যেসব ভুলের কারণে নামাজ হয় না



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নামাজ সহিহ-শুদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয় মাসয়ালা জানা জরুরি

নামাজ সহিহ-শুদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয় মাসয়ালা জানা জরুরি

  • Font increase
  • Font Decrease

একজন মুসলিম হিসেবে আমরা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। অনেক সময় না-জানা কিংবা অবহেলার কারণে নামাজে বিভিন্ন ধরনের ভুল হয়। সেসব ভুলের দরুণ কখনও নামাজ মাকরূহ হয়ে যায়, আবার কখনও নামাজই হয় না; নষ্ট হয়ে যায়। তাই এখানে বহুল প্রচলিত কতিপয় ভুল-ভ্রান্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

তাকবিরে তাহরিমা মনে মনে বলা

অনেকে নামাজের শুরুতে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে হাত বাঁধাকেই তাকবিরে তাহরিমা মনে করে। ফলে তারা আর মুখে তাকবির উচ্চারণ করে না। এটি একটি মারাত্মক ভুল। এর দ্বারা নামাজ সহিহ হয় না। কারণ নামাজের শুরুতে স্পষ্ট উচ্চারণে তাকবির তথা ‘আল্লাহু আকবার’ বলা ফরজ। যেহেতু এই তাকবিরের মাধ্যমে নামাজ বহির্ভূত সব কাজ হারাম হয়ে যায় তাই একে ‘তাকবিরে তাহরিমা’ বলা হয়। এই তাকবির স্পষ্টভাবে মুখে উচ্চারণ করে বলা ফরজ।

সুতরাং কেউ যদি শুধু দুই হাত উঠিয়ে নাভির নিচে বেঁধে নেয়; কিন্তু মুখে ‘আল্লাহু আকবার’ না বলে বা মনে মনে বলে তাহলে তার নামাজের প্রথম ফরজ আদায় না হওয়ার কারণে তার নামাজ সহিহ হবে না। অতএব তাকবির স্পষ্টভাবে মুখে উচ্চারণ করতে হবে। শুধু মনে মনে বলা যথেষ্ট হবে না। -মারাকিল ফালাহ : ২১৮

ইমামের আগে তাকবিরে তাহরিমা শেষ করে ফেলা

অনেক মুসল্লিকে দেখা যায়, তারা ইমামের সঙ্গে তাকবিরে উলা ধরার জন্য একেবারে ইমামের সঙ্গে সঙ্গেই তাকবিরে তাহরিমা বলে। এক্ষেত্রে অসতর্কতার দরুণ কখনও কখনও মুক্তাদির নামাজ অশুদ্ধ হয়ে যায়। কেননা মুক্তাদির নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য তার তাকবিরে তাহরিমা, ইমামের তাকবিরে তাহরিমা বলে শেষ করার পরে শেষ হওয়া জরুরি। ইমামের তাকবিরে তাহরিমা শেষ হওয়ার আগেই যদি মুক্তাদির তাকবির বলা শেষ হয়ে যায় তাহলে তার ইক্তেদা ও নামাজ সহিহ হবে না।

অনেক সময় ইমাম সাহেবের তাকবিরে তাহরিমা দীর্ঘ করে টেনে বলার কারণে মুক্তাদির তাকবির তার আগে শেষ হয়ে যায়। ফলে মুক্তাদির নামাজ শুদ্ধ হয় না। অতএব মুক্তাদিদের এ ভুল থেকে বাঁচানোর জন্য ইমামের কর্তব্য হলো, তাকবিরে তাহরিমার ‘আল্লাহ’ শব্দের লামকে এক আলিফের চেয়ে বেশি দীর্ঘ না করা। -আদ দুররুল মুখতার : ১/৪৮০

