কিসের ওমিক্রন! এটা ঢাকা এয়ারপোর্ট!



মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যাংককের সঙ্গে নিয়মিত ফ্লাইট হিসেবে সপ্তাহে দু’বার উড়ালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিমান। তার প্রথম ফ্লাইট ডিসেম্বরের ২ তারিখ, বৃহস্পতিবার। প্রথম ফ্লাইটের যাত্রী আমি। বেলা তখন প্রায় ১ টা। বিমানের ভেতর সিট বেল্ট লাগিয়ে বসে আছি গত ১ ঘণ্টা ধরে, বিমানের কোন নড়চড় নেই। এরই মধ্যে ককপিট থেকে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে এক নারী কণ্ঠ ভেসে আসলো। জানানো হলো, কোভিডের পর ব্যাংকক রুটের প্রথম ফ্লাইটের যাত্রী হিসেবে আমাদের উপহার দেয়া হবে। বোঝা যাচ্ছিল, এসব কথা বলে যাত্রীদের একটি স্বস্তি দেয়ার বৃথা চেষ্টা করছিলেন ভদ্রমহিলা। তবে যাত্রীদের মধ্যে কোন উৎসাহ দেখা গেলো না।

উৎসাহ না থাকার কারণ রয়েছে যথেষ্ট। যেমন আমার পাশের যাত্রী নারায়ণগঞ্জের বাসা থেকে বের হয়েছেন সকাল ৬ টায়। ৭ ঘণ্টা পরেও তিনি উড়তে পারেননি। প্রতিষ্ঠার পর গত ৪১ বছর ধরে একটি রানওয়ে নিয়ে চলা বিমানবন্দর থেকে ওড়া মাঝে মাঝেই ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ওই একটি রানওয়েতেই বিমান উড্ডয়ন, অবতরণ, জরুরি অবতরণ, সব হয়। আজ বিমানবাহিনীর একটি বিমানের জরুরি অবতরণ হওয়ায় এই দেরি হচ্ছে বলে জানালেন পাইলট।

barta24

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় যখন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালাম, তখনই বোঝা হয়ে গিয়েছিল দিনটা আজ হয়রানি আর ক্লান্তিতে ভর করবে। বিমানবন্দরে প্রবেশের প্রথম সড়কেই গাড়ি থেকে যাত্রী ছাড়া অন্যদের বের করে দেয়া হচ্ছে। গাড়ির চেয়ে সিএনজিগুলোতে কেন জানি সন্দেহ বেশি! এটা যে নিয়মিত চিত্র তা নয়। এর পূর্বের রাতে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বোমা রয়েছে সন্দেহে তল্লাসী চালানো হয়। তাই আজ একটু বেশি কড়াকড়ি। মেনে নিয়ে গেটের দিকে এগোলাম।

barta24

এয়ারপোর্টের বহির্গমন ফ্লোরে একটা বিষয় খেয়াল করবেন। ১ থেকে ৩ নং গেইটে ভিড় বেশি থাকে। এরপর ধীরে ধীরে ভিড় কমে। যেমন আমি দেখলাম এই তিনটি গেটে মানুষ প্রবেশের দীর্ঘ লাইন। আবার আমি ৫ নং গেট দিয়ে যখন প্রবেশ করি, সেটি প্রায় ফাঁকা। ভেতরে প্রবেশ করেই প্রথমে করোনার আরটি-পিসিআর টেস্টের ফলাফল চেক করার পালা। প্রতিটি গেটের পাশে দুটি করে বুথ। তবে চোখ কান খোলা না রাখলে এগুলোর কিছুই আপনি বুঝতে পারবেন না। কারণ ‘এয়ারপোর্টে করণীয়’ যেমন কোন সাইন নেই, তেমনি আপনাকে দেখিয়ে দেয়ার কোন লোকও নেই। এর মধ্যে প্রতি দুটি বুথের একটিতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা নেই। তাই দীর্ঘ লাইন জমেছে সবখানেই। চেক করে সেখানে স্বাক্ষর করে দেন বিমানবন্দরের এসিসটেন্ট হেলথ অফিসার।

