জাপানি ভাষায় কোরআনের প্রথম মুসলিম অনুবাদক



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জাপানি ভাষায় কোরআনের প্রথম মুসলিম অনুবাদক হাজি ওমর মিতা, ছবি: সংগৃহীত

জাপানি ভাষায় কোরআনের প্রথম মুসলিম অনুবাদক হাজি ওমর মিতা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৫৭ সালে জাপানের একটি বিখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পবিত্র কোরআনের জাপানি অনুবাদ প্রকাশিত হয়, যা জাপানি মুসলিম-অমুসলিম সবার মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে| অবশ্য ১৯২০, ১৯৩৭ ও ১৯৫০ সালে কোরআনের আরও তিনটি অনুবাদ জাপানি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই চারটি অনুবাদই ছিল অমুসলিম পণ্ডিতদের দ্বারা এবং তা করা হয়েছিল ইংরেজি ভাষা থেকে। ফলে তাতে বেশ কিছু অসংগতি ও ত্রুটি থেকে যায়, যা হাজি ওমর মিতাকে ব্যথিত করে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজেই জাপানি ভাষায় কোরআনের অনুবাদ করবেন।

১৯৬১ সালে ৭০ বছর বয়সী ওমর মিতা পাকিস্তানে যান। সেখানে বিশেষজ্ঞ আলেমদের সহযোগিতায় কোরআনের অনুবাদ শুরু করেন। পাকিস্তানি আলেমদের মাধ্যমে রাবেতা আল আলম আল ইসলামির সঙ্গে তার যোগাযোগ হয় এবং তারা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। রাবেতার আমন্ত্রণে তিনি সৌদি আরব যান এবং আরব বিশ্বের খ্যাতিমান কোরআন গবেষকদের সহযোগিতায় অনুবাদের কাজ অব্যাহত রাখেন। কিন্তু সেখানে অবস্থানকালে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারাত্মক আহত হন এবং তার বিশেষ সহযোগী হাফেজ আবদুর রশিদ মারা যান। এভাবে নানা ঘাত-প্রতিঘাত শেষে ১৯৬৮ সালে অনুবাদ শেষ করেন ওমর মিতা।

এরপর জাপান মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের একটি কমিটি দেড় বছর ধরে তার অনুবাদকর্মটি যাচাই করে দেখে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধন করে। ১৯৭০ সালে তা চূড়ান্ত নিরীক্ষা ও অনুমোদনের জন্য রাবেতা আল আলম আল ইসলামির উচ্চতর কমিটির কাছে পাঠানো হয়। ছয় মাস পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা ওমর মিতার অনুবাদ অনুমোদন এবং ছাপানোর সুপারিশ করে।

অনুমোদন পেয়ে তিনি জাপানের তাকুমি কোবো প্রিন্টিং কম্পানির হাতে তুলে দেন। হিরোশিমায় অবস্থিত এই কোম্পানির মালিক মুসলিম। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয় জাপানি ভাষায় আল কোরআনের সার্থক অনুবাদ।

বৃদ্ধ বয়সে স্বদেশি মানুষের জন্য তার এই ত্যাগ ও পরিশ্রম ছিল দৃষ্টান্তহীন, যা তাকে ইতিহাসে অমর করে রেখেছে। ১৯৮৩ সালের ২৯ মে হাজি ওমর মিতা ইন্তেকাল করেন।

হাজি ওমর মিতা ১৯ ডিসেম্বর ১৮৯২ সালে জাপানের ইয়ামাগুচি প্রিফেকচারের একটি অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পারিবারিক নাম ছিল রায়োইচি মিতা। ১৯১৬ সালের মার্চ মাসে ইয়ামাগুচি কমার্স কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন, যা বর্তমানে ইয়ামাগুচি ইউনিভার্সিটি।

শৈশবে শত্রু রাষ্ট হিসেবে প্রতিবেশী চীনের প্রচুর আলোচনা শোনেন ওমর মিতা। তা থেকেই চীনের ব্যাপারে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়। কৌতূহল মেটাতে চীন সফরে যান এবং সেখানেই ইসলাম ও মুসলিম সমাজের সঙ্গে পরিচিত হন। এমনকি ১৯২০ সালে জাপানের ‘তোয়া কেইজাই কেনক্যু’ নামের সাময়িকীতে তিনি ‘চীনে ইসলাম’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধও লেখেন। তত দিনে অবশ্য তুর্কি মিত্রদের সুবাদে জাপানিরা ইসলামের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করেছে।

