জীবন্ত কবর দেয়ার ৪ দিন পর বৃদ্ধকে উদ্ধার
পূর্ব ইউরোপের দেশ মলদোভায় ঘটলো এক আশ্চর্যজনক ঘটনা। দেশটিতে জীবন্ত অবস্থায় কবর দেওয়া এক বৃদ্ধকে চারদিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৭ মে) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মদপানের সময় এক কিশোরের সঙ্গে ৬২ বছরের এই বৃদ্ধের দ্বন্দ্ব হয়। এরপর সে ক্ষুব্ধ হয়ে লোকটিকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার পর মাটিচাপা দেয়। টানা চারদিন সেখানে আটকে থাকার পর তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের আগে প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। আর চিৎকার শুনেই পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করতে সমর্থ হন।
দেশটির পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, যে কবর থেকে ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে ৭৪ বয়সী এক নারী হত্যার শিকার হয়েছেন। ওই হত্যার তদন্তে নেমেই পুলিশ তার সন্ধান পায়।
পুলিশ জানায়, যখন আমরা হত্যার রহস্য উদঘাটনে ওই বাড়িতে যাই, তখন পাশের একটি কবর থেকে সাহায্যের জন্য এক ব্যক্তির চিৎকার শুনতে পাই। পরে আমরা সেটি কোদাল দিয়ে খুঁড়ে একটি অস্থায়ী বেজমেন্টের সন্ধান পাই। তারপর সেখান থেকে আটকে থাকা বৃদ্ধকে টেনে বের করা হয়।
তারপর তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে পুলিশ। যেখানে উদ্ধারের পুরো ঘটনাটা দেখা যায়।
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (১৩ মে)। উদ্ধারকৃত ব্যক্তি সচেতন অবস্থায় ছিল এবং তার ঘাড়ে ক্ষত ছিল।
পুলিশ পরে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে মলদোভার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহর উস্তিয়ায় থেকে এক কিশোরকে (১৮) আটক করে।
পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে বিভ্রান্তিকর উত্তর দেয়। এতে পুলিশের সন্দেহ বেড়ে যাওয়ায় প্রমাণ খোঁজার জন্য তার বাড়িতে তল্লাশি চালায়।
পুলিশ ধারণা করছে রোববার বা সোমবার রাতে ৭৪ বয়সী বৃদ্ধ নারীকে ওই কিশোরই হত্যা করেছে।
ওই কিশোরকে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার জন্য রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। বলা হচ্ছে, এসব বিষয় প্রমাণিত হলে তাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সম্মুখীন হতে হবে।
মালয়েশিয়ার থানায় সন্দেহভাজন জেআই হামলায় দুই কর্মকর্তা নিহত
মালয়েশিয়ায় কট্টরপন্থী জেমাহ ইসলামিয়াহ (জেআই) গ্রুপের সদস্য বলে সন্দেহ করা এক ব্যক্তি দেশটির একটি থানায় হামলা চালিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য জোহরের উলু তিরাম শহরে শুক্রবার (১৭ মে) ভোরে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
মালয়েশিয়ার ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ রাজারুদ্দিন হোসেন নিউ স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকাকে বলেছেন, হামলার সময় ওই থানার কর্তব্যরত পুলিশ এক দম্পতির সঙ্গে দুই বছরের পুরনো একটি মামলা নিয়ে কথা বলছিলেন। এমন সময় সন্দেহভাজন ব্যক্তি ছুরি হাতে তাদের পেছনে এসে দাঁড়ায়।
সন্দেহভাজন ব্যক্তি এক অফিসারকে ছুরিকাঘাত করে তার সার্ভিস রিভলভারটি কেড়ে নেন। এরপর ওই রিভলভার দিয়ে আরেক অফিসারকে গুলি করেন।
রাজারুদিন বলেন, তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন যে, ছুরিকাঘাতে আহত পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে ওই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
রাজারুদিন মালয়েশিয়ার মিডিয়াকে বলেছেন, পুলিশ থানার থেকে অনেক দূরে সন্দেহভাজন ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জেআই-সম্পর্কিত অসংখ্য জিনিসপত্র খুঁজে পেয়েছে। তার পরিবারের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ আরও বলেছে, হামলাকারীর ৬২ বছর বয়সি বাবা একজন পরিচিত জেআই সদস্য।
মালয় মেইল নিউজ রাজারুদিনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, দেশটির সিঙ্গাপুরের সীমান্তবর্তী রাজ্যে বসবাসরত জেআই-এর অন্যান্য সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জেমাহ ইসলামিয়াহ হলো আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট একটি গোষ্ঠী, যার লক্ষ্য ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে কট্টরপন্থী ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
২০০০ সালে জানা যায়, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া এবং ফিলিপাইনে জেআই-এর সদস্য রয়েছে।