barta24

এরপর বাংলাদেশ বিমানের চেক-ইন কাউন্টারের লাইনে দাঁড়ালাম। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম, অনেকেই টিকেট হাতে অন্যদিকে ছুটছেন। আমিও ছুটলাম। এখানে আবার তিনটি কাউন্টার রয়েছে সকল কাগজপত্র চেক করার। এতো যাত্রীর সব কাগজ চেক করতে ডিসেম্বরের সকালেও ঘাম ঝড়ছে বিমানের কর্মকর্তাদের।

যে দেশে যেতে যেসব তথ্য প্রয়োজন, যাত্রীর কাছে সেগুলো রয়েছে কিনা, যাচাই করে ‘চেক’ সীল মেরে দেয়া হচ্ছে। এই কাউন্টারে একেবারে বাঘে-নেকড়েতে বাঁধলো কিছুক্ষণ পর। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে একটি দল যাচ্ছে থাইল্যান্ডে। এর মধ্যে একজনের হাতে লাল, কূটনৈতিক পাসপোর্ট। আরেকজনের হাতে নীল সরকারি পাসপোর্ট। থাইল্যান্ডে প্রবেশের নতুন নিয়মানুযায়ী ৫০ হাজার ইউএস ডলারের হেলথ ইন্সুরেন্স এবং কোয়ারান্টাইনের জন্য হোটেল রিজার্ভেশন প্রয়োজন। এই দুজনের এসব নেই। বিমানের কর্মকর্তা যখন এগুলো চাইলেন, তাদের দুজনের উত্তর সবকিছু এম্বেসি ম্যানেজ করেছে, আপনে সীল দেন। এ নিয়ে বাক বিতণ্ডা। অবশ্য পরে লাল পাসপোর্টধারী জিতলেন এবং সীল দিতে বাধ্য হলেন চেকের জন্য দ্বায়িত্বে থাকা ব্যক্তি।

এই কাউন্টারে এসে খেয়াল করলাম, আমার সামনে লোক মাত্র ২ জন। কিন্তু তাদের হাতে পাসপোর্ট রয়েছে ৭ থেকে ১০ টি করে। সাদা পোশাক এবং কালো প্যান্টের এই ব্যক্তিদের প্রথমে আমার কাস্টমসের লোক মনে হলো। কিন্তু আশপাশে তাকিয়ে দেখলাম আরো অনেক ব্যক্তি তাদের। বাংলাদেশে যখন প্রতি ৩ জনে একজন ভিআইপি, তখন এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণদের পাসপোর্ট হাতেই এরা দ্বায়িত্বরত মনে হলো।

পরে চেক ইন কাউন্টারেও দেখলাম এই ধরনের ব্যজ আর পোশাক পরা আরেক ব্যক্তির হাতে বেশ কয়েকটি পাসপোর্ট। এরা লাইন অমান্য করে কাউন্টারে সরাসরি পাসপোর্টগুলো নিয়ে চলে যায়। খেয়াল করলাম, এদের গলায় ঝুলানো ফিতায় শাহজালাল আন্তর্জ াতিক বিমানবন্দরের ফাঁকে ফাঁকে ছোট করে লেখা রয়েছে ‘হেলপ লাইন লিমিটেড’।

এবার জানতে চাইলাম এমন একজনের কাছে।

আপনারা কি এয়ারপোর্টের কর্মকর্তা নাকি বাংলাদেশ বিমানের?

এয়ারপোর্টের।

হেলপ লাইন লিমিটেডের লোক আপনেরা? আগেতো দেখি নাই!

আমরা সিভিল এভিয়েশনের অধীনে।

ও। আপনাদের নিয়োগ কি স্থায়ী?

না। চুক্তি ভিত্তিক।

এরপর আরো এক ঘণ্টার চেক ইন শেষে এই হেলপ লাইনের সহযোগিতা নেয়া ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলাম। আপনারা যে হেলপ পেলেন, কিভাবে এই হেলপ পাওয়া যায়?