আল্লাহু আকবারের ‘হামজা’ অথবা ‘বা’ কে টেনে পড়া

কোনো কোনো মুসল্লি ও ইমামকে নামাজের মধ্যে তাকবির বলার সময় ‘আল্লাহু আকবার’-এর (বা) টেনে পড়তে শোনা যায়। এটা একটা বড় ভুল। কারণ (বা) এ ‘মদ’ করলে অর্থাৎ টেনে দীর্ঘ করে পড়লে তার অর্থে চরম বিকৃতি ঘটে। বিনা মদে ‘আকবার’ অর্থ ‘সবচেয়ে বড়’। আর মদ সহকারে ‘আকবা-র’ শয়তানের বাচ্চার নাম। এ ভুলটি যদি তাকবিরে তাহরিমার মধ্যে হয় তাহলে নামাজ আরম্ভই হবে না। আর নামাজের ভেতরের কোনো তাকবিরে হলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তদ্রূপ ‘আল্লাহু আকবার’ এর প্রথম অথবা দ্বিতীয় ‘আ’-কে টেনে দীর্ঘ করে পড়লে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। কেননা সেক্ষেত্রেও তাকবিরের অর্থ ও মর্ম ভীষণভাবে পাল্টে যায়। সেক্ষেত্রে তা প্রশ্নবোধক বাক্যে পরিণত হয়, যা আল্লাহতায়ালার বড়ত্ব ও মহত্ত্বে সংশয় প্রকাশ করে। -মারাকিল ফালাহ : ২২৩

নামাজ একটি ফরজ ইবাদত

মনে মনে কেরাত পড়া

যে সব নামাজে আস্তে কেরাত পড়া হয়, সেসব নামাজে অনেককে দেখা যায়, তারা মুখ-ঠোঁট না নেড়ে মনে মনে সুরা-কেরাত পড়েন। তারা হয়তো মনে করেন, আস্তে কেরাত পড়া মানে মনে মনে পড়া। এই ধারণা ঠিক নয়। কারণ নামাজে কেরাত আস্তে পড়ার অর্থ হলো- নিচু স্বরে তেলাওয়াত করা। আর মনে মনে পড়া কোনোক্রমেই নিম্নস্বরে পড়া নয়।

আস্তে কেরাত পড়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি হলো- এমনভাবে পড়া, যেন পাঠকারী নিজে শুনতে পায়। আর সর্বনিম্ন এতটুকু তো অবশ্যই জরুরি যে, সহিহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করা হবে এবং ঠোঁট-জিহবার নড়াচড়া দেখা যাবে। হাদিস শরিফে আছে, জোহর ও আসর নামাজে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কেরাত পড়তেন, তখন কোনো কোনো আয়াত সাহাবায়ে কেরামও কখনও কখনও শুনতে পেতেন।

হজরত আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোহর ও আসর নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহার সঙ্গে আরেকটি সুরা পড়তেন। কখনও কোনো কোনো আয়াত আমাদের শুনিয়ে পড়তেন।’ –সহিহ বোখারি : ৭৭৮

অতএব কেরাত পড়ার সময় জিহবা ও ঠোঁট ব্যবহার করে মাখরাজ থেকে সহিহ-শুদ্ধভাবে হরফ উচ্চারণ করতে হবে। অন্যথায় শুধু মনে মনে পড়ার দ্বারা কেরাত আদায় হবে না এবং নামাজও সহিহ হবে না। -মারাকিল ফালাহ : ২১৯

রুকুতে গিয়ে তাকবিরে তাহরিমা বলা শেষ করা

অনেকে জামাতে ইমামকে রুকু অবস্থায় পেলে রাকাত ধরার জন্য দ্রুত রুকুতে চলে যায়। এ ক্ষেত্রে অনেকেই তাকবিরে তাহরিমা রুকুতে গিয়ে বলে। আবার অনেকে পূর্ণ তাকবির রুকুতে গিয়ে না বললেও দাঁড়িয়ে তাকবির শুরু করে, কিন্তু শেষ করে রুকুতে গিয়ে। অর্থাৎ দাঁড়ানো অবস্থায় ‘আল্লাহু’ বলে আর রুকু অবস্থায় গিয়ে ‘আকবার’ বলে। এটা একটা বড় ভুল। এভাবে তাকবিরে তাহরিমা বললে নামাজ হবে না। বরং পুরো তাকবিরে তাহরিমা দাঁড়িয়ে বলা জরুরি। পূর্ণ তাকবির কিংবা তাকবিরের কিছু অংশও যদি রুকুতে গিয়ে (অর্থাৎ হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছার পর) বা তার কাছাকাছি গিয়ে শেষ হয় তাহলে নামাজ হবে না। অবশ্য দাঁড়ানোর কাছাকাছি থাকা অবস্থায় পূর্ণ তাকবিরে তাহরিমা বলা শেষ করলেও নামাজ হয়ে যাবে।

