রমজান ও দ্বীনের আহ্বান বা দাওয়াত



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলাম ধর্ম সকল মানুষের জন্য আলো স্বরূপ আর মুসলমানগণ সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রদানকারী। অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানগণ সমগ্র মানব জাতিকে কল্যাণ ও সরল-সুপথে আহ্বানকারী। বস্তুত পক্ষে, দ্বীনের পথে দাওয়াত দেওয়া বা আহ্বান করা সকল নবীর কাজ রূপে স্বীকৃত। সকল নবী-রাসুলই একজন দাঈ বা আহ্বানকারী তথা শিক্ষক রূপে এসেছিলেন। সকলেই নিজ নিজ আমলের মানব সম্প্রদায়ের মধ্যে তৌহিদের এই অম্লান বাণী প্রচার করেছিলেন:

‘তোমরা সবাই আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো উপাস্য নেই’ (সুরা আরাফ: আয়াত ৫৯)।  

আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালার  দ্বীনের প্রতি আহ্বান জানানোর জন্য কেউ কোনো প্রতিদান কামনা করেননি। পরিস্কার ভাষায় বলেছেন:

‘আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাই না’ (সুরা শোয়ারা: আয়াত ১০৯)।

এই আহ্বান ও দ্বীনের প্রতি দাওয়াতের গুরুত্বের পাশাপাশি তার পদ্ধতি ও নীতিমালা সম্পর্কে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেছেন:

‘আপনি আপনার রব (প্রভু)-এর পথে প্রজ্ঞা এবং উত্তম উপদেশের সাথে মানুষকে ডাকুন এবং উত্তম পন্থায় বিতর্ক করুন’ (সুরা নাহল: আয়াত ১২৫)।

‘হে নবী, আপনি মানুষকে বলে দিন এ হচ্ছে আমার পথ, আমি মানুষদেরকে আল্লাহর পথে আহ্বান করি। আমি এবং আমার অনুসারীরা পূর্ণাঙ্গ সচেতনতার সাথে এ পথে আহ্বান জানাই। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র এবং আমি কখনোই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (সুরা ইউসুফ: আয়াত ১০৮)।

‘তার চেয়ে উত্তম কথা আর কোন্ ব্যক্তির হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকে, নেক কাজ করে এবং বলে আমি মুসলমানদেরই একজন’ (সুরা হামিম সাজদাহ: আয়াত ৩৩)।

ফলে প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য হলো আল্লাহর পথে, দ্বীনের পথে, সৎ কাজের পথে এবং অসৎ কাজের বিরুদ্ধে আহ্বান করা বা দাওয়াত দেওয়া। রমজান মাসের পবিত্র পরিবেশে এ দাওয়াত বা আহ্বানের কাজ আরো বৃদ্ধি করাই ঈমানের দাবি এবং আমল হিসাবে অধিক সাওয়াবের মাধ্যম। ইসলামী স্কলারদের মতে দাওয়াতের পাঁচটি আদব, পাঁচটি পন্থা এবং পাঁচটি ফলাফল রয়েছে। এগুলো সম্পর্কে অবহিত হয়ে সঠিক ও ইসলাম সম্মত ভাবে আহ্বান বা দাওয়াতের কাজ করা যেতে পারে। কুতর্ক বা চিৎকার করে নয়, মিষ্টভাষা, উত্তম উপদেশ ও হেকমতের সঙ্গেই দাওয়াতি কাজ পরিচালনা করা ইসলামের নির্দেশিত বিধান। এ কারণে দাওয়াতের আদব, পন্থা ও ফলাফল সম্পর্কে পরিচ্ছন্ন ধারণা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

#দাওয়াতের আদব পাঁচটি

১. ইখলাস ও আন্তরিকতার মাধ্যমে দাওয়াত দিতে হবে। আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেছেন: ‘এদের এ ছাড়া আর কোন কিছুর আদেশ দেওয়া হয়নি, তারা আল্লাহর জন্য নিজেদের দ্বীন ও ইবাদত নিবেদিত করে নেবে’ (সুরা বায়্যিনাহ: আয়াত ৫)।

