অভাব মোচন ও যাবতীয় ক্ষতি থেকে বাঁচতে কোরআন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন মানবজাতির জন্য হেদায়েত, ছবি: সংগৃহীত

কোরআন মানবজাতির জন্য হেদায়েত, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মহাগ্রন্থ আল কোরআন, আল্লাহতায়ালা কর্তৃক নাজিলকৃত সর্বশেষ কিতাব। ‘কোরআন’ শব্দের অর্থ হলো- যা পড়া উচিত, যা পড়তে হবে, যা পড়ার মতো, যা বারবার পড়তে হয়, যা পড়তে থাকতে হয়, যা পড়ার শেষ নেই। এই বিশ্বজগতের মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ফেরেশতা হজরত জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ২৩ বছরব্যাপী তা নাজিল করেছেন।

কোরআনে কারিমে যা আলোচনা করা হয়েছে তা, সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের কল্যাণের জন্য। এ প্রসঙ্গে কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘এই কিতাবে বা বইয়ে সব মানুষের জন্য ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়ের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। আর পথনির্দেশ ও নসিহত রয়েছে মুত্তাকিদের জন্য।’ -সূরা আলে ইমরান: ২

কোরআন থেকে আমরা বিশ্ব জগতের পরিচালক আল্লাহর পরিচয়, তার রাসূলের পরিচয়, অন্যান্য নবীর পরিচয়, ফেরেশতাকুলের পরিচয়, তাকদিরের পরিচয়, ভালো-মন্দের পরিণাম, আখেরাতের পরিচয়, হালাল-হারামের পরিচয়, অভিশপ্ত শয়তানের পরিচয়, মানুষের সফলতা ও ব্যর্থতার কারণ, সমগ্র সৃষ্টিজগত এবং এমনকি অশরীরী জীব জিন জাতির অস্তিত্ব জানতে পারি। আমাদের মৌলিক ইবাদতসমূহ যেমন- নামাজ, জাকাত, রোজা, হজ সম্পর্কিত নির্দেশ সরাসরি লাভ করি।

জীবনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে হলে কোরআনে কারিম সবাইকে তেলাওয়াত করতে করতে হবে। কোরআনের তেলাওয়াত প্রাত্যহিক জীবনে সবার পাঠ্য হিসেবে নেওয়াটা খুবই জরুরি। কারণ, কোরআনে কারিম পুরোটাই বরকতপূর্ণ ও ফজিলতময়।

তারপরও বিশেষ কিছু সূরা বা আয়াত রয়েছে, যেগুলোর কথা বিশেষভাবে নবী করিম (সা.) বলে গেছেন। তন্মধ্যে সূরা ফাতেহা, সূরা মূলক, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, আয়াতুল কুরসি, সূরা আল কাহাফ, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস। এই সূরাগুলো অত্যন্ত ফজিলতময় বলে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখিত সূরা এবং আয়াতের সংক্ষিপ্ত ফজিলত হলো-

এক. সূরা ফাতিহা সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সূরা ফাতেহা’কে আল্লাহতাআলা তার ও বান্দার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন। বান্দা যখন নামাজে সূরা ফাতেহা পাঠ করে প্রতিটি আয়াতের জবাব আল্লাহতায়ালা নিজে দেন। -সহিহ মুসলিম: ৯০৪

দুই. সূরা মূলক সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সূরা মূলক’ তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশ করবে এবং শেষ অবধি এর পাঠককে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -সুনানে আবু দাউদ: ১৪০০

তিন. সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রাতে ‘সূরা বাকারা’র শেষ ২টি আয়াত পাঠ করবে, তার জন্য ওই রাতে অশুভকর সব কিছুর মোকাবেলায় ওই দুইটি আয়াতই যথেষ্ট হবে বা তাহাজ্জুদের নামাজের সওয়াব হবে। -সুনানে আবু দাউদ: ১৪০০

চার. আয়াতুল কুরসি সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোরআনের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আয়াত ‘আয়াতুল কুরসি’। যে ব্যক্তি ঘুমানোর সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রক্ষক নিযুক্ত করা হবে এবং সকাল পর্যন্ত তার কাছে শয়তান আসতে পারবে না। যে ব্যক্তি প্রতি ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছু বাধা হবে না। -সহিহ বোখারি: ৪০০৮

পাঁচ. সূরা আল কাহাফ সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ‘সূরা আল কাহাফ’র প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে নেয় সে দাজ্জালের ফিৎনা হতে নিরাপদ থাকবে, শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারেও উল্লিখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে। যে ব্যক্তি জুমার দিনে ‘সূরা আল কাহাফ’ তেলাওয়াত করবে, তার জন্য মহান আল্লাহ দুই জুমার মাঝে নূর প্রজ্জ্বলিত করবেন। -সহিহ বোখারি: ২৩১১

