বাংলাদেশ থেকে শিগগিরই চালু হচ্ছে উমরার কার্যক্রম



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কাবা শরীফ, মক্কা, সৌদি আরব, ছবি: সংগৃহীত

কাবা শরীফ, মক্কা, সৌদি আরব, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রায় আট মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে পবিত্র উমরা চালুর তৃতীয় ধাপে ১৩টি দেশের যাত্রীরা যাওয়া শুরু করেছেন। বাংলাদেশিরা উমরা পালনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশিদের জন্য কোনো ঘোষণা না এলেও সরকার উমরা কার্যক্রমের আগাম প্রস্তুতি শুরু করেছে।

বুধবার (৪ নভেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আমিনুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে বৈধ উমরা এজেন্সিগুলোর তালিকা তৈরি ও নবায়ন কার্যক্রম শুরুর জন্য আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে যে সব উমরা এজেন্সির নবায়নের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অথবা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে সে সব উমরা এজেন্সি নবায়নের জন্য নবায়ন ফি, ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।

করোনার কারণে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব উমরার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে উমরাযাত্রীর কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সৌদি আরবে অবতরণ করতে পারেনি। এতে প্রায় দশ হাজার উমরাযাত্রী আটকা পড়েন। ধীরে ধীরে তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানো হয়। করোনার কারণে সীমিত মানুষের অংশগ্রহণে পবিত্র হজ পালিত হয়।

পরে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় ৪ অক্টোবর প্রথম ধাপে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উমরা কার্যক্রশ শুরু করেন। ১৮ অক্টোবর দ্বিতীয় ধাপে ১৫ হাজার উমরাযাত্রীকে দৈনিক উমরা পালনের অনুমতি দেওয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ১ নভেম্বর থেকে তিউনিশিয়া, মিসর ও পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের ১৩টি দেশের উমরাযাত্রীদের উমরা পালনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে দৈনিক ২০ হাজার উমরাযাত্রী উমরা পালন করছেন।

১ নভেম্বর সৌদি আরবের হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ সালেহ বেনতেন জেদ্দাস্থ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পাকিস্তানসহ বর্হিবিশ্বের উরাযাত্রীদের প্রথম দলকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে বরণ করে নেন।

সৌদি সরকার মক্কা-মদিনার ১২শ’ হোটেলকে শর্ত সাপেক্ষে উমরাযাত্রী রাখার অনুমতি দিয়েছে। উমরাযাত্রী রাখার অনুমতি পেয়ে হোটেলগুলোতে পুরোদমে ধোঁয়ামোছার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সৌদি সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রত্যেক হোটেলে উমরাযাত্রীদের খাবার রেস্টুরেন্ট চালু বাধ্যতামূলক করেছে। এসব হোটেলগুলো তড়িঘড়ি করে কর্মকর্তা, কর্মচারি ও বার্বুচি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

একাধিক উমরার এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত ৫৫৬টি উমরা কোম্পানী উমরা কার্যক্রম শুরু করেছে। করোনাকালীন উমরা সেবার জন্য তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।

হাব (হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে পাঁচটি উমরা এজেন্সি মঙ্গলবার সৌদি উমরা কোম্পানি ইস্ট মাশাইর আল হারাম ফর উমরা সার্ভিসেসে ভার্চুয়াল এ্যাগ্রিমেন্ট প্রেরণ করেছে। তারা এসব এ্যাগ্রিমেন্ট সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপন করবে। সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে সংশ্লিষ্ট উমরা কোম্পানী আইডি পাসওয়ার্ড দিলেই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সম্মতিক্রমে উমরাযাত্রী প্রেরণ শুরু করা হবে।

এদিকে বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে বৈধ উমরা এজেন্সিগুলোর তালিকা তৈরি এবং এজেন্সির লাইসেন্স নবায়নের জন্য কাগজপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ইতোমধ্যে যেসব উমরা এজেন্সির নবায়নের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে অথবা ৩১ ডিসেম্বর বা নিকটবর্তী সময় উত্তীর্ণ হবে তাদের নবায়ন ফি, ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং অন্যান্য কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হবে।

উল্লেখ্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো কারণে উমরা এজেন্সির ট্রাভেল সনদ বাতিল করা হলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকেও সেই এজেন্সির লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে।

