পরিবেশবান্ধব মসজিদ



ড. ইকবাল কবীর মোহন, অতিথি লেখক, ইসলাম
কুবা মসজিদ, মদিনা। সৌদি আরবের মদিনায় নির্মিত প্রথম পরিবেশবান্ধব মসজিদ

কুবা মসজিদ, মদিনা। সৌদি আরবের মদিনায় নির্মিত প্রথম পরিবেশবান্ধব মসজিদ

  • Font increase
  • Font Decrease

মসজিদ মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগি এবং মানসিক প্রশান্তির স্থান। একজন মুসলমানের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে মসজিদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ মুসলমান প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করেন। বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই যেখানে মসজিদ দেখতে পাওয়া যায় না। মুসলিম দেশ তো বটেই, অমুসলিম দেশেও মসজিদের অভাব নেই। লাখ লাখ মসজিদের মিনার থেকে প্রতিদিন উচ্চারিত হয় আজানের সুমধুর ধ্বনি।

মসজিদগুলোর মধ্যে কতগুলো সাধারণ মিল থাকলেও দেশ, পরিবেশ ও জনসংখ্যাভেদে মসজিদের আকার, আকৃতি, গঠনপ্রণালী, শৈল্পিক ও স্থাপত্যকলায় পরিলক্ষিত হয় নানা বৈচিত্র্য। আধুনিক যুগে মসজিদ নির্মাণের বেলায় আরও কতগুলো জরুরি বিষয় সামনে এসেছে। সময়ের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে এর ব্যবস্থাপনা, ব্যয় নির্বাহে আসছে আধুনিকতা। বিশেষ করে প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা বিবেচনায় রেখে এখন ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি হচ্ছে মসজিদ।

আধুনিক বিশ্ব ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের ভারে বিপর্যস্ত। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বে বেড়েছে দূষণ ও বংশগত পরিবর্তন। বৃদ্ধি পেয়েছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। ফলে পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে অগণিত মানুষ, প্রাণী জাতি ও উদ্ভিদ। গ্রিন হাউস অ্যাফেক্টের কারণে মানবসভ্যতা একটি চরম অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে।

ফলে পৃথিবীর দেশে দেশে পরিবেশবাদী মানুষ, চিন্তাশীল বিজ্ঞানী ও দার্শনিকরা পরিবেশ সংকট নিয়ে চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে কাটাচ্ছেন এবং এই সংকট উত্তরণের উপায় উদ্ভাবনের নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবেশ দূষণের করালগ্রাস থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য দেশে দেশে বনায়ন ও সবুজায়নসহ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য চলছে নানা উদ্যোগ। তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব মিল-কারখানা, অফিস-বাড়ি। পণ্যসামগ্রীর মোড়ক পরিবেশসহনীয় করার জন্যও নেওয়া হচ্ছে কৌশল। এই লক্ষ্য সামনে রেখেই অনেক দেশ পরিবেশবান্ধব মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছে।

‘পরিবেশবান্ধব’ কথা দ্বারা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন অবস্থাকে বোঝায়। অতএব, পরিবেশবান্ধব মসজিদের অবকাঠামো এবং গঠনপ্রণালী এমন হবে, যা মুসল্লিদের সর্বোচ্চ পরিবেশগত উপকার সাধনে সক্ষম।

পরিবেশবান্ধব ধারণার বাস্তব প্রয়োগ হলো, কার্যক্ষেত্রে স্বল্প পরিমাণ শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা, শক্তির অপচয় রোধ করা, নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপন্ন, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা, সবুজ বনায়ন এবং পানির পুনঃব্যবহারের কৌশল অবলম্বন করা। অর্থাৎ প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যয় ও অপচয় রোধ করে কম সম্পদে সর্বোচ্চ উপকার আদায় নিশ্চিত করা।

মহান আল্লাহ এবং ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি, বাতাস, সূর্যের আলোসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ সতর্কভাবে ব্যবহার এবং এগুলোর অপব্যয় এবং অপচয় রোধ করার তাগিদ দিয়েছেন। আর এই মহৎ উদ্দেশ্য সামনে রেখেই পরিবেশবান্ধব মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ।

