রমজান ও পরিবার



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজান মাসে রোজার কারণে দৈনন্দিন হাট-বাজার ও খাবার-দাবারের পেছনে সময় কম ব্যয় হয়। পরিবারের পুরুষ কর্তা এবং নারী কর্ত্রী নামাজ, রোজার পাশাপাশি পরিবার তথা সন্তানদের প্রতি মনোযোগী হওয়ার অধিক সুযোগ ও সময় লাভ করেন। ফলে পবিত্র মাহে রমজানে সন্তানদের আমল, আখলাক ও প্রশিক্ষণে ব্যস্ত হওয়ার অবকাশ পাওয়া যায়। বিশেষ করে, তাদেরকে নামাজ, রোজা শিক্ষা দেওয়া এবং পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতে অভ্যস্থ করার ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়া যেতে পারে। আর এ গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য পালনে পিতা-মাতা তথা অভিভাবকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করা দরকার। কেননা, শিশু-কিশোরদের জন্য পরিবার হলো প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর পিতা-মাতা হলে জীবনের প্রথম শিক্ষক।

এ কথা খুবই সত্য যে, প্রতিটি মানুষই নিজ নিজ সন্তানকে জীবনে সফল দেখতে চায়। এজন্য মানুষ নানা রকম পদক্ষেপও গ্রহণ করে এবং পরিশ্রম করতে ও অর্থ ব্যয় করতেও পিছপা হয় না। কিন্তু সন্তানের দুনিয়াবি সাফল্যের জন্য যে পরিমাণ শ্রম, অর্থ ও মনোযোগ ব্যয় করা হয়, দ্বীন ও আখেরাতের কল্যাণের জন্য তা করা হয় না। বরং দ্বীন শিক্ষা ও আমলে অভ্যস্ত হলে সন্তান দুনিয়া ও আখেরাতের সাফল্য যেমন লাভ করবে, তেমনি পিতা-মাতার জন্যও কল্যাণের কারণ হবে। এ কারণে পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহের আলোকে সন্তান প্রতিপালনে তৎপর হওয়া দরকার এবং পবিত্র মাহে রমজানকে সন্তানদের দ্বীনি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের প্রতিপালনের বিষয়ে সর্বাধিক মনোযোগী হওয়া আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা হযরত জাকারিয়া আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে বলেন:

‘এবং আমি তার স্ত্রীকে সুস্থ করে দিয়েছিলাম। এ লোকগুলো সব সময় সৎকাজে প্রতিযোগিতা করতো, তারা আমাকে আশা ও ভীতির সাথে ডাকতো, তারা সবাই ছিল আমার অনুগত বান্দা’ (সুরা আম্বিয়া: আয়াত ৯০)।

এ আয়াতের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারে সৎকাজের মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি অনুগত বান্দা হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে এবং সেই সঙ্গে আশা ও ভয়ের মাধ্যমে সর্বদা আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালাকে ডাকার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এতে পরিবারের প্রতিটি সদস্য তথা সন্তানগণের ঈমান মজবুত হওয়ার এবং সৎকর্মশীল হওয়ার সুযোগ রয়েছে, যা তাদেরকে অপরাধ, অপকর্ম, নেশা, সন্ত্রাস থেকে বাঁচাবে এবং পরবর্তী জীবনে ঘুষ, দুর্নীতি ও অন্যান্য নাফরমানি থেকে রক্ষা করে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালার অনুগত ও সফল বান্দায় পরিণত করবে।

সকলেই এই বিষয়ে অবগত যে, একজন শিশু ঘরে যা কিছু দেখে, যা কিছু শোনে, সেসব তার ভবিষ্যতের উপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই ঘরে সব সময় ঈমানের আলোচনা করা অপরিহার্য্য। নামাজের আমল করা দরকার। প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ঘরকে জীবন্ত রাখা প্রয়োজন। তদুপরি হাদিস, মাসয়ালা ইত্যাদি জরুরি বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের, বিশেষত শিশু-কিশোর সদস্যদের প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষিত করে তাদের জীবন গঠনের দায়িত্ব পিতা-মাতাকেই নিতে হবে। কারণ, একজন তরুণ সেই স্বভাব নিয়েই বেড়ে উঠে, যে স্বভাবে তার পিতা-মাতা তাকে অভ্যস্ত করেছে। ফলে সন্তানদের ভালো শিক্ষা ও অভ্যাসে অভ্যস্ত করানো পিতা-মাতার দায়িত্ব, যা দায়িত্ব মাহে রমজানে অধিকতরভাবে পালনের সুযোগ পাওয়া যায়। 

