নতুন বইয়ের গন্ধ যেন আত্মা ছুঁয়ে যায়!



মানসুরা চামেলী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
একুশে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা প্রাঙ্গণে

একুশে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা প্রাঙ্গণে

  • Font increase
  • Font Decrease

একুশের পড়ন্ত বিকাল। জাদুঘরের পাশে থাকা গাছগুলোতে ফুটেছে ফাগুনের রক্ত রাঙা শিমুল-পলাশ! রাজধানীর এই এলাকাটাতেই বসন্তের প্রকৃত রূপ দৃষ্টিগোচর হয়। একুশে ফেব্রুয়ারি বইমেলায় যাওয়ার স্রোতটিতে শাহবাগ থেকেই মানুষের গিজগিজ। গায়ের সঙ্গে গা ঘেঁষে কচ্ছপ গতিতে এগোতে হচ্ছে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত। মেলা পর্যন্ত যেতেই একবারেই নাজেহাল অবস্থা।

একেকদিনের একেক বৈশিষ্ট্য; এ কারণে অনেক ভোগান্তি সত্ত্বেও মানুষ বিশেষ দিনটিকে কেন্দ্র করেই বের হন! আজ ভাষা শহীদ দিবসে স্রোতের মতো বইমেলায় দর্শনার্থীদের আগমন ছিল। পুরোপুরি একুশের চেতনায় নিজেকে সজ্জিত করে প্রাণের মেলায় এসেছেন তারা। এতে যেমন ‘পোয়াবারো’ হয়েছে প্রকাশকদের তেমনি ছুটির দিনটিকে উপভোগ করছেন মেলায় আগত দর্শনার্থীরাও।

আজ ভাষা শহীদ দিবসে স্রোতের মতো বইমেলায় দর্শনার্থীদের আগমন ছিল

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, কেউ নিচ্ছেন নতুন বইয়ের গন্ধ, কেউ কেউ আবার নিজের তালিকার বই সংগ্রহে ব্যস্ত। অনেকেই সঙ্গী সাথী নিয়ে একবারেই ঘোরাঘুরির মুডে! সঙ্গে স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে এবং বই হাতে পোজ দিয়ে ছবি ও সেলফি তোলা তো রয়েছেই।

মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অবসর প্রকাশনীর সামনে কথা হয় খিলক্ষেত থেকে আসা মিতু রহমানের সঙ্গে। তিনি একুশের ফেব্রুয়ারির ভিড় ভাট্টা ঠেলে শোকের সাজে ৭ বছরের ছেলেকে নিয়ে এসেছেন মেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষার্থী জানান, নতুন বইয়ের গন্ধ নিতেই তার মূলত একবার হলেও বই মেলায় আসা চাই-ই।

‘নতুন বইয়ের গন্ধ আমার আত্মা ছুঁয়ে যায়। আজকে ভিড় জেনেও এসেছি, কারণ ছুটি; তার উপর ছেলেকে একুশের চেতনায় উজ্জীবিত করা। আমার ছেলে বড় হয়েছে তার অনেক বইয়ের বায়না আছে সেগুলোও কিনে দেব। আমি মুক্তিযুদ্ধের বইও কিনে দেব। আমি চাই আমার ছেলে পড়ুয়া হোক; বাকিটা ওর ব্যাপার।’

বইমেলায় সেলফি তোলায় ব্যস্ত দর্শনার্থীরা

কথা প্রকাশনীর স্টলে রবীন্দ্রনাথের ভ্রমণসাহিত্য, আবুল ফজলের প্রবন্ধ, মামুন মুনতাসিরের ঢাকা ইতিহাস নেড়ে চেড়ে দেখছেন ষাটোর্ধ্ব ভারিক্কি চেহারার এক ব্যক্তি। হঠাৎ সেলিনা হোসেনের ‘শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ’ হাতে নিয়ে সঙ্গে থাকা মেয়েকে বললেন, জানো- ‘বাংলাদেশে জীবিত লেখকদের মধ্যে উনি এখন পণ্ডিত লেখক, অসাধারণ লেখেন এই লেখিকা’।

জাফর নামে এই ব্যক্তি জানান, ‘আজকাল লেখক কই, ঘুরে ফিরে আগের লেখক ও তাদের নিয়ে রচিত গ্রন্থগুলোর দিকেই যেতে হয় আমাদের। মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বেড়েছে। দেখবেন কেউ কেউ এসেছে- তার বন্ধুর বই বেরিয়েছে তা কিনতে, সেটা কিনে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে আলমারিতে তুলে রাখবে বইটি। বইয়ের প্রতি আন্তরিকতা কমে গেছে।’

মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী ও বইপ্রেমীদের প্রচণ্ড ভিড়। স্টলে স্টলে বই উল্টে পাল্টে দেখছেন ক্রেতারা। অন্যান্য দিনের তুলনায় প্রকাশকদের বেচাবিক্রিও বেশ। এরপরও সন্তুষ্ট নন তারা।

