এ কেমন প্রামাণ্যচিত্র উৎসব!



আশরাফুল ইসলাম পরিকল্পনা সম্পাদক, বার্তা২৪.কম
উৎসবের আমন্ত্রণপত্র। ছবি: সংগৃহীত

উৎসবের আমন্ত্রণপত্র। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ‘১২তম লিবারেশন ডক্ ফেস্ট বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৫ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসবের শেষ দিন ছিল সোমবার। ঘোষিত অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী এ দিন নির্বাচিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরুর কথা ছিল বেলা ১১টায়। 

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মিলনায়তনে এ প্রদর্শনী দেখতে এই প্রতিবেদক সকাল পৌনে ১১টায় জাদুঘর প্রাঙ্গনে পৌছে দেখতে পান কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া সেখানে কেউ নেই। তবে জাদুঘর ভবনের দেওয়ালে বেমানানভাবে পেচিয়ে থাকা এ সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত কয়েকটি হ্যাংগিং ব্যানার উৎসবের দৈন্যতাকেই যেন জানান দিচ্ছিল।   

নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে উৎসব সম্পর্কিত কোন আপডেট না পেয়ে জাদুঘর সচিবালয়ে গিয়ে ফারহাত নামে দায়িত্বরত একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি উৎসব সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। ফারহাত জানান, বেলা ১১টায় উৎসবের পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী তথ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরু হবে।  

মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, ফাঁকা মিলনায়তনটিতে শুধুমাত্র একজন কর্মী প্রজেক্টরে প্রদর্শনের জন্য তথ্যচিত্র চালিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষার পর মৃন্ময় ব্যানার্জী নামে কলকাতা থেকে আসা একজন তথ্যচিত্র নির্মাতা উপস্থিত হন সেখানে। তিনি জানালেন, তাঁর তথ্যচিত্র এই উৎসবে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে এবং ইমেইল ও ফোন করে তাকে উৎসবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বেলা ১১টার কিছু পরে কোন দর্শনার্থীর উপস্থিতি এবং ঘোষণা ছাড়াই মৃন্ময় ব্যানার্জীর ‘বিপ্লবের ধ্বজা হাতে যাঁরা এনে দিল স্বাধীনতা’ শীর্ষক তথ্যচিত্রটির প্রদর্শন শুরু করেন ওই জাদুঘর কর্মী।

৪০ মিনিট দীর্ঘের এই তথ্যচিত্র প্রদর্শন শেষ হলে ফাঁকা মিলনায়তনে এক শুভানুধ্যায়ী নিয়ে নিজের নির্মাণ করা তথ্যচিত্র দেখতে আসা মৃন্ময় হতাশা ব্যক্ত করে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘কোন দর্শনার্থী যদি এই এটি না-ই দেখলো তবে তা আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসব নাম দিয়ে এখানে প্রদর্শনের কি গুরুত্ব থাকতে পারে! এমন উৎসবে আমন্ত্রণ জানানোরইবা কি প্রয়োজন ছিল?’

তরুণ এই নির্মাতা বলেন, ‘উৎসবে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ইমেইল করা হয়, তাতে আমার টিমের জন্য ২টি পাশ ইস্যু করার কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞেস করলে কেউই এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেই সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যয়ে এই তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছি। আগ্রহীরা যদি দেখতেই না পারলো তবে এ এধরণের আয়োজনে অংশগ্রহণ অর্থহীন।’

তিনি বলেন, ‘হয়তোবা আয়োজকরা এই উৎসব সম্পর্কে আগ্রহীদের কাছে তথ্য পৌছে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত অনুরাগীরা এই ধরণের আয়োজনে সব বাধা উপেক্ষা করেও ছুটে আসেন-অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তা দেখে এসেছি আমরা।’  

নির্মাতা মৃন্ময় ব্যানার্জীর তথ্যচিত্র দেখতে আসা বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া জাদুঘর মিলনায়তনটি প্রদর্শনীর জন্য উপযোগি ছিল না বলে অভিযোগ করে বলেন, ‘মিলনায়তনে আধঘন্টার মতো বসে থেকে বুঝতে পারছি প্রদর্শনের আগে এটিতে স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতার কাজটিও করেননি জাদুঘর কর্মীরা। রীতিমতো দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম, এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করে একটি প্রেক্ষাগৃহকে যেভাবে প্রস্তুত করা হয়, এখানে তা করা হয়নি।’

এ রকম মিলনায়তনে এসে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন বলেও মন্তব্য করেন এই বক্ষব্যাধি চিকিৎসক।  


