সত্যি মিথ্যে এবং গল্পের ঘনঘটায় পরীমণি



তানিয়া চক্রবর্তী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এটা নিয়ে লিখতাম না.... কিন্তু মেয়েটির কান্নাটা দেখে লিখতে ইচ্ছে করলো। বাংলাদেশের দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালক অসাধারণ কথা বলেছেন পাড়ায় পাড়ায় ঘরে ঘরে বহু অন্যায়কারী বসে আছেন তাদের নিয়ে কোথাও কোনো প্রতিবাদের ঘনঘটা নেই।

যেহেতু একজন সুন্দর মেয়ে বিপাকে পড়েছে অতএব তাকে নিয়ে গল্প বানাও।

ধরেই নিলাম তার বিরুদ্ধে সমস্ত কথা সত্যি তাই বলে তাকে যেন অন্যায়ের শীর্ষস্থানীয় ক্রিমিনাল বানিয়ে দেওয়া হলো! সোশ্যাল মিডিয়া সমস্ত মানুষ তাকে নিয়ে মজা দেখছেন।

একটার পর একটা কাহিনী বেরিয়ে আসছে।হতেই পারে সত্যি কিংবা মিথ্যে কিন্তু এতে যে একটা অন্য অনুভূতির আনন্দ মানুষ পাচ্ছেন সেটা অস্বীকার করা যায় না! আমাদের মস্তিষ্ক অনেক সময় একটা স্বচ্ছতা হারিয়ে যা যা শুনেছি, বুঝেছি তার ওপর ভিত্তি করে চলতে থাকে.....এই অভ্যাসটা মনে হয় বদলে দেওয়া উচিত....

এই তো ৭ / ৮ বছর লিখছি,কেই বা চেনে কতজন বা চেনে কিন্তু  এইটুকু বৃত্তেই কত ধারণাহীন গুজব নিজেই শুনে তাজ্জব বনে যাই! যে যার মতো ধারাবাহিকতায় গল্প বানায়...কারণ এই শব্দভিত্তিক মনোহর পরিসরে সত্যি কষ্ট করে বোঝার চেয়ে মিথ্যের রসাস্বাদন অনেক সহজতর....

আমার কবি বন্ধুরা, বিশেষত মেয়েরা সেই একই কথা বলেন কত ক্ষেত্রে তারা বানানো হাস্যকর গল্পের উপাদান।

কেউ একাধিকবার বিয়ে করেছেন তাকে কটাক্ষ, কাউকে কোথাও কারো সঙ্গে কফি খেতে দেখা গেছে, কেউ কোথাও কারো পাশে দাঁড়িয়েছে, কারো ডিভোর্স হয়েছে, কারো বাবা -মা সঙ্গে নেই ইত্যাদি কত কত কথা! কথারমালা শুরু হলে আর যদি কোনোক্রমে মেয়েটি একটু আকর্ষণীয় হয় তাহলে তো কেল্লাফতে বানাও দেদার গল্প যত ইচ্ছে....

সাম্প্রদায়িকতা, শিশুপাচার, রেপ, খাদ্যেভেজাল এইসমস্ত ভয়ঙ্কর অন্যায় মানুষকে সতর্ক করতে পারে না কিন্তু মেয়ে সম্পর্কিত গল্প হলে তা টানটান করে দেয় মানুষজনকে! কেন আমরা যতখানি খারাপটা শুনি ততখানি জোর দিয়ে ভালটা শুনি না কেন??? কেন ভাবি না দুটোদিকই?

আমি শুধু দেখছিলাম পরীমণির লাইভটি, সে মেয়েটি সত্যি মিথ্যে ন্যায় অন্যায় যাই করুক তার বিচারযোগ্য না হলেও বিচার হবে এটাই সামজিকতা।

সে কথা থাক আমি দেখছিলাম পাবলিক কমেন্ট ও প্রতিক্রিয়া ...মানুষ কত বিকৃত হলে ক্রমাগত খারাপ কথা ও খিল্লির পর খিল্লি ও অশ্লীল মন্তব্য পেশ করতে পারে একটা আপাত চাক্ষুষ ভাবেও একটি মেয়েমানুষের অসহায় অবস্থা দেখে!

