পবিত্র রমজানের পবিত্রতম রজনী



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র রমজান মাসের পবিত্রতম রজনী হলো লাইলাতুল কদর বা শবে কদও, যা রমজানে রোজার মাসের এক অনন্য উপহার স্বরূপ। আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালার পক্ষ হতে এমন গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় রজনী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতদের ছাড়া অন্য কোনো উন্মতকে প্রদান করা হয় নি। মুসলমান তথা উম্মতে মুহাম্মদী এই অপরিসীম সৌভাগ্যের অধিকারী হয়েছে।

আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা উম্মতে মুহাম্মদীকে শ্রেষ্ঠ উম্মতের মর্যাদা দিয়েছেন। কিন্তু এই শ্রেষ্ঠ উম্মতের হায়াত বা জীবনকাল অতীতের পূর্ববর্তী উম্মতগণের চেয়ে অনেক কম। কারণ, অতীতে অনেক নবীর উম্মত শত শত বছর বেঁচে ছিলেন। ফলে সুদীর্ঘ হায়াত পেয়ে তারা অনেক বেশি নেক আমল করেছেন। কম হায়াতের অধিকারী হলেও যাতে বেশি আমল ও সাওয়াব হাসিল করতে পারে, এজন্য উম্মতে মুহাম্মদীকে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা শবে কদরের মতো মহান রাত্রি ইবাদতের জন্য দান করেছেন। এক রাত্রির ইবাদতের মাধ্যমে হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও অধিক সাওয়াব পাওয়ার সুযোগ একমাত্র উম্মতে মুহাম্মদীতে দান করেছেন আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা।

পবিত্র কোরআনে ‘কদর’ শিরোনামে একটি পূর্ণাঙ্গ সুরা অবর্তীণ করার মাধ্যমে মাসটির গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে ধারণা করা যায়। আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেন যে, ‘আমি লাইলাতুল কদরে কোরআন অবর্তীণ করেছি। আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হলো হাজার মাসের চেয়েও উত্তম’ (সুরা কদর)।

অতএব, শবে কদরে ইবাদত করা হাজার মাস ইবাদত করার চেয়েও উত্তম। হাজার মাসে ৮৩ বছর ৪ মাস। এ হিসাবে কেউ যদি জীবনে ১২টি শবে কদর পায় ও ইবাদত করতে পারে, তাহলে তার এক হাজার বছর ইবাদতের সাওয়াবের সমতুল্য হবে। উল্লেখ্য, পবিত্র কোরআনে এ কথা বলা হয় নি যে, ‘শবে কদর হাজার মাসের সমান’, বরং বলা হয়েছে ‘শবে কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম’। কাজেই এটা স্পষ্ট যে, শবে কদরে ইবাদত করতে পারলে হাজার মাস নয়, বরং হাজার মাসের চেয়েও অধিক ইবাদতের সাওয়াব হাসিল করা সম্ভব।

শবে কদরের রাত্রিটির মর্যাদা ও গুরুত্ব সম্পর্কে, বিশেষত এ রাত্রিতে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালার বিশেষ রহমত ও দয়া সম্পর্কেও ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা ইরশাদ করেছেন:

‘সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রূহ তথা জিবরাইল (আ.) অবতরণ করেন, প্রত্যেক কাজে তাদের রবের অনুমতি নিয়ে’ (সুরা কদর)।

পবিত্র হাদিসেও শবে কদরের মর্যাদা ও গুরুত্ব সম্পর্কে একাধিক বর্ণনা রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

‘যে ব্যক্তি ঈমান অবস্থায় সাওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে তার আগের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমান অবস্থায় সাওয়াবের আশায় শবে কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে’ (বোখারি ও মুসলিম)।

পবিত্র, মর্যাদাবান ও হাজার মাসের চেয়ে উত্তম শবে কদর প্রত্যেক রমজান মাসেই রয়েছে। কিন্তু তাকে সন্ধান করে নিতে হয়। বোখারি ও মুসলিম শরিফের একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে ‘শবে কদর’ খোঁজ কর।

