রমজান পর্যন্ত দোয়াটি বেশি বেশি পড়ুন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রমজান পর্যন্ত দোয়াটি বেশি বেশি পড়ুন, ছবি: সংগৃহীত

রমজান পর্যন্ত দোয়াটি বেশি বেশি পড়ুন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হিজরি মাসগুলোর মধ্যে ‘রজব’ বিশেষ ও মহিমান্বিত একটি মাস। এ মাস আসে রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে। তাই রজব মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতে হয়। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সূর্যাস্তের পর থেকে রজব মাস শুরু।

এ মাসের বড় বৈশিষ্ট্য হলো- এ মাস আল্লাহ প্রদত্ত চারটি সম্মানিত মাসের (আশহুরে হুরুমের) একটি। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাস সম্পর্কে খুব গুরুত্ব দিতেন। ফলে রজবের চাঁদ দেখা গেলে তিনি কিছু বিশেষ আমল শুরু করতেন।

হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, যখন রজব মাস শুরু হতো, নবী করিম (সা.) তখন এ দোয়াটি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করে দিন।’ –আল মুজামুল আওসাত: ৩৯৩৯

সুতরাং এখন থেকে রমজান পর্যন্ত দোয়াটি খুব বেশি বেশি পড়া দরকার। আলেমরা বলেছেন, ‘আশহুরে হুরুমের বৈশিষ্ট্য হলো, এসব মাসে ইবাদত-বন্দেগির প্রতি যত্নবান হলে বাকি মাসগুলোতে ইবাদতের তওফিক হয়। আর আশহুরে হুরুমে কষ্ট করে গোনাহ থেকে বিরত থাকতে পারলে অন্যান্য মাসেও গোনাহ পরিহার করা সহজ হয়।’ –আহকামুল কোরআন, জাসসাস: ৩/১১১

বর্ণিত দোয়া ছাড়াও এ মাসে এই আমলগুলো করা যেতে পারে।

রজবের প্রথম রাতের দোয়া কবুল হয়
পবিত্র হাদিস শরিফে রজবের প্রথম রাতে দোয়া কবুল হওয়ার সুসংবাদ এসেছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘পাঁচটি রাত এমন আছে, যেগুলোতে বান্দার দোয়া আল্লাহতায়ালা ফিরিয়ে দেন না, অর্থাৎ অবশ্যই কবুল করেন। রাতগুলো হলো- জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত।’ -মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭৯২৭

রজব মাসের রোজা
রজব মাসে রোজা রাখার ভিন্ন কোনো ফজিলত নেই। তবে হ্যাঁ, এমনিতেই নফল রোজা রাখা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। মুহাদ্দিস হাকেম ইবনে হাজার (রহ.) লিখেছেন, বিশেষভাবে রজব মাসে রোজার ফজিলত সম্পর্কে সহিহ ও আমলযোগ্য কোনো হাদিস নেই। -তাবইনুল আজার বিমা ওরাদা ফি ফজলি রজব: ১১

ইসলামি শরিয়তে রোজা রাখার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ দিনগুলো ছাড়া যেকোনো দিনই নফল রোজা রাখা যায়। এর অনেক ফজিলত রয়েছে। তবে রজবের বিশেষ রোজা হিসেবে ফজিলতপূর্ণ মনে করে রোজা রাখা সুন্নত নয়। বিশেষত, রজবের রোজাকে সুন্নত ও মুস্তাহাব মনে করে নফল রোজা রাখা ঠিক নয়।

সমাজের প্রচলন আছে, ২৭ রজবে রোজা রাখা অনেক ফজিলত। এমনকি অনেকের মধ্যে এ বিশ্বাস রয়েছে যে এই একটি রোজার ফজিলত এক হাজার রোজার সমান। এ জন্য তাকে হাজারি রোজা বলে অভিহিত করা হয়। অথচ এ রোজার ব্যাপারে সহিহ ও গ্রহণযোগ্য কোনো বর্ণনা নেই।