অতএব তাকবিরে তাহরিমা পুরোটাই দাঁড়ানো বা দাঁড়ানোর কাছাকাছি অবস্থার ভেতর বলে শেষ করতে হবে। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/৮৪

ইমামের রুকু থেকে উঠার পর রুকুতে যাওয়া

কোনো কোনো সময় এমন হয় যে, জামাত চলাকালীন আগন্তুক মুসল্লি তাকবিরে তাহরিমা বলে রুকুতে যাচ্ছে আর এদিকে ইমাম ‘সামিয়াল্লাহ’ বলে রুকু থেকে উঠে গেছেন। এক্ষেত্রে উক্ত মুসল্লি ইমামের সঙ্গে রুকু না পাওয়ার কারণে ওই রাকাত পায়নি। কেননা রাকাত পাওয়ার জন্য ইমামের সঙ্গে রুকু পাওয়া জরুরি। আর রুকু পাওয়ার জন্য এক মুহূর্তের জন্য হলেও ইমামের সঙ্গে রুকুতে শরিক হওয়া আবশ্যক। যদি কেউ ইমামকে রুকু অবস্থায় এক মুহূর্তের জন্যও না পায়; বরং ইমামের রুকু থেকে উঠে যাওয়ার পর, অর্থাৎ তার মাথা এবং হাঁটু থেকে হাত উঠে যাওয়ার পর রুকুতে যায় তাহলে সে ওই রাকাত পেয়েছে বলে ধর্তব্য হবে না।

অনেক মুসল্লি ইমামের রুকু থেকে উঠে যাওয়ার পর রুকুতে গিয়ে সেই রাকাত পেয়েছে বলে ধারণা করে এবং এক রাকাত কম আদায় করে। এতে তার নামাজ হয় না।

মুসল্লিদের এই মারাত্মক ভুল থেকে রক্ষার জন্য ইমামদের উচিত হলো, রুকু থেকে উঠা আরম্ভ করতেই তাকবির বলা শুরু করা। কেননা কোনো কোনো ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠার সময় কিছুদূর উঠার পর তাকবির বলেন। ফলে নবাগত মুসল্লি দূর থেকে মুসল্লিদেরকে রুকু অবস্থায় দেখে তাকবিরে তাহরিমা বলে রুকুতে যায়। অথচ তখন ইমাম সাহেব রুকু অবস্থায় নেই। এতে সে ইমামের সঙ্গে রুকু পেয়েছে মনে করে সে হিসেবে নামাজ পড়ার দরুণ তার নামাজ বাতিল হয়ে যায়। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১২০

প্রথম সালামের পর ইমামের ইক্তেদা করা

অনেককে দেখা যায়, শেষ বৈঠকে যখন ইমাম সাহেব ডানদিকে সালাম ফিরিয়ে ফেলেন তখনও তারা তার ইক্তেদা করেন। এটাও ঠিক নয়। কারণ প্রথম সালামের ‘আসসালামু’ শব্দটি বলার সঙ্গে সঙ্গেই ইমামের ইক্তেদার সময় শেষ হয়ে যায়। এরপর আর ইমামের ইক্তেদা করা সহিহ নয়। সুতরাং এ অবস্থায় মুসল্লি ইমামের ইক্তেদা করলে তার নামাজ আদায় হবে না। -হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি : ২৫১

 

 

   

অপরূপ প্রকৃতির মাঝে দৃষ্টিনন্দন এক মসজিদ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সবুজ বনানী, পাহাড় আর চা বাগানের অপরূপ দৃশ্য মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলকে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচয় করিয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনা থাকে এখানে। শ্রীমঙ্গলে অনেকেই দেখতে আসনে পাহাড়ের মাঝে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ।

শ্রীমঙ্গলের গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে সামনে দিকে গেলেই দেখা মিলবে মসজিদটির। জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদের প্রবেশদ্বার পেরিয়ে প্রথমে খাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এর পর সুযোগ মিলবে তা পরিদর্শনের।

শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোনো কোলাহল। দূর থেকে দেখা যায়, সবুজের মাঝে সিঁড়ির লাল আর সাদা রঙের মিশ্রণ। শতাধিক সিঁড়ি। এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে। চারদিকে সবুজ পাহাড়ঘেরা নৈসর্গিক পরিবেশ। রয়েছে সারি সারি চা বাগান। গুনে গুনে ১৫০ সিঁড়ি পাড়ি দিয়ে তবেই পৌঁছতে হবে মসজিদে।

