টয়লেটের ফ্ল্যাশে দুটি বাটনের কাজ কী?



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
টয়লেটের ফ্লাশ বাটন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

টয়লেটের ফ্লাশ বাটন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আমরা প্রতিদিনই নতুন নতুন জিনিস বা সেবার সাথে পরিচিত হচ্ছি। নিজের প্রয়োজনে অনেক সময় নিজেরাই শিখছি, অনেক সময় অন্যের সহায়তায় শিখছি। আবার চোখের সামনে অনেক জিনিস দেখি কিন্তু ব্যবহার জানি না, সেটা জানার জন্য মনে কৌতূহল জাগে না। জানার প্রয়োজনও মনে করি না।

বর্তমানে অধিকাংশ আধুনিক টয়লেটে ফ্ল্যাশে দুটি বাটন দেখা যায়। কিন্তু কয়জন জানে এই দুটি বাটনের ব্যবহার সম্পর্কে। দুটি বাটনের কি একই কাজ? নাকি দুটি বাটন দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কাজ হয়?

আগে টয়লেটে ফ্ল্যাশ করা হতো দড়ি টেনে। দড়ি টানলেই দ্রুত গতির পানিতে কমোড পরিষ্কার হয়ে যেতো। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে দড়ির জায়গায় আসলো হাতল। টয়লেট ব্যবহারের পর তা পরিষ্কারের জন্য সবসময় একই পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয় না। কিন্তু দড়ি বা হাতল সিস্টেমে সবসময় একই পরিমাণ (ছয়-আট লিটার) পানি বের হতো। ফলে অনেক পানি অপচয় হতো। জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে বাড়ছে পানির চাহিদা। নদ-নদী এখন মৃতপ্রায়। ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও দিনদিন নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে অনেক দেশে পানির অপচয় ঠেকাতে টয়লেটে টিস্যু ব্যবহৃত হয়। তবে টয়লেটে পানি অপচয় রোধ করতেই ফ্ল্যাশে দুটি বাটন রাখা হয়।

ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের সেনেটারি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আধুনিক টয়লেট ব্যবস্থায় পানির অপচয় রোধে দুটি বাটন ব্যবহার করা হচ্ছে। বড় বাটন একবার চাপলে ছয় থেকে আট লিটার পানি বের হয়। তবে সব সময় এতো পানির প্রয়োজন হয় না। বিষয়টি মাথায় রেখেই ছোট বাটন রাখা হয়, যা একবার চাপলে তিন থেকে চার লিটার পানি খরচ হয়। অর্থাৎ বড় প্রয়োজনে বড় বাটন ও ছোট প্রয়োজনে ছোট বাটন চেপে পানির অপচয় রোধ হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে পানির ব্যবহারও বাড়ছে। তাই পানি ব্যবহারে আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে।’

   

'রিমাল'-এর ধ্বংসযজ্ঞ সয়ে কেমন আছে সুন্দরবন!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সুন্দরবনে মৃত হরিণ / ছবি: বার্তা২৪

সুন্দরবনে মৃত হরিণ / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে ঘণ্টাপ্রতি ৮০ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি বেগে ধেয়ে আসছিল ঘূর্ণিঝড় রিমাল। সাগরে ঢেউয়ের উত্তাল রূপ এবং প্রচণ্ড শক্তিশালী বাতাসের ধাক্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েই উপকূলীয় এলাকার মানুষজন। শনিবার (২৫ মে) থেকেই পাওয়া পূর্বাভাসে মানুষ বেশ বুঝতে পারছিল, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি বয়ে আনবে 'রিমাল'।

সৌভাগ্যবশত, বাংলাদেশকে বেষ্টিত করেছে আমাদের সুন্দরবন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় নোনাপানি উপকূলের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন অতিক্রম করে যাওয়ার সময় রিমালের বেগ অনেকটাই শিথিল হয়ে আসে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপের দণ্ড নিজ মাথায় পেতে নিয়েছে সুন্দরবন। এতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বনের অভ্যন্তরীণ চিত্র। পানিরে আধিক্যে ছেয়ে রয়েছে পুরো বন। ভাঙা-আধভাঙা গাছ লুটিয়ে পড়ে আছে। মিঠাপানির পুকুরে সমুদ্রের নোনাজল মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন অফিসের অধিকাংশ টহল ফাঁড়ি ও বোট এবং সেইসঙ্গে যাতায়োতের পোল। ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে চালাঘরের টিন, দরজা, জানালা, সোলার প্যানেলসহ অবকাঠামোর বিভিন্ন অংশ।