ফলত তথাকথিত শিক্ষা ও অশিক্ষা দুটোরই দুরবস্থা বড় প্রকট।

মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর অনেক অনেক ভাল কাজ দেখেছি, তার জন্যই বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে একজন অভিনেত্রীকে ধরতে এত সরঞ্জামের প্রয়োজনকে আটকে দিলে ভালো হত। খুব শান্ত একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে কী যাওয়া যেতোই না?

এমনি মেয়েরা অনেকক্ষেত্রে কেবল ভয়েই আটকে গেছে জীবনের অনেক সম্ভাবনা নিয়ে! এই ঘটনা দেখে কী কোনো মেয়ে ভয় পাবে না আগামীদিনে তারা কী ভাববে না যদি যড়যন্ত্রের স্বীকার হই!

একটি শিশুকে তারা কোনো বাবা -মা মেরে ধরে শাসন করেন কেউ বা ভালবেসে বুঝিয়ে। উদ্দেশ্য যদি সাধু, প্রক্রিয়াকে নিয়ে ভাবা উচিত।

অযথা শব্দ,কাহিনী, গল্প একজন সুস্থ মানুষের জীবন তছনছ করে দিতে পারে, সেখানে কেউ যদি এলোমেলো হয় তার ক্ষতির সম্ভাবনা আরো বাড়ে!

সে পরীমণি বড় সারির অভিনেত্রী হোক, খুব ছোট কেউ হক কিম্বা পর্নো স্টার যাই হোক না কেন তাকে যদি অন্যায়কারীর রানী বানানো হয় তাকে সাহায্যকারীদের নাম নেই কেন? অন্যায় সমাজে একক ভাবে ঘটে না।আর যখন অন্যায়ের ক্ষুদ্র পরিসরে মহা আয়োজন করে বিচার হয় তখন লুকোনা ক্রাইমরা হাসতে থাকে আরো বেড়ে ওঠার প্রশ্রয় পেয়ে।

অন্যান্য অন্যায়ের যথাযথ বিচার করা হলে এটা নিয়ে বাড়াবাড়িতেও প্রশ্ন উঠত না।

সারল্য ও সৌন্দর্য্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় কারণ চারপাশ তার ব্যবহারকারী হয় পরিপোষক হয় না....এটাই অনেক ধ্বংসের কারণ।

সিনেমাটির নাম "ট্রায়াল বাই ফায়ার" ---একজন বাবা তার তিন শিশুকে হত্যার দায়ে বিচারে মৃত্যুদণ্ড পেল। শেষে বোঝা যায় তিনি নির্দোষ কিন্তু তবুও তার বিচারে মৃত্যু হয় কারণ ছেলেটি মদ খেতো, ঝগড়াঝামেলাও করত। তো কোনো স্বচ্ছতার দরকার নেই, মানুষ ভাবল এরম ছেলে সন্তানকে খুন করতেই পারে! আন্দাজে, ধারণায় প্রতিবেশীরা তাকে খুনির তকমা দিল। শেষে দেখা যায় প্রশাসন সব বুঝেও শুধু নিজস্ব তাগিদে ছেলেটির মৃত্যু হতে দেখল।

ফলে আমরা নিজেরাই বিচারের অযোগ্য আর বসেছি বিচারকের আসনে....।

লেখক পরিচিতি:

তানিয়া চক্রবর্তী, মেইল- [email protected]

কাব্যগ্রন্থ -) কিছু একটার জন্য (পাঠক প্রকাশনী, ২০১৩কলকাতা বইমেলা) ২) পুরুষের বাড়ি মেসোপটেমিয়া (সৃষ্টিসুখ প্রকাশনী, ২০১৫ কলকাতা বইমেলা) ৩) রাহুকেন্দ্রিক ঋতুকাল (শুধু বিঘে দুই প্রকাশনী, ২০১৬) ৪) লম্পট-(ছোট কবিতা প্রকাশনী, বাংলাদেশ একুশে বইমেলা ২০১৭)৫/ আমিষ বিবাহ (২০১৭ নভেম্বর, আত্মজা প্রকাশনী) ৬/ জুনিপোকার আলোয় বাঁধা ঘর (কারিগর প্রকাশনী ২০১৮) ৭/ পুতুল মানুষ (সিগনেট ,২০১৯)

