শেষ দশকে রোজাদারের করণীয়



মাহমুদ আহমদ
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানের বিশতম দিনের রোজা সুস্থতার সাথে রাখতে পেরে আল্লাহপাকের দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি, আলহামদুলিল্লাহ।

দেখতে দেখতে আমাদের মাঝ থেকে রহমত ও মাগফিরাতের দিনগুলি অতিবাহিত হয়ে প্রবেশ করেছি নাজাতের দশকে। অনেকেই নাজাতের দশ দিন আল্লাহতায়ালার নৈকট্য অর্জনে একনিষ্ঠভাবে ইবাদতে রত থাকার জন্য মসজিদে ইতিকাফ করবেন।

শেষ দশকে হুজুর (সা.) ইতিকাফে বসতেন এবং লাইলাতুল কদরের অন্বেষণে রাতগুলো ইবাদতের মাধ্যমে জাগিয়ে রাখতেন। ইতিকাফের আভিধানিক অর্থ হলো কোন স্থানে আবদ্ধ হয়ে যাওয়া বা অবস্থান করা। ইসলামী পরিভাষায় ‘ইবাদতের সংকল্প নিয়ে রোযা রেখে মসজিদে অবস্থান করার নাম ইতিকাফ’ (হিদায়া, বাবুল ইতিকাফ)। 

ইতিকাফকারী দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হয়ে আল্লাহর দিকে ঝুঁকে পড়ে যেন তিনি তার অভীষ্ট মনোবাসনা পূর্ণ করে তবে ইতিকাফ থেকে উঠতে পারেন। এটা কঠিন সাধানার বিষয়। তাই মুতাকিফকে এমন কোন কাজকর্ম বা আচার আচরণ করা উচিত নয় যাতে তার এ সাধনা ব্যহত হয় বা প্রশ্নবিদ্ধ হয় অথবা ক্রুটিপূর্ণ হয়ে যায় বা তার মনোবাসনা অপূর্ণ থেকে যায়। একজন তাপস সাধনের ন্যায় একাগ্রতা ঐকান্তিকতা শৃঙ্খলা ও পবিত্রতার লাগাম যেন হাত ছাড়া হতে না দেন।

রমজানের এই শেষ দশকের একটি রাতে এসে থাকে লাইলাতুল কদর। লাইলাতুল কদর বা সৌভাগ্য রজনী লাভ বোধ করি মুমিনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। সারা জীবন কঠোর সাধনা, ত্যাগ ও তিতিক্ষার মাধ্যমে শয়তানী প্রবৃত্তিরূপে দৈত্যকে নিধন করার পর মুমিনের কাছে আসে সেই মুহ‚র্তটি-সেই পাওয়ার মুহ‚র্তটি যা আল কোরআনের সুরা কাদরে ‘লাইলাতুল কদর’ নামে আখ্যায়িত হয়েছে। হাজার মাসের চেয়েও উত্তম এ মুহ‚র্তটি।

লাইলাতুল কদর বলতে আমরা সাধারণত একটি রাতকে মনে করে থাকি। ভৌগলিক কারণে সারা দুনিয়ায় যেহেতু একই সময়ে রাত থাকে না সেজন্যে লাইলাতুল কদরকে আমাদের গণনার একটি রাত নির্ধারণ করা সঠিক বলে মনে হয় না।

লাইলাতুল কদর এমন একটি সময় মুমিনের ব্যক্তিগত জীবন বা জাতীয় তথা মিল্লাতী জীবনে রাতের ন্যায় কাজ করে থাকে। মুমিন সাধনার শেষ লগ্নে তার প্রভুর দিদার বা দর্শন ও সান্নিধ্য লাভ করে বাক্যালাপে ভ‚ষিত হয়।

এ মুহুর্তটিই আসলে তার জীবনে লাইলাতুল কদর। তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, এ মুহ‚র্তটি অবশ্যই মুমিনের জীবনে আসে রমজানের কঠোর সাধানার শেষ দশকে। রোজার সাধনার মাধ্যমে মুমিন পানাহার ত্যাগ করে, নিদ্রাকে কম করে দিয়ে এবং নিজের প্রজননকে সাময়িকভাবে হলেও স্বীকার করে আল্লাহর রঙে রঙিন হয়। তাই সে আল্লাহর সাথে নিজ নিজ সামর্থানুযায়ী বাক্যালাপ করার সৌভাগ্য লাভ করে।