এমনকী রিমালের ক্ষতির মূল্য দিতে হয়েছে বনে বসবাসকারী প্রাণীদেরও। ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল তাণ্ডবে কেবল মানুষ নয়, প্রাণ হারিয়েছে অনেক অবলা প্রাণী।সর্বশেষে তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে ২৮টি মৃত হরিণ এবং ১ টি বন্য শুকরের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

রবি-সোমবার (২৬ ও ২৭মে) রিমাল-এর তাণ্ডব চলে টানা ২০ ঘণ্টা। ঝড় শান্ত হওয়ার পর বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ পশুদের আহত এবং নিহতের এই সর্বশেষ খবর মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে। বনে বসবাসকারী অন্যান্য বহু পশু-পাখিরও মৃত্যু হয়েছে এই দুর্যোগে। এখনো অনেক আহত প্রাণী উদ্ধার কার্যে ব্যস্ত রয়েছেন বনরক্ষা কর্মীরা। এ পর্যন্ত ১৭ টি আহত হরিণ উদ্ধার করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে বনরক্ষীরা। এরপর তাদের নিরাপদে বনে ফেরত পৌঁছে দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও পশু আহত হয়েছে কিনা খোঁজ করা অব্যাহত রয়েছে। 

ঝড়ে অনবরত ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায় সুন্দরবনের ভূমি। তাছাড়া, ঝড়ো হাওয়ার দাপটে উপড়ে গেছে বহু গাছ। প্রকৃতির এরকম পরিবেশের কারণেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে অবলা প্রাণীগুলো!

;

উপকূলে ঝড়ের বিপদ সংকেত, ঢাকায় চিত্রকরের নীল মেঘ!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

উপকূলে চলছে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত। দমকা বাতাসের তোড়ে সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ। আকাশে হৈ হৈ রব তুলে দখল করেছে কালো মেঘ। ছড়িয়ে দিচ্ছে গুড়ুম গুড়ুম ডাক! কয়েক ঘণ্টা বাদেই প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আসার সম্ভাবনা। তবে কথায় বলে, বাজ পড়ার আগে আকাশ শান্ত হয়ে যায়!

ঠিক যেন প্রকৃতি তার সেই রূপটিই মেলে ধরলো। উপকূল অঞ্চলগুলোতে মানুষজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ অথচ রাজধানীর আকাশ স্নিগ্ধ-কোমল!

শুধু কী তাই! ছবি আঁকার পর শিল্পী তার রঙ মাখা তুলিগুলো এলোমেলো করে ফেলে রাখে যেমন, সেই ছবি যেন আকাশে সেঁটে দিয়েছে কেউ। লাল, গোলাপি, কমলা, নীল, বেগুনি রঙের মিশ্রণে অপূর্ব সুন্দর এক এলোমেলো চিত্র উঁকি দিচ্ছে আকাশে। তার মাঝে ধূসর মেঘ ঘোলা জলে মাছের মতো দুরন্তপনায় ছুটে যাচ্ছে বহুদূর।

শনিবার (২৫ মে) গোধুলি লগ্নে ঢাকার আকাশ ঠিক এভাবেই রঙিন হয়ে ওঠে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ রংধনুর ছোঁয়া ছাড়াই রঙিন পটচিত্রের রূপ মেলে ধরে গগন, যেন আকাশ নয়, কোনো চঞ্চলা কিশোরীর উৎফুল্ল মন! প্রকৃতি এখন স্তব্ধ হয়ে আছে। গাছের একটি পাতাও যেন নড়ছে না। অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগরের অথৈ উম্মাদনা। স্থানীয়দের ভয়, জলোচ্ছ্বাসে যেন তাদের জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এমনি করেই প্রকৃতির বহুরূপী লীলাখেলা চলতে থাকে অবলীলায়।

;

বিখ্যাত মিমের ভাইরাল কুকুর কাবোসু আর বেঁচে নেই



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন মানুষ জুড়তে শুরু করলো ইন্টারনেটে নতুন অনেক নতুন উদ্ভাবনার দেখা মিললো। এমন এক ব্যাপার হলো মিম। বর্তমান সময়ে সেন্স অব হিউমারের (রসবোধ) এক অন্যতম মাধ্যম এই মিম। বিশেষত কোনো ছবি ব্যবহার করে তাতে হাস্যরসাত্মক কিছু জুড়ে দিয়ে এইসব মিমগুলো বানানো হয়।

