উমরা পালনে বাংলাদেশিদের জন্য আপাতত সুখবর নেই



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম
কাবা শরিফ তাওয়াফ করছেন উমরা পালন কারীরা, ছবি: সংগৃহীত

কাবা শরিফ তাওয়াফ করছেন উমরা পালন কারীরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনা মহামারির মধ্যে সীমিত পরিসরে পবিত্র উমরা পালনের সুযোগ দিয়েছে সৌদি সরকার। বিভিন্ন শর্ত ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগ্রহীরা উমরা পালনের পাশাপাশি মদিনায় হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করছেন।

৪ অক্টোবর থেকে পবিত্র উমরা এবং ১৮ অক্টোবর থেকে পবিত্র রওজা জিয়ারত শুরু হয়। এতদিন শুধু সৌদি আরবের নাগরিক ও দেশটিতে বসবাসকারী এ সুযোগ পাচ্ছিলেন। ১ নভেম্বর থেকে সৌদি আরবের বাইরের নাগরিকরাও উমরা পালন এবং রওজা জিয়ারতের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে এজন্য জুড়ে দেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ কঠিন শর্ত। তার পরও বাংলাদেশিদের জন্য আপাতত কোনো সুখবর নেই।

বাংলাদেশি উমরা যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত। এ ছাড়া ভ্যাকসিন আবিষ্কার কিংবা বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হলে উমরার ভিসা পাওয়া যেতে পারে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উমরার বিষয়ে সৌদি আরব থেকে তারা এখনও কোনো চিঠি পাননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ‘উমরার ক্ষেত্রে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজ নেই। মন্ত্রণালয় শুধু উমরার এজেন্সিদের অনুমোদন, লাইসেন্স নবায়ন এবং বৈধ হজ-উমরা এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করে। অনুমোদনপ্রাপ্ত এজেন্সিগুলো সৌদি আরবের অনুমোদিত উমরা এজেন্সিগুলোর সঙ্গে মিলে যাত্রীদের যাবতীয় সেবা দেয়।’

তবে কয়েকজন হজ এজেন্সির মালিক আশা প্রকাশ করে বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ‘সীমিত পরিসরে বাংলাদেশিদের উমরা পালনের জন্য নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।’

সম্প্রতি সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার ড. আবদুল আজিজ বিন আবদুর রহিম ওজান স্বাক্ষরিত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এতে করোনাকালে উমরা পালনের শর্তগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে সৌদি আরবের বিভিন্ন গণমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে, আপাতত দুই-এক মাসের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের মতোই শর্তসাপেক্ষে তৃতীয় ধাপে উমরা পালনের সুযোগ দিয়েছে। এক্ষেত্রে উমরা কার্যক্রম, উমরা পালনকারীদের শারীরিক সুস্থতা এবং উমরা শেষ করে দেশে ফেরার পর তাদের শারীরিক অবস্থার মতো বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে পরবর্তী সময়ে শর্তগুলো শিথিল করা হবে।

আপাতত যেসব শর্ত পালন করতে হবে তার মধ্যে রয়েছে, উমরা পালনকারীর বয়স হতে হবে ১৮-৫০ এর মধ্যে, ভ্রমণের ৭২ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষা এবং হারাম শরিফে নামাজ, মদিনা ও রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য ইতামারনা অ্যাপসের মাধ্যমে তাসরিয়াহ নিতে হবে। এছাড়া পরিবহন ও হোটেলের মতো বিমান টিকিটের বিআরএন নেওয়া এবং উমরা পালনকারী যে হোটেলে থাকবেন সে হোটেল থেকেই তিন দিনের খাবারসহ হোটেল বুকিং করতে হবে। হোটেলে এসে প্রথম পর্যায়ে তিন দিন অবস্থান করতে হবে। এর আগে উমরা পালন করা যাবে না। ভ্রমণের ২৪ ঘণ্টা আগে ফ্লাইট নম্বরসহ উমরা পালনকারীর বিস্তারিত তথ্য উমরাহ সিস্টেমে প্রবেশ করাতে হবে। প্রত্যেক দলে ৫০ জন উমরা পালনকারীর সঙ্গে একজন গাইড থাকবেন।