আটমাস পর পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া নাগরিকরা উমরা পালনে মসজিদে হারামে প্রবেশ করছেন, ছবি: সংগৃহীত

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আবেদনপত্রের সঙ্গে হালনাগাদ ট্রাভেল লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটোকপি, ২০১৯-২০/ ২০২০-২১ অর্থবছরের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটোকপি, (২০১৯-২০ / ২০২০-২১ অর্থবছরের হালনাগাদ/পরিশোধিত আয়কর সনদের সত্যায়িত ফটোকপি, চলমান উমরা লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটোকপি, হালনাগাদ আইএটিএ , সনদের সত্যায়িত ফটোকপি, বিগত সময়ে শাস্তিপ্রাপ্ত হলে সে সংক্রান্ত তথ্য (বর্তমান অবস্থাসহ), পূর্ববর্তী বছরের উমরা কার্যক্রম পরিচালনা করলে সৌদি সিস্টেম থেকে প্রতিবেদনের প্রিন্ট কপি, পূর্ববর্তী বছরে সৌদি আরবে যে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছিলো সে কোম্পানি থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ছাড়পত্রের আরবি প্রিন্ট কপি এবং সঙ্গে সেই প্রিন্ট কপির ইংরেজি অনুবাদের কপি।

নবায়ন ফি বাবদ ২৫ হাজার টাকা করে পরবর্তী তিন বছরের জন্য মোট ৭৫ হাজার টাকা (১-৩৫০১-০০০১-১৮৫৪ কোডে) এবং ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট বাবদ ১১ হাজার ২৫০ টাকা (১-১১৩৩-০০১০-০৩১১ কোডে) ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে চালানের মূল কপি (শুধু নবায়নের ক্ষেত্রে), ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে যেসব উমরা এজেন্সি লাইসেন্স পেয়েছে তারা ওই সময়ের মধ্যে ভ্যাট বাবদ ৯ হাজার টাকা এর আগে না দিলে ১ ১১৩৩-০০১০-০৩১১ কোডে বর্ণিত অর্থ ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দিয়ে চালানের মূল কপি দাখিল করতে হবে।

ঠিকানা পরিবর্তন করা হলে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) তার অনুমোদনের কপি, জামানত হিসেবে সচিব, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর এফডিআর, সচল/কার্যকর রয়েছে মর্মে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রত্যয়ন পত্র থাকতে হবে।

চলমান উমরা লাইসেন্সের মূল কপি (শুধু নবায়নের ক্ষেত্রে) সংযুক্ত ছকে বর্ণিত তথ্য পূরণ করতে হবে।

সম্প্রতি সাউদিয়া এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উমরা এজেন্সি ও ট্রাভেলস এজেন্সিগুলোর কাছে এক ই-মেইল বার্তায় ১ নভেম্বর (২০২০ ) থেকে উমরাযাত্রীর গ্রুপের টিকিটের চাহিদাপত্র যদি থাকে তা এয়ারলাইন্সের অফিসে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে বলে জানা গেছে।

সব মিলিয়ে এটা বলা চলে, করোনা মহামারির দরুণ আট মাসের অধিক সময় ধরে উমরা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় যাত্রীরা উমরা পালনের জন্য প্রহর গুনছেন। সেই অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই।

   

বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি, ছবি : সংগৃহীত

বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঘৃণা ও বৈষম্যের ক্রমবর্ধমান ঘটনার মধ্যে বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের ও মুসলমান বলে মনে করা লোকদের রক্ষা করতে জার্মান সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। জার্মানি মুসলিমবিরোধী অপরাধের কার্যকর নীতিমালা নেই। সরকারের নেই কোনো নজরদারি ও তথ্য। এর ফলে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পেতে আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপে বর্ণবাদের ওপর গবেষক আলমাজ টেফেরা বলেছেন, মুসলিমদের ঘৃণা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা করতে জার্মান সরকারের ব্যর্থতার কারণ মুসলিমদের ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা।

মুসলমানরা কী কারণে বর্ণবাদ অনুভব করছে যা শুধু কেবল বিশ্বাসভিত্তিক শত্রুতা নয়। জার্মানিতে মুসলিমবিরোধী ঘৃণা, বৈষম্য, বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনা এবং মুসলিমদের ডাটা সম্পর্কে স্পষ্ট বোঝাপোড়া ছাড়া জার্মান কর্তৃপক্ষের যেকোনো প্রচেষ্টা অকার্যকর হবে।

