আলো ছড়াচ্ছে জয়তী সোসাইটি!



সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

যশোর থেকে ফিরে: অসহায় নারী ও শিশুদের আস্থা-ভরসার নাম ‘জয়তী সোসাইটি’। জয়তী সোসাইটি অবহেলিত নারীদের কাছে স্বাবলম্বী হওয়ার অপর এক নাম। ষাটোর্দ্ধ মমতাময়ী মায়েদের কাছে বেঁচে থাকার প্রত্যয়। আর বস্তির সবচেয়ে অবহেলিত শিশুর দু’চোখের স্বপ্ন।

নানা ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে সমাজের অসহায় নারী ও শিশুদের পথ দেখাচ্ছে সাফল্যের। ঘুনে ধরা সমাজের অন্ধকারকে দূর করে ছড়াচ্ছে আশার আলো।

জয়তী প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়

নারী বৈষম্য ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সগৌরবে এখন মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে যশোরের রেলগেটের মুজিব সড়কে নারী ও শিশু উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান ‘জয়তী সোসাইটি’। নিজেদেরকে আলোকিত করার আশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারী সংগঠনগুলো ছুঁটছেন জয়তী সোসাইটির কাছে।

‘জয়তীর সেবা গ্রহণ করুন, দুঃস্থ নারী ও শিশুদের সাহায্য করুন’ এই স্লোগান নিয়ে ২০০২ সালে যাত্রা শুরু করে এই সংগঠনটি। নারীরা গতানুগতিক কাজ না করে একটু ভিন্নভাবে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করবে এমন প্রত্যাশা থেকেই সংগঠনটি শুরু থেকেই তাদের কার্যক্রম চালাতে থাকে।

ষাটর্দ্ধ মায়েদেরকে মৌসুমি ফল খাওয়ানো।

সেই থেকে এখন পর্যন্ত সফলতার সাথে নারী জাগরণে কাজ করে যাচ্ছে একাগ্রচিত্তে। এছাড়াও ষাটর্দ্ধ নারীদের ভরনপোষণেরও দায়-দায়িত্ব নিয়েছেন এই সংগঠনটি।

সংগঠনটি শুধু নারীদের নিয়েই নয়। এই সংগঠনটি সমাজের অবহেলিত শিশুদের নিয়েও কাজ করছে নিরলসভাবে। কোন শিশুই যেন শিক্ষা থেকে ঝরে না পড়ে সেই দিকটা বিবেচনা করে সংগঠনটি সবার জন্য শিক্ষা প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতা আর বস্তিতে বেড়ে ওঠা শিশুরা শিক্ষা থেকে যেন বঞ্চিত না হয় সেজন্য জয়তী সোসাইটি পরিচালনা করছে ১২টি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়।

জয়তী সোসাইটি সামাজিক ও বাণিজ্যিক দুটি কার্যক্রমই পরিচালনা করে থাকেন। যশোরের মুজিব সড়কে ৭ কাঠা জমির উপর নিজস্ব অর্থায়নে ৬তলার ‘জয়তী ভবন’ গড়ে তুলেছেন সংগঠনটির পরিচালক ও বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত সফল নারীনেত্রী অর্চনা বিশ্বাস।

জয়তী গেস্ট হাউজ।

এই একই ভবনের ছাদের নিচে পরিচালনা করা হয় সকল সামাজিক ও বাণিজ্যিক কর্মসূচিগুলো। বাণিজ্যিক কার্যক্রমগুলো থেকে যে অর্থ আয় হয় সেই অর্থই ব্যয় করা হয় সমাজের অবহেলিত নারী ও শিশুদের পিছনে।

কথা হয় জয়তী সোসাইটির ম্যানেজার হাজেরা খাতুনের সাথে। তিনি বার্তা২৪.কমের এই প্রতিনিধিকে বলেন, জয়তী সোসাইটির বাণিজ্যিক ভাবে যে কাজগুলো করে থাকেন সেগুলো হলো- জয়তী হেঁসেল এন্ড রেস্টুরেন্ট (বাংলা ও চাইনিজ) এবং জয়তী ফাস্টফুড।

ষাটোর্ধ্ব মায়েদেরকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান।

এই রেস্টুরেন্ট ও ফাস্টফুডে যে খাবার তৈরি হয় তা একেবারেই নির্ভেজাল ও কীটনাশকমুক্ত। যা আমরা ঘরোয়া ভাবে তৈরি করি। এখানে ১২ মাসই ১৫-২০ রকমের পিঠা ও অনেক প্রকারের আচার পাওয়া যায়। আমরা যশোর শহরের মধ্যে হোম ডেলিভারিও দিয়ে থাকি।

