নিউইয়র্কের দিনলিপি-৫



আমান-উদ-দৌলা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

১. আগামী সোমবার নাসা চন্দ্র অভিযানে পাঠাচ্ছে আর্টেমিস ওয়ান নামে নতুন উপগ্রহ। সঙ্গে মানুষ যাচ্ছে না। তবে একটি আধুনিক রোবট যাবে। এই অভিযান এপোলো সিরিজের ৫০ বছর পর শুরু হচ্ছে। নতুন জেনারেশনের একটি নতুন ধরনের উপগ্রহ এটি। পরীক্ষামূলকভাবে চাঁদে এটি সফলভাবে কাজ করলে মংগলগ্রহে অভিযান পাঠাবে। তারই প্রস্তুতি চলছে।

এবারের চন্দ্র অভিযান সফল হলে ২০২৪ সালের আর্টেমিস টুতে যাবে একজন নারী নভোচারী ও কালো পুরুষ নভোচারী। তাদের সাফল্যের পর ২০২৮ সালে যাবে আরও এক আর্টেমিস। এতে সহজ হয়ে আসবে চন্দ্রাভিযান। চাঁদে একটা স্থায়ী বেস স্টেশন তৈরি করা হবে। এতে অর্থনৈতিকভাবে ৮০০ কোম্পানীকে ৫০ টি স্টেটের স্মল বিজনেস কোম্পানীর জিনিসপত্র কাজে লাগানো হবে। অর্থনৈতিকভাবে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায় লাভবান হবে আমেরিকার ছোট ব্যবসায়ীরা।

দেখুন: https://www.nasa.gov/specials/artemis/

২. বাংলাদেশ থেকে রোহিংগা শরনার্থীদের নেবে আমেরিকা। ২৪ আগস্ট আমেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রী এন্টনি ব্লিংকনের এক বিবৃতিতে তা বলা হয়। যাতে কবে থেকে কি পরিমান নিয়ে আসবে তা বলা হয়নি। বলা হয়েছে, তাদের আমেরিকায় পুনর্বাসনের জন্য কাজ করছে। যাতে শরনার্থীরা নতুন করে জীবন গড়ে তুলতে পারেন।

এক বিবৃতিতে ব্লিংকন বলেন, ৫ বছর আগে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালিয়ে ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে। কয়েক হাজার শিশু, নারী ও পুরুষকে হত্যা করেছে। ধর্ষণ করেছে। কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সহ এ অঞ্চলে এ যাবত আমরা মোট ১৭০ কোটি ডলার সাহায্য দিয়েছি। আমরা তাদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। যাতে তারা আমেরিকায় নতুন জীবন শুরু করতে পারেন।

৩. বংগবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে আমেরিকা থেকে ফেরত নেওয়ার ব্যপারে তৎপর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিভাগ। এর আগে মহিউদ্দিনকে চুক্তি অনুযায় ডিপোর্ট করেছিল আমেরিকান অথরিটি। তাকে হাতে পেয়ে বাংলাদেশ সরকার ফাসির আদেশ কার্যকর করেছিল। রাশেদ চৌধুরীর ক্ষেত্রে মনোযোগী হয়ে অনেক ক্রিটিক্যাল অবস্থা লক্ষ করছে বাংলাদেশ।

বলা যায়, ১৯৯৬ সালে ব্রাজিল থেকে আমেরিকায় পারি জমান রাশেদ চৌধুরী। ২০০৪ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় পান তিনি। এতোদিনে নাগরিকত্ব পেয়ে থাকতে পারেন। খুব সহজ না একজন নাগরিককে হস্তান্তর করা। যদি খুনি হয় বা দুধর্ষ অপরাধী হয় তা প্রমাণ করতে হবে। এরপর দুদেশের মধ্যে চুক্তি করতে হবে। তার নাগরিকত্বের তথ্য যদি যথাযথ সত্য না হয়। তাহলে নাগরিকত্ব বা এসাইলাম বাতিল হয়ে যাবে। তখন দুদেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হতে পারে।

৪. বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের এক কঠিন সময়ে উপস্থিত হয়েছে। আমেরিকার বড় কোম্পানীগুলো বাতিল করেছে অর্ডারগুলো। টার্গেট ও ওয়ালমার্ট অন্যতম। পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। রাশিয়া-ইউক্রন যুদ্ধের নানামুখি প্রভাব তৈরি হয়েছে। এজন্য ঊর্ধ্বমুখি দাম ও মূল্যস্ফীতির প্রভাবে আমেরিকার সাধারন মানুষ সবার আগে পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে কাচামালের দাম ও জাহাজের ভাড়া বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক হারে। সবমিলে এইশিল্পের অবস্থা খুবই খারাপ।