অনেকেই সপরিবারে একুশের সাজে সজ্জিত হয়ে এসেছেন মেলায়

কথা প্রকাশনীর বিক্রয় কর্মকর্তা ড্যানিয়েল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘মেলায় অনেক মানুষ দেখছেন কিন্তু কয়জনের হাতে বেই দেখছেন বলেন। বেশির ভাগই আজকে ঘুরতে এসেছেন। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় বই বিক্রি বেড়েছে। এখন দেখা যাক রাত পর্যন্ত কি হয়।’

তবে বাংলা প্রকাশনীর বিক্রয় কর্মকর্তা মুনা একবাক্যে জানালেন, ‘আজকে বেচাবিক্রি বেশ ভালো।’

সাদা ব্যাগে বই নিয়ে সোহরাওয়ার্দীর লেকের সামনে দাঁড়িয়ে বইপ্রেমী মো. মানিক। নতুন লেখকদের নিয়ে আশাবাদী ব্যবসায়ী মানিক জানালেন, নতুন লেখকদের একবারেই হেলাফেলা করা যাবে না। তারাও অনেক মেধাবী। মূল সমস্যা হচ্ছে প্রচারণার অভাব। এদের অনেকেই ভালো বই লেখেন কিন্তু প্রচারণার অভাবে আড়ালেই থেকে যান।

মেলায় ক্ষুদে পাঠকদরে চাহিদার যেন শেষ নেই

হাতে থাকা বইটি দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এই দেখেন আমার বন্ধু লিখেছে বইটি। আমরা একসঙ্গে জগন্নাথে পড়তাম। বইয়ের নাম ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ সবাই ভালো বলছে। আমি এক কপি কিনলাম; যাতে উৎসাহ পান। মোট কথা হচ্ছে এখন মোবাইলে একটা আঙুল ছোঁয়ালে সব কিছু পাওয়া যায়, এ কারণে সবার আগ্রহ কম বই পড়ায়। তবে যাই হোক বই পড়ার বিকল্প নেই।’

বাংলা সাহিত্য ও ভাষাবিদরা মনে করেন, বইমেলা হচ্ছে বাঙালির প্রাণের স্পন্দন। মেলায় পুরাতন পাঠকদের সাথে যোগ হয় নতুন প্রজন্মের বই পড়ুয়া পাঠকরা। এই পরিবেশ দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে, অনুপ্রেরণা যোগায়। কারণ বইমেলার কেন্দ্রবিন্দু হলো বই। তাই মেলায় ঘুরতে আসলেও বইয়ের ছোঁয়া নিয়েই তারা থাকেন।


এবারের বইমেলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজের মুঘল হেরেমের সুন্দরী নর্তকী আনারকলির জীবন ও ঘটনাবলি নিয়ে 'আনারকলি: মুঘল হেরেমের রহস্যময়ী নারী' স্টুডেন্ট ওয়েজ প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে।

নিজের বই সম্পর্কে এই লেখক বলেন, ‘আমরা সাধারণ মুঘল আমলের রাজনীতিক ইতিহাস জানি, আলোচনা করি। কিন্তু এর প্রেম ও  অন্দরমহলের রহস্য ও ইতিহাস সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে আমার বইয়ে।’

বইমেলার গুরুত্ব সম্পর্কে ড. মাহফুজ পারভেজ বলেন, আমাদের ভাষা ও সাহিত্য বিকাশে বইমেলা নানা মাত্রা যোগ করে। মননশীলতার চর্চার জন্য বইমেলার গুরুত্ব অনেক। এখন অনেক ভালো ভালো বই বের হচ্ছে। তবে আমার একটাই চাওয়া বইমেলা যেন শুধু বাণিজ্যিক না হয়ে মননশীল চর্চার ক্ষেত্র হয়।    

   

এক ঘরেই তিন বলী



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

চুল থেকে দাড়ি-সবই সফেদ। হাঁটাচলায় মন্থর। স্বাভাবিকভাবেই প্রবীণের বয়সটা আঁচ করা যায় প্রথম দেখাতেই। কিন্তু তার ষাটোর্ধ্ব বয়সটা যেন কেবল ক্যালেন্ডারের হিসাব। বয়স যতই ছোবল বসানোর চেষ্টা করুক না কেন-তিনি যেন এখনো ২৫ এর টগবগে তরুণ। সেই বলেই তো ফুসফুসের রোগবালাইকে তুড়ি মেরে ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলা এলেই হাজির হয়ে যান রিংয়ে। এক দুবার নয়, এবার কিনা পূর্ণ হলো সুবর্ণজয়ন্তী!