ফলে রমজানের শেষ দশ দিনের  ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ তম তারিখে, অর্থাৎ বেজোড় তারিখের রাতে শবে কদর হতে পারে। এ রাতগুলোতে শবে কদর তালাশ বা সন্ধান করতে হবে। সমান গুরুত্ব দিয়ে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগৃুলোতে শবে কদর পাওয়ার আশায় ইবাদতে মশগুল হওয়াই উত্তম। কেউ কেউ শুধু ২৭ তারিখ দিবাগত রাতে ইবাদত করেন বা মনে করেন যে, ২৭ তারিখ রাতই শবে কদর। এমন ধারণা ভ্রান্ত। ইসলামী শরিয়তে তা সঠিক বলে অনুমোদিত নয়। 

তদুপরি, বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা ও উৎসবের আমেজে শবে কদর পালনের কিছু রেওয়াজ কোথাও কোথাও দেখা যায়, যা সম্পূর্ণভাবে পরিতাজ্য। কারণ, শবে কদর হলো নিজের ব্যক্তিগত আমলের মাধ্যমে সাওয়াব হাসিলের রাত। অহেতুক এবং ইসলাম সমর্থন করে না, এমন কোনো কিছু করার মাধ্যমে এ পবিত্র ও বরকতময় রাতকে নষ্ট করা চরম বোকামি। বরং এ রাতে ফরজ নামাজ তথা মাগরিব, ইশা ও ফজর নামাজ অবশ্যই জামাতের সঙ্গে যথাযথভাবে পালন করতে হবে। কেউ কেউ নফলের পেছনে ছুটে ফরজ নষ্ট করে। ফলে নফলের কারণে রাত জেগে কোনোক্রমেই ফজরের ফরজ নামাজ নষ্ট করা যাবে না। কারণ, সব নফল একত্রিত করলেও ফরজের সমান হয় না। তাই সর্বাবস্থায় ফরজ আমলগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং শবে কদরের রাতেও ফরজ নামাজ সবচেয়ে আগে সুষ্ঠুভাবে আদায় করতে হবে। অতঃপর, শবে কদরের রাতে অধিক পরিমাণে নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও জিকির-আজকার ইত্যাদি ইবাদত বেশি বেশি করতে হবে। এ রাতের নফল নামাজের জন্য আলাদা কোনো নিয়ম নেই। বরং অন্য সময়ের নফল নামাজের মতো এ রাতে নফল নামাজ আদায় করা যায়। বিশেষত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের প্রতিও এ রাতে বিশেষ মনোযোগী হওয়া দরকার।

হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি হওয়া সাল্লামরকে বলেছিলেন, ‘আমি যদি শবে কদর পাই, তাহলে আমি কী দোয়া করবো?’ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, ‘তুমি এ দোয়া করবে: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী’ (হে আল্লাহ, আপনি বড়ই ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন)- মুসনাদে আহমাদ/তিরমিজি শরিফ।     

   

নবী কারিম (সা.)-এর অনন্য ১০ গুণ



মুফতি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
নবী কারিম (সা.)-এর অনন্য ১০ গুণ

নবী কারিম (সা.)-এর অনন্য ১০ গুণ

  • Font increase
  • Font Decrease

নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব নবীর সেরা। আকাইদে নসফি গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘নবীদের মধ্যে সেরা হজরত মুহাম্মদ (সা.)। কেননা, আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ইমান আনবে।’ -সুরা আলে ইমরান : ১১০

সর্বোত্তম উম্মত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জিত হয়েছে দ্বীনের ক্ষেত্রে পূর্ণতার কারণে। আর দ্বীনের ক্ষেত্রে পূর্ণতা অর্জিত হয়েছে নবী কারিম (সা.)-এর পূর্ণতা তথা শ্রেষ্ঠত্বের কারণে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা সব নবীর ওপর আমাকে মর্যাদা দিয়েছেন এবং সব উম্মতের ওপর আমার উম্মতকে মর্যাদা দিয়েছেন।’ -সুনানে তিরমিজি

