মতবিরোধ ইসলাম নিষিদ্ধ কাজ



মুফতি আবদুল আলিম, অতিথি লেখক, ইসলাম
আর তোমরা সকলে আল্লাহর রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না

আর তোমরা সকলে আল্লাহর রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন এবং মতবিরোধ করতে নিষেধ করেছেন। এ মর্মে তিনি বলেন, ‘আর তোমরা সকলে আল্লাহর রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো, যখন তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু অতঃপর তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন, ফলে তার অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে। তোমরা তো জাহান্নামের দ্বারপ্রান্তে ছিলে, তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তার নিদর্শনসমূহ স্পষ্টভাবে বিবৃত করেন যাতে তোমরা হেদায়াত পেতে পারো।’ -সুরা আলে ইমরান : ১০৩

এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত নুমান বিন বাশীর (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়া ও সহানুভূতির দিক থেকে মুমিনদের উদাহরণ একটি দেহের মতো; যখন তার কোনো একটি অঙ্গ পীড়িত হয়, তখন তার জন্য সারাদেহ অনিদ্রা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়।’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

কাজেই ঐক্যবদ্ধতা, মিত্রতা, একতা, মতৈক্য, পারস্পরিক দায়িত্ব পালন, সহমর্মিতা, সত্যের সমর্থন এবং মতবিরোধ ও দলাদলি পরিহার এমন এক সুরক্ষিত দূর্গ; যেখানে সমাজ আশ্রয় নেয় এবং তা সবার আশ্রয়স্থল ও নিরাপদ স্থান। এটি দ্বীনের শক্তি, পার্থিব কল্যাণ সংরক্ষণকারী, ফেতনা-ফাসাদে রক্ষাকবচ এবং শত্রুর চক্রান্ত ও ক্ষতি মোকাবেলায় সুরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রদানকারী। মহান আল্লাহ যেভাবে সামাজিক বন্ধন, শক্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার আদেশ দিয়েছেন, তেমনিভাবে সম্পর্কচ্ছেদ, পেছনে লেগে থাকা, শত্রুতা পোষণ, মতবিরোধ, হাঙ্গামা ও খারাপ কাজের দ্বার উন্মুক্ত করতে নিষেধ করেছেন।

হজরত ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই স্বরূপ; সে তার প্রতি জুলুম করবে না ও তাকে দুশমনের কাছে সমর্পণ করবে না।’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

নবী করিম (সা.) আরও বলেছেন, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই স্বরূপ; সে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না, তার সঙ্গে মিথ্যা বলবে না এবং তাকে লাঞ্চিত করবে না।’ -সুনানে তিরমিজি

উল্লেখিত আয়াত ও হাদিসসমূহে মুসলিমদের পারস্পরিক হক বিনষ্ট করতে নিষেধ ও সতর্ক করা হয়েছে, যে হকগুলো বিনষ্ট করলে মুসলিমদের মাঝে বিচ্ছিন্নতা ও মতবিরোধ সৃষ্টি করে।

মুসলমানদের প্রতি আল্লাহর অন্যতম রহমত হলো, তিনি তাদেরকে সাধারণ ফেতনা থেকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা ফেতনা থেকে বেঁচে থাকো যা বিশেষ করে তোমাদের মধ্যে যারা জালেম শুধু তাদের ওপরই আপতিত হবে না। আর জেনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর।’ –সুরা আল আনফাল : ২৫

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ বলেছেন, ‘প্রত্যেক ক্ষতিকর ফেতনার উপকরণ থেকে বেঁচে থাকা, যা মানুষকে আল্লাহর শাস্তির মুখোমুখি করবে।’

ইসলাম যেভাবে সাধারণ ফেতনা ও তার ক্ষতি থেকে সতর্ক করেছে, তেমনিভাবে বিশেষ ফেতনা থেকেও সতর্ক করেছে- যা সেই ব্যক্তির ক্ষতি করে, এমনকি জনসাধারণেরও। এরই ধারাবাহিকতায় মুসলিম জামাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা থাকার বিষয়ে শরিয়ত কঠোরভাবে সতর্ক করেছে। হজরত আবু যর (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলিম জামাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এক বিঘত পরিমাণ দূরে সরে গেল, সে ইসলামের রুজু তার গর্দান হতে খুলে ফেললো।’ -সুনানে আবু দাউদ