২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৯ মাসে মুসলিম ঘৃণামূলক অপরাধের পরিসংখ্যানে ৬৮৬টি ‘ইসলামবিরোধী’ অপরাধ গণনা করা হয়েছে। ২০২২ সালে ১২ মাসে তা ছিল ৬১০টি।

২০২৪ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সঙ্কট সৃষ্টি হলে অক্টোবর থেকে মুসলিম বিরোধী ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে জার্মান নাগরিক সমাজের দলগুলো।

জার্মানিতে বাস করা প্রায় ৫৫ লাখ মুসলমানের অনেকেই বলছেন, তারা প্রতিদিন ইসলামবিদ্বেষের মুখোমুখি হন৷ যদিও জার্মানির সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা দেওয়া আছে৷

জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিমের মহাসচিব আব্দুস সামাদ আল ইয়াজিদি বলছেন, ইসলামবিদ্বেষ বিষয়টি জার্মান সমাজের মূলধারায় ঢুকে গেছে৷ অর্থাৎ এটি অনেকটা গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে, যা প্রকাশ্যে প্রকাশ করা যায় বলে মনে করেন তিনি৷

তিনি জার্মানিতে মুসলমানদের বিষয় দেখাশোনা করার জন্য একজন কমিশনার নিয়োগ দিতে জার্মানির কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷

;

সরকারি কাজে হিজাব পরা ছবির অনুমোদন দিল রাশিয়া



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সরকারি কাজে হিজাব পরা ছবির অনুমোদন দিল রাশিয়া, ছবি : সংগৃহীত

সরকারি কাজে হিজাব পরা ছবির অনুমোদন দিল রাশিয়া, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাশিয়ার সরকার হিজাব সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিমালা শিথিল করেছে। ফলে এখন থেকে বিদেশি নাগরিকরা রাশিয়ার নাগরিকত্ব আবেদন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাসপোর্ট ও বিভিন্ন সরকারি নথিতে হিজাব পরা ছবি ব্যবহার করতে পারবেন। রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় এই সংবাদ নিশ্চিত করেছে।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থা আরটি জানিয়েছে, আগামী ৫ মে থেকে এই আইন কার্যকর হবে। এর দশ দিন আগে এই আইনের বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। বিবৃতিতে জানানো হয়, যেসব মানুষ ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে অপরিচতদের সামনে মাথা খোলা রেখে আসতে পারেন না, তারা শুধুমাত্র মুখমন্ডলের ছবি দিলেই চলবে।

তবে রাশিয়ায় ইতোমধ্যেই স্থানীয় মুসলিম নারীরা ওয়ার্ক পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট বা অন্যান্য সরকারি নথিতে হিজাব পরিহিত ছবি ব্যবহার করতে পারেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বিইসুলতান খামাজেইভ বলেন, এই নতুন আইনের মাধ্যমে বিশ্বাসীরা তাদের ধর্মীয় অনুশাসন সহজেই মানতে পারবেন। সেই সঙ্গে মুখমন্ডলের ছবির মাধ্যমেই মনিটরিং সিস্টেমে তাদের তথ্য রাখতে পারবে সরকার।

ইউরোপের সব দেশের বিবেচনায় রাশিয়ায় সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলমানের বসবাস। দেশটিতে মুসলমানদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ। ১৯৯৭ সালে ইহুদি, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ ধর্মের পাশাপাশি ইসলামকেও রাশিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রায় ১৬ কোটি রুশ নাগরিকের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। শুধু মস্কোতেই ১০ লাখ মুসলমানের বসবাস। বর্তমানে ‘ইসলাম’ রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম।

বিগত দুই দশক রাশিয়ায় নতুন করে প্রায় আট হাজার মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। রাজধানী মস্কোতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে চারটি বৃহত্তম দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স। মস্কো ক্যাথিডাল মসজিদ তো এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এতে রয়েছে গ্রন্থাগার, হল রুম, মুসলিম মিউজিয়াম ও প্রদর্শনী গ্যালারি, যাতে ১০ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। এখানে ঈদের নামাজে প্রায় তিন লাখ মানুষের সমাগম ঘটে।