জাপানে ইসলাম প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন হাজি ওমর কোতারো ইয়ামাওকা। ১৯০৯ সালে প্রথম জাপানি হিসেবে তিনি হজ পালন করেন। তিনি নানাভাবে ইসলাম প্রচারে কাজ করেন। ১৯১২ সালে হাজি ওমর কোতারো ইয়ামাকোর হজ সফরসহ বেশ কিছু বই প্রকাশ পায়, যা পড়ে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন ২০ বছর বয়সী রায়োইচি মিতা।

রাবেতা আল আলম আল ইসলামির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ওমর মিতা, ছবি: সংগৃহীত 

১৯২১ সালে জাপানে আসেন রায়োইচি মিতা। ফিরেই হাজি ওমর কোতারোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তখনও তিনি ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এভাবেই কেটে আরও ২০ বছর। ১৯৪১ সালে রায়োইচি মিতা ইসলাম গ্রহণ করে ওমর মিতা নাম ধারণ করেন। অবশ্য তখন তিনি চীনেই অবস্থান করছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তিনি স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে আসেন। চীনা ভাষার শিক্ষক হিসেবে ওসাকার কানসাই ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেন। কিছুদিনের মধ্যে স্ত্রী মারা যাওয়ায় তিনি সব ধরনের চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন এবং ইসলামের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন।

১৯৫২ সালে ওমর মিতা টোকিওতে চলে আসেন। ইসলাম প্রচারে নেমে আরবি ভাষায় নিজের দুর্বলতা অনুভব করে আরবি শেখার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় তার সঙ্গে পাকিস্তানের কিছু আলেম ও তাবলিগি সাথির সঙ্গে পরিচয় হয়, যারা তাকে আরবি ভাষা শিখতে সাহায্য করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি তাবলিগের কাজে অংশ নিতে পাকিস্তান সফর করেন।

১৯৫৮ সালে তিনি পবিত্র হজ আদায় করেন। হজ পালন শেষে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ইসলাম প্রচারে আরও বেশি মনোযোগ দেন। ১৯৬০ সালে তিনি জাপান মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এ সময় জাপানি ভাষায় তার বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ পায়। তন্মধ্যে অন্যতম হলো- ‘ইসুরামু রিকাই নো তামেনি’ (ইসলাম অনুধাবন), ‘ইসুরামু ন্যুমোন’ (ইসলাম পরিচিতি), শায়খুল হাদিস জাকারিয়া রহ.-এর হেকায়েতে সাহাবার অনুবাদ ‘সাহাবা মনোগাতারি’ ইত্যাদি।

জাপানে মুসলমানের সংখ্যা কত তার সরকারি কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে এ সংখ্যা দেড় লাখের বেশি বলে ধারণা করা হয়। মুসলমানদের ১০ শতাংশই জাপানি বংশোদ্ভূত।

১৯৭০ সালের দিকে টোকিওতে মসজিদের সংখ্যা ছিল মাত্র দু’টি। এখন এখানে ২০০টি মসজিদ ও মুসাল্লা (অস্থায়ী নামাজঘর) আছে। জাপানে কবে ইসলামের আলো প্রবেশ করেছে সে ইতিহাস অনেকটাই অজানা।

ধারণা করা হয়, অষ্টম শতাব্দীতে জাপানে ইসলামের বাণী পৌঁছেছে। তবে মেইজি শাসনামলে (১৮৬৮-১৮৯০) জাপান যখন বিশ্বব্যাপী তাদের উপস্থিতির অংশ হিসেবে উসমানিয় সাম্রাজ্য এবং মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাণিজ্য ও তথ্যবিনিময় মিশন শুরু করে, তখন থেকেই তারা ইসলাম ও মুসলমানদের সংস্পর্শে আসতে শুরু করে। কারণ, মুসলমানদের ইতিহাস যেটুকু পাওয়া যায়, তা এ সময় থেকেই।

১৯৬৬ খিস্টাব্দে জাপানে ইন্টারন্যাশানাল ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামিক সেন্টার ‘আস সালাম’ নামে একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকাও বের করে। এছাড়া সেন্টারের পক্ষ থেকে জাপানি শিশুদের প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা ও হজ গমনে ইচ্ছুকদের হজে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এই সেন্টারকে কেন্দ্র করেই জাপানে দাওয়াতে তাবলিগের কাজ চলছে বেশ জোরালোভাবে।