রজব মাসে খাজা মুঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.)-এর মাজারে তার ওফাত উপলক্ষে যে ‘উরস’ হয় সেখানে এমন অনেক পশু জবাই করা হয় যা মূর্খ লোকেরা হজরত খাজা (রহ.) বা তার মাজারের নামে মান্নত করে থাকে। এগুলো ইসলাম সমর্থন করে না। আল্লাহ ছাড়া অন্য যে কারও নামে মান্নত করা, তা যদি পীর-বুজুর্গের নামেও হয়- তবুও তা শিরক।

আজমিরের ওরসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে লাল কাপড়ে মোড়ানো বিরাট ‘আজমিরি ডেগ’, ‘খাজার ডেগ’ আবার কোথাও কোথাও মাজারের আদলে অস্থায়ী মাজার স্থাপন করা হয়। পরে আজমির এর উদ্দেশ্যে মান্নত কিংবা প্রয়োজন পূরণের নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা, চাল-ডাল ইত্যাদি ওঠানো হয়। যা দেওয়াও হারাম এবং ওখান থেকে কিছু খাওয়াও হারাম। যারা এগুলো উঠায় তারা এগুলো দিয়ে আনন্দ-ফূর্তির আয়োজন করে। ঢোল-তবলা ও বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহযোগে নাচ-গানের আসর বসায়, নাচ-গানসহ নানা ধরনের গর্হিত কাজ করে, যা নিঃসন্দেহে হারাম।

   

ঢাকার বুকে ‘চিনির টুকরা মসজিদ’



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
শতবর্ষী কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ, ছবি : সংগৃহীত

শতবর্ষী কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাকে বলা হয় মসজিদের শহর। পুরনো এই শহরজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজারো ঐতিহাসিক মসজিদ। ঢাকায় ইসলামি ঐতিহ্যের বাহক এমনই এক স্থাপনা হলো- কসাইটুলির কে পি ঘোষ রোডের শতবর্ষী কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ।

নামে না চিনলেও ছবি দেখে অনেকেই মসজিদটি চিনে উঠতে পারেন। কারণ, ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিটিভির আজানের সময় এই মসজিদের দৃশ্য দেখানো হতো।

এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত ঢাকা কোষ থেকে জানা যায়, পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী আবদুল বারি ১৯০৭ সালে বংশাল থানার আধীন কে পি ঘোষ রোডে এই মসজিদ তৈরি করেন। নয়নাভিরাম কারুকার্য শোভিত এই মসজিদের ছাদে তিনটি গম্বুজ। চার কোনায় চারটি বুরুজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। গম্বুজ আর বুরুজগুলোর মাথায় রয়েছে সূক্ষ্ম পদ্ম ফুলের নকশা করা তীর। ছাদের চারদিক ঘিরে আছে অনেক টারেট, যা মসজিদের নকশাকে আরও জমকালো করে তুলেছে।

মসজিদের ভেতরের কারুকাজ, ছবি : সংগৃহীত

মসজিদটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, চীনামাটির অভিনব সব কারুকাজ। ভেতরে বাইরে প্রায় সব দেয়ালেই মোজাইকে নকশা করা। চীনামাটির ভাঙা টুকরা আর রঙিন কাচ দিয়ে গোলাপের ঝাড়, আঙুরের থোকা, ফুলদানির ছবি ফুটে উঠেছে মসজিদের দেয়ালে-খিলানে।

ভেতরের মিহরাব এবং এর আশপাশের নকশা সবচেয়ে রঙিন ও মনোমুগ্ধকর। মসজিদের দেয়ালের চীনামাটির টুকরাগুলো দেখতে চিনির টুকরার মতো বলেই স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি চিনির টুকরা মসজিদ হিসেবেই অধিক প্রসিদ্ধ।

