গাজার খান ইউনিসের নুসেইরাত শরণার্থী শিবির এবং রাফায় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে নারী, শিশুসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এবং ওয়াফা নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজার রাফায় ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার মধ্যে "স্বাস্থ্য সঙ্কটে" এক কন্যাশিশুর মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, তারা নাসের হাসপাতাল কমপ্লেক্সের গণকবর থেকে শত শত মরদেহ উদ্ধার করেছেন। এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৯২টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আপাতত সেখানে তল্লাশি কার্যক্রম শেষ করেছে গাজা কর্তৃপক্ষ। মূলত তিনটি গণকবর থেকে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে চলা হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৩৮৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ৭৭ হাজার ৪৩৭ জন। অন্যদিকে ইসরায়েলের এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছেন।
আল-শিফা হাসপাতালে মিলল তৃতীয় গণকবর, ৪৯ মরদেহ উদ্ধার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আন্তর্জাতিক
ফিলিস্তিনি অবরুদ্ধ গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে তৃতীয় গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এতে ৪৯ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।
বুধবার (০৮ মে) দেশটির সরকারি মিডিয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৯ মে) সংবাদমাধ্যম আনাদুলু আজান্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আল-শিফা হাসপাতালে সন্ধান পাওয়া গণকবর থেকে এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। আরও অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় কমপক্ষে সাতটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।
মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালে তিনটি গণকবর, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে তিনটি এবং উত্তর গাজার কামেল আদওয়ান হাসপাতালে একটি গণকবর পাওয়া গেছে।
এতে আরও বলা হয়, সাতটি গণকবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫২০টি মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বর হামলা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে হামাস।
ইসরায়েলি নৃশংস হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৭৮ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক।
স্টুডেন্ট ভিসার নিয়মে আবারও পরিবর্তন আনছে অস্ট্রেলিয়া। বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগমন নিয়ন্ত্রণে এবার ভিসার আবেদন করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের জন্য সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে অস্ট্রেলিয়ার সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সঞ্চয়ের পরিমাণ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিবৃতি অনুযায়ী, যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের অবশ্যই ন্যূনতম ২৯ হাজার ৭১০ অস্ট্রেলীয় ডলারের বাংলাদেশি মুদ্রায় (২১ লাখ ৪৬ হাজার ৯২২ টাকা) সমপরিমাণ অর্থ সঞ্চিত থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই সঞ্চিত অর্থ সংক্রান্ত ব্যাংক নথি প্রদর্শন করতে হবে।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে এই সঞ্চয়ের পরিমাণ ২১ হাজার ৪১ অস্ট্রেলিয়ান ডলার থেকে বাড়িয়ে ২৪ হাজার ৫০৫ ডলার করা হয়েছিল। স্টুডেন্ট ভিসায় নতুন এই নিয়ম ঘোষণার পাশাপাশি অবৈধ পন্থায় শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে দেশটির বেশ কিছু কলেজকে সতর্ক করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ মে) থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারি বিবৃতিতে।
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলের রিও গ্রান্ডে দো সুলে রাজ্যে প্রলয়ংকরী বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০০ জনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৯ মে) সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বন্যা ও ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক অঞ্চলের বাসিন্দাদের খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এমনকি অনেক জায়গায় টেলিফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে এসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের সাহায্য চাওয়ার জন্য যোগাযোগ করার কোনো উপায় নেই।
রিও গ্রান্ডে দো সুলের সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১০০ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি এখন পর্যন্ত ১২৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন। উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনার সীমান্তবর্তী এ রাজ্যের অন্তত ৪০০টি শহর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।