উত্তরে বললেন, টাকা না দিলে, কি এসব পাওয়া যায়!

ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়ালাম এবার। আমার সামনে বৃদ্ধ আর বৃদ্ধা দাড়িয়ে আছেন দীর্ঘ লাইনে। আমি বললাম, আপনারা বিশেষ কাউন্টারের জন্য যান। কারন সেখানে প্রায় ফাঁকা আর যারা দাঁড়িয়ে আছে, সবাইকে সুস্থ এবং তরুন মনে হচ্ছে।

ইমিগ্রেশনের লাইনে গাঁয়ে গা লেগে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। একজনের সীল মারা হলেই আরেকজন পাসপার্ট চেপে দিচ্ছে। পাশের এক যাত্রী বললেন, ওমিক্রনের কারণে নাকি অনেক এয়ারপোর্ট এখন কড়াকড়ি আরোপ করছে। দুবাইগামী একজন নিয়মিত যাত্রী প্রতি উত্তরে বললেন, কিসের ওমিক্রন! এটা ঢাকা এয়ারপোর্ট!

দুপুর তখন ২ টা ১০ মিনিট। আমাদের বিমানটি ধীরে ধীরে রানওয়ের দিকে এগোচ্ছে। আড়াই ঘণ্টার বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে। অবশেষে উড়াল দেবার অপেক্ষায় আমরা।

   

এক ঘরেই তিন বলী



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

চুল থেকে দাড়ি-সবই সফেদ। হাঁটাচলায় মন্থর। স্বাভাবিকভাবেই প্রবীণের বয়সটা আঁচ করা যায় প্রথম দেখাতেই। কিন্তু তার ষাটোর্ধ্ব বয়সটা যেন কেবল ক্যালেন্ডারের হিসাব। বয়স যতই ছোবল বসানোর চেষ্টা করুক না কেন-তিনি যেন এখনো ২৫ এর টগবগে তরুণ। সেই বলেই তো ফুসফুসের রোগবালাইকে তুড়ি মেরে ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলা এলেই হাজির হয়ে যান রিংয়ে। এক দুবার নয়, এবার কিনা পূর্ণ হলো সুবর্ণজয়ন্তী!

চট্টগ্রামের অন্যতম আবেগের ঠিকানা ঐতিহাসিক এই বলীখেলার বড় বিজ্ঞাপন হয়ে ওঠা এই বলীর নাম খাজা আহমদ বলী। ৫০ বছর ধরে বলীখেলায় অংশ নিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিয়ে যাওয়া এই বলীর এখন পড়ন্ত বয়স। ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে রোগ। কানেও শোনেন কম। খাজা আহমদ বুঝে গিয়েছেন, তার দিন ফুরাচ্ছে। কিন্তু তিনি যে বলীখেলার স্মৃতি থেকে সহজেই মুছে যেতে চান না। সেজন্যই উত্তরসূরী হিসেবে এরই মধ্যে গড়ে তুলেছেন নিজের দুই ছেলেকে। বাবার পাশাপাশি দুই ভাইও এখন বলীখেলার নিয়মিত প্রতিযোগী।

খাজা আহমেদ বলীর বাবাও বলীখেলায় অংশ নিতেন। বাবার সঙ্গে বলীখেলায় এসে ১৯৭৪ সালে শখের বসে খেলতে নামেন খাজা আহমেদও। বয়স তখন ১২ বছরের আশপাশে। সেই শুরু, আর কোনোদিন মিস করেননি বলীখেলায় অংশ নেওয়া। একবার চ্যাম্পিয়নের গৌরবও অর্জন করেছিলেন। বহু বছর ধরে খাজা আহমেদ বলী ও সত্তরোর্ধ্ব মফিজুর রহমানের ‘বলীযুদ্ধ’ জব্বারের বলীখেলার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এই দ্বৈরথ হয়তো আর দেখা যাবে না। দুই বছর আগে উৎপত্তি হওয়া ফুসফুসের রোগটা ইদানিং যে খাজা আহমদকে বেশিই ভোগাচ্ছে। সেজন্য গতবছর অবসরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার দুই ছেলেকে নিয়ে বলীখেলায় এসে আবেগ সামলাতে পারেননি খাজা আহমেদ। ছেলেদের সঙ্গে নিজেও নেমে পড়েন রিংয়ে। সেজন্য আরও একবার মফিজুর রহমান-খাজা আহমেদের লড়াই দেখল হাজারো দর্শক। যদিওবা যৌথ বিজয়ী ঘোষণা করে দুজনের মুখেই হাসি ফুটিয়েছেন রেফারি।