বংশাল রোডের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার গলি ঘুপচি দিয়ে হাঁটতে গেলে হঠাৎই নজর কাড়ে এই অনিন্দ্যসুন্দর মসজিদটি। স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে জানা যায়, অতীতে আরও বেশি সুন্দর ছিল এই মসজিদ।

মসজিদটি মূল অংশ, বারান্দাসহ প্রায় দুই কাঠা জায়গার ওপর অবস্থিত। মূল মসজিদের অবকাঠামোয় আলাদা সমতল ছাদ নেই। ভেতর দিয়ে ছাদের বেশির ভাগ অংশে সরাসরি তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন আকারের কয়েকটি গম্বুজ। মসজিদ ভবনের মধ্যে বড়, দুই পাশে মাঝারি ধরনের এবং চার কোনায় একই ডিজাইনের চারটি গম্বুজ রয়েছে। এ ছাড়া ছয়টি ছোট ও দুটি জোড়া পিলারে দুটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজগুলোর উচ্চতা পাঁচ থেকে ১২ ফুট। ছাদবিহীন মসজিদের প্রতিটি পিলারের মাথায় রয়েছে গম্বুজ বা মিনার।

মসজিদের ভেতরের কারুকাজ, ছবি : সংগৃহীত

মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ধাপে ধাপে পেছনে তিনতলা পর্যন্ত এর সম্প্রসারণ করা হয়েছে। তবে মূল মসজিদের কাঠামোয় কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। যদিও এখন ক্রমেই ফিকে হয়ে যাচ্ছে চীনামাটির করা এর মূল সৌন্দর্য। জনশ্রুতি আছে, মানুষের পাশাপাশি এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসত জিনও।

মুসলিম সংস্কৃতির আঁতুড়ঘর হলো মসজিদ। বিশ্বের প্রায় সব দেশের মতো বাংলাদেশেও আছে অনন্য স্থাপত্যশৈলীর নয়নাভিরাম কারুকার্যসমৃদ্ধ অসংখ্য মসজিদ। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দীর্ঘকাল দাঁড়িয়ে থাকবে এসব ঐতিহাসিক নিদর্শন।

যেকোনো দিন চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন শতবর্ষ পুরোনো এই মসজিদ থেকে। ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে বাবুবাজার ব্রিজ বা বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতুতে আসতে হবে। এখান থেকে রিকশা নিয়ে যেতে হবে। হেঁটেও যেতে পারেন। কসাইটুলির চিনির মসজিদ বললে যে কেউ নিয়ে যাবে।

;

হজযাত্রীদের সর্বোত্তম সেবা দিতে সরকার বদ্ধপরিকর: ধর্মমন্ত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকার ডলারের দাম বৃদ্ধির পরও গত বছরের তুলনায় এ বছর সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ হ্রাস করেছে বলে জানান ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, হজের খরচ সরকারিভাবে ১ লাখ ৪ হাজার ১৭৮ টাকা এবং বেসরকারিভাবে ৮২ হাজার ৮১৮ টাকা কমানো হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪’র শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ফরিদুল হক খান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার হজযাত্রীদের সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে দৃঢ়ভাবে কাজ করছে। হজযাত্রীরা যাতে যৌক্তিক খরচে হজব্রত পালন করতে পারে, সে বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, হজযাত্রীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে দাফতরিক যে প্রক্রিয়াগুলো রয়েছে, সেগুলো আরও কিভাবে সহজ করা যায়, কিভাবে হজযাত্রীদের আরেকটু বেশি কমফোর্ট দেওয়া যায়, সে বিষয়েও সরকার কাজ করছে।

আগামী বছর হজ ব্যবস্থাপনায় আরও অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আনার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

হজ যাত্রীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহি-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন, সেজন্যই এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে আপনাদের প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করা হয়েছে। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত সচিব (হজ) মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব মো. নায়েব আলী মন্ডল, যুগ্ম সচিব ড. মো. মঞ্জুরুল হক, ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য দেন।