এজন্য রমজান মাসের মোবারক পরিবেশে সন্তানদের নামাজ, রোজার সঙ্গে সঙ্গে পবিত্র কোরআনের সঙ্গেও সম্পর্কিত করতে হবে। তাজবিদের সঙ্গে তেলাওয়াত শেখাতে হবে। নামাজের জন্য কতিপয় সুরা এবং প্রয়োজনীয় দোয়া মুখস্ত করাতে হবে। আমলের মতোই কথা, বার্তা, মেলামেশা তথা আখলাখের দিক থেকেও তাদেরকে স্বচ্ছ, সত্যবাদী ও সুন্দর করতে হবে। যাতে সন্তান চরিত্রবান রূপে গড়ে উঠতে পারে এবং মিথ্যা, প্রবঞ্চনা, গিবত, শেকায়েত, বদগুমানি ইত্যাদির কবলে পতিত হয়ে জীবন বিনষ্ট না করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন:

‘মানুষ তার বন্ধুর দ্বীনের অনুসারী হয়ে থাকে, কাজেই তোমাদের প্রত্যেকে যেন লক্ষ্য রাখে যে সে কাকে বন্ধু বানাবে’ (তিরমিজি শরিফ: ২৩৭৮)।

লক্ষ্য রাখতে হবে, সন্তান যেন স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বড় হয় এবং সে যেন তার স্বাভাবিক প্রতিভা বিকাশে সুযোগ পায়। চাপ, হট্টগোল, গালাগালি, মারপিটের মধ্যে সন্তান বড় হলে এসবের কুপ্রভাব তার মধ্যে পড়বে এবং সে সন্ত্রাস, মাদক ও অসামাজিক-অনৈতিকতার দিকে ধাবিত হয়ে যেতে পারে। ফলে এসব ক্ষেত্রে অভিভাবকদের বিশেষ মনোযোগী হতে হবে। রমজান মাসে অধিক সময় তাদের সঙ্গে কাটাতে হবে এবং তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনা প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এভাবে তাকে উন্নত চরিত্র ও উচ্চতর ব্যক্তিত্বে বিকশিত করার ব্যবস্থা শৈশবকাল থেকেই গ্রহণ করা পিতা-মাতার একান্ত কর্তব্য। মনে রাখা জরুরি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন:

‘মহান আল্লাহ উঁচু স্বভাব পছন্দ করেন, নিচু স্বভাব পছন্দ করেন না’ (মাজমায়ুজ জাওয়ায়েজ: ১৮৮)।

আমল ও আখলাকের মতোই সন্তানের পোষাক-পরিচ্ছদের প্রতিও পিতা-মাতার নজর রাখতে হবে। তার পোষাক যেন হয় শালিন, ভদ্রজনোচিত এবং অবশ্যই সুন্নাত মোতাবেক। আপত্তিকর পোষাক কিংবা অন্যের অনুকরণে পোষাক পরিধানের মধ্যে যে আদৌ কোনো বাহাদুরি নেই, সে শিক্ষা সন্তানকে শৈশবেই দিতে হবে। তাহলে সন্তান অন্ধ-অনুকরণের মাধ্যমে নিজের স্বকীয়তা ও আত্মসম্মান নস্যাৎ করে আচার, আচরণ, কথা, বার্তা, খাদ্য ও পোষাকের ক্ষেত্রে অপরের অনুগত দাসে পরিণত হবে না। বরং নিজের ধর্ম, বিশ্বাস, সংস্কৃতির মজবুত অনুসারী হবে সন্তান। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন:

‘যে ব্যক্তি কোনো জাতির সাথে সাদৃশ্য রাখবে, সে তাদের অন্তর্ভূক্ত হবে’ (আবু দাউদ: ৪০৩১)।

ফলে এসব জরুরি বিষয় শৈশব থেকেই যখন একজন শিশু শিখবে, তখন সেগুলো তার অভ্যাসের অংশে পরিণত হবে এবং পরবর্তীতে সারা জীবনব্যাপী এসব অনুসরণ ও পালন করা তার পক্ষে সহজতর হবে। আমল, আখলাক, কথা-বার্তা, মেলামেশা, খাদ্য, পোষাক ইত্যাদি বিষয়ে পিতা-মাতা যদি সন্তানকে শৈশবে বাড়িতে উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ না দেয়, তবে সে সন্তান দেখে-দেখে এমন কিছু শিখবে, যা তার আমল, আখলাক, কথা-বার্তা, মেলামেশা, খাদ্য, পোষাক ইত্যাদিকে বিপথগামী করবে এবং তাকে বিপদে ফেলে দেবে। আর সন্তানের বিপদের জিম্মাদার পিতা-মাতাও হবে এবং তার সুকর্মের মতো কুকর্মের প্রতিফলও পিতা-মাতাকে ভোগ করতে হবে।