২০১৩ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই একটি ছবি ভাইরাল হয়। পরবর্তী সময়ে যা একটি বিখ্যাত ‘মিম ম্যাটেরিয়াল’-এ পরিণত হয়। কমলা-সোনালী এবং সাদা রঙের সম্বনয়ে বাহারি লোমের এই কুকুরটির নাম কাবোসু। কাবোসুর বয়স ১৯ বছর।

দুর্ভাগ্যবশত কুকুরটি আর বেঁচে নেই। ২৪ মে (শুক্রবার) দীর্ঘদিন ধরে রোগাক্রান্ত থাকার পর অবশেষে দেহ ত্যাগ করে কুকুরটি। কুকুরটির মালিক আতসুকো সাতো (৬২) জাপানের চিবা প্রিফেকচারের সাকুরা শহরের একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক।শুক্রবার তার প্রকাশিত ব্লগে একটি দুঃখের কবিতা আবৃত্তির পর তিনি এই খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

১৯ বছর বয়সেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। ২৬ মে রবিবার কাবোসুর স্মরণে একটি স্মরণ সভার আয়োজনও করা হবে। কুকুরটির মারা যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকলে দুঃখ প্রকাশ করছে।

২০২২ সালে ক্রোানক লিম্ফোমা লিউকুমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। সেই থেকেই কাবোসুর চিকিৎসা চলছিল। তবে দুঃখের বিষয়, সে আর সুস্থ হয়ে ফিরতে পারলো না।

কাবোসুর ত্যাড়া চোখে দৃষ্টির একটি ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এটি ইন্টারনেটে সবচেয়ে আইকনিক এবং স্বীকৃত ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এমনকি ক্রিপ্টো কারেন্সির দুনিয়াতেও তার নাম ছিল।

;

বুদ্ধ পূর্ণিমার তাৎপর্য



অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা। বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এক মহান দিন এটি। এই দিনে গৌতম বুদ্ধ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন। একই দিনে মহাজ্ঞানী বুদ্ধত্ব এবং বুদ্ধ মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। এই তিথিকে বলা হয় বৈশাখী পূর্ণিমা, যা আজ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক ভেসাক ডে হিসেবে পালন করা হয়। বৈশাখ মাসের এই তিথিতে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জীবনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল। ত্রি-স্মৃতিবিজড়িত এ তিথির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যন্ত বিশাল।

খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে এই দিনে আড়াই হাজার বছর আগে মহামতি গৌতম বুদ্ধ ভারতবর্ষের তৎকালীন কপিলাবস্তু দেবদহ নগরের মধ্যবর্তী লুম্বিনী কাননে মাতা রানী মায়াদেবীর পিতৃগৃহে যাবার পথে শালবৃক্ষের নিচে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৮ অব্দে ৩৫ বছর বয়সে বোধিবৃক্ষমূলে কঠোর সাধনা বলে তিনি বুদ্ধত্ব লাভ করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৫৪৩ অব্দে ৮০ বছর বয়সে একই দিনে ৪৫ বছর দুঃখ মুক্তির ধর্ম প্রচার করে কুশীনগরে যুগ্মশাল তরুণমূলে চিরনির্বাসিত হয়ে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন অর্থাৎ তিনি দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। পৃথিবীতে আর জন্মলাভ করবেন না। গৌতম বুদ্ধের পিতার নাম ছিল রাজা শুদ্ধধন ও গৃহী নাম ছিল সিদ্ধার্থ। ২৫২৭ বছর আগে ভারতবর্ষে যখন ধর্মহীনতা মিথ্যা দৃষ্টি সম্পন্ন বিশ্বাস্বে ধর্মে সমাজের শ্রেণি বৈষম্যের চরম দুরবস্থা ও কুসংস্কারে নিমজ্জিত, প্রাণী হত্যায় চরম তুষ্টি ,তখন শান্তি মৈত্রী অহিংস সাম্য ও মানবতার বার্তা নিয়ে মহামতি বুদ্ধের আবির্ভাব ঘটে।

