তরুণ স্বেচ্ছাসেবীর প্রচেষ্টায় বদলে গেল আতর আলীর জীবন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লক্ষ্মীপুর, বার্তা২৪
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আতর আলী মুন্সি। তিনি ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত। একসময় ইমামতি করেই তার সংসার চলতো। এখন তিনি ১১০ বছরে পা দিয়েছেন। বয়স বেড়ে যাওয়ায় ইমামতি পেশা থেকেও বাদ পড়েছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি মোক্তব খুলে কয়েক বছর শিশুদের কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন। এই কাজটিও বেশিদিন টিকেনি। একপর্যায়ে তিনি ভিক্ষার পথ বেছে নেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/28/1548656513059.jpg

গত ৩ বছর ধরে ভিক্ষা করে সংসারের ঘানি টানছেন তিনি। লক্ষ্মীপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এক তরুণ সদস্যের প্রচেষ্টায় ভিক্ষাবৃত্তি থেকে আবারো শিশুদের কোরআন শিখানোর কাজে ফিরলেন আতর আলী।

সম্প্রতি নোয়াখালীর চৌমুহনীর পাবলিক হলের সামনে একটি গেঞ্জি গায়ে ভিক্ষা করতে দেখা যায় আতর আলীকে। সেখানে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রামগতি-কমলনগর অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সুমনের সঙ্গে দেখা মিলে বৃদ্ধ আতর আলীর। এসময় জানতে চাইলে আতর আলী তার জীবনের গল্পটি মাসুদকে জানান।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/28/1548656528885.jpg

ঘটনাটি জানার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মাসুদ তার ব্যক্তিগত আইডিতে আতর আলীকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস নেন। এতে আতর আলীর জীবনের গল্পের কিছু অংশ তুলে ধরে সহযোগিতা চাওয়া হয়। তার এ স্ট্যাটাসে ব্যাপক সাড়া মেলে। মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে আতর আলীকে একটি টিনসেট ঘর ও ৫০ কপি কোরআন শরীফ কিনে দেওয়া হয়। ওই ঘরে তিনি এখন শিশুদেরকে কোরআন শিক্ষা দিয়ে আসছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আতর আলী মুন্সি নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডার চর গ্রামের বাসিন্দা। এ গ্রামটি লক্ষ্মীপুর রামগতি উপজেলার বর্ডার এলাকার পাশে। তার ১ ছেলে ও ৫ মেয়ে।  ছেলেটি ওই গ্রামে চা দোকানের ব্যবসা করছেন। তার উপার্জন দিয়ে নিজেই চলতে কষ্ট হয়। ৫ মেয়ের ৪ জনকেই বিয়ে দিয়েছেন। এরমধ্যে বড় মেয়ে বিধবা। এখন কুঁড়ে ঘরটিতে স্ত্রী, ছোট ও বিধবা মেয়েকে নিয়ে আতর আলীর দিনযাপন করছেন।

মাদ্রাসা শিক্ষা শেষে আতর আলী বিভিন্ন মসজিদে ইমামতির কাজ করেছেন। বয়স বেড়ে যাওয়ায় ইমামতির পেশা থেকে তাকে সরে যেতে হয়। পরে নিজের বাড়িতে একটি ঘর করে শিশু-কিশোরদের কোরআন শিক্ষা দেওয়ার জন্য মক্তব খোলেন তিনি। সেখানে গ্রামের ৫০-৬০ জন শিশু-কিশোর কোরআন শিখতেন। প্রতি শিক্ষার্থী থেকে মাসে ২০ টাকা করে পেতেন তিনি। এতে তার সংসার খরচ মোটামুটি চলতো।

একসময় মক্তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যায়। কারণটি ছিল সকল শিক্ষার্থীকে কোরআন শরীফ দেওয়া যেত না। টাকার অভাবে শিক্ষার্থীদের কোরআন শরীফ দিতে না পারায় বন্ধ হয়ে যায় আতর আলীর সেই মক্তবটি। পরবর্তীতে সংসার চালাতে গিয়ে তাকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে হয়। নিজ ও স্ত্রী-মেয়েদের জন্য দু-মুঠো খাবার যোগাতে তাকে মানুষের ধারে ধারে গিয়ে হাত পাততে হয়েছে।

এজন্য এ বৃদ্ধ বয়সে তাকে গ্রাম থেকে মফস্বল শহরের পথে পথে ঘুরতে হয়েছে। দীর্ঘ তিন বছর ধরে ভিক্ষা করেই তাকে সংসার চালাতে হয়েছে।

