বৃষ্টিস্নাত জয়পুর-আগ্রার পথে



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

উত্তর ভারত ঘুরে: আমরা আগ্রায় প্রবেশ করি তুমুল বৃষ্টিপাতের মধ্যে। সারা উত্তর ভারতই তখন বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে। মধ্য সেপ্টেম্বরের বর্ষণে কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতা ও বন্যার প্রাদুর্ভাব। বৃষ্টিভেজা সড়ক পথে রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে আগ্রায় এসেই মুখোমুখি হলাম প্রবল বর্ষণের।

মধ্যযুগে ভারতের রাজধানী আগ্রা নানা কারণে এখনো গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত মুঘল স্থাপনায় উজ্জ্বল হয়ে আছে প্রাচীন আগ্রা। বাগিচা, প্রাসাদ ও দূ্র্গের নগরীতে ঢুকতেই গা ছমছমে ইতিহাসের পরশ পেলাম।

রাজনৈতিক ও যোগাযোগের দিক থেকে অত্যন্ত কৌশলগত স্থান আগ্রায় প্রবেশের অনেকগুলো পথ রয়েছে। সম্ভবত এ কারণেই মধ্য এশিয়া থেকে আগত মুঘল বিজেতারা দিল্লি জয় করলেও রাজধানী বানিয়েছিলেন আগ্রাকে। আগেকার মুসলিম শাসকদের হাতে গড়া রাজধানী দিল্লিকে ছেড়ে আগ্রায় ক্ষমতার মূলকেন্দ্র ও রাজধানী তৈরির পেছনে অনেকগুলো বিবেচনার মধ্যে আগ্রার কৌশলগত যোগাযোগ সুবিধাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল।

 

আগ্রা থেকে ভারতের সব দিকে যাওয়ার পথ সুগম। সব জায়গা থেকে আগ্রায় আসাও সহজ। উত্তর প্রদেশের অংশ হলেও আগ্রা দিল্লির কাছেই। পাঞ্জাব থেকে সন্নিকটে। রাজস্থান, গুজরাত হয়ে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের দিকেও পথ উন্মুক্ত। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র থেকেও আসা যায় আগ্রায়। আর লক্ষ্ণৌ, আলিগড় হয়ে বিহারের পাটনা হয়ে বাংলায় যাতায়াতের সুবিধাও আগ্রার রয়েছে।

এক সময়ে ভারতের রাজধানী বা এক নম্বর শহর আগ্রা এখন উত্তর প্রদেশের চতুর্থ আর সারা ভারতের ২৪তম গুরুত্বপূর্ণ শহর। উত্তর ভারতের হিন্দি বলয়ের এই শহরের দ্বিতীয় ভাষা উর্দু এবং জনসংখ্যার ৮৫% ভাগ হিন্দু। ১০% মুসলমান আর বাকী জনসংখ্যা জৈন, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান। ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত হিন্দি পত্রিকা ‘দৈনিক জাগরণ’র প্রধান দফতর আগ্রায়, যদিও উত্তর ভারতের অন্যান্য শহর থেকে পত্রিকাটি প্রকাশিত হয় একযোগে।

আগ্রাকে বলা যায় উত্তর ভারত বা হিন্দি বলয়ের অন্যতম প্রধান ও প্রাচীন কেন্দ্র। মুঘল স্থাপনা ছাড়াও এখানে আছে ক্যান্টনমেন্ট, বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থাপনা। আগ্রার প্রধান দ্রষ্টব্য তাজমহল, আগ্রার দূর্গ ও সম্রাট আকবরের রাজধানী ফতেহপুর সিক্রি ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিজেট বা বিশ্বসভ্যতার অংশ। এগুলো ছাড়াও ছোট-বড় আরও বহু দর্শনীয় স্থান, বাগ-বাগিচা-উদ্যান ছড়িয়ে আছে আগ্রার সর্বত্র।

ভারতের প্রধান পযটন ডেসটিনেশন বা ভ্রমণ এলাকাকে বলা হয় গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল বা সোনালি ত্রিভুজ, যার একবাহু দিল্লিতে, আরেক বাহু জয়পুরে এবং অন্য বাহু আগ্রায় মিশেছে। ত্রিভুজের মতো এই তিনটি এলাকাতেই ভারতের সিংহভাগ বিদেশি পযটক ভ্রমণ করেন।

জয়পুর থেকে আসার কারণে আমরা পথে পেয়েছি উত্তর প্রদেশের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, যার মধ্যে রয়েছে মথুরা ও বৃন্দাবন। জয়পুর-আগ্রা সুপার হাইওয়ে ধরে রিজার্ভ কারে চলতে চলতে সুবিধা মতো থেমে থেমে এগিয়েছি আমরা। পথের ধারে রাজস্থানী ধাবায় চা, নাস্তা করে দেখেছি ঊষর মরুময় প্রান্তরে সবুজের সমাবেশ। রঙ-বেরঙের শাড়ি ও ওড়নায় ঢাকা রাজস্থানের গ্রাম্য নারীদের। বিশালাকায় পাগড়ি মাথায় রাজস্থানের রাজপুত বা জাট। কখনো ময়ূরের সমাবেশ বা উটের বহর।