কাবা চত্বরে উমরা পালনকারীরা নামাজ আদায় করছেন, ছবি: সংগৃহীত 

উমরার সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদত হোসেন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সৌদি আরব ধাপে ধাপে উমরা চালু করছে। তৃতীয় ধাপে বহির্বিশ্বের জন্য উমরা পালনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০টি দেশ থেকে উমরাকারীরা সৌদি আরব পৌঁছেছেন। তবে বাংলাদেশের জন্য এখনও সৌদি আরব থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তবে তারা উমরার জন্য পালনীয় বিষয়, প্রক্রিয়া ও নির্দেশনার বিষয়ে জানিয়েছে। সে হিসেবে আশা করছি, দ্রুতই বাংলাদেশিদের উমরা ভিসা দেওয়া শুরু হবে।’

বাংলাদেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে উল্লেখ করে হাব সভাপতি আরও বলেন, ‘প্রচুর মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন উমরা চালুর সুখবরের জন্য। করোনার কারণে আরোপিত কঠিন কঠিন শর্তপূরণ করেও তারা উমরা পালন করতে প্রস্তুত।’

তবে উমরা পালনের ক্ষেত্রে সৌদি আরব যেসব শর্ত দিয়েছে, তা পূরণ করে বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি যাত্রী উমরা করতে পারবেন না বলে মত দিয়েছেন কয়েকজন হজ এজেন্সির মালিক। তদের যুক্তি হলো, ‘১৮-এর নিচে ও ৫০-এর ওপরের বয়সের কেউ উমরা পালন করতে পারবেন না। এখানেই তো বড় বাধা। কারণ বাংলাদেশের মানুষ সাধারণত উমরা করেন একটু বেশি বয়সে।’

বিগত দিনে অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবীদের বড় একটা অংশ অবসরে যাওয়ার পর উমরা পালন করেন। সে হিসেবে তারা উমরা যেতে পারছেন না। অনেকেই আছেন পুরো পরিবার নিয়ে উমরা পালন করেন। সেই পরিবারে শিশু থাকলে- তার পক্ষেও উমরায় যাওয়া সম্ভব না। কাজেই এসব শর্ত বহাল রেখে উমরার সুযোগ হলেও বাংলাদেশ থেকে আপাতত তেমন যাত্রী পাওয়া যাবে না। এসব কারণে অনেক এজেন্সি এখনই উমরার সেবাদানের বিষয়েও আগ্রহও দেখাচ্ছেন না।’

সৌদি আরবে বসবাসরত হজ-উমরার সেবা প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘উমরা পালনের ক্ষেত্রে কঠিন শর্তগুলো হয়তো বেশিদিন বলবৎ থাকবে না।’ সৌদি আরবের বিভিন্ন এজেন্সির কাছ থেকে তারা এমন আভাস পেয়েছেন। তারা আশা করছেন, আগামী ডিসেম্বরেই চতুর্থ ধাপে আরও সহজ পদ্ধতিতে উমরার ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তখন বাংলাদেশিদের জন্যও আগের নিয়মেই উমরা পালনের সুযোগ মিলতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদেশি উমরার যাত্রীদের সৌদি আরবে যেয়ে প্রথমে নির্দিষ্ট হোটেলে তিন দিন অবস্থান করতে হবে। এর পর ‘ইতামরনা’ অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করে উমরার অনুমতি নিতে হবে। এই অ্যাপসে রেজিস্ট্রেশন করে মসজিদে হারামে নামাজ ও রওজা শরিফ জিয়ারতের সময় নিতে হবে। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার কারণে এক সফরে একবারের বেশি উমরা করা যাবে না, এমনকি নফল তাওয়াফ করারও সুযোগ নেই। এসব কারণে অনেকেই তৃতীয় ধাপে উমরার পরিবর্তে চতুর্থ ধাপে উমরা পালনের জন্য অপেক্ষা করছেন।

   

বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি, ছবি : সংগৃহীত

বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষায় পিছিয়ে জার্মানি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঘৃণা ও বৈষম্যের ক্রমবর্ধমান ঘটনার মধ্যে বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের ও মুসলমান বলে মনে করা লোকদের রক্ষা করতে জার্মান সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। জার্মানি মুসলিমবিরোধী অপরাধের কার্যকর নীতিমালা নেই। সরকারের নেই কোনো নজরদারি ও তথ্য। এর ফলে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পেতে আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপে বর্ণবাদের ওপর গবেষক আলমাজ টেফেরা বলেছেন, মুসলিমদের ঘৃণা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা করতে জার্মান সরকারের ব্যর্থতার কারণ মুসলিমদের ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা।