পরিবেশবান্ধব মসজিদের ধারণা নতুন কিছু নয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) নির্মিত মদিনার মসজিদে নববী পরিবেশবান্ধব মসজিদের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বর্তমানে মুসলিম বিশ্বের কয়েকটি দেশ পরিবেশবান্ধব মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

কারণ মসজিদের সঙ্গে মুসলমানদের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। মুসল্লিরা দিন ও রাতে অন্তত দেড় থেকে দুই ঘণ্টা মসজিদে নামাজ ও জিকির-আজকারে সময় কাটান। কেউ কেউ আরও বেশি সময় নামাজ ও অন্যান্য ইবাদতে মসজিদে অবস্থান করেন। নিবিড় ও একনিষ্ঠভাবে মহান আল্লাহর ইবাদত করার সর্বোত্তম স্থান হলো- মসজিদ। তাই এর পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা হওয়া চাই সবচেয়ে বেশি উন্নত এবং অবশ্যই পরিবেশবান্ধব। এখানে হাজার হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়েন। ফলে মসজিদে দরকার হয় প্রচুর পানি, বিদ্যুৎ এবং যথেষ্ট শব্দসঞ্চালন ব্যবস্থা। বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে ইমামের খুতবা, কোরআন তেলাওয়াত পৌঁছানোর জন্য উন্নত শব্দসঞ্চালন ব্যবস্থা খুবই জরুরি।

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অজু ইবাদতের অত্যাবশ্যকীয় অংশ। মসজিদে বিপুলসংখ্যক মুসল্লির অজুর জন্য প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। তাই মসজিদ এমনভাবে তৈরি করা হবে, যেখানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা যায় এবং অজুর পানি পুনর্ব্যবহার করে অন্যান্য কাজে লাগানো যায়। কেননা, বিশুদ্ধ পানির অভাব বর্তমান পৃথিবীর একটি প্রকট সংকটে পরিণত হয়েছে। পানি আল্লাহর একটি বড় নেয়ামত। তাই পানির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত এবং এর অপচয় রোধ খুবই প্রয়োজন। আল্লাহ পানিকে তার একটি নেয়ামত বলে ঘোষণা করেছেন। সুরা ওয়াকিয়ার ৬৮ ও ৬৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যে পানি পান করো সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? বৃষ্টিভরা মেঘ থেকে তোমরা কি তা বর্ষণ করো, না আমি বৃষ্টি বর্ষণকারী?’

পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে মানবজীবনে পানির গুরুত্ব ও অবদান সম্পর্কে মহান আল্লাহ জোর দিয়েছেন। তাই মসজিদে পানির অপচয় রোধে পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যবস্থার প্রবর্তন করা খুবই জরুরি। অজুর পানি ব্যবহারের পর এই পানি আমরা মসজিদ এলাকার বাগানের গাছপালার পরিচর্যায় ব্যবহার করতে পারি।

খলিফা আল-তাজির মসজিদ, দুবাই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দেইরাতে অবস্থিত পরিবেশবান্ধব মসজিদ 

পরিবেশবান্ধব মসজিদের অন্যতম একটি উপাদান হলো- বাগান। বাগানের গাছপালা ছায়া দিয়ে পরিবেশকে শুধু শীতলই রাখে না, শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রচুর অক্সিজেন সরবরাহ করে। বাগানের গাছে পাখি ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ আশ্রয় তৈরি করে। তাই বাগান নির্মল পরিবেশের জন্য যেমন প্রয়োজন, তেমনি ইসলামি মূল্যবোধ ও ঐতিহ্য ধারণের উদ্দেশ্যে বাগানের বিশেষত্ব রয়েছে। বাগান সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সুরা তওবার ৭২ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও নারীদের জান্নাতের (বাগান) ওয়াদা দিয়েছেন, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে।’

সুরা আন-নিসার ১৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আর যে আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে (বাগান), যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ।’ আল্লাহর রাসুল (সা.) ও বিষয়টির প্রতি অত্যধিক গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, ‘যদি কোনো মুসলমান একটি গাছ লাগায়, তাতে ফল ধরে এবং এই ফল কোনো মানুষ বা পাখি খায়, তা হলে এটি তার জন্য সাদকা হিসেবে গণ্য হবে।’ –সহিহ বোখারি

