উপমহাদেশের প্রথম ইসলাম প্রচারক শাহ কমর উদ্দীন রুমী রহ.



ফজলুল হক রোমান, অতিথি লেখক, ইসলাম
হজরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী রহ.-এর মাজার, ছবি: সংগৃহীত

হজরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী রহ.-এর মাজার, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিভিন্ন কুসংস্কারের বেড়াজালে আবদ্ধ মানুষ যখন আল্লাহতায়ালাকে ভুলে নানা অনাচারে লিপ্ত ছিলো তখন ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তুরস্কের সেলজুক প্রদেশ থেকে এই উপমহাদেশে আগমন করেন সুফি সাধক হজরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

আল্লাহর এই অলি এক রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু যখন তিনি এক আল্লাহর সত্তাকে মনেপ্রাণে অনুভব করলেন, তখন সমস্ত ভোগ-বিলাস পরিত্যাগ করে শুধু আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন ও ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ঘর-বাড়ি ত্যাগ করেন। কঠোর সাধনার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করে নানা ঘাত-প্রতিঘাত, বাধা-বিপত্তি আর পদে পদে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে বন, জঙ্গল, পাহাড়, পর্বত পেরিয়ে তপ্ত রোদে পুড়ে, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে মরুভূমি এবং সাগর পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম, বগুড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চল হয়ে ৯৯৭ বছর আগে ৪৪৫ হিজরিতে নেত্রকোনার মদনপুরে আগমন করেন এই মহাসাধক।

তখন সেখানে মদন কোচ নামে এক প্রতাবশালী হিন্দু সামন্তরাজের শাসন চলছিল। সে সময় শাহ্ সুলতান (রহ.)-এর এই উপমহাদেশে আর কোনো ইসলাম প্রচারকের আগমন ঘটেনি।

নানা তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে জানা যায়, শাহ্ সুলতান আগমনের অন্তত ১১৬ বছর পর ভারতের আজমিরে হজরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.) এবং সাড়ে ৩০০ বছর পর সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) এবং পর্যায়ক্রমে উপমহাদেশের নানা স্থানে ধর্ম প্রচারকদের আগমন ঘটে।

কাজেই এই উপমহাদেশে তিনিই প্রথম ইসলাম প্রচারক হিসেবে সমধিক বিবেচিত। উপমহাদেশে ইসলাম বিজয়ের অনেক আগেই তার আগমন ঘটেছিল বলে ইতিহাসবিদদের অনেকে মনে করেন।

নেত্রকোনায় আগমনের আগে বগুড়ায় রাজা পরশুরামকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ায় হজরত শাহ্ সুলতানের ওপর তিনি ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে যুদ্ধ হয়, যুদ্ধে রাজা পরশুরাম পরাজিত ও নিহত হন। নিহত রাজার উত্তরাধিকারী একমাত্র বোন পরমা সুন্দরী ও বুদ্ধিদীপ্ত শিলাদেবী ভ্রাতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সশস্ত্র হয়ে যখন যুবক সুলতানের মুখোমুখি হন তখন তার নূরানী মুখাবয়ব দেখে ক্ষিপ্ত শিলাদেবী সব ভুলে বিমোহিত হয়ে পড়েন। প্রতিশোধ না নিয়েই তিনি নিজ মহলে ফিরে যান। প্রচণ্ড আশেক হয়ে ধনসম্পদ, রাজ সিংহাসনসহ সব কিছুর বিনিময়ে তাকে পেতে চান। সব ভুলে দাসীর মাধ্যমে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব পাঠান সুলতানের কাছে। কিন্তু তিনি এই প্রস্তার প্রত্যাখ্যান করায় ঘৃণা, ক্ষোভ ও হতাশায় শেষে বিষপানে আত্মহত্যা করেন রাজকুমারী শিলাদেবী।