;

উমরা ভিসার কোটা হ্রাস, বিপাকে হাজারো যাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র মক্কা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোনো ঘোষণা না দিয়ে আসন্ন হজের প্রস্তুতির জন্য সৌদি আরব উমরা ভিসার কোটা প্রায় ৯০ শতাংশ হ্রাস করেছে। ফলে উমরা ভিসা ইস্যুর সংখ্যা একেবারে নিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। উমরাযাত্রীদের চাহিদানুযায়ী সৌদি এজেন্সিগুলো(উমরা কোম্পানি) উমরা ভিসা ইস্যু করতে পারছে না। ফলে অপেক্ষমান প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি উমরাযাত্রী বিপাকে পড়েছেন।

একাধিক উমরা যাত্রী ও এজেন্সির জানা গেছে, মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়া এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট কিনে ভিসা না পেয়ে উমরায় যেতে পারছে না বাংলাদেশিরা। উমরা ভিসা যথাসময়ে না পাওয়ায় শত শত উমরাযাত্রীর গ্রুপ টিকিটের টাকা মার যাচ্ছে। নির্ধারিত উমরাযাত্রী না পেয়ে এয়ারলাইন্সগুলোর সিট খালি যাচ্ছে। এতে টিকিটের টাকা ফেরত না পাওয়ায় উমরাযাত্রী, উমরা এজেন্সিগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উমরার গ্রুপ টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার সিস্টেম না থাকায় যাত্রী পরিবহন না করেই বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা হাতিয়ে নিচ্ছে।

আল ওয়াসি ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল গাফফার খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বার বার চেষ্টা করেও ভিসা মিলছে না। অনেক যাত্রী কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নিয়ে উমরার অপেক্ষায়, তারা বুঝতে পারছে না- কী করবে; আমরাও কিছু বলতে পারছি না। ভিসা না হওয়ায় যাত্রীরা যেতে পারছেন না। এদিকে এয়ারলাইন্সগুলো টিকিট রিফান্ড করতে অস্বীকার করছে, করোনার পর এমন পরিস্থিতিতে হুমকির মুখে বেসরকারি এজন্সিগুলো। এ অবস্থা চলতে থাকলে পথে বসবে শত শত এজেন্সি।

এমতাবস্থায় হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতি টিকিটের টাকা রিফান্ডের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আশা করি এয়ারলাইন্সগুলো বাস্তবতা উপলব্ধি করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী আগামী ১৫ শাওয়াল পর্যন্ত উমরা ভিসা ইস্যু করার কথা। কিন্ত সৌদি সরকার ঈদুল ফিতরের পর থেকে দেশটির উমরা কোম্পানিগুলোকে কোটা পদ্ধতিতে ভিসা ইস্যুর সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশি উমরাযাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত ভিসা পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উমরা এজেন্সিগুলো ভিসার জন্য আবেদন করে কোনো সাড়া পাচ্ছে না। অপেক্ষমান যাত্রীরা ভিসার জন্য এজেন্সিগুলোর দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। অনেক যাত্রী মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়া এবং বিমানের টিকিট কিনে উমরা ভিসা না পেয়ে সৌদি যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

গত কয়েকদিনে প্রায় দুই হাজার উমরাযাত্রীর ভিসা না পাওয়ায় বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের গ্রুপ টিকিট বাবদ প্রায় দশ কোটি টাকা গচ্চা দিতে হয়েছে। যাত্রীদের উমরা ভিসার আবেদন করেও ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে গ্রুপ টিকিটের মূল্য বাবদ, সাউদিয়া এয়ারলাইন্স, এয়ার এরাবিয়া ও ইজিপ্ট এয়ার দুই হাজার যাত্রীর প্রায় দশ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। এতে যাত্রী ও এজেন্সিগুলো আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এমতাবস্থায় এজেন্সিগুলো উমরা ভিসা ইস্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রতারণার আশঙ্কায় সতর্ক থাকার আহবান
উমরা ভিসা জটিলতায় যখন জর্জরিত সবাই, মানুষ হন্য হয়ে চেষ্টা করতেছে কোথায় ভিসা পাওয়া যায়? তখন অনেকেই গ্যারান্টিসহ দ্রুতগতিতে ভিসা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে বেশি টাকা চাচ্ছে। এমতাবস্থায় হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) নেতৃবৃন্দ এজেন্সির মালিক ও হজযাত্রীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

