চিকিৎসা খরচ মেটাতে দারিদ্র্যসীমায় চলে যাচ্ছে ১০ কোটি মানুষ



সেন্ট্রাল ডেস্ক ২

  • Font increase
  • Font Decrease
বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী এখনও সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার বাইরে রয়ে গেছে। চিকিৎসা খরচ মেটাতে প্রতি বছর বিপুল জনগোষ্ঠী দরিদ্র্য হয়ে পড়ছে। বর্তমান বিশ্বে ৮০ কোটি মানুষ তাদের পারিবারিক বাজেটের কমপক্ষে দশ ভাগ অর্থ নিজেদের স্বাস্থ্য সেবায় ব্যয় করছে। অসুস্থ শিশু বা পরিবারের সদস্যদের চিকিত্সায় এই খরচ করছে তারা। এসব পরিবারের মধ্যে কমপক্ষে ১০ কোটি মানুষ এই চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে চরম দারিদ্র্য সীমায় চলে যাচ্ছে। সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার অবস্থা নিয়ে ‘ট্রাকিং ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজ: ২০১৭ গ্লোবাল মনিটরিং’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে। বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) যৌথ ভাবে এই প্রতিবেদনটি ১২ ডিসেম্বর সার্বজনীন স্বাস্থ সেবা দিবস উপলক্ষ্যে জাপানের টোকিও থেকে প্রকাশ করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিবছর বিপুল জনগোষ্ঠী মৌলিক চিকিত্সা সেবা গ্রহণের জন্য যে ব্যয় করছে তাতে অনেকেই দারিদ্র্যসীমায় নেমে আসছে। কেননা স্বাস্থ্য সেবার খরচের বড় অংশ তাদের নিজেদের পকেট থেকে ব্যয় করতে হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের দারিদ্র্যের মাপকাঠি অনুযায়ী, দিনে অন্ততপক্ষে ১ দশমিক ৯০ ডলার (মাত্র দেড়শ টাকা) আয় করতে পারে না তাদেরকে দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী দরিদ্র্য মানুষদের স্বাস্থ্য খাতে খরচের কারণে প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। ফলে এই দশ কোটি মানুষ প্রতিবছর গড়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেবিয়াসেস বলেছেন, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষ অতিপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা হতে বঞ্চিত, এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। অসচ্ছল হলেও সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার আওতায় সবাইকে নিয়ে আসতে হবে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম উল্লেখ করেছেন, প্রতিবেদনে এই বিষয়টি পরিস্কার যে, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার জন্য জরুরি ভিত্তিতে যদি আমাদের প্রচেষ্টাকে না বাড়াই সেক্ষেত্রে শুধু স্বাস্থ্য খাতেই নয়, দারিদ্র্য বিমোচনে আমাদের লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব হবে। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ ছাড়াও মানুষের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এজন্য প্রতিটি দেশের স্বাস্থ্য খাতের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। প্রতিবেদনে কিছু সুখরবও মিলেছে। এতে ২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। তাদের মাঝে টিকাদান এবং পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ, এইচআইভির চিকিত্সা, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কীটনাশকযুক্ত মশারি ব্যবহার বেড়েছে। স্বাস্থ্য খাতে অর্জনগুলো উল্লেখযোগ্য হলেও এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং এশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবায় অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে। তবে এ অঞ্চলে সাধারণ স্বাস্থ্য সেবা যেমন, পরিবার পরিকল্পনা, শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অনেক এগিয়েছে। প্রয়োজনীয় আর্থিক সুরক্ষার অভাবে এসব অঞ্চলের অনেক পরিবারকে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণে নিজেদেরকেই ব্যয় করতে হয়। এ ধরনের চ্যালেঞ্জ পূর্ব এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও ইউরোপের মতো সমৃদ্ধ দেশেও দেখা যায়। যেখানে পরিবারগুলোর খরচের ১০ ভাগের বেশি অর্থ স্বাস্থ্য সেবায় ব্যয় করতে হচ্ছে এবং এই জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও অসমতা রয়েছে। দেশগুলোর স্বাস্থ্য সেবায় যে ব্যয় করে তার সুবিধাভোগী তুলনামূলক ধনীরা। উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর নিম্ন আয়ের দরিদ্র ৫ ভাগ পরিবারের মাত্র ১৭ ভাগ মা ও শিশু মৌলিক ৬টি স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। অন্যদিকে অবস্থাসম্পন্ন শীর্ষ ৫ ভাগ পরিবারের ৭৪ ভাগ মা ও শিশু এই সুবিধা পাচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজির লক্ষ্য অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু সেবাই নয়, এজন্য আর্থিক ঝুঁকি মোবাবেলা, মানসম্পন্ন অপরিহার্য স্বাস্থ্য সেবাগুলো নিশ্চিত করা, সকলের জন্য মানসম্পন্ন প্রয়োজনীয় ঔষুধ সাশ্রয়ী মূল্যে এবং প্রয়োজনীয় টিকা পাবার ব্যবস্থা করতে হবে।
   