শাহ্ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী (রহ.) ৪০ জন সহচর নিয়ে যখন কোচরাজ মদনের রাজ দরবারে হাজির হন তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল। ভিনদেশী ফকির আগন্তুকদের দেখে রাজা ও তার পরিষদবর্গ বিস্মিত হয়ে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে আগমনের কারণ জানতে চান। তিনি তাদেরকে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আসার আহবান জানিয়ে সমাগত আসর নামাজ আদায়ের জন্য জায়নামাজ বিছানোর অনুমতি চাইলেন। অভাবনীয় এই প্রস্তাবে রাজদরবারের সবাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। কিন্তু বিচক্ষণ রাজা ফকিরদের একটু বাজিয়ে দেখতে চাইলেন। তাই প্রতারণা ও কৌশলের আশ্রয় নিয়ে শরবতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে আগন্তুকদের হত্যার পরিকল্পনা আঁটতে লাগলেন। সুলতানকে উদ্দেশ্য করে কোচ রাজা বলেন, আমাদের প্রথানুযায়ী অতিথিকে প্রথমে শরবত পান করাতে হয়। শরবত পান করার পর আপনাদের সব প্রস্তাব মানা হবে। এই বলে তিনি বিষের পেয়ালা সুলতানের হাতে তুলে দিয়ে তা পান করার তাগিদ দিলেন। হলাহল নামের মারাত্মক এই এক ফোঁটা বিষপান করার সঙ্গে সঙ্গে যে কেউ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার কথা। গোটা রাজ দরবারে তখন থমথমে অবস্থা। উজির, নাজির, মন্ত্রী ও পাইক-পেয়াদা সবাই তাদের ঘিরে রেখেছে। পালাবার কোনো রাস্তা নেই, সবাই তাদের নিশ্চিত মৃত্যুর প্রহর গুনছে।

হজরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী রহ.-এর মাজার, ছবি: সংগৃহীত

বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী আল্লাহর অলি স্মিতহাস্যে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে বিষের পেয়ালা মুখে নিয়ে অর্ধেক পান করে অবশিষ্টাংশ শিষ্যদের পান করতে দিলেন। তারাও ‘বিসমিল্লাহ’ বলে নির্দ্বিধায় পান করলেন শরবত। কিন্তু না, কিছুতেই কিছু না হওয়ায় বিস্ময়ে সবাই হতভম্ভ হয়ে গেলেন।

এই অবিশ্বাস্য ঘটনা দেখে রাজা প্রমাদ গুনলেন। শর্তানুযায়ী শেষে জায়নামাজ বিছানোর অনুমতি দেন। জায়নামাজ বিছানোর সঙ্গে সঙ্গে তা প্রসারিত হতে লাগলো আর রাজাসহ সভাসদগণ পেছাতে লাগলেন। মুহূর্তে সব রাজ দরবার ঘিরে ফেলে জায়নামাজটি। সেখানে শাহ্ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী (রহ.) সহচরদের নিয়ে নামাজ আদায় করে দ্বীন প্রচারের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলেন। একের পর এক অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করার পর কোচ রাজাসহ সবার মনোবল ভেঙে পড়ল।

এ সময় ভয়ে এদের অনেকে ইসলাম গ্রহণ করলেন। শেষ পর্যন্ত রাজা নিজ রাজ্যে টিকতে না পেরে ধনসম্পদ নিয়ে উত্তরে গারো পাহাড়ের দিকে চলে যাওয়ার সময় ৫০ মণ সোনা সুলতানকে দিতে চাইলেন। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ না করায় পাশের পুকুরে ডুবিয়ে রাজা মদন কোচ পরিবারসহ দ্রুত চলে যান। যাওয়ার প্রাক্কালে তিনি আল্লাহর অলিকে অনুরোধ করলেন তার নামটি যেন স্মরণীয় করে রাখা হয়। তিনিও কথা রাখলেন। সেই থেকে ওই এলাকা মদনপুর ও পুকুরটি মদনলাল পুকুর নামে পরিচিতি লাভ করে। সেখানে আস্তানা গেড়ে ইসলাম প্রচারে মনোনিবেশ করেন শাহ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী (রহ.)।