২. দাওয়াত ও আমলের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে। অর্থাৎ দাওয়াত দেওয়ার আগে নিজেকে সেসব বিষয়ে আমল করতে হবে। কেননা, কথার সাথে কাজের মিল না থাকাটা অপমানকর, লজ্জাজনক এবং মোনাফেক বা প্রবঞ্চকের লক্ষণ। আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেছেন: ‘তোমরা কি অন্যদের সৎকাজের আদেশ দাও আর নিজেদের ভুলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব তেলাওয়াত করে থাকো। তোমরা কি বুঝবে না!’ (সুরা বাকারা: আয়াত ৪৪)।

৩. দাওয়াত ও তাবলিগের ক্ষেত্রে ন¤্রতা ও কোমলতা অবলম্বন করতে হবে। পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্টভাবে ইরশাদ করা হয়েছে: ‘তোমরা তার সাথে নরম ভাষায় কথা বলো, যাতে করে সে উপদেশ গ্রহণ করে, অথবা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করো’ (সুরা ত্বাহা: আয়াত ৪৪)। আরো ইরশাদ হয়েছে: ‘আল্লাহর অসীম দয়ায় আপনি তাদের জন্য ছিলেন কোমল প্রকৃতির মানুষ। এর বিপরীতে যদি আপনি নিষ্ঠুর ও পাষাণ হৃদয়ের মানুষ হতেন, তাহলে এসব লোক আপনার আশপাশ থেকে দূরে চলে যেতো’ (সুরা আলে ইমরান: আয়াত ১৫৯)। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও এই নির্দেশ দিয়েছেন যে: ‘তোমরা সহজ করো, কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও, তাদের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি করো না’ (মুসলিম শরিফ: ১৭৩২)।

৪. দাওয়াত বা আহ্বানের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। সবচেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দিয়ে শুরু করতে হবে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও দাওয়াতের ক্ষেত্রে এরূপ করতেন। যেমন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ইয়ামানে প্রেরণ করার সময় এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছিলেন: ‘তুমি আহলে কিতাবের এক গোত্রের কাছে যাচ্ছো। তোমার সর্বপ্রথম দাওয়াত যেন হয় এ কথার সাক্ষ্য দেওয়ার দিকে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আর আমি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসুল। যদি তারা তোমার এ দাওয়াতে সাড়া দেয়, তাহলে তাদের এ সংবাদ দাও যে, আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর দিনে ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন’ (মুসলিম শরিফ: ১৯)।

৫. প্রত্যেককে তার মান ও প্রয়োজন অনুসারে দাওয়াত প্রদান করা। অর্থাৎ শহুরে লোকদের জন্য দাওয়াত বা আহ্বানের ভাষা, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ আর গ্রামীণ জনতার জন্য তা একই রকম হলে বোধগম্য হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। এজন্য স্থান, কাল, পাত্র অনুযায়ী দাওয়াতের ভাষা ও বক্তব্য নির্ধারণ করা অপরিহার্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেছেন: ‘যাকে হিকমত ও প্রজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাকে প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়েছে’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২৬৯)।

#দাওয়াতের পন্থা পাঁচটি

১. যাকে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে, এককভাবে তার প্রতি মনোযোগী হয়ে দাওয়াত দিতে হবে, যাতে পুরো আলোচনায় তিনি সম্পৃক্ত বোধ করেন। ব্যক্তিগত দাওয়াতের ক্ষেত্রে এ পন্থা উপযোগী।

২. পাবলিক লেকচার বা সমষ্টিকে দাওয়াত দেওয়ার সময় অবিতর্কিত মৌলিক বক্তব্য পেশের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

৩. দাওয়াতের আগে সঠিক প্রশিক্ষণ ও নোট নেওয়া, যাতে কোরআন ও হাদিসের সঠিক রেফারেন্স ও অর্থ প্রদান করা যায় এবং কোনোরূপ বিভ্রান্তির সৃষ্টি যাতে না হয়।