হারানো ক্লিশচিভকা পুনরুদ্ধার করেছে রাশিয়া



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাশিয়া বাহিনী বুধবার (২২ মে) ক্লিশচিভকা পুনরুদ্ধার করেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, এই ক্লিশচিভকা পূর্ব ফ্রন্টের মুষ্টিমেয় গ্রামগুলোর মধ্যে একটি, যেটি ইউক্রেন ২০২৩ সালে পাল্টা আক্রমণে হস্তগত করেছিল।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন মরিয়াভাবে প্রয়োজনীয় মার্কিন এবং ইউরোপীয় অস্ত্র সরবরাহের জন্য অপেক্ষা করছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাশিয়া বাহিনী সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তীব্র হামলা চালিয়ে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত পূর্বে তাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য লাভ করেছে।

ক্লিশচিভকা শিল্প ডোনেটস্ক অঞ্চলে অবস্থিত, যেটিকে ক্রেমলিন ২০২২ সালের শেষের দিকে সংযুক্ত করার দাবি করেছিল।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী গত দুই সপ্তাহে তীব্র চাপের মধ্যে রয়েছে। কারণ, তারা রাশিয়ার ভয়াবহ হামলার মুখে খারকিভ অঞ্চলে সেনা ও গোলাবারুদের সংকংকটে ভুগছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘দক্ষিণ ফ্রন্টের সেনারা পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের ক্লিশচিভকা গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে।’

রাশিয়ান সেনারা ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে ক্লিশচিভকাকে দখল করেছিল। কিন্তু, ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণে সেপ্টেম্বরে সেটি হাতছাড়া হয় রাশিয়ার।

ক্লিশচিভকা ধ্বংসপ্রাপ্ত ফ্রন্টলাইন শহর বাখমুতের ঠিক দক্ষিণে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার (২১ মে) সন্ধ্যায় একটি ভাষণে সতর্ক করে বলেছেন, ‘ফ্রন্টলাইনের অবস্থা অত্যন্ত কঠিন।’

;

ভিয়েতনামের নতুন প্রেসিডেন্ট তো লাম



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভিয়েতনামের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির জননিরাপত্তামন্ত্রী তো লাম। ভিয়েতনামের পার্লামেন্ট বুধবার (২২ মে) তাকে এ পদে নিয়োগ দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, এর মধ্য দিয়ে পরবর্তী সময়ে ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে লাম এক ধাপ এগিয়ে থাকলেন।

গত সোমবার ভিয়েতনামের জাতীয় পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সাবেক ডেপুটি ত্রান থান মানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এরপর বুধবার লামকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো।