এ মর্যাদার কারণে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বিজ্ঞ যারা রয়েছেন, তাদের ইজমা ও কিয়াস শরিয়তের উৎস হিসেবে গৃহীত হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘আমি হব বিচার দিবসে সব মানুষের নেতা।’ -সহিহ্ মুসলিম

তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমি আদম সন্তানদের নেতা, এতে আমার কোনো অহংকার নেই।’ -সহিহ্ মুসলিম : ৫৯৪০

এখানে আদম সন্তান বলতে সব মানুষ বোঝানো হয়েছে। এভাবেই আল্লাহতায়ালা তার প্রিয় হাবিবকে নবী-রাসুলদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করার পর ব্যতিক্রমী ১০টি গুণ দান করেছেন। দুটি হাদিসে এ ১০টি গুণের বর্ণনা রয়েছে। আমিরুল মুমিনিন হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, আমাকে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য প্রদান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো নবী-রাসুলকে প্রদান করা হয়নি। আমরা আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! এ বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী? তিনি প্রত্যুত্তরে বলেন-

১. নবী কারিম (সা.)-এর চেহারা মোবারকে আল্লাহতায়ালা এমন এক আকর্ষণীয় রূপ দান করেছিলেন, যা দেখে শত্রুরা ভীত-শঙ্কিত হয়ে পড়ত। তাকে কিছু করার সাহস পেত না।

২. আমাকে সমগ্র দুনিয়ার চাবি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দুনিয়া আমার করতলগত এবং আমার অধীন হবে। এ ক্ষমতা অন্য কোনো নবী-রাসুলকে দেওয়া হয়নি।

৩. আমার নাম রাখা হয়েছে আহমদ তথা অতি প্রশংসাকারী। এমন নাম আর কোনো নবী-রাসুলের রাখা হয়নি।

৪. আমার জন্য মাটিকে পবিত্র বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ফলে পানির বিকল্প হিসেবে আমার উম্মতের জন্য মাটি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ।

৫. আমার উম্মতকে শ্রেষ্ঠ উম্মত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। -কুরতুবি

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতকে এমন তিনটি বৈশিষ্ট্য দান করা হয়েছে, যা অন্য কোনো উম্মতকে দান করা হয়নি। ১. সালাম, তা জান্নাতিদের অভিবাদন; ২. সারিবদ্ধ হয়ে ইবাদত করা তা ফেরেশতাদের বৈশিষ্ট্য ও ৩. আমিন বলা। যা হজরত মুসা ও হজরত হারুন (আ.) ছাড়া কোনো নবীর সময় ছিল না। -ইবনে খুজাইমা

মুসলিম শরিফের অপর হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাকে ছয়টি জিনিস দ্বারা অন্য নবীদের ওপর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কিছু আগে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যতিক্রমগুলো হলো-

৬. আমাকে সংক্ষেপে বেশি অর্থবহ কথা বলার যোগ্যতা দান করা হয়েছে।

৭. আমার জন্য গণিমত তথা যুদ্ধলব্ধ মাল হালাল করা হয়েছে। যা অন্য নবী-রাসুলদের সময় হালাল ছিল না।

৮. সমস্ত জমিনকে আমার জন্য মসজিদ ও পবিত্র স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে আমার উম্মতের জন্য যেকোনো স্থানে নামাজ পড়া জায়েজ। অন্য নবীদের সময় এ সুযোগ ছিল না, তাদের মসজিদে নামাজ আদায় করতে হতো।

৯. আমি সমগ্র সৃষ্টির প্রতি প্রেরিত হয়েছি। অর্থাৎ আমি হলাম বিশ্বনবী। আর কেউ বিশ্বনবী নয়। সবাই ছিলেন আঞ্চলিক এবং নির্দিষ্ট এলাকার নবী। একই সময়ে কয়েকজন নবী ছিলেন।