জয়তী বিউটি পার্লার, জয়তী ফিটনেস সেন্টার (শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য) রয়েছে। যেখানে একেবারেই প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে কাজ করেন বিউটিশিয়ানরা। আবাসিক হোটেল, কনফারেন্স রুম, কমিউনিটি সেন্টার ও ভেজালমুক্ত, রংবিহীন বিভিন্ন আচার ও গুড়া মশলা তৈরি।

জয়তী ফিটনেস সেন্টার(শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য)

মোট ৫টি কনফারেন্স কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কনফারেন্স রুমে ৫০জন অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তাছাড়া খুব অল্প টাকায় খুবই উন্নতমানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। যা খুবই পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন ও গোছালো।

এ সকল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে যে টাকা আয় হয় সেই টাকা সামাজিক কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়। সামাজিক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- ২০০ শতাধিক ষাটর্দ্ধ অসহায় বৃদ্ধ মাকে সারা বছর বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া এবং তাদের যাবতীয় প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদান করা। তবে এই কাজে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ সোসাইটিকে সহযোগিতা করে থাকে।

জয়তী গেস্ট হাউজ।

দুঃস্থ নারীদের স্বাবলম্বী করার করার লক্ষ্যে ফিতরার টাকা সংগ্রহ করে এ পর্যন্ত ৫৫টি ছাগল ও ৭৫টি গরু প্রদান করেছে সোসাইটি। তাছাড়া আমাদের অর্থায়নে পরিচালিত যশোর শহরের বস্তিতে ১২টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। গরীব শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।

এ সময় তিনি আরও জানান, নারীদের আত্নশক্তিতে বলীয়ান করা, নারীদেরকে সুসংগঠিত করা এবং নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি। যার জ্বলন্ত প্রমাণ এই জয়তী ভবন। কারন এই ভবনে যতগুলো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার সবগুলোই নারীদের দিয়ে পরিচালিত হয়ে থাকে। শুধুমাত্র আবাসিক হোটেলটি বাদে।

জয়তী বিউটি পার্লার।

জয়তী সোসাইটির পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস বার্তা২৪.কমকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি সমাজে নারীরা কতটুকু অবহেলিত। বিশেষ করে অসহায় নারীরা নানা ভাবে বৈষম্য এবং শারীরিক ও মানষিক ভাবে নির্যাতিত হয়। সমাজের অসহায় নারী ও অবহেলিত শিশুদের কথা বিবেচনা করেই আমি পথ এগোতে থাকি।

প্রথম দিকে নানা বাঁধা আসলেও এখন আর কোন বাঁধা নেই। যারা এক সময় এই সোসাইটির বিপক্ষে ছিল আজ আনন্দের সংবাদ হলো এই সোসাইটিকে তারা এখন তাদের নিজের প্রতিষ্ঠান মনে করে। নারী ও শিশুদের নিয়ে আমাদের স্বপ্ন অনেক। আমরা আরো অনেক দূর যেতে চাই।

   

এক ঘরেই তিন বলী



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

চুল থেকে দাড়ি-সবই সফেদ। হাঁটাচলায় মন্থর। স্বাভাবিকভাবেই প্রবীণের বয়সটা আঁচ করা যায় প্রথম দেখাতেই। কিন্তু তার ষাটোর্ধ্ব বয়সটা যেন কেবল ক্যালেন্ডারের হিসাব। বয়স যতই ছোবল বসানোর চেষ্টা করুক না কেন-তিনি যেন এখনো ২৫ এর টগবগে তরুণ। সেই বলেই তো ফুসফুসের রোগবালাইকে তুড়ি মেরে ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলা এলেই হাজির হয়ে যান রিংয়ে। এক দুবার নয়, এবার কিনা পূর্ণ হলো সুবর্ণজয়ন্তী!

চট্টগ্রামের অন্যতম আবেগের ঠিকানা ঐতিহাসিক এই বলীখেলার বড় বিজ্ঞাপন হয়ে ওঠা এই বলীর নাম খাজা আহমদ বলী। ৫০ বছর ধরে বলীখেলায় অংশ নিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিয়ে যাওয়া এই বলীর এখন পড়ন্ত বয়স। ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে রোগ। কানেও শোনেন কম। খাজা আহমদ বুঝে গিয়েছেন, তার দিন ফুরাচ্ছে। কিন্তু তিনি যে বলীখেলার স্মৃতি থেকে সহজেই মুছে যেতে চান না। সেজন্যই উত্তরসূরী হিসেবে এরই মধ্যে গড়ে তুলেছেন নিজের দুই ছেলেকে। বাবার পাশাপাশি দুই ভাইও এখন বলীখেলার নিয়মিত প্রতিযোগী।