মুসলমানরা কী কারণে বর্ণবাদ অনুভব করছে যা শুধু কেবল বিশ্বাসভিত্তিক শত্রুতা নয়। জার্মানিতে মুসলিমবিরোধী ঘৃণা, বৈষম্য, বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনা এবং মুসলিমদের ডাটা সম্পর্কে স্পষ্ট বোঝাপোড়া ছাড়া জার্মান কর্তৃপক্ষের যেকোনো প্রচেষ্টা অকার্যকর হবে।

২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৯ মাসে মুসলিম ঘৃণামূলক অপরাধের পরিসংখ্যানে ৬৮৬টি ‘ইসলামবিরোধী’ অপরাধ গণনা করা হয়েছে। ২০২২ সালে ১২ মাসে তা ছিল ৬১০টি।

২০২৪ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে- অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সঙ্কট সৃষ্টি হলে অক্টোবর থেকে মুসলিম বিরোধী ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে জার্মান নাগরিক সমাজের দলগুলো।

জার্মানিতে বাস করা প্রায় ৫৫ লাখ মুসলমানের অনেকেই বলছেন, তারা প্রতিদিন ইসলামবিদ্বেষের মুখোমুখি হন৷ যদিও জার্মানির সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা দেওয়া আছে৷

জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিমের মহাসচিব আব্দুস সামাদ আল ইয়াজিদি বলছেন, ইসলামবিদ্বেষ বিষয়টি জার্মান সমাজের মূলধারায় ঢুকে গেছে৷ অর্থাৎ এটি অনেকটা গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে, যা প্রকাশ্যে প্রকাশ করা যায় বলে মনে করেন তিনি৷

তিনি জার্মানিতে মুসলমানদের বিষয় দেখাশোনা করার জন্য একজন কমিশনার নিয়োগ দিতে জার্মানির কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷

;

সরকারি কাজে হিজাব পরা ছবির অনুমোদন দিল রাশিয়া



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সরকারি কাজে হিজাব পরা ছবির অনুমোদন দিল রাশিয়া, ছবি : সংগৃহীত

সরকারি কাজে হিজাব পরা ছবির অনুমোদন দিল রাশিয়া, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাশিয়ার সরকার হিজাব সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিমালা শিথিল করেছে। ফলে এখন থেকে বিদেশি নাগরিকরা রাশিয়ার নাগরিকত্ব আবেদন, ড্রাইভিং লাইসেন্স পাসপোর্ট ও বিভিন্ন সরকারি নথিতে হিজাব পরা ছবি ব্যবহার করতে পারবেন। রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় এই সংবাদ নিশ্চিত করেছে।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থা আরটি জানিয়েছে, আগামী ৫ মে থেকে এই আইন কার্যকর হবে। এর দশ দিন আগে এই আইনের বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। বিবৃতিতে জানানো হয়, যেসব মানুষ ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে অপরিচতদের সামনে মাথা খোলা রেখে আসতে পারেন না, তারা শুধুমাত্র মুখমন্ডলের ছবি দিলেই চলবে।

তবে রাশিয়ায় ইতোমধ্যেই স্থানীয় মুসলিম নারীরা ওয়ার্ক পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট বা অন্যান্য সরকারি নথিতে হিজাব পরিহিত ছবি ব্যবহার করতে পারেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বিইসুলতান খামাজেইভ বলেন, এই নতুন আইনের মাধ্যমে বিশ্বাসীরা তাদের ধর্মীয় অনুশাসন সহজেই মানতে পারবেন। সেই সঙ্গে মুখমন্ডলের ছবির মাধ্যমেই মনিটরিং সিস্টেমে তাদের তথ্য রাখতে পারবে সরকার।

ইউরোপের সব দেশের বিবেচনায় রাশিয়ায় সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মুসলমানের বসবাস। দেশটিতে মুসলমানদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ। ১৯৯৭ সালে ইহুদি, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ ধর্মের পাশাপাশি ইসলামকেও রাশিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রায় ১৬ কোটি রুশ নাগরিকের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। শুধু মস্কোতেই ১০ লাখ মুসলমানের বসবাস। বর্তমানে ‘ইসলাম’ রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম।

বিগত দুই দশক রাশিয়ায় নতুন করে প্রায় আট হাজার মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। রাজধানী মস্কোতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে চারটি বৃহত্তম দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স। মস্কো ক্যাথিডাল মসজিদ তো এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এতে রয়েছে গ্রন্থাগার, হল রুম, মুসলিম মিউজিয়াম ও প্রদর্শনী গ্যালারি, যাতে ১০ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। এখানে ঈদের নামাজে প্রায় তিন লাখ মানুষের সমাগম ঘটে।