১০. আমার দ্বারা নবুওয়ত সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি শেষ নবী, আমার পরে আর কোনো নবী-রাসুল আসবে না। -সহিহ্ মুসলিম

;

মুক্তিযোদ্ধাদের চোখে পানি দেখতে চাই না



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম

বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দিয়ে সরকার জাতিকে শোষণ করছে। জাতির মধ্যে বিবেদ সৃষ্টি করছে। সর্বত্র দলীয়করণ ও দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। জীবনবাজী রেখে যারা দেশকে স্বাধীন করেছেন, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের চোখে পানি। এমন দৃশ্য আমরা দেখতে চাই না।

রোববার (০১ অক্টোবর) দুপুরে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটির শপথ ও পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশের ২০২৩-২০২৫ সেশনের জন্য পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।

নতুন কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন- সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ, সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক, সেক্রেটারী জেনারেল মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান, জয়েন্ট সেক্রেটারী মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম, এ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, সহ-প্রচার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. ফারুক হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, সহকারী তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, সহ-অর্থ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান, দফতর সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আছমত আলী, সহ-দফতর সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা পিএম শাহজাহান, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা নূরু মিয়া, সহ- শিক্ষা ও সংষ্কৃতি সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ, সহ- মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আইনুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. তানজির মাস্টার, আইন বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হাজী আহমদ অলী, কৃষি ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মন্ডল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হাজী মো. রুহুল আমীন খান, সদস্য ক্যাপ্টেন অব. আবুল হাসেম খান, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা দবির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাওলা, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই।

;

ইসলাম ও দেশ ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে : পীর সাহেব চরমোনাই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন পীর সাহেব চরমোনাই

সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন পীর সাহেব চরমোনাই

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশ, ইসলাম ও মানবতা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এমতাবস্থায় দেশের জাগ্রত বিবেক আলেমদের ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। উলামায়ে কেরামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশের উলামা-মাশায়েখদের জাতীয় সংগঠন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বর্তমান সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় যেমনি দেশের ও জনগণের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি ইসলাম ও ইসলামি তাহজিবও ধ্বংসের মুখে। এজন্য দেশ ও জনগণের স্বার্থেই সরকারের পদত্যাগ আন্দোলনে সকলকে শামিল হতে হবে।

সভায় আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজীকে সভাপতি, মাওলানা গাজী আতাউর রহমানকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, মাওলানা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনকে সহ-সভাপতি, মুফতি রেজাউল করীম আবরারকে সাধারণ সম্পাদক, মুফতি হেমায়েতুল্লাহ কাসেমিকে সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন পীর সাহেব চরমোনাই।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শায়েখ জাকারিয়া ইসলামি রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, ড. অধ্যাপক আফম খালিদ হোসাইন, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, বরিশাল মাহমুদিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, বরেণ্য আলেম আল্লামা ইয়াহইয়া মাহমুদ, খুলনা দারুল উলূমের প্রিন্সিপাল মাওলানা মুশতাক আহমদ, বেফাকুল মাদারিসিদ দীনিয়ার মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী, মুফতি তাজুল ইসলাম, ড. বেলাল নূর আজিজী, মুফতি হেমায়েতুল্লাহ কাসেমি, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ কাশফি, মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফি, মুফতি রেজাউল করীম আবরার,