গদ্যগ্রন্থ- কাঠপুত্‌লির বৈতরণি ও অন্যান্য (বই তরণি প্রকাশনী ২০১৮) ২০১৬ তে কালিমাটি পত্রিকার “সমকামীতা-রূপান্তরকামীতা” ও ২০১৭ তে “অতিপ্রাকৃত” এই বিশেষ সংখ্যা সম্পাদনা। আত্মজা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত পূর্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য্য বিরচিত “মহাভারত ও অন্যান্য” বইটির সম্পাদনা। 

সম্মাননা -১/কালকথা পত্রিকার সৌজন্য “কালকথা সম্মান ২০১৪”। ২/ ইতিকথা পত্রিকার সৌজন্য “ইতিকথা যুব সম্মান ২০১৬”। ৩/শব্দসাঁকো সাহিত্য সম্মাননা ১৪২৪। ৪/ বিনয় মজুমদার সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের “চাকা সাহিত্য সম্মান ২০১৭”। ৫/রাঢ় বাংলা আন্তরিক সম্মাননা ২০১৮ ইত্যাদি। ৬/ভাষানগর মল্লিকা সেনগুপ্ত পুরস্কার, ২০১৯। ৭/সময়ের শব্দ স্মারক সম্মান ৮/ বসিরহাট লিটল ম্যাগাজিন মেলা পদ্য পুরস্কার ২০২০।

   

এক ঘরেই তিন বলী



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

দুই ছেলের সঙ্গে খাজা আহমদ বলী/ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

চুল থেকে দাড়ি-সবই সফেদ। হাঁটাচলায় মন্থর। স্বাভাবিকভাবেই প্রবীণের বয়সটা আঁচ করা যায় প্রথম দেখাতেই। কিন্তু তার ষাটোর্ধ্ব বয়সটা যেন কেবল ক্যালেন্ডারের হিসাব। বয়স যতই ছোবল বসানোর চেষ্টা করুক না কেন-তিনি যেন এখনো ২৫ এর টগবগে তরুণ। সেই বলেই তো ফুসফুসের রোগবালাইকে তুড়ি মেরে ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলা এলেই হাজির হয়ে যান রিংয়ে। এক দুবার নয়, এবার কিনা পূর্ণ হলো সুবর্ণজয়ন্তী!

চট্টগ্রামের অন্যতম আবেগের ঠিকানা ঐতিহাসিক এই বলীখেলার বড় বিজ্ঞাপন হয়ে ওঠা এই বলীর নাম খাজা আহমদ বলী। ৫০ বছর ধরে বলীখেলায় অংশ নিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিয়ে যাওয়া এই বলীর এখন পড়ন্ত বয়স। ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে রোগ। কানেও শোনেন কম। খাজা আহমদ বুঝে গিয়েছেন, তার দিন ফুরাচ্ছে। কিন্তু তিনি যে বলীখেলার স্মৃতি থেকে সহজেই মুছে যেতে চান না। সেজন্যই উত্তরসূরী হিসেবে এরই মধ্যে গড়ে তুলেছেন নিজের দুই ছেলেকে। বাবার পাশাপাশি দুই ভাইও এখন বলীখেলার নিয়মিত প্রতিযোগী।

খাজা আহমেদ বলীর বাবাও বলীখেলায় অংশ নিতেন। বাবার সঙ্গে বলীখেলায় এসে ১৯৭৪ সালে শখের বসে খেলতে নামেন খাজা আহমেদও। বয়স তখন ১২ বছরের আশপাশে। সেই শুরু, আর কোনোদিন মিস করেননি বলীখেলায় অংশ নেওয়া। একবার চ্যাম্পিয়নের গৌরবও অর্জন করেছিলেন। বহু বছর ধরে খাজা আহমেদ বলী ও সত্তরোর্ধ্ব মফিজুর রহমানের ‘বলীযুদ্ধ’ জব্বারের বলীখেলার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এই দ্বৈরথ হয়তো আর দেখা যাবে না। দুই বছর আগে উৎপত্তি হওয়া ফুসফুসের রোগটা ইদানিং যে খাজা আহমদকে বেশিই ভোগাচ্ছে। সেজন্য গতবছর অবসরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার দুই ছেলেকে নিয়ে বলীখেলায় এসে আবেগ সামলাতে পারেননি খাজা আহমেদ। ছেলেদের সঙ্গে নিজেও নেমে পড়েন রিংয়ে। সেজন্য আরও একবার মফিজুর রহমান-খাজা আহমেদের লড়াই দেখল হাজারো দর্শক। যদিওবা যৌথ বিজয়ী ঘোষণা করে দুজনের মুখেই হাসি ফুটিয়েছেন রেফারি।

