খাশোগির অন্তর্ধানে সুবিধা অসুবিধা



কাওসার আহমেদ
নিখোঁজ সাংবাদিক জামাল খাশোগি

নিখোঁজ সাংবাদিক জামাল খাশোগি

  • Font increase
  • Font Decrease

তুরস্ক, ইজমির থেকে: তুরস্কে নিখোঁজ খাশোগি নিয়ে বিশ্ব রাজনীতির মোড়ল দেশগুলোর মধ্যে তাপ-উত্তাপের কূটনীতি চলছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, আপাতত সৌদ আরব এই ইস্যুতে বেশ বিপাকে পড়েছে। তুরস্ক তাদের দক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়ে ঘটনার ‍মুখোশ উন্মোচন করছে। অন্যদিকে সৌদি তার মিত্রদের কাছে এ নিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়েনে পড়তে যাচ্ছে।

নিখোঁজ জামাল খাশোগি একজন পরিচিত সাংবাদিক। যিনি এক সময় বার্তা সংস্থা আল আরব নিউজ চ্যানেলের সম্পাদকীয় বিভাগের প্রধান ছিলেন। তারপর যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত থেকে সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের একজন কঠোর সমালোচনা থাকতো তার লেখায়। বিশেষ করে সৌদি রাজতন্ত্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন, ইয়েমেনে যুদ্ধ, কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ নিয়ে নিয়মিত সমালোচনামূলক কলাম লিখতেন ওয়াশিংটন পোস্টে।

২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে তাঁর সাবেক স্ত্রীর তালাক নামা ও নতুন তুর্কি বান্ধবীকে বিয়ের অনুমতিপত্র আনতে গিয়েছিলেন। এরপর সেখান থেকেই তিনি নিখোঁজ হন। তাঁর হবু স্ত্রী হাতিস চেঙ্গিস বলেন খাশোগি খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন এই জন্য যে তাঁকে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করতে হচ্ছে। তিনি খাশোগি বের না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলেন। এমনকি পরদিন সকালে কনস্যুলেট খোলার পূর্বে তিনি সেখানে উপস্থিত হন।  

ঘটনার কয়েকদিন পর তুরস্কের প্রভাবশালী জাতীয় ইংরেজি দৈনিক ‘ডেইলি সাবাহ্’ ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগির প্রবেশের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায় খাসোগী সেখানে প্রবেশ করছেন। এবং এর কয়েক ঘণ্টা আগে কয়েকটি ভিআইপি কালো গাড়ি কনস্যুলেটের সামনে আসে ও কিছু লোক ভেতরে প্রবেশ করে। কিন্তু তিনি আর বের হয়ে আসেননি। এরপরই বিশ্ব মিডিয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে তুমুল হইচই পড়ে যায়। 

তুর্কি কর্তৃপক্ষের দাবি, জামাল খাশোগিকে কনস্যুলেটে এর ভেতর হত্যা করা হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে প্রথম দিকে সৌদি কর্তৃপক্ষ নিরব ছিল। কিন্তু এখন অভিযোগ অস্বীকার করে তুরস্কের দাবি প্রত্যাখান করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুরস্কের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, খাসেগীর হাতে থাকা ‘অ্যাপল ওয়াচ’ এর মাধ্যমে প্রাপ্ত ফুটেজ-ই প্রমাণ করে খাশোগিকে ভেতরে হত্যা করা হয়েছে। প্রকাশিত একটি অডিও রেকর্ডে স্পষ্টতই আরবি ভাষায় খাশোগির কথাবার্তা ও আকুতি শোনা গেছে।

তুর্কি কর্তৃপক্ষ এটাও দাবি করেছে যে, খাশোগিকে হত্যার জন্য সৌদির ১৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ স্কোয়াড ইস্তাম্বুল এসেছিল। তারা খুব তাড়াতাড়ি তুরস্ক ত্যাগ করে বিভিন্ন দেশে চলে যায়। তারাই এ হত্যার কাজটি করে থাকতে পারে।