;

অবৈধ হজযাত্রী ঠেকাতে যে উদ্যোগ নিচ্ছে সৌদি আরব



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সৌদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রীর হাতে নুসুক কার্ডের একটি কপি তুলে দিচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

সৌদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রীর হাতে নুসুক কার্ডের একটি কপি তুলে দিচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈধ ও অবৈধ হজযাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈধ হজযাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবারের হজ মৌসুমে প্রত্যেককে আলাদা করে একটি ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হবে। মূলত, অনুমোদন ছাড়া হজপালন নিরুৎসাহিত করতেই দেশটির এই উদ্যোগ বলে জানা গেছে।

অত্যাধুনিক এ কার্ড ছাড়া হজের পবিত্র স্থানগুলোতে চলাফেরায় কঠোর নিয়ম করা হচ্ছে। মক্কার হজের ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে প্রবেশকালে কার্ডটি বহন করা বাধ্যতামূলক। হজবিষয়ক জরুরি দুটি অ্যাপ ‘নুসুক’ ও ‘তাওয়াক্কালনা’-এর মধ্যে কার্ডটির ডিজিটাল ভার্সন পাওয়া যাবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশি হজযাত্রীদের প্রথম দলটি সৌদি আরবে পৌঁছাবে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে। ঠিক তার আগেই অবৈধ বিদেশি হজযাত্রীদের রুখতে এই উদ্যোগ নিল দেশটি।

সৌদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী তাওফিক আল-রাবিয়া গত ৩০ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘নুসুক’ কার্ড দেওয়ার প্রকল্প শুরু করেন। এ সময় তিনি ইন্দোনেশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ইয়াকুত কালিল কওমাসকে ‘নুসুক’ কার্ডের একটি কপি তুলে দেন।

এ বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে দুই লাখ ৪১ হাজারের বেশি হজযাত্রী হজপালন করবেন। প্রতিবারের মতো এবারও দেশটির হজযাত্রীরা প্রথম হজ কাফেলা হিসেবে সৌদি আরবে প্রবেশ করবেন।

ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকবে এবং হজের জন্য পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চাইলে এই ডিজিটাল কার্ড অবশ্যই প্রদর্শন করতে হবে। এ ছাড়া হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনেও বিভিন্ন জায়গায় এই ডিজিটাল কার্ড দেখাতে হবে।

সংশ্লিষ্ট দেশের হজযাত্রীদের জন্য ভিসা ইস্যুর পর কার্ডটি সংশ্লিষ্ট হজ অফিস বিদেশি হজযাত্রীদের কাছে হস্তান্তর করবেন এবং হজ পারমিট ইস্যুর পর স্থানীয় সৌদি হজযাত্রীরা দেশটির সংশ্লিষ্ট সরকারি কার্যালয় থেকে এই কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

এর আগে গত মাসে এক বিবৃতিতে হজ করার ক্ষেত্রে অনুমোদনকে বাধ্যতামূলক হিসেবে ঘোষণা করেছে সৌদি আরবের শীর্ষ আলেমদের একটি সংগঠন। ‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ নামে সংগঠনটি জানিয়েছে, যারা অনুমতি ছাড়া হজ করতে যাবেন তাদেরকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও যারা হজ করবেন তারা এরমাধ্যমে পাপ করবেন।

এ ছাড়া সৌদি সরকার দেশটির সব হজ পালনকারীদের জন্য ‘সেহাতি’ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কোভিড, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও মেনিনজাইটিসের টিকার রেকর্ড উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক করেছে।

সরকারি আদেশে বলা হয়, ২০২৪ সালে এই সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিনের অন্তত এক ডোজ ও গত ৫ বছরের মধ্যে মেনিনজাইটিস ভ্যাকসিনের একটি ডোজের রেকর্ড উল্লেখ করতে বলেছে।

আসন্ন হজের প্রস্তুতি হিসেবে আগামী ৬ জুনের (২৯ জিলকদ) মধ্যে উমরা যাত্রীদের সৌদি আরব ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয়ের পূর্বঘোষণা অনুসারে, দেশটি গত ১ মার্চ থেকে হজের ভিসা ইস্যু করা শুরু করে গত ২৯ এপ্রিল (২০ শাওয়াল) এ কার্যক্রম শেষ করেছে।