৪. শুধু বক্তব্যের উপর নির্ভর না করে লেখালেখি, গবেষণা ও সাহিত্য সৃষ্টির মাধ্যমেও দাওয়াতের কাজকে অগ্রসর করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৫. আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রচারমাধ্যমকে বিশুদ্ধ ও সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে দাওয়াতের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যুগের চাহিদা ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উন্নয়নকে দ্বীন, ইসলাম ও দাওয়াতের কাজে লাগানোর চেষ্টা করা যেতে পারে।

#দাওয়াতের পাঁচটি ফল

১. সকল নবী-রাসুলের দ্বীনী ও আদর্শিক উত্তরাধিকারী লাভ করা যায়। কারণ, তারাই ছিলেন প্রথম ও অগ্রণী দাঈ এবং দ্বীনের দাওয়াতের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল নক্ষত্র তুল্য ব্যক্তিত্ব।

২. দাঈ-এর জন্য সকল মাখলুক ইস্তেগফার করতে থাকে। যে ব্যক্তি মানুষের দ্বীনের জন্য চেষ্টা ও পরিশ্রম করে, তার নিজের দ্বীন ও ঈমান সর্বাগ্রে মজবুত হয়। যে ব্যক্তি মানুষের কল্যাণের কথা বলে দাওয়াত দেয়, তার কল্যাণও সর্বাগ্রে সুনিশ্চিত হয়। মাখলুকের সকলের সঙ্গে সঙ্গে গভীর সমুদ্রের তলদেশের মাছও পর্যন্ত দাঈ বা আহ্বানকারীর জন্য দোয়া এবং মাগফেরাত কামনা করতে থাকে।

৩. যাদেরকে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে, তাদের সংখ্যার হিসাবে দাওয়াত দানকারী সাওয়াব লাভ করে। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে: ‘যে ব্যক্তি হেদায়েতের পথে ডাকবে, সে তার দাওয়াতের অনুসারীদের সাওয়াবের অনুরূপ সাওয়াব পাবে। এটা তাদের সাওয়াবের মধ্যে কোনো হ্রাস ঘটাবে না’ (মুসলিম শরিফ: ১০১৭)।

৪. যাকে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে, এক সময় সে নিজেই দাঈ হয়ে যায়। ফলে দাওয়াত জারি থাকে এবং দাওয়াতের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে জড়িতরা অবিরাম সাওয়াব পেতে থাকে।

৫. যে মানুষকে দ্বীন, কল্যাণ, সৎকর্মের দাওয়াত দেয়, তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। মানুষ তাকে শ্রদ্ধা করে এবং নেতৃত্বে আসীন করতে চায়। মহান আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা নেককারদের গুণাবলি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, তারা দাওয়াত দেয় এবং বলে ‘আমাদেরকে মুত্তাকিদের ইমাম বানিয়ে দিন’ (সুরা ফোরকান: আয়াত ৭৪)।

রমজানে মাসে রোজা রেখে দ্বীন ও ইসলামের পক্ষে দাওয়াত দেওয়ার চেয়ে লাভজনক ও সাওয়াবের কাজ আর কিছুই হতে পারে না। কথা বলা ও লেখার মাধ্যমে, চিন্তা ও গবেষণার মাধ্যমে দ্বীন, ইসলাম, ঈমান, আমল এবং যাবতীয় সুকর্মের পক্ষে আর কুকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া একজন আদর্শ দাঈ-এর দায়িত্ব। প্রতিটি মুসলমানই নিজের সাধ্যমতো এ দায়িত্ব সারা বছর তো বটেই, মাহে রমজানের সময় বিশেষভাবে পালন করতে পারেন এবং রহমত, বরকত, নাজাত ও মাগফেরাতের মাহে রমজানকে নিজের জীবনে সার্থক করতে পারেন।

   

নবী কারিম (সা.)-এর অনন্য ১০ গুণ



মুফতি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
নবী কারিম (সা.)-এর অনন্য ১০ গুণ