;

অবৈধ হজযাত্রী ঠেকাতে যে উদ্যোগ নিচ্ছে সৌদি আরব



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সৌদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রীর হাতে নুসুক কার্ডের একটি কপি তুলে দিচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

সৌদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রীর হাতে নুসুক কার্ডের একটি কপি তুলে দিচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈধ ও অবৈধ হজযাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈধ হজযাত্রীদের চিহ্নিত করতে এবারের হজ মৌসুমে প্রত্যেককে আলাদা করে একটি ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হবে। মূলত, অনুমোদন ছাড়া হজপালন নিরুৎসাহিত করতেই দেশটির এই উদ্যোগ বলে জানা গেছে।

অত্যাধুনিক এ কার্ড ছাড়া হজের পবিত্র স্থানগুলোতে চলাফেরায় কঠোর নিয়ম করা হচ্ছে। মক্কার হজের ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে প্রবেশকালে কার্ডটি বহন করা বাধ্যতামূলক। হজবিষয়ক জরুরি দুটি অ্যাপ ‘নুসুক’ ও ‘তাওয়াক্কালনা’-এর মধ্যে কার্ডটির ডিজিটাল ভার্সন পাওয়া যাবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশি হজযাত্রীদের প্রথম দলটি সৌদি আরবে পৌঁছাবে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে। ঠিক তার আগেই অবৈধ বিদেশি হজযাত্রীদের রুখতে এই উদ্যোগ নিল দেশটি।

সৌদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী তাওফিক আল-রাবিয়া গত ৩০ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘নুসুক’ কার্ড দেওয়ার প্রকল্প শুরু করেন। এ সময় তিনি ইন্দোনেশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ইয়াকুত কালিল কওমাসকে ‘নুসুক’ কার্ডের একটি কপি তুলে দেন।

এ বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে দুই লাখ ৪১ হাজারের বেশি হজযাত্রী হজপালন করবেন। প্রতিবারের মতো এবারও দেশটির হজযাত্রীরা প্রথম হজ কাফেলা হিসেবে সৌদি আরবে প্রবেশ করবেন।

ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকবে এবং হজের জন্য পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চাইলে এই ডিজিটাল কার্ড অবশ্যই প্রদর্শন করতে হবে। এ ছাড়া হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনেও বিভিন্ন জায়গায় এই ডিজিটাল কার্ড দেখাতে হবে।

সংশ্লিষ্ট দেশের হজযাত্রীদের জন্য ভিসা ইস্যুর পর কার্ডটি সংশ্লিষ্ট হজ অফিস বিদেশি হজযাত্রীদের কাছে হস্তান্তর করবেন এবং হজ পারমিট ইস্যুর পর স্থানীয় সৌদি হজযাত্রীরা দেশটির সংশ্লিষ্ট সরকারি কার্যালয় থেকে এই কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

এর আগে গত মাসে এক বিবৃতিতে হজ করার ক্ষেত্রে অনুমোদনকে বাধ্যতামূলক হিসেবে ঘোষণা করেছে সৌদি আরবের শীর্ষ আলেমদের একটি সংগঠন। ‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ নামে সংগঠনটি জানিয়েছে, যারা অনুমতি ছাড়া হজ করতে যাবেন তাদেরকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও যারা হজ করবেন তারা এরমাধ্যমে পাপ করবেন।

এ ছাড়া সৌদি সরকার দেশটির সব হজ পালনকারীদের জন্য ‘সেহাতি’ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে কোভিড, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও মেনিনজাইটিসের টিকার রেকর্ড উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক করেছে।

সরকারি আদেশে বলা হয়, ২০২৪ সালে এই সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিনের অন্তত এক ডোজ ও গত ৫ বছরের মধ্যে মেনিনজাইটিস ভ্যাকসিনের একটি ডোজের রেকর্ড উল্লেখ করতে বলেছে।

আসন্ন হজের প্রস্তুতি হিসেবে আগামী ৬ জুনের (২৯ জিলকদ) মধ্যে উমরা যাত্রীদের সৌদি আরব ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয়ের পূর্বঘোষণা অনুসারে, দেশটি গত ১ মার্চ থেকে হজের ভিসা ইস্যু করা শুরু করে গত ২৯ এপ্রিল (২০ শাওয়াল) এ কার্যক্রম শেষ করেছে।

আগামী ৯ (১১ জিলকদ) থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৪ জুন পবিত্র হজের কার্যক্রম শুরু হবে।