মিলনায়তন থেকে বেরিয়েই জাদুঘর অভ্যন্তরে বিশ-পচিশজন স্বেচ্ছাসেবককে খোশগল্প করতে দেখা যায়। তাদের কেউই মিলনায়তনে কেন গেলেন না জানতে চাইলে-তারা কথা বলতে রাজি হননি। উৎসব সমন্বয়ে থাকা ফারহাতের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি দাবদাহের কারণে দর্শনার্থী না থাকার দায় এড়ান। তবে উৎসব সংশ্লিষ্ট জাদুঘর কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরাও কেন প্রদর্শনীতে থাকলেন না-এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেননি তিনিও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাদুঘরের এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘১২তম লিবারেশন ডক ফেস্ট বাংলাদেশ’ এর উদ্বোধন ও সমাপনী আয়োজনে কিছু অতিথি ও দর্শনার্থী ছাড়া এবারের আয়োজনে উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। গত ১৮ এপ্রিল জাদুঘর মিলনায়তনে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা নীলোৎপল মজুমদার এবং ভারতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা হাওবাম পবন কুমার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও উৎসব পরিচালক মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের।

২০০৬ সাল থেকে প্রামাণ্য চিত্র উৎসব শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এই উৎসবে বিশ্বের খ্যাতিমান নির্মাতাগণ তাদের তথ্যচিত্র নিয়ে অংশ নিয়ে এই উৎসবের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত জুরি বোর্ডের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সেরা তথ্যচিত্র নির্মাতাদের পুরষ্কৃতও করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এবার এই উৎসব আয়োজনে সেই ঐতিহ্যিক পরম্পরা বজায় রাখতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর- এমন অভিযোগ তথ্যচিত্র নির্মাতাদের।  

নিজের ইন্ডাস্ট্রির সংকটে উদ্বিগ্ন প্রসেনজিৎ, সমাধান খুঁজতে দিশেহারা!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিও আমাদের দেশের মতো ধুকে ধুকে বেঁচে আছে। সেখানেও একের পর এক সিনেমা মুখ থুবড়ে পড়ছে। কমে গেছে সিনেমা নির্মাণের সংখ্যাও। আমাদের দেশে যেমন বছরে দু-একটি ছবি ঈদের সময় ভালো ব্যবসা করে তেমনি কলকাতাতেও বছরে অল্প সংখ্যক ছবি বক্স অফিসে ভালো ফল আনতে পারছে। প্রতিনিয়ত হিন্দি সিনেমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে হচ্ছে সেখানের ছবির ইন্ডাস্ট্রিকে।

এমন পরিস্থিতিতেও কলকাতার মেগাস্টার প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জির একাধিক সিনেমা সম্প্রতি হিট হয়েছে। তারমধ্যে সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ‘অযোগ্য’ ছবিটি সিনেমা হলে ৫০ দিনের বেশি অতিক্রম করেছে। এটি প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির ৫০তম সিনেমা। গতকালই প্রসেনজিৎ তার ফেসবুক পেজে এই সুখবর শেয়ার করেন ভক্তদের সঙ্গে।

প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির ৫০তম সিনেমা ‘অযোগ্য’ সিনেমা হলে ৫০ দিনের বেশি অতিক্রম করেছে

তবে সিনেমার এই মন্দা বাজারের মধ্যে আবার ফেডারেশনের অনেক ধরনের নিয়ম কানুনে অতিষ্ঠ অনেকেই। বিশেষ করে ছবির টেকনিশিয়ানরা অনেকদিন ধরেই নিজেদের অধিকার আদায় নিয়ে কথা বলছেন। এখন তা এক প্রকারের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েই যে প্রসেনজিৎ ভীষণ উদ্বিগ্ন তা তার আজকে বিকেলের দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে। তার লেখার বিষয় ‘বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কিছু সংকট, কিছু তর্ক ও সমাধানের ইচ্ছে।’ কয়েকটি পরিচ্ছদে লেখাটি শেষ করেছেন জনপ্রিয় এই নায়ক।

প্রথম পরিচ্ছদে তিনি লিখেছেন, ‘আজ সকালে টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে বাংলা ছবির, টেলিভিশনের পরিচালকরা ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের সামনে কিছু প্রশ্ন রেখেছে। বহুদিন ধরেই রাখছে, আজ ভঙ্গিটা মুভমেন্টের। তার অনেক কারণ রয়েছে। এই মুভমেন্টের গোড়ায়, আগায়, সামনে, পিছনে, ডানদিক, বাঁদিক, সিনিয়র, জুনিয়রসহ সমস্ত রকমের টেকনিশিয়ান, সিনে শ্রমিকদের স্বার্থহানির এক ফোঁটা উদ্দেশ্য নেই। বিষয়টা পলিসির।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