এসব কারণে পরিবেশবান্ধব মসজিদের ধারণা এখন বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। পরিবেশবান্ধব মসজিদগুলোতে প্রাকৃতিক আলো ও বায়ু চলাচলব্যবস্থা থাকায় শীতাতপ, পাখা ও আলোর বাতির প্রয়োজন অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। মসজিদে স্থাপিত সোলার ব্যবস্থার ফলে বিদ্যুতেরও সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ দূষণের যে সংকট চলছে পরিবেশবান্ধব মসজিদগুলো সেখানে দর্শনীয় অবদানও রাখছে।

   

বদ আকিদায় দেশ ছেয়ে গেছে : ছারছীনার পীর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছারছীনা দরবারের ১৩৩তম ঈছালে ছওয়াব মাহফিল, ছবি : সংগৃহীত

ছারছীনা দরবারের ১৩৩তম ঈছালে ছওয়াব মাহফিল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মো. আবদুর রহমান ছারছীনা থেকে : বর্তমানে বদ আকিদায় দেশ ছেয়ে গেছে। আলেমরা কোনটি সঠিক ও কোনটি বদ আকিদা- সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আলেম-উলামারাও তা পার্থক্য করতে পারছেন না। বাতিল ফেরকাকেই অনেকে সঠিক আকিদা হিসেবে গণ্য করে আমল করে থাকেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ছারছীনা দরবার শরিফের ১৩৩তম বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বাদ মাগরিব তালিমের পর আলোচনায় আমিরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা শরিফের পীর সাহেব হজরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ এসব কথা বলেন।

উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে পীর সাহেব ছারছীনা বলেন, ছারছীনা শরিফের মরহুম দাদা হুজুর কেবলা আল্লামা শাহ্সূফী হজরত মাওলানা নেছার উদ্দীন আহমদ (রহ.) যাবতীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। মুসলামনদেরকে কালেমা, নামাজ, রোজা ইত্যাদি শিক্ষা দেন।

এ সময় তিনি জমইয়াতে হিযবুল্লাহর কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে তালিমি জলসা কায়েমের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, মাহফিল কায়েমের ক্ষেত্রে ফেসবুকে ভাইরাল দেখে নয় বরং সঠিক আকিদা ও আমলের অনুসারী আলেমদের দ্বারা মাহফিল করার পরামর্শ দেন।

পীর সাহেব ছারছীনা আগামীকাল বাদ জুমা আখেরি মোনাজাতে শরিক হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বানও জানান।

ছারছীনার মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সিনিয়র নায়েবে আমির ও হজরত পীর সাহেব কেবলার বড় সাহেবজাদা হজরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছার উদ্দিন আহমদ হুসাইন।

বাদ মাগরিব আলোচনায় তিনি বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ, দীনিয়া মাদ্রাসা, তালিমি জলসা ও এলাকায় ছারছীনা সিলসিলার প্রচার-প্রসারকল্পে ওয়াজ মাহফিল কায়েমের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ছারছীনা দরবার দলীয় রাজনীতি করে না। নির্দিষ্ট কোনো দলের সঙ্গে এই দরবারের কোনো সখ্যতা বা বৈরিতা নেই। আমরা সরকারের ভালো কাজ যেমন সমর্থন করি, তেমনি ভালো কাজে সহযোগিতা করি। আমরা মুসলিম জনসাধারণকে পরহেজগার মুসলমানে রূপান্তরিত করতে চাই।

এছাড়া দ্বিতীয় দিন আলোচনা করেন- মাওলানা মো. রূহুল আমিন ছালেহী, মাওলানা আ জ ম ওবায়দুল্লাহ্, মাওলানা আবদুল গফফার কাসেমী, ড. মাওলানা সৈয়দ মুহা. শরাফত আলী, মাওলানা কাজী মফিজ উদ্দিন, মাওলানা মো. রূহুল আমীন আফসারী ও মাওলানা হাফেজ মো. বোরহান উদ্দীন ছালেহী প্রমূখ।

;

গোনাহ মাফকারী দুই আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গোনাহ মাফকারী দুই আমল, ছবি : সংগৃহীত