হাদিস পাঠে জানা যায়, হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত-হজরত রাসুল করিম (সা.) কদরের রাত্রি সম্বন্ধে বলেছেন ‘রমজান মাসের শেষের দশ রাত্রিসমূহে লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান কর’ (বোখরি)। তিনি (সা.) আরো বলেছেন ‘তোমাদের কাছে রমজান এসেছে। রমজান মোবারক মাস। এর রোজা আল্লাহ তোমাদের প্রতি ফরজ করেছেন। এ মাসে বেহেশতের দ্বার সমূহ উন্মুক্ত করা হয়েছে আর দোযখের দ্বারসমূহ বন্ধ করা হয়েছে এবং দুষ্কৃতকারী শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়েছে। এ মাসের একটি রাত্রি যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত, সে সকল প্রকার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত’ (বোখারি)।

হাদিস থেকে আরও জানা যায়, হজরত আয়েশা (রা.) নবী করিম (সা.)-এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, আমি লাইলাতুল কদর লাভ করলে কি করবো? হজরত নবী করিম (সা.) তাকে নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতে বললেন: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি অর্থাৎ হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি মার্জনাকারী। মার্জানাকে তুমি ভালোবাস। অতএব তুমি আমাকে মার্জনা কর’ (তিরমিজি)।

আমাদেরকে শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদরের অন্বেষণ করতে হবে। আর রমজান মাসের শেষ দিনগুলোতে আমাদের সবার বেশি বেশি উপরোক্ত দোয়াটিও করা উচিত।

আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে তার সন্তুষ্টি দান করুন, আমিন।

লেখক: ইসলামী গবেষক ও কলামিস্ট, ই-মেইল- [email protected]

   

মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ দুই নিদর্শন



এম. মুহাম্মদ আব্দুল গাফফার, অতিথি লেখক, ইসলাম
মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ দুই নিদর্শন

মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ দুই নিদর্শন

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র কোরআন-হাদিসে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত মুসলমানদের পরিচয়ের শ্রেষ্ঠ যে দুটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে, তার একটি হলো- আজান; অপরটি নামাজ। এ দুটি বিষয় নিয়েই ইহুদিরা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো। এ মর্মে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘তোমরা যখন নামাজের জন্য আজান দাও, তখন ওরা (মুশরিক, ইহুদিরা) এ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে এবং সেটাকে খেলার বস্তু বানায়। এর কারণ হচ্ছে ওরা এমন এক সম্প্রদায় যাদের বুদ্ধি বিবেচনা বলতে কিছু নেই।’-সুরা মায়েদা : ৫৮

আল্লাহতায়ালার এ ঘোষণা থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা গেল যে, আজান অর্থাৎ নামাজের জন্য আহ্বানের বিষয়টি সামান্য কোনো ব্যাপার নয়, বরং এটা মুসলিম জাতির পরিচিতিমূলক নিদর্শন। একটি হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) একজন লোককে বললেন, তুমি দেখছি বন-জঙ্গলে বকরি চরাতে ভালোবাসো। কাজেই তুমি যখন বন-জঙ্গলে থাকো এবং নামাজের জন্য আজান দাও, তখন উচ্চৈঃস্বরে আজান দেবে, কারণ জিন-মানুষ অথবা অন্যকোনো বস্তুই আজানের শব্দ শুনবে কেয়ামতের দিন সে মুয়াজ্জিনের পক্ষে সাক্ষ্য দান করবে। হজরত আবু সাঈদ (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে এ কথা শুনেছি। -সহিহ বোখারি : ৫৭৪

হাদিসের ভাষায় আজানের কী গুরুত্ব, তা পরিষ্কারভাবে অনুধাবন করা গেল। এ প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) আরেকটি হাদিসের অংশবিশেষ এমন- ‘হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, লোকেরা যদি আজান দেওয়ার ও নামাজে প্রথম কাতারে (দাঁড়াবার) ফজিলত জানতো এবং একই সঙ্গে এ কথাও জানতো যে, লটারির সাহায্য ছাড়া তা লাভ করা সম্ভব নয়, তাহলে অবশ্যই তারা লটারির সাহায্য নিতো ...।’ -সহিহ বোখারি : ৫৮০

আজান ও নামাজ এ দুটি ইবাদত মুসলিম পরিচয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মুমিনের মসজিদ হলো- আজান ও নামাজের কেন্দ্রবিন্দু। এ মর্মে এক হাদিস এভাবে এসেছে, হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত। ‘হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন কাউকে নিয়মিতভাবে মসজিদে হাজির হতে দেখবে, তখন তোমরা তার মুমিন হওয়ার সাক্ষ্য দেবে। কেননা আল্লাহতায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর মসজিদের আবাদ করে, সে আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছে।’-সুনানে তিরমিজি