এখন অবশ্য তাবলিগ জামাতের লোকেরা টোকিওর শহরতলী এলাকা সাইতামারে একটি ভবন কিনে সেখানে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন। বর্তমানে সেটাই তাবলিগের মারকাজ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

জাপানের বর্তমান মুসলমান প্রজন্ম জাপানে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের বেশ আন্তরিক। নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে তারা কাজ করে যাচ্ছে আপন গতিতে। তাদের প্রত্যাশা অচিরেই জাপানে অন্যান্য দেশের মতো ইসলাম জনপ্রিয় ও প্রভাব বিস্তারকারী ধর্মে পরিণত হবে। বাড়বে মসজিদের সংখ্যা। যে মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসবে আজানের সুর।

   

হাফপ্যান্ট পরা বিষয়ে ইসলাম কী বলে?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাস্তাঘাটে নানা বয়সী হাফপ্যান্ট পরা মানুষের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে, যা আগে কল্পনাও করা যেত না৷ অথচ হাঁটু ঢেকে কাপড় পরা ফরজ, হাঁটু খোলা রাখা হারাম৷ আর এটা এমন হারাম যা গোপনে নয়, প্রতিনিয়ত জনসম্মুখে পাপে লিপ্ত হতে হয়৷ সমাজের মুসলমানদের মাঝে সেই হারামে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতা ও ঝোঁক বেড়েই চলেছে৷ যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, কোনো গোনাহ প্রকাশ্য করতে করতে একসময় ভেতর থেকে অনুশোচনাবোধের অনুভূতিটুকু নষ্ট হয়ে যায়৷ হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে মাফ করে দেওয়া হবে, কেবল প্রকাশ্য গোনাহকারী ছাড়া৷’ -সহিহ বোখারি

হাফপ্যান্ট পরা কি জায়েজ?
ইসলাম একজন মুসলিমকে শালীন পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। ইসলাম ঘোষণা করেছে, পুরুষকে আবশ্যকীয়ভাবে ঢাকতে হবে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। আর নারীর জন্য হাতের কব্জি মুখমণ্ডল পায়ের পাতা ছাড়া সব সতর (মানব শরীরের যেসব অংশ অপরের সামনে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক, সেটাকে সতর বলে)।

ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে। প্যান্ট, পায়জামা ইত্যাদি হাঁটুর নিচ অবধি থাকবে, তবে টাখনুর নিচে নয়। আবার পোশাক এতটা আঁটসাঁট হবে না যে, সতরের আকৃতি কাপড়ের ওপর প্রকাশ পায়। হ্যাঁ, পরিধানের প্যান্ট-শার্ট যদি উপর্যুক্ত খারাবি থেকে মুক্ত হয়, তাহলে পরিধান করা নাজায়েজ নয়। অবশ্য এরপরও তা পরিধান করা মাকরুহ। তা ব্যবহার না করাই বাঞ্ছনীয়। -দরসে তিরমিজি : ৫/৩৩২

জ্ঞানের অভাবে অনেকে সঠিক পোশাক নির্বাচন ও অবলম্বন করতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে কিছু নীতি ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা নারী-পুরুষ সবার জন্য প্রযোজ্য। আবার কিছু স্বতন্ত্র বিষয় রয়েছে। এর কয়েকটি হলো-

সতর আবৃত করা
পোশাক এমন হতে হবে যা পুরোপুরি সতর আবৃত করে। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর পুরো শরীর সতর। পোশাকের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো- সতর ঢাকা। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে।’ -সুরা আরাফ : ২৬

সুতরাং যে পোশাক এই উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ তা শরিয়তের দৃষ্টিতে পোশাক নয়। তা নাজায়েজ পোশাক। এটা পরিত্যাগ করে পূর্ণরূপে সতর আবৃত করে এমন পোশাক গ্রহণ করা জরুরি। যেমন পুরুষের জন্য হাফ প্যান্ট পরা। নারীদের পেট-পিঠ উন্মুক্ত থাকে এমন পোশাক পরিধান করা।

পোশাক অধিক পাতলা ও আঁটসাঁট না হওয়া
যে পোশাক পরিধানের পরও সতর দেখা যায় কিংবা সতরের আকৃতি পোশাকের ওপরে প্রকাশ পায়, তা সতর আবৃত না করার কারণে নাজায়েজ পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের পোশাক পরিধান হারাম।