ছয়. পবিত্র কোরআনের ১১৪টি সূরার মধ্যে সূরা ইয়াসিন বিশেষ তাৎপর্য ও গুরুত্ব বহন করে। সূরা ইয়াসিনকে কোরআনের রূহ বা প্রাণ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। ফজিলতের দিক থেকে এ সূরা যেমন অদ্বিতীয় তেমনি মানুষের জীবনসংশ্লিষ্ট বিষয় আলোচনায় এ সূরা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক বস্তুর একটি হৃদয় আছে। কোরআনের হৃদয় হলো- সূরা ইয়াসিন। যে ব্যক্তি একবার সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, আল্লাহতায়ালা ১০ বার কোরআন খতমের সওয়াব দেবেন।’ -সুনানে তিরমিজি: ২৮৯১

সূরা ইয়াসিন গোনাহ মাফের মাধ্যম, হাজত (প্রয়োজন) পূরণের মাধ্যম ও মৃত্যুকষ্ট লাঘবের মাধ্যম। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আতা বিন আবি রাবাহ (রা.) বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনেছি যে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিনের বেলায় সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে, তার সব হাজত পূর্ণ করা হবে।’ -সুনানে দারেমি: ৩৪৬১

সাত. সূরা ওয়াকিয়া। এই সূরা সম্পর্কে হাদিস শরিফে এসেছে, যে ব্যক্তি রাতের অংশে ‘সূরা ওয়াকিয়া’ তেলাওয়াত করবে, অভাব তাকে কোনোদিন স্পর্শ করবে না। বিশিষ্ট এক সাহাবির মৃত্যুর পর তার কন্যাদের খলিফা সাহায্য করতে চাইলে, তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদেরকে তাদের পিতা সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করার আমল শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন। অতএব তারা কখনও দারিদ্র্য বা অভাবের শিকার হবে না। তাদেরকে সাহায্য দেওয়ার দরকার হবে না। -সহিহ মুসলিম

আট. সূরা ইখলাস সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সূরা ইখলাস’ কোরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য। ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’-এর প্রতি ভালোবাসা এর তেলাওয়াতকারীকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। সূরা ইখলাস সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় ‘সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক এবং সূরা নাস’ তিনবার করে পড়লো ওই ব্যক্তিকে যেকোনো (ক্ষতিকর) জিনিস থেকে নিরাপদ রাখার জন্য এটা যথেষ্ট হবে। -সুনানে তিরমিজি

প্রবন্ধে আলোচ্য আয়াত ও সূরাসমূহের সংক্ষিপ্ত ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়াও এ সমস্ত আয়াত ও সূরার অনেক ফজিলত রয়েছে। যা এই সংক্ষিপ্ত আলোচনায় করা সম্ভব নয়। তাই আসুন, আমরা আল্লাহর রাসূল (সা.) কর্তৃক বর্ণিত উপরোক্ত আমলগুলো আমৃত্যু প্রতিনিয়ত করার চেষ্টা করি। আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ এবং পরকালে মুক্তির জন্য এসব বড় সহায়ক হিসেবে আল্লাহ কবুল করবেন।

   

সৌদি পৌঁছেছেন ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

সৌদিতে যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার গেছেন ১৭ হাজার ৩১৬ জন।

বাংলাদেশ থেকে ৫৩টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ১৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ১৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২০ জুন এবং শেষ হবে ২২ জুলাই।

;

৬ এজেন্সিকে শোকজ

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্ধারিত সময়ের পরও দুই দফায় সময় বাড়ানো হয় হজযাত্রীদের ভিসা করার জন্য। এরপরও কোনো হজযাত্রীর ভিসা আবেদন করেনি ৫টি এজেন্সি। আর একটি এজেন্সি মাত্র ৫ জনের ভিসার আবেদন করেছে। ফলে এসব এজেন্সির ১৮৭০ জন হজযাত্রী শেষ পর্যন্ত হজ করতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। আগামীকাল বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে।

একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন না পাঠানোসহ বেশি কিছু অনিয়মের জন্য বেসরাকরি হজ এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ার করার পাশাপাশি হজ ফ্লাইট ডাটা যথাসময়ে এন্ট্রি করার জন্য এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে হজযাত্রীদের নিকট থেকে কোরবানির অর্থ না নেওয়ার জন্য তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।

রোববার (১২ মে) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জুম প্লাটফর্মে সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের জেদ্দা এয়ারপোর্ট সার্ভিসের মহাপরিচালক আবদুর রহমান ঘ্যানামের সঙ্গে সভা শেষে এসব নির্দেশনা জারি করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ওই সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছাড়াও বাংলাদেশ হজ অফিস, মক্কা ও জেদ্দার কর্মকর্তা এবং হজ এজেন্সির মালিকেরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় সৌদি আরবের পক্ষ থেকে হজ এজেন্সি কর্তৃক ফ্লাইট ডাটা সঠিকভাবে ও নিয়মিত সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সভায় বলা হয়, হজ ফ্লাইট ডাটা এন্ট্রি না দেওয়ার কারণে মদিনা ও জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারছে না সৌদি কর্তৃপক্ষ। ফলে কোন ফ্লাইটে কতজন হজযাত্রী আসছে, তারা কোন মোয়াল্লেমের হজযাত্রী এবং কোন হোটেল বা বাড়িতে তাদের আবাসন ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া হজযাত্রী ও তাদের লাগেজ পরিবহনের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। মোয়াল্লেমের প্রতিনিধিও হোটেল বা বাড়িতে সার্ভিস দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকছে না। এ কারণে হজযাত্রীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না এবং রুট-টু-মক্কার সুবিধা থেকে হজযাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