এদিকে গত কয়েক দশক ধরে বিশেষ করে কাতার সংকটের পর গত তিন বছরে তুরস্ক এবং সৌদি আরব, তাদের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত স্বার্থের জন্য দেশ দুটোর মধ্যকার সম্পর্ক  একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, সৌদি নাগরিক খাশোগি হত্যার পর যদি তুরস্ক তাদের দক্ষ জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার সক্ষমতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হতো তাহলে সৌদি আরবই এ ঘটনায় তুরস্কের উপর দায় চাপিয়ে দিতো। কিন্তু বিধি বাম, হিতে বিপরীত। সৌদি আরবই মনে হয় তাঁদের জালে আটকা পড়ল। সু্যোগ পেল আন্তর্জাতিক রাজনীতির ঝানু খেলোয়ার ‘এরদোয়ান’। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এর ক্ষেত্রে চিরশত্রুতা বলতে কিছু নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক উন্নয়নের সু্যোগ যেন হাতছাড়া করছে না তুরস্ক। এক্ষেত্রে এক ডিলে দুই পাখি। যাকে বলে আন্ডার মাইন ডিপ্লমেসি। আন্তর্জাতিক মহলে সৌদিকে কোনটাসা করা আর নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আঁটকে থাকা সামরিক চুক্তির অগ্রায়ন করারও সুযোগ তুরস্কের। তাই দাবার গুটি হিসাবে ব্যবহার করা ব্যর্থ ক্যু এর সাথে জড়িত আটক খ্রিস্টান ধর্ম জাজক পস্টার। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের নাগরিকের মুক্তি চাইল। মুক্তি পেল পস্টার আর খুব শিগগিরই ডলারের বিপরীতে তুর্কি লিরার মান বাড়তে শুরু করল। আঙ্কারা-ওয়াশিংটন যোগাযোগ বাড়ল।

প্রথম দিকে সৌদি আরবের মত ঘনিষ্ঠ মিত্রদের নিয়ে কথা বলতে নারাজ ছিলেন মার্কিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বিশ্লেষকদের ধারণা তুরস্কের সাথে বোঝাবুঝির পর থেকেই সৌদি ওপর ক্ষেপেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প ইতোমধ্যে বলে দিয়েছেন, এই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকলে সৌদিকে শাস্তি দেয়া হবে। অর্থনৈতিক অবরোধ আভাসও দিয়ে ফেলেছেন ট্রাম্প। এমনকি মঙ্গলবার এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তদন্ত ও তথ্যাদি চেয়ে সৌদির বাদশার সঙ্গে আলাপও করেছেন।

এদিকে সৌদি আরবও নমনীয় হয়েছে। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন (সূত্রেঃ রয়টার্স)। টেলিফোনালাপে খাশোগীর নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠনে সম্মত হওয়ায় তুরস্ককে ধন্যবাদ জানান সৌদি রাজা সালমান। বাদশাহ তুরস্কেকে ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আঙ্কারার সঙ্গে সকল ক্ষেত্রে সম্পর্ক ও সহযোগিতা শক্তিশালী করতে চায় রিয়াদ। এ সময় তুর্কি প্রেসিডেন্ট দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জামাল খাশোগি নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্রিটিশ ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রিচার্ড ব্র্যানসন ইতিমধ্যে সৌদি থেকে তার বিনিয়োগকৃত দু’টি পর্যটন প্রকল্প তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। জামালের সন্ধান চেয়ে ওয়াশিংটনসহ বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ হচ্ছে।

এমন অবস্থার মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সৌদিকে বদলে দেয়া কার্যক্রমের জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রধান প্রধান দেশের কোম্পানিগুলোর। তবে জামাল খাশোগি ইস্যুতে ইতোমধ্যে সৌদির এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন বর্জনের ডাক দিয়েছে আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম ও কোম্পানি। বিবিসি জানিয়েছে, সেই তালিকায় যোগ হতে পারে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম। এরই মধ্যে জামাল খাশোগি ইস্যুতে প্রকৃত সত্য তুল ধরার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, আইএমএফসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠন।

আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তুরস্ক আন্ডার মাইন ডিপ্লমেসি ভালই খেলছে। আন্তর্জাতিক রাজনৈতির খেলার মাঠে কিছুটা হলেও সৌদি আরবকে বেকায়দায় ফেলেছে। নিজের দৃড় অবস্থান, সহযোগিতার মানসিকতা আর দক্ষ নিরাপত্তা, কৌশলী কূটনীতির সদ্ব্যবহার দেখালো তুরস্ক।  

   

ইরানে দুই নারীসহ ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। শনিবার (১৮ মে) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন। টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, ইরানের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের উর্মিয়া কারাগারে মাদকের বিভিন্ন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় পাঁচজন পুরুষের সঙ্গে দুজন নারীর মৃত্যদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পারভীন মোসাভি নামের দুই সন্তানের এক জননীও রয়েছেন।

এ ছাড়া নিসাপুরে ফাতেমিহ আব্দুল্লাহি নামের অপর এক নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিজের স্বামীকে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে।