হজরত ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কোনো গোমরাহির ওপর আমার উম্মতের সবাই কখনও একত্রিত হবে না। কাজেই তোমরা জামাতবদ্ধ থাকো। কেননা জামাতবদ্ধদের ওপর আল্লাহর সাহায্য রয়েছে।’ -মুজাম তাবরানি

সমাজ বিনির্মাণ এবং সামাজিক সুরক্ষা, সম্প্রীতি, শক্তি, ফেতনা-দুর্যোগে স্থিতিশীল থাকা, শত্রুর চক্রান্ত নস্যাৎ করা এবং বিপর্যয়রোধের অন্যতম মাধ্যম হলো, সালফে সালেহিনের নীতিতে শাসকবর্গের জন্য সর্বদা কল্যাণ কামনা করা এবং তাদেরকে সুপরামর্শ দিয়ে নসিহত করা। যেন সর্বদা আল্লাহর এই বাণীর বাস্তবায়ন হয়, ‘নেককাজ ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করবে।’ –সুরা আল মায়েদা : ২

এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের তিনটি জিনিস পছন্দ করেন। তিনি পছন্দ করেন যেনো তোমরা একমাত্র তারই ইবাদত করো ও তার সঙ্গে কোনো অংশীদার স্থাপন না করো। তোমরা যেনো আল্লাহর রশিকে ঐক্যবদ্ধভাবে আঁকড়ে ধরো ও বিভক্ত না হও এবং তোমরা যেনো তাদের শুভকামনা করো; যাদের হাতে আল্লাহ তোমাদের বিষয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’ -সহিহ মুসলিম

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, রাসুলের আনুগত্য করো, আরও আনুগত্য করো তোমাদের মধ্যকার ক্ষমতাশীলদের। অতঃপর কোনো বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটলে তা উপস্থাপিত করো আল্লাহ ও রাসুলের নিকট, যদি তোমরা আল্লাহ ও আখেরাতে ঈমান এনে থাকো। এ পন্থাই উত্তম এবং পরিণামে প্রকৃষ্টতর।’ -সুরা আন নিসা : ৫৯

ইসলাম যেসব বিষয়ে সতর্ক করেছে তার অন্যতম হলো, জিহ্বার স্খলন ও ধ্বংসাত্মক কথাবার্তা। কেননা কোনো কোনো কথা বা লিখনি ঐক্যে ফাটল ধরায়, বিভাজন তৈরি করে, মতবিরোধ সৃষ্টি করে, হৃদয়কে বিভক্ত করে, সত্য থেকে বিচ্যুত করে এবং বিরোধকে তীব্রতর করে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে।’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

যখন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ফেতনা-ফাসাদ থেকে সতর্ক করেছেন, তখন তিনি একাধিকবার বর্ণনা করেছেন যে, মিথ্যা ও বাতিল কথাবার্তায় ধ্বংস অনিবার্য। হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘... জিহ্বার ব্যবহার তখন তরবারির আঘাতের চেয়েও মারাত্মক হবে।’ -সুনানে আবু দাউদ

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘...সে সময় মুখে কিছু বলা তরবারি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার ন্যায় মারাত্মক হবে।’ -সুনানে আবু দাউদ

কাজেই উম্মতের ওপর দয়া, দ্বীনের হেফাজত ও ফেতনা নিবারণ করতে আপনারা মাওলার ইবাদত করুন ও হারাম বর্জন করে তার নৈকট্য লাভের মাধ্যমে শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির নেয়ামতকে ধরে রাখুন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতএব, তারা ইবাদত করুক এ ঘরের রবের; যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় খাদ্য দিয়েছেন এবং ভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন।’ -সুরা কোরাইশ : ৩-৪

   