এভাবে আজান ও নামাজের মর্যাদা সম্পর্কে বহুসংখ্যক হাদিস বর্ণিত আছে। এ মর্মে আরেকটি হাদিস উল্লেখ করছি, ‘হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম (সা.) যখনই কোনো সম্প্রদায়ের সঙ্গে জেহাদ করতে যেতেন, ভোর না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ করতেন না। অপেক্ষা করতেন যদি আজান শুনতে পেতেন, তাহলে আক্রমণ থেকে বিরত থাকতেন, আর আজান শোনা না গেলে আক্রমণ করতেন। যথা নিয়মে আমরা খায়বারের লড়াইয়ের জন্য রওনা হলাম। আমরা রাতের বেলা সেখানে পৌঁছালাম। যখন ভোর হলো এবং আজান শোনা গেল না, তখন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সওয়ার হলেন এবং আমিও আবু তালহার পেছনে সওয়ার হলাম। এতে আমার পা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এর পা স্পর্শ করছিল, হজরত আনাস (রা.) বলেন, তখন খায়বারের লোকজন তাদের থলে কাস্তে, কোদাল নিয়ে আমাদের কাছে এসে রাসুলুল্লাহ (সা.) কে দেখে বলে উঠলো, মুহাম্মদ! খোদার কসম এ যে মুহাম্মদ! তার সৈন্য বাহিনী এসে গেছে। হজরত আনাস (রা.) আরো বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে দেখে বলে উঠলেন, আল্লাহ আকবর! আল্লাহ আকবর! খায়বার ধ্বংস হোক। আমরা যখন কোনো জাতির দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হই, তখন সতর্ককৃতদের দিনের সূচনা মন্দই হয়ে থাকে।’-সহিহ বোখারি : ৫৭৫

মুসলমানদের জন্য নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাদিসের পরিভাষায় মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যে পার্থক্য হলো- নামাজ আদায় ও নামাজ ত্যাগ করা। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যার আমানতদারী নেই, তার ঈমান নেই। যার পবিত্রতা নেই, তার নামাজ নেই। যার নামাজ নেই, তার দীন নেই। গোটা শরীরের মধ্যে মাথার যে মর্যাদা, দীন ইসলামে নামাজের যে মর্যাদা।’-আল মুজামুস সগির

নামাজ হলো- দীন ইসলামের মাথা অর্থাৎ প্রধান অঙ্গস্বরূপ। প্রসঙ্গক্রমে একটি ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে- খায়বার থেকে ফেরার পথে এক জায়গায় হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) যাত্রাবিরতি করেন। শেষরাতে তিনি বললেন, আমরা যাতে এখন ঘুমাতে পারি, সেজন্য ফজরের সময় আমাদের ডেকে দেওয়ার দায়িত্ব কে নিতে পারে? হজরত বিলাল (রা.) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) আমি এ দায়িত্ব নিতে পারি। তখন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তার সহগামী মুসলমানরা যাত্রাবিরতি করলেন এবং ঘুমিয়ে পড়লেন। রাতে হজরত বিলাল (রা.) নামাজ আদায় শুরু করলেন। কিছুক্ষণ নামাজ পড়ার পর তিনি উটের গায়ে হেলান দিয়ে প্রভাতের প্রতীক্ষায় বসে রইলেন। একসময় তিনিও ঘুমিয়ে পড়লেন, ফলে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ও মুসলিম মুজাহিদরা যথাসময়ে ঘুম থেকে জাগতে সক্ষম হলেন না। তপ্ত রোদের পরশ লাগার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের ঘুম ভাঙলো। প্রথমেই হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘুম থেকে জেগে উঠলেন। উঠেই তিনি হজরত বিলালকে (রা.) বললেন হে বিলাল! তুমি আজ এ কী করলে? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! যে ঘুমে আপনাকে ধরেছিলো সেই ঘুমের কাছে আমিও পরাভূত হয়েছি। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি ঠিকই বলেছো। এরপর তিনি নিজের উট অল্প কিছুদূর এগিয়ে নিয়ে গেলেন, অতঃপর উট থামিয়ে তিনি অজু করলেন। সাহাবারাও অজু করলেন। তারপর বিলালকে (রা.) নামাজ শুরুর জন্য ইকামত দিতে বললেন, বিলাল (রা.) ইকামত বললেন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের নিয়ে নামাজ আদায় করলেন। নামাজ শেষে তিনি সাহাবিদের দিকে ফিরে বললেন, তোমরা কখনো নামাজ পড়তে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়া মাত্রই পড়ে নেবে। কেননা আল্লাহ বলেছেন, আমাকে স্মরণ করার জন্য নামাজ কায়েম করো।’-সিরাতে ইবনে হিশাম

