নাগরিক তালিকায় নাম না থাকার গুজবে আত্মহত্যা আসামের নারীর
ভারতের নাগরিক তালিকায় নিজের নাম নেই জেনে কুয়াতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন আসামের ৫০ বছর বয়সী এক নারী। কুয়া থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে তুলে এনে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছিল তার স্বজন ও প্রতিবেশিরা। কিন্তু, হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তার।
শনিবার সকাল থেকেই আশঙ্কা ও ভীতি কাজ করছিল আসামের লোকজনের মনে। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি মিলবে কিনা, তা নিয়ে চলছিল জল্পনা-কল্পনা। ভিতরে ভিতরে দিশেহারা হয়ে পড়ছিলেন অনেকেই। আর এর সাথে পাল্লা দিয়ে ছড়াচ্ছিল গুজব। আর মূলত সেই গুজবের শিকার হয়েই প্রাণ গেল আসামের এই নারীর।
শনিবার আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশ হতেই লোকমুখে মহিলা শুনলেন তালিকায় তার নাম নেই। তখন নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। তারই প্রতিক্রিয়া হিসেবে কুয়ায় ঝাঁপ দেওয়া।
তবে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জাতীয় নাগরিক তালিকায় নাম ছিল সোনিতপুর জেলার শায়েরা বেগম নামে ওই নারীর। ছিল তার স্বামী এবং সন্তানের নামও। কিন্তু, নাগরিক হিসেবে নাম থাকার সুসংবাদ উদযাপন করে যেতে পারলেন না তিনি।
এধরনের ঘটনা গত কিছুদিন ধরে বেশ নিয়মিত ঘটছে আসামে। জনমনে শঙ্কা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে নাগরিক তালিকায় নাম থাকা, না-থাকা নিয়ে।
এদিকে, আরো অনেকের সঙ্গে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে প্রাক্তন সেনাপ্রধান মোহাম্মদ সানাউল্লাহর নাম। এক সময় কাশ্মীর-মণিপুরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করেছিলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ৩০ বছর দেশের হয়ে লড়েছি। বিনিময়ে এই পেলাম আমি। তবে, দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা আছে আমার। সুবিচার পাব বলে আশা করছি। প্রশাসন জানিয়েছে, যাদের নাম বাদ পড়েছে তাদের বিদেশি বলে আখ্যা দেওয়া হবে না। অথচ দেশের নাগরিক হিসেবেও বিবেচিত হবেন না তারা। তাহলে তাদের ঠিক কী বলা হবে?
এমন প্রশ্নই ঘুরছে আসামের স্থানীয় অধিবাসীদের অনেকের মনে।