হাফপ্যান্ট পরা বিষয়ে ইসলাম কী বলে?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাস্তাঘাটে নানা বয়সী হাফপ্যান্ট পরা মানুষের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে, যা আগে কল্পনাও করা যেত না৷ অথচ হাঁটু ঢেকে কাপড় পরা ফরজ, হাঁটু খোলা রাখা হারাম৷ আর এটা এমন হারাম যা গোপনে নয়, প্রতিনিয়ত জনসম্মুখে পাপে লিপ্ত হতে হয়৷ সমাজের মুসলমানদের মাঝে সেই হারামে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতা ও ঝোঁক বেড়েই চলেছে৷ যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, কোনো গোনাহ প্রকাশ্য করতে করতে একসময় ভেতর থেকে অনুশোচনাবোধের অনুভূতিটুকু নষ্ট হয়ে যায়৷ হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে মাফ করে দেওয়া হবে, কেবল প্রকাশ্য গোনাহকারী ছাড়া৷’ -সহিহ বোখারি

হাফপ্যান্ট পরা কি জায়েজ?
ইসলাম একজন মুসলিমকে শালীন পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। ইসলাম ঘোষণা করেছে, পুরুষকে আবশ্যকীয়ভাবে ঢাকতে হবে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। আর নারীর জন্য হাতের কব্জি মুখমণ্ডল পায়ের পাতা ছাড়া সব সতর (মানব শরীরের যেসব অংশ অপরের সামনে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক, সেটাকে সতর বলে)।

ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে। প্যান্ট, পায়জামা ইত্যাদি হাঁটুর নিচ অবধি থাকবে, তবে টাখনুর নিচে নয়। আবার পোশাক এতটা আঁটসাঁট হবে না যে, সতরের আকৃতি কাপড়ের ওপর প্রকাশ পায়। হ্যাঁ, পরিধানের প্যান্ট-শার্ট যদি উপর্যুক্ত খারাবি থেকে মুক্ত হয়, তাহলে পরিধান করা নাজায়েজ নয়। অবশ্য এরপরও তা পরিধান করা মাকরুহ। তা ব্যবহার না করাই বাঞ্ছনীয়। -দরসে তিরমিজি : ৫/৩৩২

জ্ঞানের অভাবে অনেকে সঠিক পোশাক নির্বাচন ও অবলম্বন করতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে কিছু নীতি ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা নারী-পুরুষ সবার জন্য প্রযোজ্য। আবার কিছু স্বতন্ত্র বিষয় রয়েছে। এর কয়েকটি হলো-

সতর আবৃত করা
পোশাক এমন হতে হবে যা পুরোপুরি সতর আবৃত করে। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর পুরো শরীর সতর। পোশাকের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো- সতর ঢাকা। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে।’ -সুরা আরাফ : ২৬

সুতরাং যে পোশাক এই উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ তা শরিয়তের দৃষ্টিতে পোশাক নয়। তা নাজায়েজ পোশাক। এটা পরিত্যাগ করে পূর্ণরূপে সতর আবৃত করে এমন পোশাক গ্রহণ করা জরুরি। যেমন পুরুষের জন্য হাফ প্যান্ট পরা। নারীদের পেট-পিঠ উন্মুক্ত থাকে এমন পোশাক পরিধান করা।

পোশাক অধিক পাতলা ও আঁটসাঁট না হওয়া
যে পোশাক পরিধানের পরও সতর দেখা যায় কিংবা সতরের আকৃতি পোশাকের ওপরে প্রকাশ পায়, তা সতর আবৃত না করার কারণে নাজায়েজ পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের পোশাক পরিধান হারাম।

অহংকার প্রকাশ পায় এমন পোশাক না হওয়া
এমন পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ, যেগুলোকে শরিয়ত অহংকারীদের নিদর্শন সাব্যস্ত করে। যেমন পুরুষের জন্য রেশমি কাপড় ব্যবহার। হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের পুরুষের জন্য রেশম এবং স্বর্ণ হারাম করা হয়েছে। আর নারীদের জন্য এগুলো হালাল করা হয়েছে। -জামে তিরমিজি : ১/৩০২