অতএব, সারা বছরে তো বটেই, বিশেষ করে মাহে রমজানে পরিবার-পরিজন এবং সন্তানদের বিষয়ে অত্যাধিক মনোযোগী হওয়া অতীব জরুরি। আর এ কাজে প্রতিটি অভিভাবক তথা পিতা-মাতাকে অনুসরণ করতে হবে পবিত্র কোরআনে ঘোষিত এই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা, যা আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা দোয়া হিসেবে শিক্ষা দিয়েছেন:

‘(নেক বান্দা তারাও), যারা বলে, হে আমাদের মালিক, তুমি আমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করো। তুমি আমাদের মুত্তাকী লোকদের ইমাম বানিয়ে দাও’ (সুরা ফোরকান: আয়াত ৭৪)।                           

   

বিপদাপদ কাটছেই না, কারণ জেনে নিন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নানাবিধ আমল, চিকিৎসা ও চেষ্টা-তদবির সত্ত্বেও অসুস্থতা থেকে সুস্থ হতে বিলম্ব হয় কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- ফরজ নামাজ ঠিকমতো আদায় না করার কারণে। বিশেষ করে ফজরের নামাজ।

ফজরের নামাজ আদায়কারী দয়াময় আল্লাহর জিম্মায় থাকে। আল্লাহতায়ালা তাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখেন। সুতরাং তাকে যে অযথা কষ্ট দেবে, অন্যায়-অবিচার করবে, আল্লাহ তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন। এ সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর নিরাপত্তা লাভ করল। আর আল্লাহতায়ালা যদি তার নিরাপত্তা প্রদানের হক কারও থেকে দাবি করে বসেন, তাহলে সে আর রক্ষা পাবে না। তাই তাকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন।’ -সহিহ মুসলিম : ৬৫৭

এর মানে হলো, যে ফজরের নামাজ আদায় করল না; সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না। তো যে ব্যক্তি আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না, তাকে পৃথিবীর কে নিরাপত্তা দেবে? তাকে কে সুস্থ করবে?

সমাজের অনেকেই আছেন, বাকি চার ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতো আদায় করেন। ফজরের নামাজ মাঝে-মধ্যে ছাড়েন কিংবা মাঝে-মধ্যে পড়েন। তাদের নিরাপত্তায় তো সমস্যা হবেই।

সারা বছরে একদিনও ফজরের নামাজ ছাড়া যাবে না। কখনও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলে উঠেই সর্বপ্রথম ফজরের নামাজ পড়তে হবে- যদি সেটা নিষিদ্ধ সময় না হয়। এভাবে চলতে থাকলে আমল ও প্রচেষ্টার ফল দ্রুত পাওয়া যাবে- ইনশাআল্লাহ।

আরেকটি কথা, আমল নিয়মিত করতে হবে এবং কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি চাইতে হবে। আমরা অনেকেই অনেক আমল করি, কিন্তু আমলের বিনিময়ে আমি কী চাচ্ছি; এটাই জানি না। প্রত্যেকটি আমলের বিনিময়ে আখেরাতের ফজিলত তো পাবেনই, দুনিয়ার কোনো নেক উদ্দেশ্যও হাসিল করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, আমল, নিয়ত, ফজরের নামাজ ও দীর্ঘদিনের বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা সহজ ও সুন্দর জীবনের অন্যতম নিয়ামক।

;

সৌদি আলেমদের অভিমত

অনুমোদন ছাড়া হজ করা পাপ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজপালন করার ক্ষেত্রে যথাযথভাবে রাষ্ট্রীয় অনুমতি নেওয়াকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে সৌদি সরকার। পবিত্র স্থানগুলোর পবিত্রতা নিশ্চিত করতে শরিয়া আইনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি আরব।

সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সৌদির সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা ‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ মতামত দিয়েছে, যারা রাষ্ট্রীয় অনুমতি ছাড়া হজ করতে যাবেন তাদেরকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও যারা হজ করবেন তারা এর মাধ্যমে পাপ করবেন।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এবং দুই পবিত্র মসজিদের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে আলেমদের কাছে তাদের মতামত তুলে ধরেন। এরপর আলেমরা ঘোষণা দেন, হজ করতে হলে অবশ্যই পূর্বে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।

‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ জানায়, হজ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা সাজিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, খাবার সরবরাহ এবং অন্যান্য সেবা। যারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করে হজ করবেন তারা আরও ভালো ও উন্নত সেবা পাবেন।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো- হজ। প্রতি বছর জিলহজ মাসে হজ করেন বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। যেসব মুসল্লির আর্থিক ও শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে, তাদের জীবনে অন্তত একবার হলেও হজ করার বিধান রয়েছে।