জান্নাতুল ফেরদৌস নামে পরিচিত মসজিদটির নাম ‘মসজিদুল আউলিয়া খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)। ‘মসজিদটি নিয়ে মানুষের আকর্ষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর স্থাপত্যশৈলী আর অবস্থান।

প্রায় ১৯ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হয় জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি। সমতল থেকে প্রায় ৭০-৮০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মসজিদটি। চারপাশে রয়েছে, নানা রকমের গাছগাছালি। আছে লেবু ও আনারস বাগান। সবুজের সমারোহ চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে মসজিদ ঘিরে। চারদিকে ঝিঁঝি পোকার ডাক আর নাম না-জানা পাখিদের কিচিরমিচির এক অন্যরকম পরিবেশের তৈরি করেছে।

খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত এই মসজিদটিতে প্রায় ৮০০ লোক একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধনে এর চারপাশে লাগানো হয়েছে নানা জাতের ফুলগাছ। এর গঠনশৈলীও চমৎকার। তুর্কি স্থাপত্যের আদলে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক ঝাড়বাতি, যা আনা হয় সুদূর চীন থেকে।

মসজিদের সামনের অংশ

দর্শনীয় এই মসজিদটি নির্মাণ করেন খাজা টিপু সুলতান। টিপু সুলতান ছিলেন খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)-এর সাহেবজাদা। এই খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) আবার ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সুফি-সাধক খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরীর (রহ.) উত্তরসূরি।

মসজিদটির প্রাঙ্গণে আছে দুটি গেস্টহাউস এবং একটি চিকিৎসাকেন্দ্র। এই চিকিৎসাকেন্দ্রে সপ্তাহের ছয় দিন গরিব মানুষদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া এখানে আছে একটা হেলিপ্যাড। গেস্টহাউসটি মূলত ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের পরিবারের সদস্যদের বিশ্রামের জন্য ব্যবহৃত হয়।

মসজিদের পাশেই রাখা হয়েছে কবরস্থানের জায়গা। শ্রীমঙ্গলে আগত পর্যটকরা একবার হলেও এখানে এসে ঘুরে যায়। এ ছাড়া প্রতিবছর ২৪ নভেম্বর এ মসজিদ ঘিরে আয়োজন করা হয় বার্ষিক ওরস মাহফিলের।

এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি দেখতে প্রথমে আপনাকে আসতে হবে শ্রীমঙ্গল শহরে। গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে আসতে হয় এখানে। সিলেট শহর থেকে কিংবা গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে সিএনজি বা ইজিবাইক রিজার্ভ করে যেতে পারেন। শহর থেকে যাওয়া-আসা ভাড়া প্রায় তিন থেকে চারশ টাকা। গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে গেলে ভাড়া কিছু কম পড়বে। অটোরিকশা দিয়েও যেতে পারেন। চারপাশের মনোরম পরিবেশ দেখতে দেখতে পৌঁছতে পারবেন।

;

পরনিন্দার পাপ থেকে বাঁচতে যা করবেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, ছবি : সংগৃহীত

যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘গিবত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরনিন্দা করা, কুৎসা রটানো, পেছনে সমালোচনা করা, পরচর্চা করা, দোষারোপ করা, কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষ অন্যের সামনে তুলে ধরা।

শরিয়তে গিবত হারাম ও কবিরা গোনাহ। হাদিসের বর্ণনা, ‘যারা অগ্র-পশ্চাতে অন্যের দোষ বলে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে ধ্বংসের দুঃসংবাদ।’ -সহিহ মুসলিম

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াবে না।’ -সুরা হুজুরাত : ১২

‘দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে।...অবশ্যই তারা হুতামাতে (জাহান্নামে) নিক্ষিপ্ত হবে। তুমি কি জানো হুতামা কী? তা আল্লাহর প্রজ্বলিত অগ্নি, যা হৃদয়কে গ্রাস করবে। নিশ্চয় বেষ্টন করে রাখবে, দীর্ঘায়িত স্তম্ভসমূহে।’ -সুরা হুমাজা : ১-৯