সভায় হজ ফ্লাইট যাত্রা শুরুর পূর্বেই সঠিকভাবে ফ্লাইট ডাটা সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি করার অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সভায় আরও বলা হয়, হজ প্যাকেজে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের নিকট থেকে হজে গমণের পূর্বে কোরবানি বাবদ অর্থ নিচ্ছেন। হজযাত্রী তার ইচ্ছা মাফিক সৌদি সরকারের ব্যাংকের কূপন ক্রয় করে বা তার নিজের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি সম্পন্ন করবেন। এজেন্সি কোনোভাবেই কোরবানির টাকা নিতে পারবে না। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি পত্র জারি করেছে। পত্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ এজেন্সিগুলোকে আরও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বলা হয়েছে, অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের সঙ্গে হজগাইড বা প্রতিনিধি না পাঠানোর কারণে হজযাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

একই চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, কিছু হজ এজেন্সি তাদের হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন পাঠিয়েছে, যা জেদ্দা বিমানবন্দরে আটক হয়েছে। এতে দেশের সম্মান নষ্ট হচ্ছে।

এর আগে জেদ্দার সহকারী মৌসূমি হজ অফিসার এবং হজ কাউন্সেলর চিঠির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানান, গত ১১ মে ঢাকা থেকে সাউদিয়া এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটযোগে হজপালনের জন্য সৌদি গমনকারী দুই নারী হজযাত্রীর ৪টি সুটকেস ভর্তি পর্যাপ্ত পরিমাণ জর্দাসহ নানাপ্রকার তামাকপাতা থাকায় স্থানীয় কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সেগুলো জব্দ করেন।

পরবর্তীতে কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ সুটকেসে থাকা মালামাল জব্দ করে খালি সুটকেসগুলো হজ টার্মিনালে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিসে হস্তান্তর করে। ওই দুই হজযাত্রী উল্লাস ট্যুরস্ এন্ড ট্রাভেলস্ (লাইসেন্স নম্বর: ১২৭৭)-এর মাধ্যমে হজপালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমন করেছেন। সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহনে কাষ্টমস্ রুলস্ অনুসরণের পাশাপাশি বর্ণিত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছেন। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

;

৯৪ দিনে হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের অক্টোবরে সাড়ে ৫ মাসে ৮ বছর বয়সী কিশোর সাফায়াত মুকতাদির প্রান্ত কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। সেই সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মাত্র ৯৪ দিনে কোরআন মাজিদের হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর নুসাইব কুদরতি। এই দুই মেধাবী শিক্ষার্থী মিরপুরের (রূপনগর) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।

নুসাইব কুদরতী খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা নিয়ামত আলী কুদরতীর ছেলে। ছেলের এমন সাফল্যে খুশি বাবা নিয়ামত আলী। তার আশা, নুসাইব একসময় বড় আলেম হবে এবং ইসলামের খেদমত করবে।

নুসাইব কুদরতীর শিক্ষক হাফেজ কারি ফরহাদ বিন নাসেরী বলেন, ‘মহাগ্রন্থ কোরআন মাজিদের অলৌকিক মুজিজায় এমন ঘটনা বিশ্বে প্রায় ঘটছে- আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের ছাত্র নুসাইব কুদরতী মাত্র ৯৪ দিনে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করেছে। কোরআন মুখস্থ করার বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। এর পেছনে শিক্ষক থেকে শুরু করে বাবা-মায়ের অনেক চেষ্টা শ্রম ও আত্মত্যাগ প্রয়োজন। একজন কোরআনে হাফেজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহতায়ালা এ শিশুকে দীনের জন্য কবুল করুন।’

তিনি আরও জানান, নুসাইব শুরুতে দুই পৃষ্ঠা করে সবক দিলেও শেষের দিকে দিনে ১০ পৃষ্ঠা করে সবক দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা প্রত্যেকটি বাচ্চাকে টার্গেট ফিক্সড করে পড়াশোনা করাই। সেই টার্গেট অনুযায়ী নুসাইব আন্তরিকতার সঙ্গে মেহনত করেছে এবং শিক্ষক তার পেছনে সর্বস্ব ব্যায় করে তাকে যোগ্য করে গড়ে তুলেছে। আমাদের প্রতিটি ছাত্রকে এভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান দিয়ে থাকি।

ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মামুনুর রশীদ বলেন, এ ছেলেটি পাঁচ বছর বয়স থেকে আমাদের এখানে পড়াশোনা করছে। তার বাবা একজন চাকুরীজীবী। এমন অনেক বাচ্চা আমাদের এখানে আছে। দীন ও ইসলাম শিক্ষা অর্জন করছে। কোরআনে হাফেজ হচ্ছে, পাশাপাশি স্কুলের পড়াও চালিয়ে যাচ্ছে।

;