সম্প্রতি নোয়াখালীর চৌমুহনী পাবলিক হলের সামনে একটি গেঞ্জি গায়ে আতর আলী ভিক্ষা চাইতে গিয়ে লক্ষ্মীপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য মাসুদ সুমনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মাসুদ সুমন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিকেল লিমিটেডের চৌমুহনী শাখার এরিয়া ম্যানেজার ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রামগতি-কমলনগর অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক। এসময় তিনি আতর আলীর জীবনের গল্প শুনেন।

একপর্যায়ে আতর আলী জানান, মক্তবটা পুনরায় চালু করতে পারলে তিনি আর ভিক্ষাবৃত্তি করবেন না। যার জন্য একটি ঘর আর কয়েকটি কোরআন শরীফের প্রয়োজন।

তাকে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে ফেরাতে মাসুদ ফেসবুকে সহযোগিতা চেয়ে স্ট্যাটাস দেন। তার স্ট্যাটাসে সাড়া দিয়ে আতর আলীর জন্য মানুষ আর্থিক সহযোগিতা করেন। সেই অর্থ দিয়ে আতর আলীকের মক্তবের জন্য একটি টিনের ঘর করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আতর আলীর হাতে মক্তবের জন্য ৫০ কপি কোরআন শরীফ তুলে দেওয়া হয়েছে।

আতর আলী মুন্সি বলেন, মাসুদ ভাইয়ের প্রচেষ্টায় আমার মক্তবটি আবার চালু হয়েছে। ১৫০ জন শিশু কিশোর এখানে কোরআন শিখছে। এতে আমার সংসার এখন ভালোভাবেই চলছে।

জানতে চাইলে মাসুদ সুমন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত। মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। মানুষের উপকার করতে পারলে ভালো লাগে। আতর আলীকে দেখার পর তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানি। পুনরায় আতর আলীকে কাজে ফেরানোর চেষ্টায় সফল হতে পেরে বেশ আনন্দিত।

   

রাস্তায় ওঠা বন্যার পানিতেই জলকেলিতে মগ্ন শিশুরা



মশাহিদ আলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সিলেট
জলকেলিতে মগ্ন শিশুরা / ছবি: বার্তা২৪

জলকেলিতে মগ্ন শিশুরা / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

একদিকে বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বাসা-বাড়ি। প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে একাকার। কারো ঘরে ভেতরে হাঁটু পানি আর কারো বাসার সামনে পানি। ডুবছে খেলার মাঠ। ঘর থেকে বের হলেই থৈ-থৈ পানি। যাতায়াতে অসুবিধার শেষ নেই। সংসার নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত কর্তা-গিন্নি।
তবে এতসবের মধ্যেও হৈ-হুল্লার নেশায় মগ্ন একদল কিশোর। বাস্তবতার কঠিন মারপ্যাচ বোঝার সময় কি আর তাদের আছে! দুরন্তপনার বয়সে তাই অপার সরলতার কারণে সংকটেও আনন্দে উল্লাসিত তারা। আগে তাও পুকুর অবধি গিয়ে তারপর দলবেঁধে হতো ঝাপাঝাপি। এখন তো ঘরের দোরগোড়ায় পানি। আর ঠেকায় কে? তাই পাড়ার বন্ধুদের সাথে রাস্তায় জলখেলিতে ব্যস্ত তারা।

বাবা মায়ের মাথায় যখন হাজারো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন ছোট শিশুরা বন্যার পানিতে যে যার মতো করে খেলে আনন্দে মাতোয়ারা। তাদের মুখে নেই কোনো চিন্তা ছাপ। নেই কোনো তাড়াও। পানির কারণে স্কুল যেতেও তো মানা। তাই নিজেদের বেশ স্বাধীন স্বাধীন লাগছে। বন্যার পানিতে লাফ ঝাঁপ, রিকশা-অটোরিকশা কিংবা ভ্যান গাড়ি রাস্তা দিয়ে গেলেই লাফিয়ে ধরে যাচ্ছে বহুদূর। পুকুর বা নদীতে সাঁতার কাটতে না পারলেও অভিজাত এলাকার রাস্তাটাই যেন এখন তাদের সব।

উপশহর সি-ব্লকে শিশুরা খেলছে / ছবি: বার্তা২৪

এমন দূরন্ত শিশুদের দেখা যায়, সিলেট নগরীর উপশহর সি-ব্লক এলাকায়। আশেপাশের বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা যুক্ত নোংরা পানিতে ২০-২৫ জন শিশু করছে খেলাধুলা। কেউবা নাচছে পানিতে, আর কেউ জলকেলিতে মগ্ন। এমন দৃশ্যটি দেখতে খুবই নয়নাভিরাম। দেখলে যেকোনো কারোরই ছেলেবেলার স্মৃতি ভেসে উঠতে পারে। স্মৃতি ভেসে উঠার কথাও বটে!

কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সবাই উপশহরের বিভিন্ন কলোনিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করে। কেউ স্কুলে পড়ালেখা করে। আর কেউ কেউ অভাবের সংসারে সাহায্য করতে কাজ খুঁজছে এবং দোকানাপাটে সহকারীর কাজ করছে।

শাহীন নামে ১১ বছরের একজনের সঙ্গে কথা হয়। সে বাবা-মায়ের সঙ্গে সি-ব্লক এলাকায় থাকে। তাদের ঘরে পানি উঠেছে। তাই বন্ধুদের সঙ্গে সকাল থেকে এখানে খেলাধুলা করছে।

সাড়ে ৯ বছরের রাজীব। উপশহর জে-ব্লক কলোনিতে তাদের বাসা। বাসায় পানি উঠলেও, ভয়ে সেখানে না সাঁতরে সি ব্লকে আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সাঁতার কাটছে। এই পানিতে গোসল করে তার বেশ ভালো লাগছে বলে জানায়।

জানা যায়, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের ৭টি উপজেলায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলাগুলোর পাশাপাশি এবার সুরমা নদীর পানি সিলেট সিটি করপোরেশনের নিম্নাঞ্চল এলাকায় ঢুকে পড়ায় বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বাসা-বাড়িতে ও রাস্তায় চলে উঠায় উপশহর, সুবহানিঘাট, যতরপুর, মেন্দিবাগ, কাজিরবাজার, মাছিমপুর, তালতলাসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
শনিবার (১ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, বিকাল ৩ টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার এবং জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে কুশিয়ারা দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে অমলসিদ পয়েন্টে ১৮৯ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, সিলেট নগরীতে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ইতিমধ্যে ৪ হাজার পরিবার। তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।

;

'রিমাল'-এর ধ্বংসযজ্ঞ সয়ে কেমন আছে সুন্দরবন!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সুন্দরবনে মৃত হরিণ / ছবি: বার্তা২৪

সুন্দরবনে মৃত হরিণ / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে ঘণ্টাপ্রতি ৮০ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি বেগে ধেয়ে আসছিল ঘূর্ণিঝড় রিমাল। সাগরে ঢেউয়ের উত্তাল রূপ এবং প্রচণ্ড শক্তিশালী বাতাসের ধাক্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েই উপকূলীয় এলাকার মানুষজন। শনিবার (২৫ মে) থেকেই পাওয়া পূর্বাভাসে মানুষ বেশ বুঝতে পারছিল, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি বয়ে আনবে 'রিমাল'।

সৌভাগ্যবশত, বাংলাদেশকে বেষ্টিত করেছে আমাদের সুন্দরবন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় নোনাপানি উপকূলের ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন অতিক্রম করে যাওয়ার সময় রিমালের বেগ অনেকটাই শিথিল হয়ে আসে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপের দণ্ড নিজ মাথায় পেতে নিয়েছে সুন্দরবন। এতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বনের অভ্যন্তরীণ চিত্র। পানিরে আধিক্যে ছেয়ে রয়েছে পুরো বন। ভাঙা-আধভাঙা গাছ লুটিয়ে পড়ে আছে। মিঠাপানির পুকুরে সমুদ্রের নোনাজল মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন অফিসের অধিকাংশ টহল ফাঁড়ি ও বোট এবং সেইসঙ্গে যাতায়োতের পোল। ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে চালাঘরের টিন, দরজা, জানালা, সোলার প্যানেলসহ অবকাঠামোর বিভিন্ন অংশ।

এমনকী রিমালের ক্ষতির মূল্য দিতে হয়েছে বনে বসবাসকারী প্রাণীদেরও। ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল তাণ্ডবে কেবল মানুষ নয়, প্রাণ হারিয়েছে অনেক অবলা প্রাণী।সর্বশেষে তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে ২৮টি মৃত হরিণ এবং ১ টি বন্য শুকরের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। 

রবি-সোমবার (২৬ ও ২৭মে) রিমাল-এর তাণ্ডব চলে টানা ২০ ঘণ্টা। ঝড় শান্ত হওয়ার পর বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ পশুদের আহত এবং নিহতের এই সর্বশেষ খবর মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে। বনে বসবাসকারী অন্যান্য বহু পশু-পাখিরও মৃত্যু হয়েছে এই দুর্যোগে। এখনো অনেক আহত প্রাণী উদ্ধার কার্যে ব্যস্ত রয়েছেন বনরক্ষা কর্মীরা। এ পর্যন্ত ১৭ টি আহত হরিণ উদ্ধার করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে বনরক্ষীরা। এরপর তাদের নিরাপদে বনে ফেরত পৌঁছে দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও পশু আহত হয়েছে কিনা খোঁজ করা অব্যাহত রয়েছে। 

ঝড়ে অনবরত ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায় সুন্দরবনের ভূমি। তাছাড়া, ঝড়ো হাওয়ার দাপটে উপড়ে গেছে বহু গাছ। প্রকৃতির এরকম পরিবেশের কারণেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে অবলা প্রাণীগুলো!