গ্রামের দিকে পুরুষদের সবারই বড় পাগড়ি ব্যবহারের রহস্য বুঝতে গিয়ে দেখলাম, এর সঙ্গে ঐতিহ্য ও বাস্তব প্রয়োজন মিশে আছে। রাজস্থানের মরুময় ও ঊষর ভূমি থেকে প্রচুর ধুলাবালি বাতাসে ছড়িয়ে থাকে। বিরাট পাগড়িতে নাক, মুখ, মাথা, শরীর ঢেকে ফেলার সুবিধা নিয়ে থাকেন স্থানীয় অধিবাসীরা।

জয়পুর থেকে আগ্রা যেতে একটি পাহাড়ের ভেতরের সংক্ষিপ্ত ট্যানেল পেরিয়ে ধরতে হয় দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের মাঝ দিয়ে প্রসারিত সুপার হাইওয়ে। ২০০ মাইলের এই দূরত্ব নৈসর্গিক দৃশ্যে ভরপুর। পথের পাশে হাট, বাজার ও ছোট ছোট শহর। আর আছে প্রতিমা ও পুজার মঞ্চ তৈরির কুটির শিল্প। মার্বেল ও গ্রাফাইট পাথর কেটে কেটে বানানো হয় মনোরম প্রতিমূর্তি। যোধপুর, কিষাণগড়, জয়সালমের থেকে আসে বাহারি পাথর।

রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশের সীমানায় হিন্দু তীর্থক্ষেত্র মথুরা ও বৃন্দাবন জয়পুর-আগ্রা সড়কের পাশেই। ফলে পুজার সামগ্রী ও প্রতিমা বানানো আর বিক্রির জমজমাট বাজার চারপাশে। হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগ স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে এই নির্দিষ্ট স্থানে।

সড়কের রাজস্থান অংশ পেরিয়ে উত্তর প্রদেশে ঢুকতেই হিন্দি ভাষা, পোষাক, পরিচ্ছদে পার্থক্য দেখা গেলো। রাজস্থানের হিন্দিতে গুজরাতি, মাড়োয়ারি ও পাঞ্জাবি টান বদলে গেলো। উত্তর প্রদেশের হিন্দিতে পাওয়া গেলো উর্দু আর বিহারি হিন্দির প্রভাব। হিন্দি ভাষার অনেকগুলো উপভাষা ও কথ্যরূপ আছে। যার মধ্যে মৈথিলি, ভোজপুরি, ব্রজবুলি ইত্যাদি অন্যতম। বিশাল উত্তর ভারতের হিন্দি বলয়ে চর্চিত হচ্ছে হিন্দি ভাষার একেকটি ধারা।

মথুরা ও বৃন্দাবনে এক চক্কর দিতে গিয়ে পেলাম পেয়ারিলালকে। অবসর নিয়ে ‘ফৌজি ধাবা’ নামে জলপানির দোকান চালাচ্ছেন তিনি। চাকরি করেছেন কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামেও। ভাঙা ভাঙা বাংলা জানেন। ঢাকা ও বাংলাদেশের অনেক কথা বললেন তিনি।

আমাদের মূল আকর্ষণ যেহেতু আগ্রা, তাই পথের অন্যত্র বেশি সময় দেওয়া যায় নি। এমনিতেই বৃষ্টি পিছু নেওয়ায় গাড়ির গতি কমিয়ে রেখেছে ড্রাইভার সুরজিৎ। এসিতে বসে গাড়ির এফএম রেডিওতে রাজস্থানী কান্ট্রি মিউজিক শুনতে শুনতে চলে এলাম আগ্রার কাছাকাছি। আগ্রার ৩০/৪০ মাইল আগেই পথে পড়লো বিখ্যাত ফতেহপুর সিক্রি। দিল্লি হয়ে এলে মূল আগ্রা শহর আগে পড়তো। আমরা বিপরীত দিক দিয়ে আসায় এ সুবিধা পেলাম। ভোরে রওয়ানা দিয়ে ১০টা নাগাদ ফতেহপুরের সামনে পৌঁছে গেলাম মূল সড়ক থেকে ডানে মোড় দিয়ে পাঁচ মিনিটের দূরত্বে। যদিও হাইওয়ে থেকে ফতেহপুরের প্রাচীর ঘেরা দূর্গ-সদৃশ্য বিশালাকায় নগরী দেখা যায়, তথাপি এতে প্রবেশ করতে হয় মূল সড়ক থেকে গলি পথ ধরে খানিকটা ভেতরে এসে।

আমরা ঠিক করেছি দুপুরটা এখানে কাটিয়ে বিকেলে যাবো বিশ্বের বিস্ময় তাজমহলে। তারপর রাতে বিশ্রাম নিয়ে পরদিন অন্যান্য স্থানে। যমুনা তীরে স্থাপিত ইতিহাসের ধ্বনি-প্রতিধ্বনিময় ঐতিহাসিক আগ্রার বৃষ্টিভেজা বাতাসের স্পর্শে কেমন একটা শিহরণ দোলা দিল শরীর ও মনে। গাড়ি থেমে নামতে সময় লাগলো কিছুটা। তন্ময় চোখে ফতেহপুর সিক্রিতে প্রবেশের অতিকায় ‘বুলন্দ দরওয়াজা’ নামের রাজকীয় তোরণের দিকে তাকাতেই মনে হলো ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছি ইতিহাসের অলিন্দে।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;