প্রতিপক্ষ মফিজুর রহমানের সঙ্গে বলী-যুদ্ধে খাজা আহমদ

কেন অবসর ভাঙলেন এমন প্রশ্নে হাসি খেলা করে যায় খাজা আহমেদ বলীর মুখে। বলতে থাকেন, ‘বয়সের কারণে শরীর দস্ত। ফুসফুসও ঠিকঠাক কাজ করছে না। সেজন্য অবসর নিয়েছিলাম। কিন্তু বলীখেলায় আসার পর দেখলাম দর্শকেরা সবাই অনুরোধ করছেন। সেজন্য মন বলল, না খেললে দর্শকদের প্রতি অন্যায় হবে। আর আবেগ ও ভালোবাসার কাছে বয়স-রোগ পেরেছে কবে?’

তবে এখানেই সব শেষ, বলে দিয়েছেন খাজা আহমেদ বলী। বলেছেন, ‘বয়স হয়ে গেছে। মনে হয় না আর খেলতে পারব। অসুখটা বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছে। সেজন্য মনে মনে মেনে নিয়েছি এটাই আমার শেষ অংশগ্রহণ। বাকিটা আল্লাহর হাতে।’

তিন ছেলে ও এক মেয়ের বাবা খাজা আহমদের বাড়ি চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায়। কৃষিকাজ করেই চলে সংসার। তবে বলীখেলা এলে সব কাজ বাধ। কয়েকদিন ধরে চলে প্রস্তুতি। নিজের স্মৃতি ধরে রাখতে এরই মধ্যে খাজা আহমেদ নিজের দুই ছেলেকে গড়ে তুলেছেন বলী হিসেবে। ২০১২ সাল থেকে বলীখেলায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন তার বড় ছেলে মো. সেলিম। গত বছর থেকে যোগ দিয়েছেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। এখন বলীখেলার আগে দুই ছেলেকে নিয়ে চলে খাজা আহমদের প্রস্তুতি।

জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ‘বাবার কাছ থেকে আমরা বলীখেলা শিখেছি। বয়সের কারণে বাবা এখন অসুস্থ। হয়তো আর খেলা হবে না। সেজন্য তার উত্তরসূরী হিসেবে আমরা বলীখেলায় অংশ নেব সামনের দিনগুলোতে। এটা শুধু পরিবারের বলীর প্রজন্ম ধরে রাখার জন্য নয়, তরুণদের মাদক-সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে দূরে রাখতে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগও।’

বাবাকে পাশে রেখে একই কথা বললেন ছোট ছেলে মো. কাইয়ুমও। বলেন, ‘হয়তো বাবা আর খেলবেন না। তবে তিনি না খেললেও যতদিন বেঁচে থাকবেন বলীখেলা দেখতে আসবেন। রিংয়ের নিচে দাঁড়িয়ে আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাবেন।’

ছেলের কথা শুনে আবেগ খেলে যায় খাজা আহমেদ বলীর মনে। কাঁধের গামছাটা হাতে তুলে নিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘না খেললেও যতদিন বাঁচি এখানে, এই বলীর মাঠ লালদীঘি ময়দানে ছুটে আসব। এটা থেকে দূরে থাকতে পারব না।’

খাজা আহমেদ যখন কথা বলছিলেন দূরে কোথাও তখন মাইকে বাজছিল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অমর গান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অক্লান্ত গলায় গেয়ে চলেছেন, যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে...