গোনাহ মাফকারী দুই আমল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দয়াময় আল্লাহতায়ালা বিভিন্ন উসিলায় তার বান্দাকে ক্ষমা করতে চান। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। বান্দাকে শুধু সেই ক্ষমা পাওয়ার জন্য কোরআন-হাদিসের নির্দেশিত পথে নিজেকে পরিচালিত করতে হবে। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন সময় সাহাবায়ে কেরামকে এমন কিছু আমলের কথা বলেছেন, যেগুলো গোনাহমাফকারী।

দুই ওমরার মাঝের গোনাহ মাফ
আমাদের দেশের অনেক মধ্যবিত্তেরও ওমরা পালনের তওফিক হয়। অনেক মানুষ রয়েছেন, যাদের হজের সামর্থ্য নেই, কিন্তু কষ্ট করে ওমরার টাকা যোগাড় করে ফেলেন। বহু কষ্টে জমানো অর্থ দিয়ে তারা বায়তুল্লাহ জিয়ারতের তৃষ্ণা মেটান, পূরণ করেন বুকের মাঝে লালিত দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।

আর যে সব ধনীদের আল্লাহতায়ালা বায়তুল্লাহর মহব্বত দান করেছেন, তারা তো বছরের বিভিন্ন সময় ছুটে যান বায়তুল্লাহয়। তেমনি যারা আরবের বাসিন্দা বা বায়তুল্লাহর প্রতিবেশী তারাও। যাকে আল্লাহতায়ালা অর্থ বা সুযোগ কিংবা সামর্থ্য দিয়েছেন সঙ্গে আল্লাহর মহব্বতও দান করেছেন সে কি বারবার বায়তুল্লাহর জিয়ারত না করে পারে?

তাছাড়া ওমরার মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা গোনাহ মাফ করেন। এক উমরা তার পূর্ববর্তী ওমরার মাঝের গোনাহগুলো মিটিয়ে দেয়।

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘এক ওমরা পূর্ববর্তী ওমরার মাঝের গোনাহগুলোর কাফফারা হয়ে যায়।’ -সহিহ বোখারি : ১৭৭৩

বায়তুল মাকদিসে নামাজের উদ্দেশ্যে গমন
বায়তুল মাকদিস। মুসলিমের প্রথম কেবলা। মসজিদে হারাম কেবলা হওয়ার পূর্বে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবিরা ষোলো-সতেরো মাস এদিক ফিরে নামাজ আদায় করেছেন। -সহিহ মুসলিম : ৫২৫

মসজিদে হারামের পরই আল্লাহতায়ালার ইবাদত-বন্দেগির উদ্দেশ্যে এ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। -সহিহ মুসলিম : ৫২০

পবিত্র মেরাজের সময় এখান থেকেই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঊর্ধ্বজগৎ ভ্রমণ শুরু হয়েছে। -সহিহ মুসলিম : ১৬২

এছাড়াও বায়তুল মাকদিসের রয়েছে আরও অনেক ফজিলত ও মর্যাদা। কেউ যদি কেবল নামাজের উদ্দেশ্যে বায়তুল মাকদিসে যায় তাহলে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর ন্যায় সে গোনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন- হজরত সোলায়মান আলাইহিস সালাম যখন বায়তুল মাকদিসের নির্মাণকাজ সমাপ্ত করলেন তখন আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয় চাইলেন- এক. আমাকে এমন ফয়সালার যোগ্যতা দিন, যা আপনার ফয়সালার অনুগামী হয়। দুই. আমাকে এমন রাজত্ব দান করুন, যেমন রাজত্ব আর কাউকে দেওয়া হবে না। তিন. যে ব্যক্তি কেবল নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে এ মসজিদে আসবে সে সদ্যভূমিষ্ঠ নিষ্পাপ শিশুর মতো গোনাহমুক্ত হয়ে যাবে।

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তার দুটি আরজি তো কবুল করা হয়েছে; তিনি এ প্রথম দুটি লাভ করেছেন। আর আমি আশা করি, তার তৃতীয় আরজিও কবুল করা হয়েছে। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৪০৮

;