খাজা আহমেদ বলীর বাবাও বলীখেলায় অংশ নিতেন। বাবার সঙ্গে বলীখেলায় এসে ১৯৭৪ সালে শখের বসে খেলতে নামেন খাজা আহমেদও। বয়স তখন ১২ বছরের আশপাশে। সেই শুরু, আর কোনোদিন মিস করেননি বলীখেলায় অংশ নেওয়া। একবার চ্যাম্পিয়নের গৌরবও অর্জন করেছিলেন। বহু বছর ধরে খাজা আহমেদ বলী ও সত্তরোর্ধ্ব মফিজুর রহমানের ‘বলীযুদ্ধ’ জব্বারের বলীখেলার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এই দ্বৈরথ হয়তো আর দেখা যাবে না। দুই বছর আগে উৎপত্তি হওয়া ফুসফুসের রোগটা ইদানিং যে খাজা আহমদকে বেশিই ভোগাচ্ছে। সেজন্য গতবছর অবসরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার দুই ছেলেকে নিয়ে বলীখেলায় এসে আবেগ সামলাতে পারেননি খাজা আহমেদ। ছেলেদের সঙ্গে নিজেও নেমে পড়েন রিংয়ে। সেজন্য আরও একবার মফিজুর রহমান-খাজা আহমেদের লড়াই দেখল হাজারো দর্শক। যদিওবা যৌথ বিজয়ী ঘোষণা করে দুজনের মুখেই হাসি ফুটিয়েছেন রেফারি।

প্রতিপক্ষ মফিজুর রহমানের সঙ্গে বলী-যুদ্ধে খাজা আহমদ

কেন অবসর ভাঙলেন এমন প্রশ্নে হাসি খেলা করে যায় খাজা আহমেদ বলীর মুখে। বলতে থাকেন, ‘বয়সের কারণে শরীর দস্ত। ফুসফুসও ঠিকঠাক কাজ করছে না। সেজন্য অবসর নিয়েছিলাম। কিন্তু বলীখেলায় আসার পর দেখলাম দর্শকেরা সবাই অনুরোধ করছেন। সেজন্য মন বলল, না খেললে দর্শকদের প্রতি অন্যায় হবে। আর আবেগ ও ভালোবাসার কাছে বয়স-রোগ পেরেছে কবে?’

তবে এখানেই সব শেষ, বলে দিয়েছেন খাজা আহমেদ বলী। বলেছেন, ‘বয়স হয়ে গেছে। মনে হয় না আর খেলতে পারব। অসুখটা বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছে। সেজন্য মনে মনে মেনে নিয়েছি এটাই আমার শেষ অংশগ্রহণ। বাকিটা আল্লাহর হাতে।’

তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা খাজা আহমদের বাড়ি চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায়। কৃষিকাজ করেই চলে সংসার। তবে বলীখেলা এলে সব কাজ বাধ। কয়েকদিন ধরে চলে প্রস্তুতি। নিজের স্মৃতি ধরে রাখতে এরই মধ্যে খাজা আহমেদ নিজের দুই ছেলেকে গড়ে তুলেছেন বলী হিসেবে। ২০১২ সাল থেকে বলীখেলায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন তার বড় ছেলে মো. সেলিম। গত বছর থেকে যোগ দিয়েছেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। এখন বলীখেলার আগে দুই ছেলেকে নিয়ে চলে খাজা আহমদের প্রস্তুতি।

জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ‘বাবার কাছ থেকে আমরা বলীখেলা শিখেছি। বয়সের কারণে বাবা এখন অসুস্থ। হয়তো আর খেলা হবে না। সেজন্য তার উত্তরসূরী হিসেবে আমরা বলীখেলায় অংশ নেব সামনের দিনগুলোতে। এটা শুধু পরিবারের বলীর প্রজন্ম ধরে রাখার জন্য নয়, তরুণদের মাদক-সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগও।’

বাবাকে পাশে রেখে একই কথা বললেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। বলেন, ‘হয়তো বাবা আর খেলবেন না। তবে তিনি না খেললেও যতদিন বেঁচে থাকবেন বলীখেলা দেখতে আসবেন। রিংয়ের নিচে দাঁড়িয়ে আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাবেন।’

ছেলের কথা শুনে আবেগ খেলে যায় খাজা আহমেদ বলীর মনে। কাঁধের গামছাটা হাতে তুলে নিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘না খেললেও যতদিন বাঁচি এখানে, এই বলীর মাঠ লালদীঘি ময়দানে ছুটে আসব। এটা থেকে দূরে থাকতে পারব না।’

খাজা আহমেদ যখন কথা বলছিলেন দূরে কোথাও তখন মাইকে বাজছিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অমর গান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অক্লান্ত গলায় গেয়ে চলেছেন, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে...

;

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;