;

চাকরি ছেড়ে বসের সামনেই ঢোল বাজিয়ে নাচলেন যুবক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যদিনের অফিসের কর্মপরিবেশে অনেকের মধ্যেই 'বিরক্তি' চলে আসে। তবুও ধৈয্য নিয়ে সব সহ্য করে টিকে থাকার জন্য চালিয়ে যান লড়াই। তবে এ যাত্রায় সকলের দ্বারা টিকে থাকা সম্ভব হয় না। অফিসের 'বিষাক্ত' কর্মপরিবেশে অনেকেই ভোগেন মানসিক সমস্যায় কিংবা ব্যক্তিজীবনে। এমন পরিবেশ থেকে বাঁচতে একেক জন একেক পন্থা অবলম্বন করে থাকেন।

তবে অনিকেত নামের এক যুবক এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যা করেছেন নেট দুনিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল। এসব থেকে মুক্তি পেতে চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন এই যুবক। এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি, বসের সামনেই ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচে উদযাপন করেছেন এমন মুহূর্তের।

ঘটনাটি ভারতের পুনে রাজ্যের। অনিকেত নামের ওই যুবক বিক্রয় সহযোগী হিসেবে চাকরি করতেন।

তার এমন উদযাপনের একটি ভিডিও ইন্সটাগ্রাম শেয়ার করেছেন অনীশ ভগত।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, গত তিন বছর ধরে এই কোম্পানির সাথে কাজ করেও বেতন খুব একটা বাড়েনি। এছাড়াও অফিসের বসের দ্বারাও তাকে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত হতে হয়েছে।

তাই তার কাজের শেষ দিনে বন্ধুরা অফিসের বাইরে ঢোল নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন এবং নেচেছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ঘটনায় তার বস অনেক উত্তেজিত হয়েছেন। পাশাপাশি তার বস লোকজনকে ধাক্কা দিয়েছেন এবং চিৎকারও করেছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ভগত লিখেছেন, আমি মনে করি আপনারা অনেকেই এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবেন। আজকাল বিষাক্ত কাজের সংস্কৃতি খুব বেশি দেখা যায়। সম্মান এবং অধিকারের অভাব খুবই সাধারণ। অনিকেত তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আমি আশা করি এই গল্প মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।

পোস্ট করা ভিডিওটি এক মিলিয়নেরও (১০ লাখের বেশি) বেশি ভিউ পেয়েছে। পোস্টটিতে অসংখ্য লাইক ও কমেন্টও রয়েছে।

একজন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন এটি আমাকে এত সন্তুষ্ট করেছে।'

আরেকজন লিখেছেন, 'নাচটি আমাকে অন্য মাত্রার তৃপ্তি দিয়েছে।'

'আপনি সত্যিই আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ইতিবাচক এবং উত্সাহী ব্যক্তি'- তৃতীয় একজন ঠিক এভাবেই নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস 

;

অভয়ারণ্যে মানুষ যখন বন্দিখাঁচায়



প্রমা কোয়েল, ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিড়িয়াখানা, নানানরকম পশুপাখি ও প্রাণীর বন্দিশালা। কেবল রং-বেরঙের চিড়িয়াই নয়; বাঘ, সিংহ, ভালুক, বানর, গণ্ডারসহ কত বন্যপ্রাণীই না খাঁচায় বন্দি থাকে!

চিড়িয়াখানায় রাখতে বন্য প্রাণীদের প্রকৃতির স্বাধীন জীবন থেকে ছিনিয়ে আনা হয়। তাদের খাঁচায় বন্দি করা হয় যেন, মানুষ তাদের দেখে আনন্দ পায়। অনেক প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি খাঁচাতেই কেটে যায়।

ছোট থেকে বড় সব বয়সের মানুষই চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। শিশুরা না হয় অবুঝ! তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক তারাও চিড়িয়াখানায় এই বন্দি প্রাণীদের জীবনকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এশিয়ার বড় দেশ চীনে রয়েছে, এক অদ্ভুত চিড়িয়াখানা। চংকিংয়ে অবস্থিত সেই চিড়িয়াখানার নাম ‘লেহে লেদু বন্যপ্রাণী চিড়িয়াখানা’। একে ‘রিভার্স জু’ (বিপরীত চিড়িয়াখানা) বলেও ডাকা হয়।