;

অপরূপ প্রকৃতির মাঝে দৃষ্টিনন্দন এক মসজিদ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, শ্রীমঙ্গল, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সবুজ বনানী, পাহাড় আর চা বাগানের অপরূপ দৃশ্য মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলকে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচয় করিয়েছে। পর্যটকদের আনাগোনা থাকে এখানে। শ্রীমঙ্গলে অনেকেই দেখতে আসনে পাহাড়ের মাঝে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ।

শ্রীমঙ্গলের গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে সামনে দিকে গেলেই দেখা মিলবে মসজিদটির। জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদের প্রবেশদ্বার পেরিয়ে প্রথমে খাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এর পর সুযোগ মিলবে তা পরিদর্শনের।

শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোনো কোলাহল। দূর থেকে দেখা যায়, সবুজের মাঝে সিঁড়ির লাল আর সাদা রঙের মিশ্রণ। শতাধিক সিঁড়ি। এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে। চারদিকে সবুজ পাহাড়ঘেরা নৈসর্গিক পরিবেশ। রয়েছে সারি সারি চা বাগান। গুনে গুনে ১৫০ সিঁড়ি পাড়ি দিয়ে তবেই পৌঁছতে হবে মসজিদে।

জান্নাতুল ফেরদৌস নামে পরিচিত মসজিদটির নাম ‘মসজিদুল আউলিয়া খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)। ‘মসজিদটি নিয়ে মানুষের আকর্ষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর স্থাপত্যশৈলী আর অবস্থান।

প্রায় ১৯ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হয় জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি। সমতল থেকে প্রায় ৭০-৮০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মসজিদটি। চারপাশে রয়েছে, নানা রকমের গাছগাছালি। আছে লেবু ও আনারস বাগান। সবুজের সমারোহ চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে মসজিদ ঘিরে। চারদিকে ঝিঁঝি পোকার ডাক আর নাম না-জানা পাখিদের কিচিরমিচির এক অন্যরকম পরিবেশের তৈরি করেছে।

খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত এই মসজিদটিতে প্রায় ৮০০ লোক একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধনে এর চারপাশে লাগানো হয়েছে নানা জাতের ফুলগাছ। এর গঠনশৈলীও চমৎকার। তুর্কি স্থাপত্যের আদলে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক ঝাড়বাতি, যা আনা হয় সুদূর চীন থেকে।

মসজিদের সামনের অংশ

দর্শনীয় এই মসজিদটি নির্মাণ করেন খাজা টিপু সুলতান। টিপু সুলতান ছিলেন খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.)-এর সাহেবজাদা। এই খাজা শাহ্ মোজাম্মেল হক (রহ.) আবার ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সুফি-সাধক খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরীর (রহ.) উত্তরসূরি।

মসজিদটির প্রাঙ্গণে আছে দুটি গেস্টহাউস এবং একটি চিকিৎসাকেন্দ্র। এই চিকিৎসাকেন্দ্রে সপ্তাহের ছয় দিন গরিব মানুষদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া এখানে আছে একটা হেলিপ্যাড। গেস্টহাউসটি মূলত ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের পরিবারের সদস্যদের বিশ্রামের জন্য ব্যবহৃত হয়।

মসজিদের পাশেই রাখা হয়েছে কবরস্থানের জায়গা। শ্রীমঙ্গলে আগত পর্যটকরা একবার হলেও এখানে এসে ঘুরে যায়। এ ছাড়া প্রতিবছর ২৪ নভেম্বর এ মসজিদ ঘিরে আয়োজন করা হয় বার্ষিক ওরস মাহফিলের।

এই সিঁড়ি বেয়েই আপনাকে ওপরে ওঠতে হবে

জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদটি দেখতে প্রথমে আপনাকে আসতে হবে শ্রীমঙ্গল শহরে। গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টের বিপরীত পাশের রাস্তা দিয়ে আসতে হয় এখানে। সিলেট শহর থেকে কিংবা গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে সিএনজি বা ইজিবাইক রিজার্ভ করে যেতে পারেন। শহর থেকে যাওয়া-আসা ভাড়া প্রায় তিন থেকে চারশ টাকা। গ্র্যান্ড সুলতানের সামনে থেকে গেলে ভাড়া কিছু কম পড়বে। অটোরিকশা দিয়েও যেতে পারেন। চারপাশের মনোরম পরিবেশ দেখতে দেখতে পৌঁছতে পারবেন।

;