অহংকার প্রকাশ পায় এমন পোশাক না হওয়া
এমন পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ, যেগুলোকে শরিয়ত অহংকারীদের নিদর্শন সাব্যস্ত করে। যেমন পুরুষের জন্য রেশমি কাপড় ব্যবহার। হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের পুরুষের জন্য রেশম এবং স্বর্ণ হারাম করা হয়েছে। আর নারীদের জন্য এগুলো হালাল করা হয়েছে। -জামে তিরমিজি : ১/৩০২

হজরত আবু জুরাই (রা.)থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেন, টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান থেকে বিরত থাকো। কেননা এটা অহংকারবশত হয়ে থাকে। আর আল্লাহতায়ালা অহংকারীকে ভালোবাসেন না। -সুনানে আবু দাউদ : ২/৫৬৪

হাফপ্যান্ট পরে অজুর বিধান
নামাজের মতো মৌলিক ইবাদত ছাড়াও সবসময় অজু করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছিলেন, ‘হে আমার বেটা! সম্ভব হলে সবসময় অজু অবস্থায় থাকবে। কেননা মৃত্যুর ফেরেশতা অজু অবস্থায় যার জান কবজ করেন তার শাহাদাতের মর্যাদা লাভ হয়।’ -শোয়াবুল ঈমান, বায়হাকি : ২৭৮৩

স্বাভাবিক শালিন পোশাকে অজু করা উচিত। কারণ, সতর ঢাকা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর আবশ্যক। অপরদিকে হাফপ্যান্ট পরলে সতর অনাবৃত থাকে। তাই হাফপ্যান্ট পরা এবং পরিধান করে অজু করা উচিত নয়।

হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা নগ্নতা থেকে বেঁচে থাক। কেননা তোমাদের এমন সঙ্গী আছেন (কিরামান-কাতিবীন) যারা পেশাব-পায়খানা ও স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় ছাড়া অন্যকোনো সময় তোমাদের হতে আলাদা হন না। সুতরাং তাদের লজ্জা কর এবং সম্মান কর।’ -সুনানে তিরমিজি : ২৮০০

তারপরও কেউ যদি হাফপ্যান্ট পরে করে অজু করে তাহলে তার অজু হয়ে যাবে। তবে কাজটি অনুচিত এবং এ ব্যাপারে কাউকে উৎসাহিত না করা।

;

এক সপ্তাহে মসজিদে নববিতে ৬০ লাখ জিয়ারতকারী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে নববি, ছবি : সংগৃহীত

মসজিদে নববি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারের পর এবার সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে এ দুই শহরে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন আশঙ্কার মাঝে এক সপ্তাহে মদিনার মসজিদে নববিতে প্রায় ৬০ লাখ জিয়ারতকারী নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করেছেন।

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ-এর বরাতে জানা যায়, রমজান পরবর্তী সময়ে গত এক সপ্তাহে মসজিদে নববিতে রেকর্ড সংখ্যক জিয়ারতকারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নবী কারিম (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করতে এসেছেন। তাদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৭২৪ জন।

এসপিএ আরও জানায়, গত এক সপ্তাহে ১ লাখ ৮০ হাজার পবিত্র জমজমের পানির বোতল মসজিদে নববিতে আসা মুসল্লিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

রিয়াজুল জান্নাত তথা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মিম্বর ও কামরার (নবী কারিম সা.-এর বাসস্থান) মধ্যবর্তী স্থানে ২ লাখ ৫৪ হাজার ২০৯ জন নামাজ আদায় করেছেন। যার মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার পুরুষ ও ১ লাখ ৩০ হাজার ২৭৭ জন নারী রয়েছে।

পবিত্র উমরা পালনকারীরা মক্কায় যাওয়ার আগে বা পরে মদিনা ভ্রমণ করেন। মদিনায় মসজিদে নববিতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি রাসুলে কারিম ( সা.)-এর রওজায় সালাম পেশ, রিয়াজুল জান্নাতে নামাজসহ অন্যান্য নফল ইবাদত পালন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখেন।

উল্লেখ্য, এ বছর এপ্রিল মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন আবহাওয়া বিপর্যয়। বিরল বৃষ্টিতে প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক মরুর দেশ।

সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে উত্তর রিয়াদ ও পূর্ব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তালিকাভুক্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের এই সময়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও আগাম সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।

উর্দু নিউজ অবলম্বনে মুফতি উমর ফারুক আশিকী

;

বিপদাপদ কাটছেই না, কারণ জেনে নিন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নানাবিধ আমল, চিকিৎসা ও চেষ্টা-তদবির সত্ত্বেও অসুস্থতা থেকে সুস্থ হতে বিলম্ব হয় কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- ফরজ নামাজ ঠিকমতো আদায় না করার কারণে। বিশেষ করে ফজরের নামাজ।

ফজরের নামাজ আদায়কারী দয়াময় আল্লাহর জিম্মায় থাকে। আল্লাহতায়ালা তাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখেন। সুতরাং তাকে যে অযথা কষ্ট দেবে, অন্যায়-অবিচার করবে, আল্লাহ তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন। এ সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর নিরাপত্তা লাভ করল। আর আল্লাহতায়ালা যদি তার নিরাপত্তা প্রদানের হক কারও থেকে দাবি করে বসেন, তাহলে সে আর রক্ষা পাবে না। তাই তাকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন।’ -সহিহ মুসলিম : ৬৫৭

এর মানে হলো, যে ফজরের নামাজ আদায় করল না; সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না। তো যে ব্যক্তি আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না, তাকে পৃথিবীর কে নিরাপত্তা দেবে? তাকে কে সুস্থ করবে?

সমাজের অনেকেই আছেন, বাকি চার ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতো আদায় করেন। ফজরের নামাজ মাঝে-মধ্যে ছাড়েন কিংবা মাঝে-মধ্যে পড়েন। তাদের নিরাপত্তায় তো সমস্যা হবেই।

সারা বছরে একদিনও ফজরের নামাজ ছাড়া যাবে না। কখনও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলে উঠেই সর্বপ্রথম ফজরের নামাজ পড়তে হবে- যদি সেটা নিষিদ্ধ সময় না হয়। এভাবে চলতে থাকলে আমল ও প্রচেষ্টার ফল দ্রুত পাওয়া যাবে- ইনশাআল্লাহ।

আরেকটি কথা, আমল নিয়মিত করতে হবে এবং কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি চাইতে হবে। আমরা অনেকেই অনেক আমল করি, কিন্তু আমলের বিনিময়ে আমি কী চাচ্ছি; এটাই জানি না। প্রত্যেকটি আমলের বিনিময়ে আখেরাতের ফজিলত তো পাবেনই, দুনিয়ার কোনো নেক উদ্দেশ্যও হাসিল করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, আমল, নিয়ত, ফজরের নামাজ ও দীর্ঘদিনের বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা সহজ ও সুন্দর জীবনের অন্যতম নিয়ামক।

;

সৌদি আলেমদের অভিমত

অনুমোদন ছাড়া হজ করা পাপ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজপালন করার ক্ষেত্রে যথাযথভাবে রাষ্ট্রীয় অনুমতি নেওয়াকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে সৌদি সরকার। পবিত্র স্থানগুলোর পবিত্রতা নিশ্চিত করতে শরিয়া আইনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি আরব।

সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সৌদির সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা ‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ মতামত দিয়েছে, যারা রাষ্ট্রীয় অনুমতি ছাড়া হজ করতে যাবেন তাদেরকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও যারা হজ করবেন তারা এর মাধ্যমে পাপ করবেন।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এবং দুই পবিত্র মসজিদের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে আলেমদের কাছে তাদের মতামত তুলে ধরেন। এরপর আলেমরা ঘোষণা দেন, হজ করতে হলে অবশ্যই পূর্বে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।

‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ জানায়, হজ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা সাজিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, খাবার সরবরাহ এবং অন্যান্য সেবা। যারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করে হজ করবেন তারা আরও ভালো ও উন্নত সেবা পাবেন।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো- হজ। প্রতি বছর জিলহজ মাসে হজ করেন বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। যেসব মুসল্লির আর্থিক ও শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে, তাদের জীবনে অন্তত একবার হলেও হজ করার বিধান রয়েছে।

মুসল্লিরা যেন নির্বিঘ্নে হজ করতে পারেন, সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। এবার তারা হজ করার জন্য অনুমতির বিষয়টি আবশ্যিক করে দিয়েছে।

;