মাওলানা কামাল উদ্দিন সিরাজ, মুফতি আব্দুল আজিজ কাসেমি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধি মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা শাহজাহান আলহাবিবী, মাওলানা নাযীর আহমদ শিবলী, মাওলানা আশরাফ আলী নূরী, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাসেমি, মুফতি ইসমাঈল হোসাইন সিরাজী, মুফতি রফিকুন্নবী হাক্কানি, হাজী শরয়াতুল্লাহর বংশধর মুফতি হানজালা, মাওলানা আলী আহমদ চৌধুরী পীর সাহেব চন্ডিবর্দী, ময়মনসিংহের শায়খুল হাদিস মাওলানা মঞ্জুরুল হক, কুড়িগ্রামের মুফদি মুজ্জামিল হক আইমানি, ফেনীর শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, ভাষানটেক মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আনোয়ারী, যশোরের শায়খুল হাদিস মাওলানা হারুনুর রশিদ কাসেমি, খাগড়াছড়ির মুফতি ইমামুদ্দিন কাসেমি, বগুড়ার মুফতি আব্দুল মতিন, গাজীপুরের মাওলানা হাবিবুর রহমান মিয়াজী ও মুফতি ওবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ, কুমিল্লার মাওলানা মাহবুবুর রহমান আশরাফি ও মাওলানা মুসাদ্দিকুর রহমান আশরাফি, কেরাণীগঞ্জের মুফতি শফিউদ্দিন কাসেমি, মুন্সিগঞ্জের মুফতি এমদাদুল হক আরেফি, কুষ্টিয়ার মুফতি মুজ্জাম্মিল হক কাসেমি ও চাঁদপুরের মাওলানা আনসার আহমদ পীর সাহেব বাগিচাপুর প্রমুখ।

সম্মেলনে ১৫ দফা প্রস্তাবনা এবং ৩ মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। সম্মেলনে কারাবন্দী সকল মজলুম আলেমের দ্রুত মুক্তি এবং উলামায়ে কেরামের নামে দায়ের করা সকল ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। 

;

জেনে নিন মাহরাম ও গায়রে মাহরাম কারা



মুফতি শরিফুল আজম, অতিথি লেখক, ইসলাম
গায়রে মাহরামদের সঙ্গে পর্দা করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান

গায়রে মাহরামদের সঙ্গে পর্দা করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান

  • Font increase
  • Font Decrease

গায়রে মাহরামদের সঙ্গে পর্দা করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। কোরআন মাজিদের কয়েকটি সুরায় পর্দা সংক্রান্ত বিধান দেওয়া হয়েছে। পর্দার বিষয়ে আল্লাহতায়ালা সব শ্রেণির ঈমানদার নারী-পুরুষকে সম্বোধন করেছেন। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ করেছেন তিনি যেন তার স্ত্রী, কন্যা এবং মুমিন নারীদের চাদর দ্বারা নিজেদের আবৃত রাখার আদেশ দেন। কিছু আয়াতে উম্মুল মুমিনীনদেরকেও সম্বোধন করেছেন, কোনো কোনো আয়াতে সাহাবায়ে কেরামকেও সম্বোধন করা হয়েছে।

মোটকথা, কোরআন মাজিদ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য পর্দার বিধান দান করেছে। এটি ইসলামি শরিয়তের একটি ফরজ বিধান।

ইসলামের বিধানগুলো শুধু আখেরাতে নাজাতের উপায় নয়, দুনিয়ার জীবনের শান্তি, স্বস্তি ও পবিত্রতার রক্ষাকবচ। কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা ও অমুসলিমদের প্রচারণায় প্রভাবিত হয়ে নিজেদের আর্দশ ত্যাগ করে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছি। আমাদের পরিবার ও সমাজে পশ্চিমা সমাজের ভয়াবহ উপসর্গগুলো প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে অশনিসংকেত। পশ্চিমা সভ্যতা যেসব মরণব্যাধিতে আক্রান্ত তা থেকে যদি আমরা পরিবার ও সমাজকে রক্ষা করতে চাই তার একমাত্র উপায় ইসলামের বিধান ও আদর্শের সামনে আত্মসমর্পণ। আমরা যদি পারিবারিক শান্তি ফিরে পেতে চাই, তাহলে নারী-পুরুষ সবাইকে পর্দা-বিধানের অনুসারী হতে হবে।