হজরত আবু জুরাই (রা.)থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেন, টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান থেকে বিরত থাকো। কেননা এটা অহংকারবশত হয়ে থাকে। আর আল্লাহতায়ালা অহংকারীকে ভালোবাসেন না। -সুনানে আবু দাউদ : ২/৫৬৪

হাফপ্যান্ট পরে অজুর বিধান
নামাজের মতো মৌলিক ইবাদত ছাড়াও সবসময় অজু করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছিলেন, ‘হে আমার বেটা! সম্ভব হলে সবসময় অজু অবস্থায় থাকবে। কেননা মৃত্যুর ফেরেশতা অজু অবস্থায় যার জান কবজ করেন তার শাহাদাতের মর্যাদা লাভ হয়।’ -শোয়াবুল ঈমান, বায়হাকি : ২৭৮৩

স্বাভাবিক শালিন পোশাকে অজু করা উচিত। কারণ, সতর ঢাকা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর আবশ্যক। অপরদিকে হাফপ্যান্ট পরলে সতর অনাবৃত থাকে। তাই হাফপ্যান্ট পরা এবং পরিধান করে অজু করা উচিত নয়।

হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা নগ্নতা থেকে বেঁচে থাক। কেননা তোমাদের এমন সঙ্গী আছেন (কিরামান-কাতিবীন) যারা পেশাব-পায়খানা ও স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় ছাড়া অন্যকোনো সময় তোমাদের হতে আলাদা হন না। সুতরাং তাদের লজ্জা কর এবং সম্মান কর।’ -সুনানে তিরমিজি : ২৮০০

তারপরও কেউ যদি হাফপ্যান্ট পরে করে অজু করে তাহলে তার অজু হয়ে যাবে। তবে কাজটি অনুচিত এবং এ ব্যাপারে কাউকে উৎসাহিত না করা।

;

এক সপ্তাহে মসজিদে নববিতে ৬০ লাখ জিয়ারতকারী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে নববি, ছবি : সংগৃহীত

মসজিদে নববি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারের পর এবার সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে এ দুই শহরে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন আশঙ্কার মাঝে এক সপ্তাহে মদিনার মসজিদে নববিতে প্রায় ৬০ লাখ জিয়ারতকারী নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করেছেন।

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ-এর বরাতে জানা যায়, রমজান পরবর্তী সময়ে গত এক সপ্তাহে মসজিদে নববিতে রেকর্ড সংখ্যক জিয়ারতকারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নবী কারিম (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করতে এসেছেন। তাদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৭২৪ জন।

এসপিএ আরও জানায়, গত এক সপ্তাহে ১ লাখ ৮০ হাজার পবিত্র জমজমের পানির বোতল মসজিদে নববিতে আসা মুসল্লিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

রিয়াজুল জান্নাত তথা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মিম্বর ও কামরার (নবী কারিম সা.-এর বাসস্থান) মধ্যবর্তী স্থানে ২ লাখ ৫৪ হাজার ২০৯ জন নামাজ আদায় করেছেন। যার মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার পুরুষ ও ১ লাখ ৩০ হাজার ২৭৭ জন নারী রয়েছে।

পবিত্র উমরা পালনকারীরা মক্কায় যাওয়ার আগে বা পরে মদিনা ভ্রমণ করেন। মদিনায় মসজিদে নববিতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি রাসুলে কারিম ( সা.)-এর রওজায় সালাম পেশ, রিয়াজুল জান্নাতে নামাজসহ অন্যান্য নফল ইবাদত পালন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখেন।

উল্লেখ্য, এ বছর এপ্রিল মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন আবহাওয়া বিপর্যয়। বিরল বৃষ্টিতে প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক মরুর দেশ।

সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে উত্তর রিয়াদ ও পূর্ব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তালিকাভুক্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের এই সময়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও আগাম সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।

উর্দু নিউজ অবলম্বনে মুফতি উমর ফারুক আশিকী

;