;

তুরস্কের কাঠের খুঁটির পাঁচ মসজিদ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
তুরস্কের মধ্য কোনিয়া প্রদেশের এসরেফোগলু মসজিদ

তুরস্কের মধ্য কোনিয়া প্রদেশের এসরেফোগলু মসজিদ

  • Font increase
  • Font Decrease

তুরস্কের অলি-গলিতে রয়েছে অপূর্ব সৃষ্টি শৈলীর ইসলামি স্থাপত্য। ইসলামি স্থাপত্যের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- মসজিদ। তুরস্কের ইস্তাম্বুলেই রয়েছে ৩ হাজারের বেশি মসজিদ।

তুরস্কের মসজিদগুলো বিশ্বের অন্যান্য মসজিদ থেকে সৌন্দর্যের দিক দিয়ে ভিন্ন ও এগিয়ে। এসব মসজিদ তুরস্কের স্থাপত্যের পরিচয় বহন করে। কিছু মসজিদের স্থাপত্যকে হার মানাতে পারেনি আজকের আধুনিক স্থাপত্যবিদ্যাও। এবার তুরস্কের সেসব ঐতিহাসিক মসজিদের মধ্যে কাঠের খুঁটিবিশিষ্ট পাঁচটি মসজিদকে বিশ্বের ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।

সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত ইনেসকোর ৪৫তম অধিবেশনে হাইপোস্টাইল এসব মসজিদকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

দেশটির সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ নুরি আরসাবি জানান, কাঠের স্তম্ভবিশিষ্ট এসব মসজিদকে ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো।
ত্রয়োদশ থেকে চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে তুরস্ক স্থাপত্যশৈলীতে আনাতোলিয়া অঞ্চলে এসব মসজিদ নির্মাণ করা হয়। সেই সময় মধ্য এশিয়ার খোরাসান অঞ্চল পর্যন্ত এই শৈলীর ব্যাপক প্রচলন ছিল।

এ নিয়ে তুরস্কের ২১টি স্থাপনা বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে। ইউনেসকোর স্বীকৃতি পাওয়া মসজিদগুলো হলো পশ্চিম আফিয়ন প্রদেশের গ্র্যান্ড মসজিদ, এসকিহির প্রদেশের সিভরিহিসার গ্র্যান্ড মসজিদ, রাজধানী আংকারার আহি সেরাফেদ্দিন (আসলানহেন) মসজিদ, মধ্য কোনিয়া প্রদেশের এসরেফোগলু মসজিদ এবং উত্তর কাস্তামোনু প্রদেশের মাহমুত বে মসজিদ।

এক বিবৃতিতে ইউনেসকো জানায়, এসব মসজিদ স্বতন্ত্র স্থাপত্যশৈলীতে নির্মাণ করা হয়েছে। সাধারণত অন্য কোথাও এমন নির্মাণশৈলী দেখা যায় না। মসজিদের বাইরে পাথরের গাঁথুনি এবং ভেতরে কাঠের কলাম (হাইপোস্টাইল) রয়েছে, যা কাঠের সমতল ছাদ ও ওপরের অংশকে সুদৃঢ় করে। সুদক্ষ হাতে সূক্ষ্ম কাঠের খোদাই, কারুকার্য ও অনিন্দ্য সুন্দর স্থাপত্যের জন্য এসব মসজিদ খুবই বিখ্যাত।

;

ফিলিপাইনে অনুমোদন পেল ভার্চুয়াল শরিয়া আদালত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফিলিপাইনের আইন সভা

ফিলিপাইনের আইন সভা

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিপাইনের আইন সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শরিয়া আদালত পরিচালনা বিষয়ক প্রস্তাবিত বিলটি তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়ে পাস হয়েছে। এর ফলে মুসলিম ট্রাইব্যুনালের আদালত পরিষেবা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাওয়া যাবে এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রস্তাবিত বিলটি আইন সভায় পাস হয়। তবে প্রস্তাবিত বিলটি আইন হিসেবে পাস হওয়ার আগে ফিলিপাইনের সিনেট থেকেও অনুমোদন পেতে হবে। আশা করা হচ্ছে, ফিলিপাইনের সিনেটেও আইনটি দ্রুত পাস হবে।