এ জন্য মাহরাম ও গায়রে মাহরাম বলতে কি বুঝায় এবং তাদের পরিচয় জানা থাকা দরকার। ইসলামে, একজন মাহরাম হলো পরিবারের একজন সদস্য যার সঙ্গে বিবাহ স্থায়ীভাবে বেআইনি (হারাম)। এর বিপরীত গায়রে মাহরাম। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য গায়রে মাহরামের সঙ্গে পর্দা করা ফরজ।

পর্দার সঙ্গে মাহরাম ও গায়রে মাহরামের সম্পর্কের বিষয়টি জড়িত। ইসলামি পরিভাষায় মাহরাম দ্বারা বুঝায়, যাদেরকে বিবাহ করা হারাম বা অবৈধ এবং দেখা করা বা দেখা দেওয়া জায়েয বা বৈধ। তবে স্ত্রীর বোনের সঙ্গে বিয়ে হারাম হলেও দেখা-সাক্ষাৎ করা বৈধ নয়। মূল কথা, শরিয়ত যাদের সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক হারাম; তারাই মাহরাম।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদের, তোমাদের মেয়েদের, তোমাদের বোনদের, তোমাদের ফুফুদের, তোমাদের খালাদের, ভাতিজিদের, ভাগ্নীদের, তোমাদের সেসব মাকে যারা তোমাদের দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদের, তোমাদের শ্বাশুড়িদের, তোমরা যেসব স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছো- সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সঙ্গে মিলিত না হয়ে থাক তবে তোমাদের ওপর কোনো পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদের এবং দুই বোনকে একত্র (বিয়ে) করা (তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন কথা। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সুরা নিসা : ২৩

মাহরামের পরিচয় জানা থাকলে অনেক গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। যাদের সঙ্গে দেখা করা গোনাহ কিন্তু আত্মীয় পরিচয়ে সাধারণ দেখা-সাক্ষাৎসহ অনেক সময় বিয়ের মতো জঘন্য গোনাহের কাজও সংঘটিত হয়ে যায়। তাই মাহরামের পরিচয় জানা সবার জন্য জরুরি। এখানে মাহরাম ও গায়রে মাহরামের একটি তালিকা দেওয়া হলো-

পুরুষের জন্য মাহরামের তালিকা
দাদী, মা/দুধ মা, বোন/দুধ বোন, শাশুড়ি, স্ত্রী, মেয়ে/দুধ মেয়ে/সৎ মেয়ে, ছেলের/দুধ ছেলের স্ত্রী, ফুপু, খালা, ভাইয়ের/বোনের মেয়ে এবং নানী।

পুরুষের জন্য গায়রে মাহরামের তালিকা
মায়ের খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুফাতো বোন, চাচাতো বোন, ভাবী, বাবার খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুফাতো বোন, চাচী, ফুফাতো বোন, খালাতো বোন, মামাতো বোন, শ্যালক/শ্যালিকার মেয়ে, শ্বশুর/শাশুড়ির বোন, শ্যালিকা, মামী, স্ত্রীর খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুফাতো বোন, স্ত্রীর ভাবী, মেয়ের ননদ এবং ছেলে/মেয়ের শাশুড়ি।

নারীদের জন্য মাহরামের তালিকা
দাদা, বাবা, ভাই, শ্বশুর, স্বামী, ছেলে, নাতী, চাচা, ভাইয়ের/বোনের ছেলে, নানা এবং মামা।

নারীদের জন্য গায়রে মাহরামের তালিকা
মায়ের খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই, চাচাতো ভাই, দুলাভাই, বাবার খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই, ফুপুর স্বামী (ফুপা), ফুপাতো ভাই, খালাতো ভাই, মামাতো ভাই, ননদের ছেলে, শ্বশুর/শাশুড়ির ভাই, দেবর/ভাসুর, ননদের স্বামী, স্বামীর খালাতো/চাচাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই, স্বামীর দুলাভাই, ছেলের শ্যালক, ছেলে/মেয়ের শ্বশুর এবং খালার স্বামী (খালু)।

;