গৌতম বুদ্ধ অহিংস ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করেছেন। এই জীবজগৎ অনিত্য দুঃখ অনাত্মাময় প্রাণমাত্রই প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। অস্থায়ী বা অনিত্য কার্যতকারণের অধীন। তিনি জীবনের প্রগাঢ় খাটি চার আর্যসত্য আবিষ্কার করলেন। জগতে দুঃখ আছে, দুঃখের অবশ্যই কারণ আছে, দুঃখের নিবৃত্তি আছে, দুঃখ নিবৃত্তির উপায় আছে। দুঃখ নিবৃত্তির উপায় হলো নির্বান লাভ। এই নির্বান লাভের ৮টি মার্গ আছে। যেমন সম্যক বা সঠিক দৃষ্টি , সম্যক সংকল্প, সম্যক বাক্য, সম্যক কর্ম, সম্যক জীবিকা, সম্যক প্রচেষ্টা, সম্যক স্মৃতি, সম্যক সমাধি। এই পথ পরিক্রমায় শীল সমাধি প্রত্তোয় নির্বাণ লাভের একমাত্র উপায়। সব প্রাণী সুখী হোক, পৃথিবীর সবচেয়ে পরম, মহৎ বাণী তিনি প্রচার করেছেন। শুধু মানুষের নয়, সব প্রাণ ও প্রাণীর প্রতি, প্রেম, ভালোবাসা, অহিংসা, ক্ষমা, মৈত্রী, দয়া, সহনশীলতা, সহমোর্মিতা, সহানুভূতি, মমত্ববোধ, প্রীতি, সাম্য, সম্প্রীতির কথা তিনি বলেছেন।

১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ৫৪/১১৫ রেজুলেশন এ দিনটিকে আন্তর্জাতিক ভেসাক ডে হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। সেই থেকে এই দিনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ “ভেসাক ডে” হিসেবে পালন করে আসছে। বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র এই দিনকে বিভিন্ন নামে পালন করা হয়। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, নেপালে বুদ্ধ পূর্ণিমা, লাওসে বিশাখ পূজা, ইন্দোনেশিয়া হারি ওয়াইসাক ডে, মালয়শিয়ায় ওয়েসাক ডে, মায়ানমারে ফুল ডে অব কাসন, সিঙ্গাপুরে হারি ভেসাক ডে নামে পালন করে থাকে আবার কেউ বুদ্ধ জয়ন্তী দিবস হিসেবেও পালন করে থাকে।

জাতিসংঘের মহাসচিব এস্তেনিও গুতেরেজ ভেসাক ডে উপলক্ষে বলেছেন, “On the day of Vesak, Let us celebrate Lord Buddha’s wisdom by taking action for others with compassion and solidarity and by renewing our commitment to build a peaceful world.”

ফিলিস্তিনে আজ চরমভাবে মানবতা বিপন্ন হচ্ছে। অশান্তিময় এই পৃথিবীতে বুদ্ধের মৈত্রী, সংহতি, সাম্য, মানবতা ও শান্তির বাণী বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আজও প্রাসঙ্গিক এবং খুব প্রয়োজন। বিশ্ব আজ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি। পরিবেশ দূষণ, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, জলাবদ্ধতা, বৃক্ষ নিধন, বন উজাড়, জীব বৈচিত্র্য হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন এই সবুজ গ্রহের ইতিহাসে নজিরবিহীন। গৌতম বুদ্ধই প্রথম বৃক্ষকে এক ইন্দ্রিয় বিশিষ্ট জীবরূপে আখ্যায়িত করেছেন। বুদ্ধ ছিলেন বিশুদ্ধ পরিবেশবাদী দার্শনিক। পরিবেশ রক্ষা ও সংরক্ষণে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন। তাই বুদ্ধের জন্ম বুদ্ধত্ব লাভ ও মহা পরিনির্বাণ বৃক্ষের পদমূলের বিশুদ্ধ পরিবেশ মন্ডিত পরিবেশে সংগঠিত হয়েছিল।

এই পবিত্র দিনে বৌদ্ধরা বিভিন্ন দেশে দেশে সব প্রাণীর সুখ শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা করেন। অশান্ত পৃথিবীতে পরিবেশ সংরক্ষণে বুদ্ধের বাণী নীতি ও আদর্শ বিশ্ব মানবতার শিক্ষা, দর্শন, চিন্তা চেতনা ,ভাবনা সুন্দর, শান্ত, সাম্যময় পৃথিবী গড়ার বিকল্প নাই। সব প্রাণী সুখী হোক, দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করুক।

অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া
চিকিৎসক, লেখক, সংগঠক ও গবেষক

;