শরিয়া আদালতের সহজীকরণের এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিপাইনের মুসলিম আইন বিষয়ক সহায়তাকারী সংস্থা দ্য ন্যাশনাল কমিশন অব মুসলিম ফিলিপিনো (এনসিএমএফ)। যেসব অঞ্চলে সরাসরি কোনো শরিয়া আদালত নেই, সেখানকার মুসলিমদের এই সংস্থাটি প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার অনুমোদন পাবে।

এনসিএমএফের মুখপাত্র ইউসুফ মানদো বলেন, শরিয়া আদালতের ইতিবাচক উন্নয়নকে এনসিএমএফ সাধুবাদ জানায়। আমাদের অধিকাংশ ক্লায়েন্টের আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন।

শরিয়া আদালত পরিষেবার ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া তাদের ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করবে, যারা এমন স্থানে বসবাস করে যেখানে কোনো শরিয়া আদালত নেই। এটি সবার জন্য ন্যায়বিচারের সমান সুযোগ তৈরি করবে। এনসিএমএফ নিজস্ব আইনবিষয়ক ব্যুরোর মাধ্যমে বিবাহ, জন্ম ও মৃত্যু সনদসহ মুসলিমদের প্রয়োজনীয় নথিপত্রের জন্য একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফরম তৈরি করবে। এ ক্ষেত্রে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সমন্বয় থাকবে।

মানডো বলেন, ‘আমরা কংগ্রেসকে বিশেষ করে বিলটির লেখকদের ধন্যবাদ জানাই। তারা ফিলিপাইনের মুসলিমদের অধিকার সুরক্ষায় আমাদের আইন বিষয়ক ব্যুরোকে সুদৃঢ়করণে সহযোগিতা করেছে। এই পর্যায়ে আমরা অপেক্ষায় রয়েছি, বিলটি সিনেটের পক্ষ থেকে পাস হবে এবং আইন হিসেবে চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হবে।’

ফিলিপাইনে মোট জনসংখ্যা প্রায় ১১০ মিলিয়নের মধ্যে ৬ শতাংশের বেশি মুসলিম রয়েছে। তাদের বেশির ভাগই দেশটির দক্ষিণে মিন্দানাও ও সুলু দ্বীপপুঞ্জ এবং মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ পালাওয়ানে বাস করে।

১৯৭৭ সাল থেকে ফিলিপাইনের মুসলিমদের জন্য রয়েছে মুসলিম শরিয়া আদালত। সেই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দেশটির প্রেসিডেন্ট ফারদিনান্দ মারকোস সুপ্রিম কোর্টের আওতায় এর অনুমোদন দেন। বর্তমানে দেশটির পাঁচটি জেলায় শরিয়া আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

;

সাত মাসে কোরআনের হাফেজ সাত বছরের মাইদা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সাত মাসে কোরআনের হাফেজ হওয়ায় মাইদাকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে

সাত মাসে কোরআনের হাফেজ হওয়ায় মাইদাকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে

  • Font increase
  • Font Decrease

মাত্র সাত মাসে পুরো কোরআন মাজিদ মুখস্থ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে চট্টগ্রামের মোছা. জান্নাতুল মাওয়া মাইদা। তার বয়স মাত্র সাত বছর। সে নগরীর অক্সিজেন এলাকার পাঠানপুর মহিউস সুন্নাহ ইসলামিক মাদ্রাসার বালিকা শাখার শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা সাআদ সাদেক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা হাফেজ মহিউদ্দিন জানান, সাধারণত কোরআন মাজিদ হিফজ শেষ করতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে। তবে সাত বছর বয়সী জান্নাতুল মাওয়া মাইদা মাত্র সাত মাসে পুরো কোরআন মাজিদ মুখস্থ করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করছি। মহান আল্লাহ যেন তাকে দ্বীনি ইলম অর্জন করে ইসলামের সেবা করার তাওফিক দেন।

হাফেজ মাইদার বাবা হাফেজ মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন জানান, মাইদা খুবই অল্প সময়ে কোরআন মাজিদ হিফজ সম্পন্ন করেছে। বাবা হিসেবে আমি মহান আল্লাহর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও মাইদার শিক্ষিকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

জান্নাতুল মাওয়া মাইদার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। তার বাবার নাম মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং মায়ের নাম শেফালী আক্তার।

;