বিপদাপদ কাটছেই না, কারণ জেনে নিন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নানাবিধ আমল, চিকিৎসা ও চেষ্টা-তদবির সত্ত্বেও অসুস্থতা থেকে সুস্থ হতে বিলম্ব হয় কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- ফরজ নামাজ ঠিকমতো আদায় না করার কারণে। বিশেষ করে ফজরের নামাজ।

ফজরের নামাজ আদায়কারী দয়াময় আল্লাহর জিম্মায় থাকে। আল্লাহতায়ালা তাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখেন। সুতরাং তাকে যে অযথা কষ্ট দেবে, অন্যায়-অবিচার করবে, আল্লাহ তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন। এ সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর নিরাপত্তা লাভ করল। আর আল্লাহতায়ালা যদি তার নিরাপত্তা প্রদানের হক কারও থেকে দাবি করে বসেন, তাহলে সে আর রক্ষা পাবে না। তাই তাকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন।’ -সহিহ মুসলিম : ৬৫৭

এর মানে হলো, যে ফজরের নামাজ আদায় করল না; সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না। তো যে ব্যক্তি আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না, তাকে পৃথিবীর কে নিরাপত্তা দেবে? তাকে কে সুস্থ করবে?

সমাজের অনেকেই আছেন, বাকি চার ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতো আদায় করেন। ফজরের নামাজ মাঝে-মধ্যে ছাড়েন কিংবা মাঝে-মধ্যে পড়েন। তাদের নিরাপত্তায় তো সমস্যা হবেই।

সারা বছরে একদিনও ফজরের নামাজ ছাড়া যাবে না। কখনও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলে উঠেই সর্বপ্রথম ফজরের নামাজ পড়তে হবে- যদি সেটা নিষিদ্ধ সময় না হয়। এভাবে চলতে থাকলে আমল ও প্রচেষ্টার ফল দ্রুত পাওয়া যাবে- ইনশাআল্লাহ।

আরেকটি কথা, আমল নিয়মিত করতে হবে এবং কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি চাইতে হবে। আমরা অনেকেই অনেক আমল করি, কিন্তু আমলের বিনিময়ে আমি কী চাচ্ছি; এটাই জানি না। প্রত্যেকটি আমলের বিনিময়ে আখেরাতের ফজিলত তো পাবেনই, দুনিয়ার কোনো নেক উদ্দেশ্যও হাসিল করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, আমল, নিয়ত, ফজরের নামাজ ও দীর্ঘদিনের বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা সহজ ও সুন্দর জীবনের অন্যতম নিয়ামক।

;

সৌদি আলেমদের অভিমত

অনুমোদন ছাড়া হজ করা পাপ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজপালন করার ক্ষেত্রে যথাযথভাবে রাষ্ট্রীয় অনুমতি নেওয়াকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে সৌদি সরকার। পবিত্র স্থানগুলোর পবিত্রতা নিশ্চিত করতে শরিয়া আইনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি আরব।

সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সৌদির সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা ‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ মতামত দিয়েছে, যারা রাষ্ট্রীয় অনুমতি ছাড়া হজ করতে যাবেন তাদেরকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও যারা হজ করবেন তারা এর মাধ্যমে পাপ করবেন।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এবং দুই পবিত্র মসজিদের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে আলেমদের কাছে তাদের মতামত তুলে ধরেন। এরপর আলেমরা ঘোষণা দেন, হজ করতে হলে অবশ্যই পূর্বে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।

‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ জানায়, হজ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা সাজিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, খাবার সরবরাহ এবং অন্যান্য সেবা। যারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করে হজ করবেন তারা আরও ভালো ও উন্নত সেবা পাবেন।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো- হজ। প্রতি বছর জিলহজ মাসে হজ করেন বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। যেসব মুসল্লির আর্থিক ও শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে, তাদের জীবনে অন্তত একবার হলেও হজ করার বিধান রয়েছে।

মুসল্লিরা যেন নির্বিঘ্নে হজ করতে পারেন, সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। এবার তারা হজ করার জন্য অনুমতির বিষয়টি আবশ্যিক করে দিয়েছে।

;