গত সপ্তাহে ক্ষমতাসীন লামকে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করে কমিউনিস্ট পার্টি। এর পর লামকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য পার্লামেন্টে গোপন ব্যালটে ভোট হয়। এ পদের জন্য তিনি একমাত্র প্রার্থী ছিলেন। পার্লামেন্ট সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে তাকে ভোট দিয়েছেন।

৬৬ বছর বয়সী লাম ভিয়েতনামের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালিয়েছেন। দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে তিনি এ অভিযান শুরু করলেও সমালোচকেরা মনে করেন, রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্ব চলাকালে বিরোধীদের ঠেকানোর জন্য এটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন লাম।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর লাম আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবিরাম লড়াই চালিয়ে যাবেন।

;

ইউক্রেনের ছয় শিশুকে ফিরিয়ে দিল রাশিয়া



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কাতারের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত ছয় শিশুকে ফেরত দিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাস’র বরাতে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।

তাস নিউজ এজেন্সি বুধবার (২২ মে) একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে কাতারের রাষ্ট্রদূত মস্কোতে কাতারের দূতাবাসে আপন দুই ভাইসহ ছয় থেকে ১৭ বছর বয়সি ওই শিশুদের সঙ্গে করমর্দন করছেন।

এ বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে তাস জানিয়েছে, ইউক্রেনের শিশুদের হস্তান্তর অনুষ্ঠানে রাশিয়ার শিশু অধিকার কমিশনার মারিয়া লভোভা-বেলোভা’র প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এই মারিয়া লভোভা-বেলোভা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন থেকে শিশুদের রাশিয়ায় বেআইনিভাবে নির্বাসন করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) অভিযুক্ত হয়েছেন।

যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন।

ইউক্রেন বিশ্বাস করে যে, রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণের পর থেকে প্রায় ২০ হাজার ইউক্রেনীয় শিশু এবং নাবালককে অবৈধভাবে নির্বাসন দিয়েছে, যার মধ্যে ৪০০ জনেরও কম শিশুকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা শিশুদের নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাদের দূরে স্থানান্তর করেছে।

মস্কো দাবি করেছে, এদের মধ্যে কিছু নাবালকের বাবা-মা যুদ্ধে নিহত হয়েছেন, অন্যরা যুদ্ধের শুরুতে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ইউক্রেনের এতিমখানায় ছিল, যে অঞ্চল তখন দখল করেছিল রাশিয়া।

গত বছর থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ের সঙ্গে আলোচনার পরে এই শিশুদের পারিবারিক পুনর্মিলন প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছে কাতার।

বুধবারের সফলতার পরে এই সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশা করছে উপসাগরীয় রাষ্ট্রটি।

গত মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, ইউক্রেনের ১৬ জন অসুস্থ শিশু, যাদের পূর্বে জোরপূর্বক রাশিয়ায় নির্বাসিত করা হয়েছিল, তারা কাতারে সুস্থ হয়ে উঠছে।

জেলেনস্কি বলেন, কাতারের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার জন্য শিশুরা তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হতে পেরেছে।

;

মোদিকে ‘হিটলার’ বলল কংগ্রেসও



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মঙ্গলবার (২১ মে) ‘হিটলার’ বলে আক্রমণ করেছিল তৃণমূল। এনডিটিভি জানিয়েছে, বুধবার (২২ মে) সেই পথে হাঁটলো কংগ্রেসও।

দুই দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে মোদি দাবি করেছিলেন, তার সরকারের কাজের প্রভাব হাজার বছর থাকবে। তারপরেই তার সঙ্গে হিটলারের তুলনা করে তাকে আক্রমণ করেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। মোদিকে তিনি ‘নরেন্দ্র হিটলার মোদি’ সম্বোধন করেন।

কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনতে বুধবার সংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ‘বিজেপি নেতারা সুপরিকল্পিতভাবে প্রচার করে মোদিকে ঈশ্বরের অবতার হিসাবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার মোদি নিজেও বলছেন তিনি পরমাত্মার প্রেরিত দূত। একইভাবে হিটলারের প্রচারকরা তাকে ঈশ্বরের দূত বলত। বিশ্বের সমস্ত স্বৈরতান্ত্রিক নেতাদের এটা সাধারণ লক্ষণ। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এভাবেই তারা দেবত্ব জাহির করেন।’

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মোদি বলেছিলেন, ‘যতো দিন মা বেঁচেছিলেন, ততো দিন আমার মনে হত আমি মাতৃগর্ভে জন্মেছি। কিন্তু, মা চলে যাওয়ার পরে আমি নিশ্চিত হয়েছি যে, আমাকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন। আমার মধ্যে এই যে এতো প্রাণশক্তি, তা ঈশ্বর আমাকে দিয়েছেন কোনও কাজ করিয়ে নেবেন বলে।’

এদিকে, মঙ্গলবার বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র, প্রভু জগন্নাথকে ‘মোদির ভক্ত’ বলার পর বিতর্ক তৈরি হয়। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকসহ বিভিন্ন মহল থেকে ক্ষোভ প্রকাশের পর সম্বিত বিষয়টিকে ‘মুখ ফস্কে’ বেরিয়ে গেছে বলে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।

শ্রীনতে বলেন, ‘এটা মুখ ফস্কে বেরিয়ে যাওয়া কথা নয়, বরং এটা পরিকল্পিত প্রচার। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার সময় বিজেপি একটি ছবি প্রকাশ করে, যেখানে দেখানো হয় রামলালার হাত ধরে মোদি মন্দিরে নিয়ে যাচ্ছেন। তাকে বিষ্ণু অবতার বলা হয় রামমন্দির ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। গিরিরাজ সিংও মোদিকে অবতার বলেন।’

বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত বলেছেন, ‘মোদী রামের অংশ।’ সাক্ষী মহারাজের ভাষ্যমতে, ‘রামই মোদি।’

শ্রীনতে বলেন, ‘এই একই জিনিস হিটলারের সময়েও হত। তাকেও ঈশ্বরের দূত বলা হতো। গোয়েবলস সেই প্রচার চালাতেন। উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন বলেন, তার ভেতরে দৈবশক্তি রয়েছে। গত ১০ বছরে মোদি কী কাজ করেছেন তার হিসেব না দিয়ে আগামী এক হাজার বছরের স্বপ্ন দেখানো, আসলে মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর কৌশল।’

কংগ্রেসের বক্তব্য, গত দশ বছরে উল্লেখ করার মতো কোনও কাজই করেনি মোদি সরকার। তাই, নির্বাচনে মেরুকরণকেই একমাত্র অস্ত্র করতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপি নেতৃত্বকে।

ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘আজ আমরা এর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে মোদি-অমিত শাহকে হিটলার এবং গোয়েবলসের সঙ্গে তুলনা করেছি। মোদি শুধুই সংখ্যার চমক দেখিয়ে মানুষকে ভোলাতে চেয়েছেন। কখনও বলেছেন বছরে ২ কোটি চাকরি হবে। কখনও বলেছেন, বিদেশ থেকে কালো টাকা এনে সকলের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ নগদ দেওয়া হবে। আবার নোট বাতিলের পরে সমস্যা মেটাতে ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন। এমনকি কৃষকদের সমস্যা না বুঝেই ২০২২ সালের মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার কথা বলেছিলেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় প্রথমে ‘অমৃতকাল’ এবং তারপরে ‘ভিশন-২০৪৭’-এর গল্পকথা শুনিয়েছেন।’’

ডেরেকের মতে, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ‘এসবের কোনওটাই কাজ করেছে না। তাই একেবারে হিটলারের মতো হাজার বছরের কথা শুনিয়েছেন! এ বার মানুষ মোদির মিথ্যে ধরে ফেলেছেন। তাই তার এই মিথ্যে স্বপ্নে তারা ভুলবেন না।’

;