আগামী ৯ (১১ জিলকদ) থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৪ জুন পবিত্র হজের কার্যক্রম শুরু হবে।

;

অপরূপ প্রকৃতির মাঝে দৃষ্টিনন্দন এক মসজিদ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সবুজ বনানী, পাহাড় আর চা বাগানের অপরূপ দৃশ্য মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলকে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচয় করিয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনা থাকে এখানে। শ্রীমঙ্গলে অনেকেই দেখতে আসনে পাহাড়ের মাঝে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ।

শ্রীমঙ্গলের গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে সামনে দিকে গেলেই দেখা মিলবে মসজিদটির। জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদের প্রবেশদ্বার পেরিয়ে প্রথমে খাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এর পর সুযোগ মিলবে তা পরিদর্শনের।

শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোনো কোলাহল। দূর থেকে দেখা যায়, সবুজের মাঝে সিঁড়ির লাল আর সাদা রঙের মিশ্রণ। শতাধিক সিঁড়ি। এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে। চারদিকে সবুজ পাহাড়ঘেরা নৈসর্গিক পরিবেশ। রয়েছে সারি সারি চা বাগান। গুনে গুনে ১৫০ সিঁড়ি পাড়ি দিয়ে তবেই পৌঁছতে হবে মসজিদে।

জান্নাতুল ফেরদৌস নামে পরিচিত মসজিদটির নাম ‘মসজিদুল আউলিয়া খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)। ‘মসজিদটি নিয়ে মানুষের আকর্ষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর স্থাপত্যশৈলী আর অবস্থান।

প্রায় ১৯ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হয় জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি। সমতল থেকে প্রায় ৭০-৮০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মসজিদটি। চারপাশে রয়েছে, নানা রকমের গাছগাছালি। আছে লেবু ও আনারস বাগান। সবুজের সমারোহ চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে মসজিদ ঘিরে। চারদিকে ঝিঁঝি পোকার ডাক আর নাম না-জানা পাখিদের কিচিরমিচির এক অন্যরকম পরিবেশের তৈরি করেছে।

খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত এই মসজিদটিতে প্রায় ৮০০ লোক একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধনে এর চারপাশে লাগানো হয়েছে নানা জাতের ফুলগাছ। এর গঠনশৈলীও চমৎকার। তুর্কি স্থাপত্যের আদলে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক ঝাড়বাতি, যা আনা হয় সুদূর চীন থেকে।

মসজিদের সামনের অংশ

দর্শনীয় এই মসজিদটি নির্মাণ করেন খাজা টিপু সুলতান। টিপু সুলতান ছিলেন খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)-এর সাহেবজাদা। এই খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) আবার ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সুফি-সাধক খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরীর (রহ.) উত্তরসূরি।

মসজিদটির প্রাঙ্গণে আছে দুটি গেস্টহাউস এবং একটি চিকিৎসাকেন্দ্র। এই চিকিৎসাকেন্দ্রে সপ্তাহের ছয় দিন গরিব মানুষদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া এখানে আছে একটা হেলিপ্যাড। গেস্টহাউসটি মূলত ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের পরিবারের সদস্যদের বিশ্রামের জন্য ব্যবহৃত হয়।

মসজিদের পাশেই রাখা হয়েছে কবরস্থানের জায়গা। শ্রীমঙ্গলে আগত পর্যটকরা একবার হলেও এখানে এসে ঘুরে যায়। এ ছাড়া প্রতিবছর ২৪ নভেম্বর এ মসজিদ ঘিরে আয়োজন করা হয় বার্ষিক ওরস মাহফিলের।

এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি দেখতে প্রথমে আপনাকে আসতে হবে শ্রীমঙ্গল শহরে। গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে আসতে হয় এখানে। সিলেট শহর থেকে কিংবা গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে সিএনজি বা ইজিবাইক রিজার্ভ করে যেতে পারেন। শহর থেকে যাওয়া-আসা ভাড়া প্রায় তিন থেকে চারশ টাকা। গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে গেলে ভাড়া কিছু কম পড়বে। অটোরিকশা দিয়েও যেতে পারেন। চারপাশের মনোরম পরিবেশ দেখতে দেখতে পৌঁছতে পারবেন।

;