আইএইচআর জানিয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ইরানে ২২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসেই অন্তত ৫০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিলে পার্সিয়ান নববর্ষ এবং রমজানের ছুটির শেষে একটি নতুন ঢেউ শুরু হয়েছিল। তখন থেকে ১১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন নারী রয়েছেন।

এদিকে আগামীকাল সোমবার (২০ মে) এক ইহুদি যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে ইরান। ইরান হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম আরভিন ঘহরেমানি। তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া কামরান শেখেহ নামের এক কুর্দি নাগরিকও একই ঝুঁকিতে রয়েছেন।

;

রাশিয়ার বিরুদ্ধে খারকিভ হামলার অভিযোগ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে নতুন করে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। খারকিভের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দুটি শহরে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে রুশ বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের। শনিবারের (১৮ মে) এসব হামলায় শিশুসহ অন্তত ছয় বেসামরিক আহত হয়েছে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের প্রসিকিউটরেরা জানিয়েছেন, খারকিভের আঞ্চলিক রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকায় রাশিয়ার বিমান হামলাকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করছেন তারা। রুশ সীমান্ত থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভোভচানস্ক শহরে হামলায় ৬০ বছর বয়সী এক নারী নিহত হয়েছে। এ ছাড়া তিন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছে।  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার পুনঃআক্রমণ মোকাবিলায় তার দেশের সেনাদের সাফল্যের কথা জানিয়েছেন। এক ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, ‘খারকিভ অঞ্চলে আরও শক্ত অবস্থানে রয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এ ছাড়া পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের চাসিভ ইয়ার শহরের চারপাশে রুশ হামলা প্রতিহত করা হচ্ছে। আমাদের সেনারা রাশিয়ার ২০টিরও বেশি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে।’

এদিকে বেসামরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। দেশটির বেলগোরোদ অঞ্চলে ইউক্রেনের ছোঁড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। 

গত সপ্তাহে বেলগোরোদে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে  ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি রাশিয়ার। শনিবার বেলগোরোদের আঞ্চলিক গভর্নর ভ্যাচেস্লাভ গ্ল্যাদকভ জানান, ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় পেট্রোভকা গ্রামে একজন নারী ও একজন পুরুষ আহত হয়েছেন।

;

নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৭



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ। এ যুদ্ধে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী গাজা ভূখণ্ডের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

এছাড়া উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েল বিমান হামলা চালানোর পর অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন।

রোববার (১৯ মে) এই তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নুসেইরাতের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।

আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

;

বৈশ্বিক প্লাস্টিক দূষণের তালিকায় কোক-পেপসি শীর্ষে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্র্যান্ডেড প্লাস্টিক দূষণের অর্ধেকেরও বেশির জন্য দায়ী ৫৬টি কোম্পানি। ৫ বছর ব্যাপী চালানো নতুন গবেষণায় প্লাস্টিক বর্জ্যের পেছনে দায়ী কোম্পানিগুলি নথিভুক্ত করেছে৷

গবেষণায় দেখা গেছে, সমস্ত ব্র্যান্ডেড প্লাস্টিক দূষণের ২০ ভাগের জন্য মাত্র ৪টি কোম্পানী দায়ী। এর মধ্যে শীর্ষ কোম্পানিগুলো হলো— কোকা-কোলা (১১ শতাংশ), পেপসিকো (৫ শতাংশ), নেসলে (৩ শতাংশ) এবং ড্যানোন (২ শতাংশ)।

ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায়, ৫ বছরের ধরে ৮৪টি দেশে প্লাস্টিক দূষণের উপর পরিক্ষা নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে 'সায়েন্স অ্যাডভান্স' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি হয়।


ডালহৌসির স্কুল ফর রিসোর্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের অধ্যাপক টনি ওয়াকার বলেছেন, "বিশ্বের কয়েকটি বৃহত্তম কর্পোরেশন তারা গ্রহের প্রতিটি দেশে পৌঁছে গেছে।"

তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্লাস্টিক 'নিরীক্ষা' পরিচালনা করেছেন। তারা সতর্কতার সাথে সমুদ্র সৈকত, পার্ক, নদী এবং অন্যান্য এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে প্লাস্টিকের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করেছেন। তারা প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রতিটি অংশ পরীক্ষা করে দৃশ্যমান ব্র্যান্ড বা ট্রেডমার্ক চিহ্নিত করেছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ব্রেক ফ্রি ফ্রম প্লাস্টিক নামের সংস্থাটি ১ হাজার ৫শ ৭৬টি নিরীক্ষা সমন্বয় করেছে।

গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে প্লাস্টিকের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে, ২০০০ সালে ২০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন থেকে থেকে ২০১৯ সালে ৪০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয়েছে।

একটি বিবৃতিতে, কোকা-কোলা বলেছে ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্যাকেজিং ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে কোম্পানিটি ৫০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান ব্যবহার করতে চায় প্যাকেজিংয়ের জন্য।

পেপসিকো জানিয়েছে, কোম্পানিটি প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় একটি বৈশ্বিক নীতি কাঠামোর পক্ষে এবং এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে কাজ করছে যেখানে প্লাস্টিক পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব।

কোম্পানি আরও জানায়, "প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য একটি বড় এবং বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক নীতি কাঠামোর পক্ষে কাজ করছে। এবং তাদের অন্যদেরও এটি করার সুযোগটি কাজে লাগাতে আহ্বান জানিয়েছে তারা।"

এক বিবৃতিতে, নেসলে স্বীকার করেছে যে প্লাস্টিক দূষণ একটি "গুরুতর সমস্যা এবং এটি সমাধানের জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি" - এবং এটি বিশ্বব্যাপী আইনিভাবে বাধ্যতামূলক নিয়ন্ত্রণকে সমর্থন করে৷ এটি ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা এবং লাতিন আমেরিকায় বর্জ্য সংগ্রহ, বাছাই এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য স্কিমগুলি বিকাশের জন্য নেসলের চলমান প্রকল্পগুলিরও উল্লেখ করেছে।

এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য জানায়নি ফ্রান্সভিত্তিক বহুজাতিক খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ড্যানোন।

ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সায়েন্সের অধ্যাপক প্যাট্রিসিয়া করকোরান বলেছেন, বিশ্বব্যাপী করা গবেষণাটি "অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ"।

করকোরান গ্রেট লেকের সৈকতে প্লাস্টিক দূষণ পরীক্ষা করার অনুরূপ গবেষণায় কাজ করেছে। গবেষণায়, "খাদ্য এবং পানীয়ের বর্জ্যই সেখানে রয়েছে - এটি কোনও আশ্চর্যের বিষয় নয় বলে তিনি জানিয়েছেন"।

তিনি বলেন, "আপনি যদি সবচেয়ে বড় উৎপাদককে হাইলাইট করেন...তাহলে হয়তো এটি কোম্পানির সচেতনতা বাড়াবে এবং কোম্পানি এটি সম্পর্কে কিছু করতে পারে।"

সমীক্ষায় দেখা গেছে যে উদ্ধারকৃত প্লাস্টিক আইটেমগুলির ৫০ শতাংশেরও বেশি সূর্য, পানি এবং বাতাসের সংস্পর্শে আসার পরে কোনও স্পষ্ট ব্র্যান্ডিং এর লেবেল ছিল না।

গবেষকরা বলেছেন যে তাদের গবেষণায় প্লাস্টিক পণ্য এবং প্যাকেজিংয়ের উৎপাদন এবং লেবেলিংয়ের বিষয়ে বৃহত্তর স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তারয়েছে, যাতে দূষণ কারা করছে তা বের করা সহজ হয় এবং সংস্থাগুলিকে জবাবদিহি করা যায়।

তারা একটি আন্তর্জাতিক, ওপেন-অ্যাক্সেস ডাটাবেস তৈরির জন্য যুক্তি দেখান, যেখানে কোম্পানিগুলি তাদের পণ্য, প্যাকেজিং এবং ব্র্যান্ডগুলি পরিবেশে পরিমাণগতভাবে ট্র্যাক করতে এবং রিপোর্ট করতে বাধ্য।

কানাডার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী স্টিভেন গিলবিউল্ট একটি নতুন রেজিস্ট্রি ঘোষণা করেছিলেন, যেখানে কোম্পানিগুলিতে কতটা প্লাস্টিক উত্পাদিত হচ্ছে এবং এটি কোথায় গিয়ে শেষ হবে তার বিশদ সরবরাহ করতে হবে।

গিলবিউল্ট কানাডার নতুন প্লাস্টিক রেজিস্ট্রির পরিকল্পনা এবং অটোয়াতে জাতিসংঘের প্লাস্টিক দূষণ চুক্তির আলোচনার বিশদ বিবরণ সম্পর্কে বলেছেন। তিনি আলোচনার লক্ষ্য ১৭০টিরও বেশি দেশের জন্য প্লাস্টিক দূষণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তি নিয়ে আসার পরামর্শও দিয়েছিলেন।

;