চট্টগ্রামের অন্যতম আবেগের ঠিকানা ঐতিহাসিক এই বলীখেলার বড় বিজ্ঞাপন হয়ে ওঠা এই বলীর নাম খাজা আহমদ বলী। ৫০ বছর ধরে বলীখেলায় অংশ নিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিয়ে যাওয়া এই বলীর এখন পড়ন্ত বয়স। ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে রোগ। কানেও শোনেন কম। খাজা আহমদ বুঝে গিয়েছেন, তার দিন ফুরাচ্ছে। কিন্তু তিনি যে বলীখেলার স্মৃতি থেকে সহজেই মুছে যেতে চান না। সেজন্যই উত্তরসূরী হিসেবে এরই মধ্যে গড়ে তুলেছেন নিজের দুই ছেলেকে। বাবার পাশাপাশি দুই ভাইও এখন বলীখেলার নিয়মিত প্রতিযোগী।

খাজা আহমেদ বলীর বাবাও বলীখেলায় অংশ নিতেন। বাবার সঙ্গে বলীখেলায় এসে ১৯৭৪ সালে শখের বসে খেলতে নামেন খাজা আহমেদও। বয়স তখন ১২ বছরের আশপাশে। সেই শুরু, আর কোনোদিন মিস করেননি বলীখেলায় অংশ নেওয়া। একবার চ্যাম্পিয়নের গৌরবও অর্জন করেছিলেন। বহু বছর ধরে খাজা আহমেদ বলী ও সত্তরোর্ধ্ব মফিজুর রহমানের ‘বলীযুদ্ধ’ জব্বারের বলীখেলার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এই দ্বৈরথ হয়তো আর দেখা যাবে না। দুই বছর আগে উৎপত্তি হওয়া ফুসফুসের রোগটা ইদানিং যে খাজা আহমদকে বেশিই ভোগাচ্ছে। সেজন্য গতবছর অবসরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার দুই ছেলেকে নিয়ে বলীখেলায় এসে আবেগ সামলাতে পারেননি খাজা আহমেদ। ছেলেদের সঙ্গে নিজেও নেমে পড়েন রিংয়ে। সেজন্য আরও একবার মফিজুর রহমান-খাজা আহমেদের লড়াই দেখল হাজারো দর্শক। যদিওবা যৌথ বিজয়ী ঘোষণা করে দুজনের মুখেই হাসি ফুটিয়েছেন রেফারি।

প্রতিপক্ষ মফিজুর রহমানের সঙ্গে বলী-যুদ্ধে খাজা আহমদ

কেন অবসর ভাঙলেন এমন প্রশ্নে হাসি খেলা করে যায় খাজা আহমেদ বলীর মুখে। বলতে থাকেন, ‘বয়সের কারণে শরীর দস্ত। ফুসফুসও ঠিকঠাক কাজ করছে না। সেজন্য অবসর নিয়েছিলাম। কিন্তু বলীখেলায় আসার পর দেখলাম দর্শকেরা সবাই অনুরোধ করছেন। সেজন্য মন বলল, না খেললে দর্শকদের প্রতি অন্যায় হবে। আর আবেগ ও ভালোবাসার কাছে বয়স-রোগ পেরেছে কবে?’

তবে এখানেই সব শেষ, বলে দিয়েছেন খাজা আহমেদ বলী। বলেছেন, ‘বয়স হয়ে গেছে। মনে হয় না আর খেলতে পারব। অসুখটা বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছে। সেজন্য মনে মনে মেনে নিয়েছি এটাই আমার শেষ অংশগ্রহণ। বাকিটা আল্লাহর হাতে।’

তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা খাজা আহমদের বাড়ি চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায়। কৃষিকাজ করেই চলে সংসার। তবে বলীখেলা এলে সব কাজ বাধ। কয়েকদিন ধরে চলে প্রস্তুতি। নিজের স্মৃতি ধরে রাখতে এরই মধ্যে খাজা আহমেদ নিজের দুই ছেলেকে গড়ে তুলেছেন বলী হিসেবে। ২০১২ সাল থেকে বলীখেলায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন তার বড় ছেলে মো. সেলিম। গত বছর থেকে যোগ দিয়েছেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। এখন বলীখেলার আগে দুই ছেলেকে নিয়ে চলে খাজা আহমদের প্রস্তুতি।

জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ‘বাবার কাছ থেকে আমরা বলীখেলা শিখেছি। বয়সের কারণে বাবা এখন অসুস্থ। হয়তো আর খেলা হবে না। সেজন্য তার উত্তরসূরী হিসেবে আমরা বলীখেলায় অংশ নেব সামনের দিনগুলোতে। এটা শুধু পরিবারের বলীর প্রজন্ম ধরে রাখার জন্য নয়, তরুণদের মাদক-সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগও।’

বাবাকে পাশে রেখে একই কথা বললেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। বলেন, ‘হয়তো বাবা আর খেলবেন না। তবে তিনি না খেললেও যতদিন বেঁচে থাকবেন বলীখেলা দেখতে আসবেন। রিংয়ের নিচে দাঁড়িয়ে আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাবেন।’

ছেলের কথা শুনে আবেগ খেলে যায় খাজা আহমেদ বলীর মনে। কাঁধের গামছাটা হাতে তুলে নিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘না খেললেও যতদিন বাঁচি এখানে, এই বলীর মাঠ লালদীঘি ময়দানে ছুটে আসব। এটা থেকে দূরে থাকতে পারব না।’

খাজা আহমেদ যখন কথা বলছিলেন দূরে কোথাও তখন মাইকে বাজছিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অমর গান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অক্লান্ত গলায় গেয়ে চলেছেন, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে...

;

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;