নবী কারিম (সা.)-এর অনন্য ১০ গুণ

  • Font increase
  • Font Decrease

নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব নবীর সেরা। আকাইদে নসফি গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘নবীদের মধ্যে সেরা হজরত মুহাম্মদ (সা.)। কেননা, আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ইমান আনবে।’ -সুরা আলে ইমরান : ১১০

সর্বোত্তম উম্মত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জিত হয়েছে দ্বীনের ক্ষেত্রে পূর্ণতার কারণে। আর দ্বীনের ক্ষেত্রে পূর্ণতা অর্জিত হয়েছে নবী কারিম (সা.)-এর পূর্ণতা তথা শ্রেষ্ঠত্বের কারণে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা সব নবীর ওপর আমাকে মর্যাদা দিয়েছেন এবং সব উম্মতের ওপর আমার উম্মতকে মর্যাদা দিয়েছেন।’ -সুনানে তিরমিজি

এ মর্যাদার কারণে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিজ্ঞ যারা রয়েছেন, তাদের ইজমা ও কিয়াস শরিয়তের উৎস হিসেবে গৃহীত হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘আমি হব বিচার দিবসে সব মানুষের নেতা।’ -সহিহ্ মুসলিম

তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমি আদম সন্তানদের নেতা, এতে আমার কোনো অহংকার নেই।’ -সহিহ্ মুসলিম : ৫৯৪০

এখানে আদম সন্তান বলতে সব মানুষ বোঝানো হয়েছে। এভাবেই আল্লাহতায়ালা তার প্রিয় হাবিবকে নবী-রাসুলদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করার পর ব্যতিক্রমী ১০টি গুণ দান করেছেন। দুটি হাদিসে এ ১০টি গুণের বর্ণনা রয়েছে। আমিরুল মুমিনিন হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, আমাকে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য প্রদান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো নবী-রাসুলকে প্রদান করা হয়নি। আমরা আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! এ বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী? তিনি প্রত্যুত্তরে বলেন-

১. নবী কারিম (সা.)-এর চেহারা মোবারকে আল্লাহতায়ালা এমন এক আকর্ষণীয় রূপ দান করেছিলেন, যা দেখে শত্রুরা ভীত-শঙ্কিত হয়ে পড়ত। তাকে কিছু করার সাহস পেত না।

২. আমাকে সমগ্র দুনিয়ার চাবি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দুনিয়া আমার করতলগত এবং আমার অধীন হবে। এ ক্ষমতা অন্য কোনো নবী-রাসুলকে দেওয়া হয়নি।

৩. আমার নাম রাখা হয়েছে আহমদ তথা অতি প্রশংসাকারী। এমন নাম আর কোনো নবী-রাসুলের রাখা হয়নি।

৪. আমার জন্য মাটিকে পবিত্র বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ফলে পানির বিকল্প হিসেবে আমার উম্মতের জন্য মাটি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ।

৫. আমার উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। -কুরতুবি

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতকে এমন তিনটি বৈশিষ্ট্য দান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো উম্মতকে দান করা হয়নি। ১. সালাম, তা জান্নাতিদের অভিবাদন; ২. সারিবদ্ধ হয়ে ইবাদত করা তা ফেরেশতাদের বৈশিষ্ট্য ও ৩. আমিন বলা। যা হজরত মুসা ও হজরত হারুন (আ.) ছাড়া কোনো নবীর সময় ছিল না। -ইবনে খুজাইমা

মুসলিম শরিফের অপর হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাকে ছয়টি জিনিস দ্বারা অন্য নবীদের ওপর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কিছু আগে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যতিক্রমগুলো হলো-

৬. আমাকে সংক্ষেপে বেশি অর্থবহ কথা বলার যোগ্যতা দান করা হয়েছে।

৭. আমার জন্য গণিমত তথা যুদ্ধলব্ধ মাল হালাল করা হয়েছে। যা অন্য নবী-রাসুলদের সময় হালাল ছিল না।

৮. সমস্ত জমিনকে আমার জন্য মসজিদ ও পবিত্র স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে আমার উম্মতের জন্য যেকোনো স্থানে নামাজ পড়া জায়েজ। অন্য নবীদের সময় এ সুযোগ ছিল না, তাদের মসজিদে নামাজ আদায় করতে হতো।