;

উপকূলে ঝড়ের বিপদ সংকেত, ঢাকায় চিত্রকরের নীল মেঘ!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

উপকূলে চলছে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত। দমকা বাতাসের তোড়ে সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ। আকাশে হৈ হৈ রব তুলে দখল করেছে কালো মেঘ। ছড়িয়ে দিচ্ছে গুড়ুম গুড়ুম ডাক! কয়েক ঘণ্টা বাদেই প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আসার সম্ভাবনা। তবে কথায় বলে, বাজ পড়ার আগে আকাশ শান্ত হয়ে যায়!

ঠিক যেন প্রকৃতি তার সেই রূপটিই মেলে ধরলো। উপকূল অঞ্চলগুলোতে মানুষজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ অথচ রাজধানীর আকাশ স্নিগ্ধ-কোমল!

শুধু কী তাই! ছবি আঁকার পর শিল্পী তার রঙ মাখা তুলিগুলো এলোমেলো করে ফেলে রাখে যেমন, সেই ছবি যেন আকাশে সেঁটে দিয়েছে কেউ। লাল, গোলাপি, কমলা, নীল, বেগুনি রঙের মিশ্রণে অপূর্ব সুন্দর এক এলোমেলো চিত্র উঁকি দিচ্ছে আকাশে। তার মাঝে ধূসর মেঘ ঘোলা জলে মাছের মতো দুরন্তপনায় ছুটে যাচ্ছে বহুদূর।

শনিবার (২৫ মে) গোধুলি লগ্নে ঢাকার আকাশ ঠিক এভাবেই রঙিন হয়ে ওঠে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ রংধনুর ছোঁয়া ছাড়াই রঙিন পটচিত্রের রূপ মেলে ধরে গগন, যেন আকাশ নয়, কোনো চঞ্চলা কিশোরীর উৎফুল্ল মন! প্রকৃতি এখন স্তব্ধ হয়ে আছে। গাছের একটি পাতাও যেন নড়ছে না। অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগরের অথৈ উম্মাদনা। স্থানীয়দের ভয়, জলোচ্ছ্বাসে যেন তাদের জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এমনি করেই প্রকৃতির বহুরূপী লীলাখেলা চলতে থাকে অবলীলায়।

;

বিখ্যাত মিমের ভাইরাল কুকুর কাবোসু আর বেঁচে নেই



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন মানুষ জুড়তে শুরু করলো ইন্টারনেটে নতুন অনেক নতুন উদ্ভাবনার দেখা মিললো। এমন এক ব্যাপার হলো মিম। বর্তমান সময়ে সেন্স অব হিউমারের (রসবোধ) এক অন্যতম মাধ্যম এই মিম। বিশেষত কোনো ছবি ব্যবহার করে তাতে হাস্যরসাত্মক কিছু জুড়ে দিয়ে এইসব মিমগুলো বানানো হয়।

২০১৩ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই একটি ছবি ভাইরাল হয়। পরবর্তী সময়ে যা একটি বিখ্যাত ‘মিম ম্যাটেরিয়াল’-এ পরিণত হয়। কমলা-সোনালী এবং সাদা রঙের সম্বনয়ে বাহারি লোমের এই কুকুরটির নাম কাবোসু। কাবোসুর বয়স ১৯ বছর।

দুর্ভাগ্যবশত কুকুরটি আর বেঁচে নেই। ২৪ মে (শুক্রবার) দীর্ঘদিন ধরে রোগাক্রান্ত থাকার পর অবশেষে দেহ ত্যাগ করে কুকুরটি। কুকুরটির মালিক আতসুকো সাতো (৬২) জাপানের চিবা প্রিফেকচারের সাকুরা শহরের একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক।শুক্রবার তার প্রকাশিত ব্লগে একটি দুঃখের কবিতা আবৃত্তির পর তিনি এই খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

১৯ বছর বয়সেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। ২৬ মে রবিবার কাবোসুর স্মরণে একটি স্মরণ সভার আয়োজনও করা হবে। কুকুরটির মারা যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকলে দুঃখ প্রকাশ করছে।

২০২২ সালে ক্রোানক লিম্ফোমা লিউকুমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। সেই থেকেই কাবোসুর চিকিৎসা চলছিল। তবে দুঃখের বিষয়, সে আর সুস্থ হয়ে ফিরতে পারলো না।

কাবোসুর ত্যাড়া চোখে দৃষ্টির একটি ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এটি ইন্টারনেটে সবচেয়ে আইকনিক এবং স্বীকৃত ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এমনকি ক্রিপ্টো কারেন্সির দুনিয়াতেও তার নাম ছিল।

;