ফরিদাবাদ মাদ্রাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস মাওলানা আবদুল গণির ইন্তেকাল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাওলানা আবদুল গণি, ছবি : সংগৃহীত

মাওলানা আবদুল গণি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মোজাহেদে আজম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (রহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম, ফরিদাবাদ মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস (শায়খে সানি) মাওলানা আবদুল গণি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ইন্তেকাল হয়। মরহুমের জামাতা মাওলানা মাসুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মাওলানা আবদুল গণি দেশের বরেণ্য আলেম, প্রাজ্ঞ মুহাদ্দিস হিসেবে সমাদৃত। তিনি অনেক মসজিদ-মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই সঙ্গে মুগদা ব্যাংক কলোনী মসজিদের খতিব ছিলেন। তার মৃত্যুর খবরে আলেম সমাজে শোকের ছায়া নেমে আসে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৭ নভেম্বর) রাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন মাওলানা আবদুল গণি। পরে রাত ২টায় তাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে আইসিউতে নেওয়া হয়। অবশেষে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন।

২০১৬ সালে সর্বপ্রথম মরহুমের পাকস্থালিতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। তথন থেকেই দেশীয় চিকিৎসা গ্রহণ করেন তিনি। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য তিনি ভারত যান। সেখানে কলকাতা সরোজ গুপ্ত ক্যান্সার সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধীনে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে দেশে ফিরে আসেন। পরে গত কয়েক মাস আগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। এতে তার অবস্থার আরো অবনতি ঘটে। অবশেষে গত সোমবার তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

;

দুবাই কোরআন প্রতিযোগিতায় আবেদনের নিয়মাবলী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জেনে নিন দুবাই কোরআন প্রতিযোগিতায় আবেদনের নিয়মাবলী

জেনে নিন দুবাই কোরআন প্রতিযোগিতায় আবেদনের নিয়মাবলী

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ০১-১৪ রমজান (১২ মার্চ-২৫ মার্চ ২০২৪) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য ২৭তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশি পুরুষ নাগরিকদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের একটি বিজ্ঞপ্তি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আগ্রহীরা আবেদনের নিয়মাবলি জেনে নিন

প্রতিযোগিতার বিষয় : তাজবীদসহ পূর্ণ কোরআন হিফজ।
প্রতিযোগীর বয়স : ১২ মার্চ ২০২৪ তারিখে অনূর্ধ্ব ২৫ বছর।
প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার সময়সূচি : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, বুধবার, সকাল ১০টা
চূড়ান্ত বাছাই পরীক্ষার সময়সূচি : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, সকাল ১০টা
পরীক্ষার স্থান : দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বায়তুল মোকাররম, ঢাকা।

শর্তাবলি
প্রার্থীকে ১ কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জন্মনিবন্ধন সনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কপি এবং জীবনবৃত্তান্তসহ নির্ধারিত নমুনা আবেদন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট www.islamicfoundation.gov.bd থেকে সংগ্রহ করে জমা দিতে হবে। তবে এর আগে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের আবেদন করার প্রয়োজন নেই।

আবেদন ফি
আবেদনকারীকে যেকোনো তফসিলি ব্যাংক থেকে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন’ শিরোনামে ৩০০/- (তিনশত) টাকার পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট দরখাস্তের সঙ্গে সংযোজন করতে হবে।

আবেদনের শেষ সময়
আবেদনপত্র আগামী ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার মধ্যে কুরিয়ারে/সরাসরি/ [email protected] এই মেইলে পৌঁছাতে হবে অথবা www.mygov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

বিশ্বের ৬৫টি দেশের ৭০ জন প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন ১৪ বছর বয়সি বাংলাদেশি হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। প্রথম পুরস্কার হিসেবে তিনি পান আড়াই লাখ দিরহাম। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৭ লাখ।

এছাড়া প্রতিযোগিতায় গতবার প্রথমবারের মতো শায়খ শোয়াইব মোহাম্মদ নামে বাংলাদেশি একজন বিচারক বিচারকাজ পরিচালনার সুযোগ পান। তিনি মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইলমুল কেরাত ওয়াত তাজবিদ’ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বাড়ি ঢাকার শ্যামপুরে।

;