৯. আমি সমগ্র সৃষ্টির প্রতি প্রেরিত হয়েছি। অর্থাৎ আমি হলাম বিশ্বনবী। আর কেউ বিশ্বনবী নয়। সবাই ছিলেন আঞ্চলিক এবং নির্দিষ্ট এলাকার নবী। একই সময়ে কয়েকজন নবী ছিলেন।

১০. আমার দ্বারা নবুওয়ত সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি শেষ নবী, আমার পরে আর কোনো নবী-রাসুল আসবে না। -সহিহ্ মুসলিম

;

মুক্তিযোদ্ধাদের চোখে পানি দেখতে চাই না



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম

বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দিয়ে সরকার জাতিকে শোষণ করছে। জাতির মধ্যে বিবেদ সৃষ্টি করছে। সর্বত্র দলীয়করণ ও দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। জীবনবাজী রেখে যারা দেশকে স্বাধীন করেছেন, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের চোখে পানি। এমন দৃশ্য আমরা দেখতে চাই না।

রোববার (০১ অক্টোবর) দুপুরে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটির শপথ ও পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশের ২০২৩-২০২৫ সেশনের জন্য পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।

নতুন কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন- সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ, সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক, সেক্রেটারী জেনারেল মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান, জয়েন্ট সেক্রেটারী মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম, এ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, সহ-প্রচার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. ফারুক হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, সহকারী তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, সহ-অর্থ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান, দফতর সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আছমত আলী, সহ-দফতর সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা পিএম শাহজাহান, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা নূরু মিয়া, সহ- শিক্ষা ও সংষ্কৃতি সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ, সহ- মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আইনুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. তানজির মাস্টার, আইন বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হাজী আহমদ অলী, কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মন্ডল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হাজী মো. রুহুল আমীন খান, সদস্য ক্যাপ্টেন অব. আবুল হাসেম খান, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা দবির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাওলা, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই।

;

ইসলাম ও দেশ ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে : পীর সাহেব চরমোনাই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন পীর সাহেব চরমোনাই

সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন পীর সাহেব চরমোনাই

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশ, ইসলাম ও মানবতা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এমতাবস্থায় দেশের জাগ্রত বিবেক আলেমদের ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। উলামায়ে কেরামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশের উলামা-মাশায়েখদের জাতীয় সংগঠন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বর্তমান সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় যেমনি দেশের ও জনগণের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি ইসলাম ও ইসলামি তাহজিবও ধ্বংসের মুখে। এজন্য দেশ ও জনগণের স্বার্থেই সরকারের পদত্যাগ আন্দোলনে সকলকে শামিল হতে হবে।

সভায় আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজীকে সভাপতি, মাওলানা গাজী আতাউর রহমানকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, মাওলানা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনকে সহ-সভাপতি, মুফতি রেজাউল করীম আবরারকে সাধারণ সম্পাদক, মুফতি হেমায়েতুল্লাহ কাসেমিকে সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন পীর সাহেব চরমোনাই।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শায়েখ জাকারিয়া ইসলামি রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, ড. অধ্যাপক আফম খালিদ হোসাইন, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, বরিশাল মাহমুদিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, বরেণ্য আলেম আল্লামা ইয়াহইয়া মাহমুদ, খুলনা দারুল উলূমের প্রিন্সিপাল মাওলানা মুশতাক আহমদ, বেফাকুল মাদারিসিদ দীনিয়ার মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী, মুফতি তাজুল ইসলাম, ড. বেলাল নূর আজিজী, মুফতি হেমায়েতুল্লাহ কাসেমি, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ কাশফি, মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফি, মুফতি রেজাউল করীম আবরার,