রিও গ্রান্ডে দো সুলের রাজ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সকল মৃত্যুই বন্যা, ঝড় ও ভূমিধসের কারণে ঘটেছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বন্যার কারণে রাজ্যটির বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ও অসংখ্য সেতু ধসে পড়েছে। প্রবল ঝড়ের কারণে একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেন্টো গনকালভস শহরের একটি শহর রক্ষাবাঁধের আংশিক ধসে পড়েছে।
রিও গ্রান্ডে দো সুলের রাজধানী পোর্তো আলেগ্রেতে গুয়াইবা হ্রদের পাড় ভেঙে গেছে। এছাড়া পোর্তো আলেগ্রের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য সমস্ত ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
এদিকে বন্যাকবলিত অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি সরাসরি উদ্ধার অভিযান দেখেছেন। তার প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা পাওলো পিমেন্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট লুলা আবারও উদ্ধার কার্যক্রম তদারকি করতে যাবেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লুলা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।’
প্রায় ১৫ হাজার সৈন্য, অগ্নিনির্বাপক, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবীরা আটকে পড়াদের উদ্ধার এবং পরিবহন সহায়তার জন্য কাজ করছেন।
পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় পোর্তো অ্যালেগ্রের একটি অংশ গ্যাসোমেট্রো। এ শহরে বুধবারও (০৮ মে) পানি বাড়তে দেখা গেছে। এতে উদ্ধার কার্যক্রম আরও জটিল হবে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
৩০ বছর বয়সী লুয়ান পাস বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আশপাশের এলাকা দুর্গন্ধযুক্ত নদীতে পরিণত হয়েছে। কেবল পায়ে হেঁটে বা নৌকায় আপনি পার হতে পারবেন। অন্য কোনো উপায় এখানে নেই।
পোর্তো অ্যালেগ্রের আরেক বাসিন্দা আদ্রিয়ানা ফ্রেইটাস বলেছেন, আমি সবকিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব। মনে হচ্ছে সব শেষ হয়ে গেছে আমার।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রিও গ্রান্ডে দো সুলে রাজ্যের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আরও বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত আরও কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অতিবৃষ্টি ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধ প্রায় তিন বছরে পেড়িয়েছে। দীর্ঘ এই সময়ে যুদ্ধ চালিয়ে আসলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না ইউক্রেন। এ পরিস্থিতিতে নতুন একটি বিল পাস করেছে ইউক্রেন পার্লামেন্ট। আর এ বিল অনুযায়ী, এখন থেকে ইউক্রেনের কারাবন্দিরা দেশটির সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারবেন। নামতে পারবেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়েও।
বুধবার (৯ মে) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন সরকার পার্লামেন্টে একটি বিল পাস করেছে। যার ফলে দেশটির কিছু সংখ্যক কারাবন্দী যারা দেশপ্রেমী তাদেরকে সেনা বাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেয়া হবে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ব্যাপকভাবে সৈন্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছে এবং বিপরীতদিকে রাশিয়ান বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে ক্রমেই অগ্রসর হচ্ছে। মূলত এ কারণেই ইউক্রেন সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে রাশিয়া যুদ্ধের শুরুতে বন্দিদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দিয়ে আসছিল। আর ইউক্রেন এতদিন এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছিল। কিন্তু এবার সৈন্য সংকটের কারণে ইউক্রেন কে এমন বিল করতে হচ্ছে । যদিও বিলটিকে আইনে পরিণত করার আগে পার্লামেন্টের চেয়ারপারসন ভারখোভনা রাদা এবং প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে স্বাক্ষর করতে হবে।
জেলেনস্কির পার্টির প্রধান এমপি ওলেনা শুলিয়াক এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘(বিলের পক্ষে) পার্লামেন্ট হ্যাঁ ভোট দিয়েছে। খসড়া আইনটি কিছু শ্রেণির বন্দিদের জন্য সেই সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে যারা প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগদানের মাধ্যমে তাদের দেশকে রক্ষা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।’
তবে এই বন্দিদের সামরিক বাহিনীতে যোগদান হবে স্বেচ্ছায় এবং এটি শুধুমাত্র কিছু শ্রেণির বন্দিদের জন্যই উন্মুক্ত।
শুলিয়াক বলেন, যৌন সহিংসতা, দুই বা ততোধিক লোককে হত্যা, গুরুতর দুর্নীতি এবং সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তারা সামরিক বাহিনীতে সেবা করার যোগ্য নয় বলে বিবচিত হবে।
তিনি বলেন, যেসকল বন্দির সাজা ভোগের মেয়াদ শুধুমাত্র তিন বছরের কম বাকি রয়েছে তারাই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার যোগ্য। এছাড়া অন্য যে কোনও বন্দি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাইলে তাদের ক্ষমার পরিবর্তে প্যারোল মঞ্জুর করা হবে।