এখানেও মানুষ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে পশু দেখতে আসেন। তবে একেবারেই ভিন্ন উপায়ে। মূলত, একটি খাঁচা রয়েছে, যেখানে মানুষদের সেই খাঁচায় পুরা হয়। তারপর সেই খাঁচাবন্দি মানুষদের নিয়ে রাখা হয়, অভয়ারণ্যে। সেখানে বন্য প্রাণীরা মানুষের খাঁচার চারপাশে অবাধে ঘুরতে থাকে। চিড়িয়াখানায় বন্দি প্রাণীদের বন্দিজীবনের এক প্রতীকী দৃশ্য!

অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা!

অভয়ারণ্যে খাঁচায় বন্দি মানুষ, ছবি-সংগৃহীত

খুব কাছে থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মুক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যেমন লোমহর্ষক, ঠিক তেমনই আতঙ্কজনকও হতে পারে। বিপরীতধর্মী এই চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য প্রথম উন্মুক্ত করা হয়, ২০১৫ সালে। তখন বিশ্বের সংবদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়েছিল এ চিড়িয়াখানাটি।

একটি শক্ত লোহার খাঁচাবেষ্টিত দর্শনার্থীদের একটি ট্রাকে তুলে অভয়ারণ্যে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ঘিরে ধরে ঘুরতে থাকে বাঘ, ভালুক, সিংহ ইত্যাদি হিংস্র প্রাণী।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার প্রধান চ্যান লিয়াং বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। খাঁচার ফাঁকা অংশ দিয়ে হাতের আঙুলও বের না করার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

তবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই চিড়িয়াখানাটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে অনেক। এর নৈতিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্নও তুলেছেন।

অনেকে মনে করেন, এরকম ব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কারণ, শিকারী প্রাণীগুলো প্রচণ্ড হিংস্র। তাই, সে কারণে যে কোনো সময় বিপজ্জনক ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আবার এরকম চিন্তাভাবনার প্রশংসাও করেছেন অপর একটি পক্ষ। তাদের বক্তব্য, পৃথিবীটা কেবল মানুষদের নয়। প্রকৃতিতে সব প্রাণীদের একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। তাদের বন্দি করে রাখা মানুষের উচিত নয়। কারণ, মুক্ত প্রকৃতিতে বিরাজ করার অধিকার সব প্রাণীরই রয়েছে।

তাদের মন্তব্য, আমরা প্রাণীদের আবাসস্থল বনজঙ্গল সব উজাড় করেছি। সে কারণে তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আবার প্রাণীদের বন্দি রেখে তাদের জীবন চরম দুর্বিষহ করে তুলি।

চাইলে এবং সুযোগ পেলে এই ধরনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে চিড়িয়াখানাটি ঘুরে আসতে পারেন বৈকি!

তথ্যসূত্র: এনিমেল অ্যারাউন্ড দ্য গ্লোব

;

৫ বছরের শিশুর বিস্ময়কর প্রতিভা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়স সবে ৫ কিংবা ৬। এই বয়সেই তার প্রতিভা দেখে অবাক হবে যে-কেউ!

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ১ মিলিয়নের (১০ লাখের বেশি) বেশি মানুষ দেখেছেন। খবর এনডিটিভি। 

ভিডিওতে রিলি নামের ওই শিশুটিকে প্রথমে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তারপর সে একটি শক্তিশালী গর্জন দিয়ে শ্বাস ছাড়ে। ওই গর্জনটি হুবুহ সিংহের গর্জনের অনুরূপ।

রিলির মা অ্যামি ভিডিওটি এক্সে শেয়ারের পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। শিশুটির এমন নিখুত দক্ষতা দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। ভিডিওটিতে অনেকেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, এত অল্প বয়সে এমন বাস্তবসম্মত গর্জন তৈরি করার রিলির ক্ষমতার বিস্ময় প্রকাশ করে।

আরেকজন লিখেছেন, শিশুরা খুব দ্রুত শিখে। তার এমন প্রতিভা সত্যিই অবাক করার মতো।

;