মাওলানা কামাল উদ্দিন সিরাজ, মুফতি আব্দুল আজিজ কাসেমি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধি মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা শাহজাহান আলহাবিবী, মাওলানা নাযীর আহমদ শিবলী, মাওলানা আশরাফ আলী নূরী, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাসেমি, মুফতি ইসমাঈল হোসাইন সিরাজী, মুফতি রফিকুন্নবী হাক্কানি, হাজী শরয়াতুল্লাহর বংশধর মুফতি হানজালা, মাওলানা আলী আহমদ চৌধুরী পীর সাহেব চন্ডিবর্দী, ময়মনসিংহের শায়খুল হাদিস মাওলানা মঞ্জুরুল হক, কুড়িগ্রামের মুফদি মুজ্জামিল হক আইমানি, ফেনীর শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, ভাষানটেক মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আনোয়ারী, যশোরের শায়খুল হাদিস মাওলানা হারুনুর রশিদ কাসেমি, খাগড়াছড়ির মুফতি ইমামুদ্দিন কাসেমি, বগুড়ার মুফতি আব্দুল মতিন, গাজীপুরের মাওলানা হাবিবুর রহমান মিয়াজী ও মুফতি ওবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ, কুমিল্লার মাওলানা মাহবুবুর রহমান আশরাফি ও মাওলানা মুসাদ্দিকুর রহমান আশরাফি, কেরাণীগঞ্জের মুফতি শফিউদ্দিন কাসেমি, মুন্সিগঞ্জের মুফতি এমদাদুল হক আরেফি, কুষ্টিয়ার মুফতি মুজ্জাম্মিল হক কাসেমি ও চাঁদপুরের মাওলানা আনসার আহমদ পীর সাহেব বাগিচাপুর প্রমুখ।

সম্মেলনে ১৫ দফা প্রস্তাবনা এবং ৩ মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। সম্মেলনে কারাবন্দী সকল মজলুম আলেমের দ্রুত মুক্তি এবং উলামায়ে কেরামের নামে দায়ের করা সকল ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। 

;

জেনে নিন মাহরাম ও গায়রে মাহরাম কারা



মুফতি শরিফুল আজম, অতিথি লেখক, ইসলাম
গায়রে মাহরামদের সঙ্গে পর্দা করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান

গায়রে মাহরামদের সঙ্গে পর্দা করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান

  • Font increase
  • Font Decrease

গায়রে মাহরামদের সঙ্গে পর্দা করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। কোরআন মাজিদের কয়েকটি সুরায় পর্দা সংক্রান্ত বিধান দেওয়া হয়েছে। পর্দার বিষয়ে আল্লাহতায়ালা সব শ্রেণির ঈমানদার নারী-পুরুষকে সম্বোধন করেছেন। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ করেছেন তিনি যেন তার স্ত্রী, কন্যা এবং মুমিন নারীদের চাদর দ্বারা নিজেদের আবৃত রাখার আদেশ দেন। কিছু আয়াতে উম্মুল মুমিনীনদেরকেও সম্বোধন করেছেন, কোনো কোনো আয়াতে সাহাবায়ে কেরামকেও সম্বোধন করা হয়েছে।

মোটকথা, কোরআন মাজিদ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য পর্দার বিধান দান করেছে। এটি ইসলামি শরিয়তের একটি ফরজ বিধান।

ইসলামের বিধানগুলো শুধু আখেরাতে নাজাতের উপায় নয়, দুনিয়ার জীবনের শান্তি, স্বস্তি ও পবিত্রতার রক্ষাকবচ। কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা ও অমুসলিমদের প্রচারণায় প্রভাবিত হয়ে নিজেদের আর্দশ ত্যাগ করে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছি। আমাদের পরিবার ও সমাজে পশ্চিমা সমাজের ভয়াবহ উপসর্গগুলো প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে অশনিসংকেত। পশ্চিমা সভ্যতা যেসব মরণব্যাধিতে আক্রান্ত তা থেকে যদি আমরা পরিবার ও সমাজকে রক্ষা করতে চাই তার একমাত্র উপায় ইসলামের বিধান ও আদর্শের সামনে আত্মসমর্পণ। আমরা যদি পারিবারিক শান্তি ফিরে পেতে চাই, তাহলে নারী-পুরুষ সবাইকে পর্দা-বিধানের অনুসারী হতে হবে।

