এবং শাল বা চাদর ও কম্বল জাতীয় শীতবস্ত্র সংগ্রহ করা সহজেই সম্ভব হতে পারে। এজন্য দরকার আন্তরিকতার সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়া। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, এনজিও এবং সামাজিক সংগঠনেরও উচিত শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে আসা। সেটা আমাদের জাতীয় দায়িত্বও বটে।

আমরা আশা করি, শীতের তীব্রতা এবং মানুষের কষ্ট আরও বাড়ার আগেই সরকারসহ সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং এনজিও মানুষের কষ্ট কমানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়ে উঠবেন।

   

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির মালিকের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়াকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাঃ আবু তাহির সাক্ষরিত এত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সনের হজ মৌসুমে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হ.লা, ০৬৭২) এর অধীন ৪৪৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত রয়েছে। উক্ত এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে অদ্যাবধি কোন ভিসা করা হয়নি। তথাপি এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এতে এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীগণ প্রতারিত হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে এবং তাঁদের এ বছর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (ই.লা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং একইসাথে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হলা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া এর দেশ ত্যাগ রোধ করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি ৪৪৪ জন হজ যাত্রীর কারোরই ভিসার জন্য আবেদন করেনি। এমতাবস্থায় এই এজেন্সিসহ আরও ৫টি এজেন্সিকে শোকজ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। গত বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম।

অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে না পারায় জন্য, ১২টি এজেন্সিকে ব্যাখ্যা প্রদানের পাশাপাশি সচিবালয়ে ডেকে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজকের মধ্যে এই ১২টির মধ্যে ৯টি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব এজেন্সি ভিসা করতে না পারার ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে মন্ত্রণালয়ের কাছে।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;