৫. বাংলা সিনেমার উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে উঠছে আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে। দেশের ফিল্ম ইন্ড্রাষ্ট্রি যখন প্রায় মৃত। তখন এখানে জোয়ার উঠেছে। নিউইয়র্ক, ফ্লোরিডা, টেক্সাস,মিশিগান, মিনোসোটা, ক্যালিফোর্নিয়া, ফিলাডেলফিয়া, ইলিনয়, লুসিয়ানা সহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত রাজ্যে বাংলা সিনেমা চলতে শুরু করেছে। এসব স্থানে নতুন সিনেমা আরও চলতে পারে। এখন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে ছবি যাতে আমেরিকাতেই তৈরি হয়। সম্প্রতি ঢাকায় মুক্তি পাওয়া 'পরাণ' ও 'হাওয়া' ছবি নিউইয়র্কে মুক্তি পাবে। অন্যদিকে 'পাপ পূন্য' মুক্তি লাভ করে ঝড় তুলেছে। আমেরিকায় বাবসা সফল ছবি তৈরি করতে হলে বাস্তবধর্মী ও আমেরিকার জীবন-যাপন প্রবাহের উপর ছবি নির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে, মনে করেন সচেতন দর্শকরা।

৬. সত্যজিত রায়ের তৈরি 'পথের পাঁচালী' ১৯৫৫ সালে নিউইয়র্কে প্রথম বাংলা ছবি যা ম্যানহাটনে প্রদর্শিত হয়। এটি বিভূতিভুষণ বন্দোপাধ্যায়ের প্রখ্যাত উপন্যাস ১৯২৯ সালে রচিত। আজ নিউইয়র্কের কয়েকটি হলে সত্যজিত রায়ের জীবন ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র 'অপরাজিত' প্রদর্শিত হচ্ছে। কয়েকদিন চলবে।

৭. বাংলাদেশি-আমেরিকান মেয়ে ফাহমিদা আজিম পুলিতজার বিজয় অর্জন করলো। ওয়াশিংটন স্টেটে সিয়াটলে সে একটি কোম্পানীতে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে চাকরী করছে। সে চিত্রশিল্পী ও অলংকরণ শিল্পী। ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর ইনসাইডার ওয়েবসাইটে How I Escaped a Chinese Internment Camp ( যেভাবে একটি চীনা বন্দী শিবির থেকে পালিয়ে এসেছি) রিপোর্টে একটি ইলাস্ট্রেটেড এ অলংকরণের জন্য তাকে পুলিতজার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। সাংবাদিকতা ও প্রকাশনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে সম্মানজনক সম্মাননা হিসেবে এই পুরস্কার দেয়া হয়। ১৯১৭ সাল থেকে চালু রয়েছে।

৮. জাতিসংঘের পুলিশ সামিটে যোগদানের জন্য বাংলাদেশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ ২ দিনের ভিসা পেলেন। আগামী ৩১ আগষ্ট ও ১ সেপ্টেম্বর এই দুইদিন নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দফতরে এই শীর্ষ সম্মেলন হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে একটি দলে আইজি ড. বেনজীরও আসছেন।

গত বছর ৯ ডিসেম্বর আমেরিকান সরকারের রাজস্ব বিভাগ বেনজীর আহমেদ সহ ৭ জনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তিনি এর আগে র‍্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ানের কর্মকর্তা ছিলেন। তাকে শর্ত সাপেক্ষে ভিসা দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সম্মেলন ছাড়া আর কোথাও তিনি অংশ নিতে পারবেন না।

৯. প্রেসিডেন্ট বাইডেন কলেজ-ইউনিভার্সিটির ৪ কোটি ৩০ লাখ ছাত্রছাত্রীর স্টুডেন্ট লোন মওকুফ করার ব্যবস্থা করেছেন। গত ২৪ আগষ্ট হোয়াইট হাউজের এক ঘোষণায় বাংলাদেশী আমেরিকান স্টুডেন্ট সহ লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রীর স্টুডেন্ট লোন মওকুফ করেছেন। যাদের ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত লোন ছিল। (ক্ষেত্র বিশেষ ১০ হাজার ডলার) যাদের পিতামাতা বা অভিভাবক বছরে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ডলারের ( যৌথ আয় ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার) কম আয় করছে তারাই পাবে এই মওকুফের সুবিধা। এটা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল।

হোয়াইট হাউজের ঘোষণাটির লিংক দেয়া হলোঃ https://www.whitehouse.gov/briefing-room/statements-releases/2022/08/24/fact-sheet-president-biden-announces-student-loan-relief-for-borrowers-who-need-it-most/ (bbc, nytimes, cnn, wsj, apnews সহ সকল ওয়েবনিউজ ও স্থানীয় পত্রপত্রিকা থেকে বাছাই করা সংক্ষিপ্ত সংবাদ প্রতি ৭ দিনে বার্তা২৪-এর পাঠকদের জন্য 'নিউইয়র্কের দিনলিপি' পরিবেশন করা হচ্ছে।)

আমান-উদ-দৌলা, সিনিয়র সাংবাদিক। সাবেক সম্পাদক-বাংলা বিভাগ, রেডিও ফ্রি এশিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি ( ২০১৪-১৬)। সাবেক কূটনৈতিক রিপোর্টার-দৈনিক জনকণ্ঠ ( ১৯৯৪-২০০০) One of the founders and First GS of DCAB in 1998. ( Dilpomatic Correspondent Association, Bangladesh)

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;