গিবত এমনই ভয়াবহ পাপ। এটা থেকে বেঁচে থাকা মুমিন-মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। গিবত থেকে বাঁচার কিছু উপায় হলো-

১. কারও বিষয়ে হুটহাট করে কিছু না বলা। ভেবে-চিন্তে কথা বলা। যতটুকু সম্ভব কম কথা বলাই ভালো, কারণ- চুপ থাকাও একটা ইবাদত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে; নচেৎ চুপ থাকে।’ -সহিহ বোখারি : ৬০১৮

২. যে উপস্থিত নেই, তাকে নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। সুতরাং বন্ধু-বান্ধব কিংবা কাছের কোনো আত্মীয়ের অনুপস্থিতিতে তাদের নামে ভালো কথাও না বলা। কারণ ভালো কথা বলা ফাঁকে শয়তান আপনাকে দিয়ে কখন যে গিবত করিয়ে নেবে; সেটা আপনি টেরই পাবেন না।

৩. অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকসমাগম এড়িয়ে চলা। কেননা যেখানে মানুষ বেশি থাকে সেখানে গিবতও বেশি হয়।

৪. আপনার কাছে কেউ গিবত করলে তাকে থামিয়ে দেবেন। সম্ভব হলে বুঝিয়ে বলবেন। কারণ গিবত করা ও গিবত শোনা উভয়টাই হারাম।

নিজেও যখন কথা বলতে বলতে গিবত করে ফেলবেন এবং খেয়াল হবে যে, আরে আমি তো গিবত করে ফেলেছি; সঙ্গে সঙ্গে থেমে যাবেন এবং তওবা করবেন।

৫. অমুক কেমন জানি পোশাক পরে, অমুকের রান্না ভালো না, অমুক মোটা, অমুক কালো, দেখতে একদম ভালো না ইত্যাদি- এ ধরনের কথাও গিবত। তাই এ জাতীয় কথা বা মন্তব্য থেকে বিরত থাকা।

৬. অমুক এই এই কাজগুলো ভালো করেনি। অমুকের এই-এই স্বভাব ভালো না। অমুকের নামে এই-এই বদনাম আছে। ওমুক আমার এই-এই ক্ষতি করছে। এগুলো বলার অর্থ হলো যে, মানুষের দোষ নিয়ে কথা বলা; যেটা গিবতের অন্তর্ভুক্ত।

৭. এর পরও যদি গিবত হয়ে যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আস্তাগফিরুল্লাহ অথবা দুই রাকাত নফল নামাজ পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নেওয়া।

কাউকে নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা আমরা আল্লাহর কাছে বলা। পারলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া। মানুষের কাছে এগুলো নিয়ে আলোচনা করে উল্টো নিজের গোনাহ কামানো কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। অন্যের দোষ ঢেকে রাখলে আল্লাহতায়ালাও এ কারণে আমার-আপনার দোষ ঢেকে রাখবেন- ইনশাআল্লাহ!

মনে রাখবেন, গিবত আমাদের নেক আমলগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। আল্লাহতায়ালা সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমিন।

;

পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার, ছবি : সংগৃহীত

পথচারীদের ঠাণ্ডা শরবত দিচ্ছে মারকাজুল কোরআন পরিবার, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান তীব্র দাবদাহে রাজধানীর পিপাসার্ত মানুষের মাঝে টানা চার দিন ধরে সুপেয় ঠাণ্ডা শরবত (লাল চিনি, বিট লবণ, লেবু এবং এসএমসির ম্যাংগো ও অরেঞ্জ ফ্লেবার মিশ্রিত) বিতরণ করছে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবার।

রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যাণ্ড, মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে এবং মিরপুর ১ ও ১০-এর বিভিন্ন পয়েণ্টে শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর পর ধারাবাহিকভাবে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন ১ হাজার ৫ শ’ লিটার শরবত বিতরণ করা হচ্ছে।

মে দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিকে সামনে রেখে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবার বুধবার (১ মে) মিরপুর ঈদগাঁহ ময়দান ও টিএসসির মোড়ে শরবত বিতরণ করবে।