ভিনদেশী সাধকের কারামতের সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে তার সান্নিধ্যে ও মধুর ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে দলে দলে লোকজন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে লাগলেন। ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য তার জীবন, যৌবন উৎসর্গ করে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চিরকুমার হজরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী (রহ.) সেখানে অবস্থান করে দূর-দূরান্তে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিতে লাগলেন। অন্ধকারাচ্ছন্ন বিশাল জনগোষ্ঠীর মাঝে তিনি ইসলামের যে আলো জ্বালিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন সেই বিজয় নিশান আজো উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো জ্বলছে।

নেত্রকোনা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে কেন্দুয়া সড়ক পথে মগড়া নদীর তীরে মদনপুরে হজরত শাহ্ সুলতান কমর উদ্দীন রুমী (রহ.)-এর মাজার অবস্থিত। প্রতি বছর ফাল্গুনের পূর্ণিমায় তিন দিনব্যাপী ওরস হয় এখানে। লাখো ভক্ত-অনুরাগীদের আগমন ঘটে তখন। বিশাল জায়গাজুড়ে মাজারের সম্পত্তি লাখেরাজ হওয়ায় তা রাজস্বমুক্ত। ১৮২৯ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মাজারের এই সম্পত্তি অধিগ্রহণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।

অতিব দুঃখের বিষয়, আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিরক ও বাতিলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সব কিছু ত্যাগ করে যিনি সুদূর তুরস্ক থেকে এই জনপদে আগমন করে নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এখন তারই মাজার প্রাঙ্গণে ধর্মের নামে এক শ্রেণীর ধর্ম ব্যবসায়ীর তত্ত্বাবধানে অতি উৎসাহী নারী-পুরুষ ওরস চলাকালীন অনৈসলামিক কার্যকলাপে লিপ্ত হন। উলামা-মাশায়েখগণ যদিও এমন অনৈসলামিক কার্যকলাপ বন্ধের জন্য সোচ্চার।

সৌদি পৌঁছেছেন ১৫ হাজার হজযাত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছর পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার ২৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) মধ্যরাতে এ তথ্য জানায় হজ পোর্টাল।

হজ পোর্টাল সূত্রে জানা যায়, সৌদিতে পৌঁছানো ১৫ হাজার ২৯ জন হজযাত্রীর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৪৬৪ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ৪৬৫ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গেছেন।

হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট গত ২১ মে শুরু হয়। সৌদি আরবে যাওয়ার শেষ ফ্লাইট ২২ জুন। অন্যদিকে হজ শেষে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ২ জুলাই। হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ২ আগস্ট।

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সর্বমোট ২৯ হাজার ১০৪টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী ভিসা পেয়েছে ১৬ শতাংশ, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা পেয়েছে ৮৪ শতাংশ।

এ ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আগত সরকারি ব্যবস্থাপনার চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ ফ্লাইটের হজযাত্রীগণ মসজিদে নববীতে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে আজ মক্কা থেকে মদিনায় গমন করেছেন।

প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন সৌদিতে হজ পালনের অনুমতি পেয়েছেন। কিন্তু হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ৯ দফা সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। সর্বশেষ প্রায় ৫ হাজার কোটা সৌদি সরকারকে ফেরত দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

 

;

জেদ্দা পৌঁছেছেন ৮২৯ হজযাত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ বিমানের দু'টি ফ্লাইটে সৌদি আরবের জেদ্দা বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন ৮২৯ জন হজযাত্রী।

স্থানীয় সময় রোববার (২১ মে) সকাল সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফ্লাইটে ৪১৪ জন এবং সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় ফ্লাইটে ৪১৫ জন যাত্রী জেদ্দা পৌঁছান।

সৌদি হজ ও ওমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড. আবদুলফাত্তাহ বিন সুলাইমান মাশাত এসময় বাংলাদেশি হজযাত্রীদের স্বাগত জানান।

জেদ্দা বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হক ও হজ মিশনের কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের স্বাগত জানান।

রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী হজযাত্রীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে আপনাদের পাশে দূতাবাস, কনস্যুলেট ও বাংলাদেশ হজ মিশন পাশে রয়েছে।

হজযাত্রীদের সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হজ পালনের জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