প্রতিপক্ষ মফিজুর রহমানের সঙ্গে বলী-যুদ্ধে খাজা আহমদ

কেন অবসর ভাঙলেন এমন প্রশ্নে হাসি খেলা করে যায় খাজা আহমেদ বলীর মুখে। বলতে থাকেন, ‘বয়সের কারণে শরীর দস্ত। ফুসফুসও ঠিকঠাক কাজ করছে না। সেজন্য অবসর নিয়েছিলাম। কিন্তু বলীখেলায় আসার পর দেখলাম দর্শকেরা সবাই অনুরোধ করছেন। সেজন্য মন বলল, না খেললে দর্শকদের প্রতি অন্যায় হবে। আর আবেগ ও ভালোবাসার কাছে বয়স-রোগ পেরেছে কবে?’

তবে এখানেই সব শেষ, বলে দিয়েছেন খাজা আহমেদ বলী। বলেছেন, ‘বয়স হয়ে গেছে। মনে হয় না আর খেলতে পারব। অসুখটা বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছে। সেজন্য মনে মনে মেনে নিয়েছি এটাই আমার শেষ অংশগ্রহণ। বাকিটা আল্লাহর হাতে।’

তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা খাজা আহমদের বাড়ি চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায়। কৃষিকাজ করেই চলে সংসার। তবে বলীখেলা এলে সব কাজ বাধ। কয়েকদিন ধরে চলে প্রস্তুতি। নিজের স্মৃতি ধরে রাখতে এরই মধ্যে খাজা আহমেদ নিজের দুই ছেলেকে গড়ে তুলেছেন বলী হিসেবে। ২০১২ সাল থেকে বলীখেলায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন তার বড় ছেলে মো. সেলিম। গত বছর থেকে যোগ দিয়েছেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। এখন বলীখেলার আগে দুই ছেলেকে নিয়ে চলে খাজা আহমদের প্রস্তুতি।

জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ‘বাবার কাছ থেকে আমরা বলীখেলা শিখেছি। বয়সের কারণে বাবা এখন অসুস্থ। হয়তো আর খেলা হবে না। সেজন্য তার উত্তরসূরী হিসেবে আমরা বলীখেলায় অংশ নেব সামনের দিনগুলোতে। এটা শুধু পরিবারের বলীর প্রজন্ম ধরে রাখার জন্য নয়, তরুণদের মাদক-সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগও।’

বাবাকে পাশে রেখে একই কথা বললেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। বলেন, ‘হয়তো বাবা আর খেলবেন না। তবে তিনি না খেললেও যতদিন বেঁচে থাকবেন বলীখেলা দেখতে আসবেন। রিংয়ের নিচে দাঁড়িয়ে আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাবেন।’

ছেলের কথা শুনে আবেগ খেলে যায় খাজা আহমেদ বলীর মনে। কাঁধের গামছাটা হাতে তুলে নিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘না খেললেও যতদিন বাঁচি এখানে, এই বলীর মাঠ লালদীঘি ময়দানে ছুটে আসব। এটা থেকে দূরে থাকতে পারব না।’

খাজা আহমেদ যখন কথা বলছিলেন দূরে কোথাও তখন মাইকে বাজছিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অমর গান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অক্লান্ত গলায় গেয়ে চলেছেন, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে...

;

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;