উমরা ভিসার মেয়াদে পরিবর্তন এনেছে সৌদি
সম্প্রতি উমরা ভিসার মেয়াদে পরিবর্তন এনেছে সৌদি আরব। দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগে উমরা ভিসার ৯০ দিন মেয়াদ গণনা শুরু হতো সৌদিতে প্রবেশের পর। কিন্তু এখন এই নিয়মের পরিবর্তে ভিসা ইস্যুর দিন থেকে ৯০ দিন সৌদিতে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। হজ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, উমরা ভিসার মেয়াদ ১৫ জিলকদ উত্তীর্ণ হবে। এর আগে উমরা ভিসার মেয়াদ থাকত ২৯ জিলকদ পর্যন্ত।

মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে বলেছে, উমরা ভিসা ইস্যু হওয়ার তারিখ থেকে তিন মাস মেয়াদ থাকবে ও তা ১৫ জিলকদের মধ্যেই শেষ হতে হবে। পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনায় হজ যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতেই সৌদির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

৬ জুনের মধ্যে উমরাকারীদের সৌদি ছাড়তে হবে
পবিত্র হজের প্রস্তুতি শুরুর অংশ হিসেবে উমরাকারীদের সৌদি আরব ছাড়ার তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৬ জুনের মধ্যে বাইরে থেকে আসা সব উমরাকারীকে সৌদি আরব ছাড়তে হবে। ওইদিন আরবি বর্ষপঞ্জিকার ১১তম মাস জিলকদের ২৯তম দিন থাকবে।

সৌদি আরব উমরার জন্য যে ভিসা দিয়ে থাকে সেটির মেয়াদ থাকে ৯০ দিন। দেশটি জানিয়েছে, যাদের কাছে উমরার ভিসা আছে তারা আগামী ১৫ জিলকদ পর্যন্ত সৌদিতে প্রবেশ করতে পারবেন। দেশটি স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ভিসা যেদিন ইস্যু করা হয় সেদিন থেকে ৯০ দিনের হিসাব শুরু হয়। যদিও অনেকে মনে করেন যেদিন সৌদিতে প্রবেশ করবেন সেদিন থেকে ভিসার মেয়াদ শুরু হয়। তাদের এ ধারণা ভুল। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, উমরা ভিসার মেয়াদ ৯০ দিনের বেশি কোনোভাবেই বাড়ানো হবে না। এছাড়া এই ভিসা অন্য ভিসা হিসেবেও পরিবর্তন করা হবে না।

এজেন্সির মালিকরা মোনাজ্জেম নয় বিজনেস ভিসা পাবেন
এখনও অনেক হজ এজেন্সির মালিক বা মোনাজ্জেম উমরা ভিসা না পাওয়ায় মক্কা-মদিনায় হাজিদের বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু করতে সৌদি যেতে পারেনি। আগামী ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবার কথা। বাড়ি ভাড়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করা না হলে হাজিদের ফ্লাইট নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। সৌদি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ২৯ এপ্রিল হজ ভিসা ইস্যুর কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় এবার হজে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সার্কুলারে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ শাখা থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এবছর হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া বা অন্যকোনো প্রয়োজনে যাওয়ার জন্য মোনাজ্জেম ভিসার পরিবর্তে ‘বিজনেস ভিসা’ প্রদান করা হচ্ছে মর্মে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস জানিয়েছে। ফলে এখনও কোনো এজেন্সির প্রতিনিধি বাড়ি ভাড়া বা হজের প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য সৌদি আরব যাওয়ার প্রয়োজন হলে তিনি ‘বিজনেস ভিসায়’ সৌদি আরব যেতে পারবেন।