মুসল্লিরা যেন নির্বিঘ্নে হজ করতে পারেন, সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। এবার তারা হজ করার জন্য অনুমতির বিষয়টি আবশ্যিক করে দিয়েছে।

;

সৌদিগামীদের উমরা পালনের সুযোগ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজের প্রস্তুতি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য উমরার ভিসা ইস্যু বন্ধ রেখেছে সৌদি আরব। দেশটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের জন্য হজ ভিসা ইস্যু শুরু করেছে। আর যেসব যাত্রীর উমরা ভিসা রয়েছে তারা ৮ মে পর্যন্ত দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। কিন্তু তাদেরকে অবশ্যই ২৯ জিলকদ (৬ জুন) এর মধ্যে সৌদি আরব ত্যাগ করতে হবে।

এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরবগামীদের জন্য নতুন সুসংবাদ দিয়েছে দেশটি। এখন থেকে যেকোনো ভিসা নিয়ে উমরা পালন করা যাবে। গত ২৪ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর বার্তায় দেশটির হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

তাতে বলা হয়, যেকোনো ভিসা নিয়ে যেকোনো দেশ থেকে এলে সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্যে উমরা পালন করতে পারবেন। আপনার ভিসা যে ধরনেরই হোক, আপনি উমরা করতে পারবেন। চাই তা ফ্যামিলি, ট্রানজিট, লেবার ও ই-ভিসা হোক, তা দিয়ে উমরা করতে কোনো বাধা নেই।

পবিত্র হজের অনুমোদন দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব। গত ২৪ এপ্রিল থেকে দেশটির স্থানীয় বাসিন্দা ও সেখানে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের হজের অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়। এতে আবাসন সুবিধা বিবেচনায় ৪ হাজার ৯৯ সৌদি রিয়াল থেকে শুরু করে ১৩ হাজার ২৬৫ রিয়াল পর্যন্ত চারটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।

সৌদি আরব গত বছর থেকে উমরা-সংক্রান্ত নীতিমালা শিথিল করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সৌদি আরবের নেওয়া উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে উমরা ভিসার মেয়াদ ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করা, স্থল, বিমান ও সমুদ্রপথের যেকোনোটির মাধ্যমে মুসল্লিদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া এবং নারীদের জন্য পুরুষ অভিভাবক সঙ্গে রাখার বাধ্যবাধকতা বাতিল করা। উমরা ভিসায় সৌদি আরব ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া।

এ ছাড়া দেশটি উমরার অনুমতি পেতে আগ্রহীদের নুসুক অ্যাপ ব্যবহার করতে এবং মসজিদে হারাম ও নববিতে পালনীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময় মেনে চলতে উৎসাহিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম, বিশেষ করে যারা শারীরিক বা আর্থিক কারণে হজ পালনে আসতে পারেন না, তাদের উমরা পালনের সুযোগ করে দেওয়াই এসব উদ্যোগের লক্ষ্য।

;

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহর তায়ালার প্রিয় বান্দা হওয়ার মাধ্যম হলো তার মহান হুকমগুলো পালন করা। তার হুকুমগুলোর মধ্যে থেকে অন্যতম হুকুম হলো নামাজ। আর এই নামাজের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর প্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে নফল নামাজ বান্দাকে আল্লাহর এতটা প্রিয় করে তোলে যে, সে যখন আল্লাহর কাছে কিছু চাই তখন মহান আল্লাহ তাকে ফিরিয়ে দেন না। বরং তার চাওয়াকে পাওয়াতে রুপান্তরিত করে দেন ।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব।

আমি যা কিছু আমার বান্দার ওপর ফরজ করেছি, তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে।

আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চাই, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই।

আমি কোনো কাজ করতে চাইলে তা করতে কোনো দ্বিধা করি না, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপছন্দ করি। (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)

তাই যেকোনো সংকটপূর্ণ অবস্থায় কিংবা যেকোনো প্রয়োজনীয় মুহূর্তে নফল নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমাদের জন্য উচিত হলো, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারই কাছে ফেরা। তাতে মহান রবের ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জন হবে ইনশাআল্লাহ ।

খুব গুরুত্ব সহকারে ফরজ ও সুন্নত নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ আদায় করা। আর নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ (নফল) নামাজ আদায় করাকে সর্বোত্তম আমল বলে আখ্যা দিয়েছেন।

আবদুল্লাহ ইবনু হুবশী আল-খাস’আমী রা. সূত্রে বর্ণিত। একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সর্বোত্তম কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৪৯)

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর হুকুমগুলো আদায়ের মাধ্যমে, তাঁর প্রিয় বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন আমিন।

;