পথচারীদের মাঝে ঠাণ্ডা শরবত বিতরণের বিষয়ে মারকাজুল কোরআন শিক্ষা পরিবারের সভাপতি ও মানবসেবায় সাড়া জাগানো প্রতিষ্ঠান তাকওয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান গাজী ইয়াকুব বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ঢাকাসহ সমগ্র দেশবাসী এখন প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে অবস্থান করছেন। এমন সময় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তীব্র গরমে আমাদের আশপাশে অবস্থান করা শ্রমজীবী মেহনতি মানুষদের ভুলে গেলে চলবে না। তাই তাদের উদ্দেশ্যেই মূলত এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘গরমের তীব্রতা বেশি থাকলে সামনে আরও বেশ কিছুদিন এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

হিট স্ট্রোকের মারাত্মক এই অবস্থায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্পটে ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত পথচারীদের বিনামূল্যে এমন উদ্যোগে ভীষণ খুশি সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় বেরিয়ে সবার প্রাণ যখন উষ্ঠাগত, তখন পথচারীদের ডেকে ডেকে শরবত করাচ্ছেন আলেম-উলামা ও মাদরাসার ছাত্ররা। এর চেয়ে বড় মানবিক কাজ আর হতে পারে না।

;

শ্রমিক-মালিকের সম্পর্ক হবে ভাই ভাই



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়, ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শ্রমজীবী মানুষের প্রেরণা ও আবেগের দিন পয়লা মে। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মাহুতি দান করেছিলেন শ্রমিকরা। তাদের রক্তাক্ত স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৮৯০ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি সব পর্যায়ে মে দিবস গুরুত্বসহকারে পালিত হয়। মে দিবস এলেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে ঘর্মাক্ত মেহনতি মানুষের প্রতিচ্ছবি। আর এই মেহনতি মানুষের অধিকারের প্রশ্নটিও সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসে এই ঐতিহাসিক দিনে।

সময়ের পরিবর্তনে মে দিবস এখন সারা দুনিয়ায় সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে। মে দিবসের ঐতিহাসিক প্রেরণায় কল-কারখানা, অফিস-আদালতসহ সব কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকরা এখন উজ্জীবিত। যে উদ্দেশ্যে শ্রমিকেরা আন্দোলন করে জীবন দিয়েছিলেন সেই কাঙ্ক্ষিত কাজের সময়সূচি এখন প্রায় কর্মক্ষেত্রে অনুসৃত হচ্ছে। তবে মজুরি নির্ধারণের ব্যাপারে নানা আপত্তি রয়েছে। তারপরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা যে নেই তা বলা যাবে না।

এমন কথাও বড় করে বলার উপায় নেই যে, ১৮৮৬ সালের পর দীর্ঘ একশত আটত্রিশ বছর পর শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি মিলেছে; শ্রমিক তার অধিকার সত্যিকারার্থে ফিরে পেয়েছে এবং তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত মজুরি নিশ্চিত করতে পেরেছে। কর্মক্ষেত্রে ৮ ঘণ্টা শ্রমের প্রতিষ্ঠা হয়েছে, কিন্তু এখনও শ্রমিক নিপীড়ন থামেনি এবং শ্রমিকের প্রকৃত মর্যাদা ও শ্রমের মূল্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অহরহ শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে সহজেই এটা অনুধাবন করা যায়।

সুতরাং অনেকটা জোড় গলায় বলা যায় যে, দুনিয়ার কোথাও শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি এবং তাদের বাঁচার উন্নত পরিবেশ এখনও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তবে এ ক্ষেত্রে একমাত্র ইসলামই শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এখন থেকে দেড় হাজার বছর আগে।

নবী মুহাম্মদ (সা.) শ্রমিকের মেহনতের কষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন। সে জন্য তিনি যে ঐশ্বরিক বিধান চালু করেছিলেন, তাতে শ্রমিক ও শ্রমের মহিমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার অমোঘ বাণী জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আজও সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে অতুলনীয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শ্রমিক ও মালিকের সম্পর্ককে ভাই ভাই উল্লেখ করে তিনি তাদের অধিকার ও পাওনার ব্যাপারে যে উক্তি করেছিলেন তা অসাধারণ।

নবী কারিম (সা) বলেছেন, ‘মজুর-শ্রমিক ও ভৃত্যদের যথারীতি থাকা ও পোশাক দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করছে তারা তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন।’ -সহিহ বোখারি