;

ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা কী?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ঈমানের স্বাদ সবাই আস্বাদন করতে পারে না, ছবি : সংগৃহীত

ঈমানের স্বাদ সবাই আস্বাদন করতে পারে না, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, হজরত জিবরাইল (আ.) রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, এবার আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন, রাসুল (সা.) বললেন, ‘ঈমান হলো, তুমি ঈমান রাখবে আল্লাহর প্রতি, তার (আল্লাহর) ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসুলদের প্রতি এবং শেষ দিবসের (কেয়ামত) প্রতি। (এবং) তুমি ঈমান রাখবে তাককিরের ভালো-মন্দের প্রতি।’ হজরত জিবরাইল (আ.) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। -সহিহ মুসলিম : ৮

ঈমানের স্বাদ
হজরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী কারিম (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করবে ওই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে রবরূপে, ইসলামকে দ্বীনরূপে এবং মুহাম্মাদ (সা.)-কে রাসুলরূপে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করবে। -সহিহ মুসলিম : ৩৪

সুস্বাদু খাদ্যের স্বাদ সেই বুঝতে পারে যার জিহ্বায় স্বাদ আছে। রোগ-ব্যাধির কারণে নষ্ট হয়ে যায়নি। তদ্রূপ ঈমান ও যাবতীয় আমলের স্বাদও ওই খোশনসিব ব্যক্তিই অনুভব করে, যে সম্পূর্ণ সন্তুষ্টিচিত্তে ও সর্বান্তকরণে আল্লাহকে রব ও পরওয়ারদিগার এবং মুহাম্মদ (সা.)-কে রাসুল ও আদর্শ এবং ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ও জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করে।

আল্লাহতায়ালা, নবী মুহাম্মদ (সা.) ও ইসলামের সঙ্গে যার সম্পর্ক কেবলই বংশগত ও প্রথাগত বা কেবলই চিন্তাগত ও বুদ্ধিগত পর্যায়েই নয় বরং সে আল্লাহর বন্দেগি, মুহাম্মদ (সা.)-এর আনুগত্য এবং ইসলামের অনুসরণকে মনেপ্রাণে নিজের জীবনে গ্রহণ করে নেবে। সেই ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে। -মাআরিফুল হাদিস : ১/৯১

ঈমানের মিষ্টতা
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকবে সে ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করবে। আল্লাহ ও তার রাসুল তার কাছে সবকিছু থেকে অধিক প্রিয় হওয়া, কাউকে ভালোবাসলে শুধু আল্লাহরই জন্য ভালোবাসা, আর কুফুরিতে ফিরে যাওয়াকে এমন ঘৃণা করা, যেমন সে ঘৃণা করে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে। -সহিহ বোখারি : ১৬

এই হাদিসের বিষয়বস্তুও আগের হাদিসের বিষয়বস্তুর প্রায় কাছাকাছি। উপস্থাপনায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এই হাদিসে বলা হচ্ছে, ঈমানের মিষ্টতা ওই ব্যক্তিই অনুভব করতে পারবে, যে আল্লাহ ও তার রাসুলের ভালোবাসায় পরিপূর্ণ সমর্পিত থাকবে; আল্লাহ ও তার রাসুলকে জগতের সবকিছু থেকে বেশি ভালোবাসবে। অন্য কারও প্রতি যদি তার ভালোবাসা হয়, তা হবে সম্পূর্ণ এই ভালোবাসার অধীন। আর ইসলাম তার এতই প্রিয় যে, ইসলাম থেকে ফিরে যাওয়া, কুফুরিতে লিপ্ত হওয়া তার কাছে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সমতুল্য। -মাআরিফুল হাদিস : ১/৯১

;