২০০২ সালের অক্টোবরে বালিতে হামলাসহ একাধিক মারাত্মক বোমা হামলার পরিকল্পনা করেছে গোষ্ঠীটি।
মালয়েশিয়ায় গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতার নাম নুরদিন মুহাম্মাদ। নূরিন জোহরের বাসিন্দা এবং তিনি উলু তিরামে একটি ধর্মীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে জানা গেছে।
এই জেআইকে নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকায় রেখেছে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর।
মুম্বাইয়ের বিলবোর্ডের মালিক ভাভেশ গ্রেফতার
ভারতের মুম্বাইতে বিলবোর্ডের দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত পরে ওই বিলবোর্ডের মালিককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।
জি নিউজ জানিয়েছে, বিশাল বিলবোর্ডটি নিচে পড়ে একটি পেট্রোল স্টেশনে ওই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এদিকে, গত সোমবারের ওই দুর্ঘটনার ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে আরও ৭৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ভারতের উপকূলীয় এই মেগাসিটিতে প্রবল বৃষ্টি এবং ধুলোঝড়ের সময় বিশাল বিলবোর্ডটি ধসে পড়ে।
পুলিশ বিলবোর্ডের মালিক ভাভেশ ভিন্দের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছে। বিলবোর্ড ধসের পর ভাবেশ মুম্বাই ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
মুম্বাই পুলিশের যুগ্ম কমিশনার লক্ষ্মী গৌতম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার (১৬ মে) গভীর রাতে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার উত্তরে পর্যটন শহর উদয়পুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’
গৌতম বলেছেন, ‘ভাভেশকে উদয়পুরের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলগুলো তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিল এবং অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে খুঁজে পেয়েছে।’
গত সোমবার মুম্বাইয়ে ঝড়ের কারণে গাছ উপড়ে পড়েছে এবং শহরটির আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় সংক্ষিপ্ত বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং শহরের ট্রেন নেটওয়ার্ক ব্যাহত হয়েছে।
ঝড়ের কারণে মুম্বাইয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও সাময়িকভাবে ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
এই সপ্তাহের শুরুতে মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে মুম্বাইয়ের সব বিলবোর্ডের অডিট করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।
ফের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়া একটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে বলে শুক্রবার (১৭ মে) জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী।
রয়টার্স জানিয়েছে, দেশটি রাশিয়ায় অস্ত্র রপ্তানি করছে এমন জোরালো অভিযোগ কিম জং উনের ক্ষমতাধর বোন অস্বীকার করার কয়েক ঘণ্টা পরেই এই ব্যালিস্টিক ক্ষেণাস্ত্রের পরীক্ষার খবর জানায় সিউল।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ বলেন, ‘জাপান সাগর নামে পরিচিত পূর্ব সাগর অভিমুখে এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া।’
সিউলের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জাপানি সম্প্রচার কেন্দ্র এনএইচকে জানিয়েছে, ‘ক্ষেপণাস্ত্রটি স্বল্প-পাল্লার বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং সেটি ইতিমধ্যেই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।’
এদিকে কিম ইয়ো জং বলেছেন, ইউক্রে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য উত্তর কোরিয়া রাশিয়ায় অস্ত্র পাঠাচ্ছে এমন তথ্য প্রচার করে জনমতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে সিউল ও ওয়াশিংটন।
তার এই মন্তেব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়।
২০২২ সালের এপ্রিলে উত্তর কোরিয়া স্বল্প-পাল্লার একটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর পিয়ংইয়ংয়ের এটি হচ্ছে সর্বশেষ ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা।
তখন পরীক্ষা চালানো ক্ষেপণাস্ত্রটি দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের কাছে আঘাত হেনেছিল।
অন্যদিকে, মস্কোতে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র রপ্তানির অভিযোগ তদন্ত করছে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্যানেল।
গত মার্চে সিউল দাবি করেছিল যে, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য প্রায় ৭ হাজার কন্টেইনার অস্ত্র রাশিয়ায় পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া।