রোড টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় এ বছর বাংলাদেশি হাজীগণই প্রথম গেলেন জেদ্দায়।

এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন পবিত্র হজ পালন করবেন।

;

হজের প্রথম ফ্লাইট আজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের নিয়ে প্রথম ফ্লাইট শুরু করার জন্য প্রস্তুত রাজধানীর আশকোনার হজক্যাম্প। শুক্রবার থেকে হজক্যাম্পে আসতে শুরু করেছেন হজযাত্রীরা।

শনিবার (২০ মে) দিবাগত রাত পৌনে ৪টায় হজযাত্রীদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। ফ্লাইটটি জেদ্দা বিমানবন্দরে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টায় অবতরণ করবে।

এর আগে শুক্রবার (১৯ মে) রাজধানীর আশকোনায় হজ অফিসে ‘হজ কার্যক্রম-২০২৩’ এর উদ্বোধন ও হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার শুরু হতে যাওয়া হজ ফ্লাইট উপলক্ষে রাত ১২টায় বিমানবন্দরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপস্থিত থাকবেন ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালনের করবেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হজযাত্রীদের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৩ হাজার ৫৯৯ জনকে পরিবহন করবে। বাকি ৫০ শতাংশ সৌদি এয়ারলাইনস বহন করবে।

এ বছর হজযাত্রী পরিবহনে বিমানের নিজস্ব চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজ এবং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ব্যবহৃত হবে। প্রাক হজ ফ্লাইটে মোট ১৬০টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ১১৬টি, ঢাকা-মদিনা রুটে ২০টি, চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে ১৪টি, চট্টগ্রাম-মদিনা রুটে ৬টি, সিলেট-জেদ্দা ও সিলেট-মদিনা রুটে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন।

;

ই-হজ ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ই-হজ ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর আশকোনায় হজ ক্যাম্পে হজ কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু সৌদির বাদশাহর কাছে অনুরোধ করেছিলেন যাতে আমাদের দেশের মানুষ হজে যেতে পারেন। সৌদির বাদশাহও সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। অল্প খরচে হজে পাঠানোর ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু করে দিয়েছিলেন। ’৭৫ পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সেই জাহাজটিটিকে প্রমোদতরীতে পরিণত করে। তখন হজ যাত্রা হতো না। এটা দুঃখজনক।’

তিনি বলেন, ‘বাবা সরকারে এসেই হজ ব্যবস্থা যেন সুষ্ঠুভাবে হয় তার ব্যবস্থা নেন। তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। একটা টাকা রিজার্ভ মানি নেই। কারেন্সি নোট নেই। গোলায় খাবার নেই। এর মাঝে মানুষ যাতে অল্প খরচে হজ করতে যেতে পারেন সেই ব্যবস্থা তিনি নিয়েছিলেন। হিজবুল বাহার নামে একটি জাহাজ ক্রয় করে হজের ব্যবস্থা করেছিলেন।’

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বেসরকারী বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সংসদ সদস্য হাবিব হাছান, ধর্ম বিষয়ক সচিক কাজী এনামুল হাসান এনডিসি, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রমুখ।

এর আগে, সকালে এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা। জানা গেছে, চলতি হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হবে স্থানীয় সময় আগামী ২১মে রাত পৌনে ৪টায়। এ বছর প্রি-হজ ফ্লাইটে মোট ১৬০টি ডেডিকেটেড ফ্লাইট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ বিমান। নির্ধারিত সময় ২১মে রাত পৌনে ৪টায় প্রথম ফ্লাইট বিজি ৩০০১ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।

ফ্লাইটটি এদিনই জেদ্দা বিমানবন্দরে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টায় অবতরণ করবে। আগামী ২২ জুন বিমানের প্রি-হজ ফ্লাইট শেষ হবে।

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালনের অনুমতি পেয়েছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হজযাত্রীদের ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৩ হাজার ৫৯৯ জনকে পরিবহন করবে। আগামী ২১ মে থেকে শুরু হবে চলতি হজ মৌসুমের প্রথম হজ ফ্লাইট।

;