এ জন্য মাহরাম ও গায়রে মাহরাম বলতে কি বুঝায় এবং তাদের পরিচয় জানা থাকা দরকার। ইসলামে, একজন মাহরাম হলো পরিবারের একজন সদস্য যার সঙ্গে বিবাহ স্থায়ীভাবে বেআইনি (হারাম)। এর বিপরীত গায়রে মাহরাম। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য গায়রে মাহরামের সঙ্গে পর্দা করা ফরজ।

পর্দার সঙ্গে মাহরাম ও গায়রে মাহরামের সম্পর্কের বিষয়টি জড়িত। ইসলামি পরিভাষায় মাহরাম দ্বারা বুঝায়, যাদেরকে বিবাহ করা হারাম বা অবৈধ এবং দেখা করা বা দেখা দেওয়া জায়েয বা বৈধ। তবে স্ত্রীর বোনের সঙ্গে বিয়ে হারাম হলেও দেখা-সাক্ষাৎ করা বৈধ নয়। মূল কথা, শরিয়ত যাদের সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক হারাম; তারাই মাহরাম।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদের, তোমাদের মেয়েদের, তোমাদের বোনদের, তোমাদের ফুফুদের, তোমাদের খালাদের, ভাতিজিদের, ভাগ্নীদের, তোমাদের সেসব মাকে যারা তোমাদের দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদের, তোমাদের শ্বাশুড়িদের, তোমরা যেসব স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছো- সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সঙ্গে মিলিত না হয়ে থাক তবে তোমাদের ওপর কোনো পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদের এবং দুই বোনকে একত্র (বিয়ে) করা (তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন কথা। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সুরা নিসা : ২৩

মাহরামের পরিচয় জানা থাকলে অনেক গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। যাদের সঙ্গে দেখা করা গোনাহ কিন্তু আত্মীয় পরিচয়ে সাধারণ দেখা-সাক্ষাৎসহ অনেক সময় বিয়ের মতো জঘন্য গোনাহের কাজও সংঘটিত হয়ে যায়। তাই মাহরামের পরিচয় জানা সবার জন্য জরুরি। এখানে মাহরাম ও গায়রে মাহরামের একটি তালিকা দেওয়া হলো-

পুরুষের জন্য মাহরামের তালিকা
দাদী, মা/দুধ মা, বোন/দুধ বোন, শাশুড়ি, স্ত্রী, মেয়ে/দুধ মেয়ে/সৎ মেয়ে, ছেলের/দুধ ছেলের স্ত্রী, ফুপু, খালা, ভাইয়ের/বোনের মেয়ে এবং নানী।

পুরুষের জন্য গায়রে মাহরামের তালিকা
মায়ের খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুফাতো বোন, চাচাতো বোন, ভাবী, বাবার খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুফাতো বোন, চাচী, ফুফাতো বোন, খালাতো বোন, মামাতো বোন, শ্যালক/শ্যালিকার মেয়ে, শ্বশুর/শাশুড়ির বোন, শ্যালিকা, মামী, স্ত্রীর খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুফাতো বোন, স্ত্রীর ভাবী, মেয়ের ননদ এবং ছেলে/মেয়ের শাশুড়ি।

নারীদের জন্য মাহরামের তালিকা
দাদা, বাবা, ভাই, শ্বশুর, স্বামী, ছেলে, নাতী, চাচা, ভাইয়ের/বোনের ছেলে, নানা এবং মামা।

নারীদের জন্য গায়রে মাহরামের তালিকা
মায়ের খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই, চাচাতো ভাই, দুলাভাই, বাবার খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই, ফুপুর স্বামী (ফুপা), ফুপাতো ভাই, খালাতো ভাই, মামাতো ভাই, ননদের ছেলে, শ্বশুর/শাশুড়ির ভাই, দেবর/ভাসুর, ননদের স্বামী, স্বামীর খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই, স্বামীর দুলাভাই, ছেলের শ্যালক, ছেলে/মেয়ের শ্বশুর এবং খালার স্বামী (খালু)।

;