রাসুলুল্লাহ (সা.) শ্রমিককে আপনজনের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের আপনজন ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করো, তাদের সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করবে।’ একই কথা নবী কারিম (সা.) আরেক হাদিসে উল্লেখ করেছেন এভাবে, ‘তোমরা অধীনস্থদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে এবং তাদেরকে কোনোরকম কষ্ট দেবে না। তোমরা কি জানো না, তাদেরও তোমাদের মতো একটি হৃদয় আছে। ব্যথাদানে তারা দুঃখিত হয় এবং কষ্টবোধ করে। আরাম ও শান্তি প্রদান করলে সন্তুষ্ট হয়। তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা তাদের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করো না।’ -সহিহ বোখারি

শ্রমিকরাও মানুষ। তাদের শক্তি-সামর্থ্য ও মানবিক অধিকারের প্রতি লক্ষ রাখার বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘মজুরদের সাধ্যের অতীত কোনো কাজ করতে তাদের বাধ্য করবে না। অগত্যা যদি তা করাতে হয় তবে নিজে সাহায্য করো।’ -সহিহ বোখারি

শ্রমিকের প্রতি মালিক যাতে সহনশীল থাকে এবং তার ভুলত্রুটি ক্ষমার মতো মহৎ মনের অধিকারী হয়, সেটা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে আল্লাহর নবী (সা.) হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘মজুর চাকরদের অপরাধ অসংখ্যবার ক্ষমা করা মহত্ত্বের লক্ষণ।’ নবী কারিম (সা.) আরও বলেছেন, ‘অসদাচরণকারী মালিক বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।’

শ্রমিকের মজুরি আদায়ের ব্যাপারে নবী কারিম (সা.)-এর অতি পরিচিত এবং বিখ্যাত একটি উক্তি সবার জানা। তিনি বলেছেন, ‘মজুরকে তার গায়ের ঘাম শুকাবার আগেই মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নবী কারিম (সা.)-এর এই বাণী শ্রমিকের মর্যাদার বিষয়টিকে আরও বেশি মহীয়ান করেছে।

এভাবে ইসলাম শ্রমিকের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার যে নিশ্চয়তা দিয়েছে, তা দুনিয়ার আর কোনো মতবাদ বা দর্শন দেয়নি। আধুনিক বিশ্বের পুঁজিবাদী ও সমাজবাদী রাষ্ট্র দর্শনের কোনোটাই শ্রমিকের প্রকৃত অধিকার ও মর্যাদার ন্যূনতম সমাধান দিতে পারেনি। ফলে এখনও শ্রমিক-মজুররা নিষ্পেষিত হচ্ছে। মালিকের অসদাচরণ, কম শ্রমমূল্য প্রদান, অনপযুক্ত কর্ম পরিবেশ প্রদানসহ নানা বৈষম্য শ্রমিকের দুর্দশা ও মানবেতর জীবনযাপনের কারণ হয়ে আছে।

মে দিবসের প্রাক্কালে আমরা বলতে চাই, নানা আয়োজনে প্রতি বছর শ্রমিক দিবস পালন করার মধ্যে শ্রমিকের প্রকৃত মুক্তি নেই। যে অধিকারের জন্য শ্রমিকরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন শিকাগোর রাজপথে, তা বাস্তবে এখনও অর্জিত হয়নি। আজও শ্রমিকেরা পায়নি তাদের কাজের উন্নত পরিবেশ, পায়নি ভালোভাবে বেঁচে থাকার মতো মজুরি কাঠামো এবং স্বাভাবিক ও কাঙ্ক্ষিত জীবনের নিশ্চয়তা। মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে শ্রমিকের প্রতি মালিকের সহনশীল মনোভাব থাকতে হবে। শ্রমিকের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার আলোকে তাকে কাজ দিতে হবে। শ্রমিককে মানুষের মতো বেঁচে থাকার জন্য তার মজুরি সেভাবে নির্ধারণ করতে হবে।

মালিককে অবশ্যই এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তার নিজের স্বজনরা যে রকম জীবনযাপন করবে, তার অধীনস্থ শ্রমিকরাও সে রকম জীবনের নিশ্চয়তা পাবে। মালিক-শ্রমিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে ইসলাম যে শ্রমনীতি ঘোষণা করেছে, তাকে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা গেলে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা অবশ্যই সুরক্ষিত হবে- ইনশাআল্লাহ।

;