গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় একটি শীর্ষ সম্মেলনের জন্য বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বাহরাইনে সমবেত হচ্ছেন আরব নেতারা।
এ সম্মেলন উপলক্ষ্যে উপসাগরীয় রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা বুধবার (১৫ মে) দেশটির রাজধানী মানামায় পৌঁছাতে শুরু করেন। সম্মেলন স্থলে আরব লীগের ২২ সদস্যের পতাকা উড়ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
প্রতিবেশী সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে নভেম্বরে একটি শীর্ষ সম্মেলনের পর থেকে এই প্রথম ব্লকটি একত্রিত হলো। সৌদি আরবের সম্মেলনে জেদ্দাভিত্তিক ৫৭ সদস্যের অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
ওই বৈঠকে নেতারা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর কর্মকান্ডের নিন্দা জানিয়েছিলেন।
কুয়েতের বিশ্লেষক জাফের আল-আজমি বলেছেন, ‘৭০ বছরেরও বেশি সময় আগে ইসরায়েলের জন্মের পর থেকে পশ্চিমা জনমত ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করতে এবং তাদের ওপর করা অন্যায় বন্ধের দাবির প্রতি আরও বেশি ঝুঁকেছে।’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ইসরায়েল হামাসকে ধ্বংস করাসহ তাদের যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরে এএফপি জানায়, দক্ষিণ ইসরায়েলে ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে ১,১৭০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। এ সময় হামাস প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে।
ইসরায়েলের মতে এদের মধ্যে ১২৮ গাজায় রয়ে গেছে, যার মধ্যে ৩৬ জন মারা গেছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ধারণা।
হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে গাজাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের সামরিক প্রতিশোধে কমপক্ষে ৩৫,২৩৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
পাশাপাশি ইসরায়েলের অবরোধের কারণে ভয়াবহ খাদ্য সংকট এবং দুর্ভিক্ষের হুমকি দেখা দিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার বলেছেন, প্রায় ৫ লাখ লোককে দক্ষিণ গাজার শহর রাফাহ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আপত্তি সত্ত্বেও হামাস ব্যাটালিয়নের অবশিষ্টাংশের নির্মূল করার ওপর জোর দিচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই রাফাহ আক্রমণের সম্পূর্ণ বিরোধিতা সত্ত্বেও নেতানিয়াহু সেখানে ইসরায়েলি অভিযানে মানবিক বিপর্যয় ঘটাবে-এমন দাবি মানতে নারাজ।
এই পটভূমিতে কাতারের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তির আলোচনাকে অচলাবস্থার কাছাকাছি বলে বর্ণনা করে আজমি বলেন, ‘আরব দেশগুলোর সুর পরিবর্তিত হয়েছে।’