দ্বিতীয় পরিচ্ছদে প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি লিখেছেন, ‘বিষয়টা বনাম বা ভার্সেস এর নয়। যে ভার্সেস সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, পলিটিক্যাল রঙের, তার নয়, বিশ্বাস করুন না করুন, নয়। বিষয়টা একই পরিবারের মধ্যে। পরিবারটা বাংলা বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি। তাই যে কোনো রাজনৈতিক বনাম এর, অন্য যে কোনো বনাম এর বাইরে এই আলোচনা। কিন্তু বললেই তো আর হয় না। বনাম নিয়েই বেশি আলোচনা হবে। ‘এরা বনাম ওরা’, এই মর্মেই আলোচনা হয়, কারণ তাতেই লাভ হয় বেশি, মজাও হয় বেশি। তাই ঐটাই চলতে থাকে। আর কোনো সমস্যার সমাধান হয় না। তাতে বিপদ বাড়তে থাকে গোটা ইন্ডাস্ট্রির। অভিনেতার, পরিচালকের, ফোকাস পুলারের, ট্রলি সেটিং ভাইয়ের, ইলেকট্রিশিয়ানের, হেয়ার ড্রেসারের, মেকআপ আর্টিস্টের, সহকারী পরিচালকের, লাইটের কর্মীদের আরো সকলের মুখ কালো হতে থাকে।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

তৃতীয় পরিচ্ছদে অভিনেতা লিখেছেন, ‘পরিবারের কারো শরীর খারাপ হলে ডাক্তার টেস্ট করাতে বলে। পলিসি নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে, তাহলে সকলে বসে সেই টেস্টগুলো করে নেওয়াই উচিত কাজ। যদি সত্যিই গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে হয়, তাহলে সবার মতামত নিয়েই চলতে হয়। শুধু ভোট নয়, মতামত। সুইচ টিপে ভোট দেওয়া নয়, মতামত। কথায়, লেখায়, বলায়। এবং সকলের। পরিচালকের, ট্রলি যিনি ঠেলেন তার, লাইট যিনি লাগান তার, একসঙ্গে। যদি তারজন্য নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম লাগে, লাগুক। ময়দান লাগে, লাগুক। ব্রিগেড লাগে, লাগুক। পয়সা খরচ করে সবার মতামত শোনা হোক। বোঝাই যাচ্ছে প্রস্তাবটা আবস্তব দিকে চলে যাচ্ছে। কারণ এতদিনের যে নিয়ম তৈরির ব্যবস্থা তাতেও সমাধান হচ্ছে না। বাওয়ালের ভিউস, ট্র্যাকশন, কমেন্ট বেড়ে চলেছে আর ইন্ডাস্ট্রির সব কর্মীদের, বিশেষ করে যারা অল্প অর্থ রোজগার করেন, তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ বেড়েই যাচ্ছে।

বাংলা ছবির স্বাস্থ্য ভাল নয়, এটা পার্সেপশন নয়, সত্যি সমস্যা। তাই এর সমাধানও ‘পার্সেপশন’ দিয়ে হবে না। সত্যি সমাধান দিয়েই করতে হবে। সেখানে ক্ষমতার লাফালাফি দেখালে হবে না, ভোট গুনলে হবে না। এটা রাজনৈতিক সমস্যা নয়, রাজনৈতিক কায়দায় এই সমস্যার সমাধান হবে না। সমস্যা বিনোদন শিল্পীদের, তাদের কাজের পরিবেশের, তাদের সম্মানের। তাদের মানে সকলের। যিনি মূল ভূমিকায় অভিনয় করেন, তার, যিনি জল দেন, খাবার দেন, তারও।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

শেষ পরিচ্ছেদে প্রসেনজিতের ভাষ্য, ‘ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের জেরে গোটা ইন্ডাস্ট্রি যেভাবে এক বড় আসন্ন বিপদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা নানা রকম ঘটনা দিয়েই বুঝিয়ে দেওয়া যায়। বাইরের বিজ্ঞাপন না আসা, বাইরের ছবির কাজ না আসা, পাশের দেশের একই ভাষার কাজ এখানে না আসা, এসবেরই পথ সরু হতে হতে বন্ধ হতে চলেছে। আজকের বেশি টাকা কাল যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে পশ্চিমবঙ্গে বিনোদন শিল্প বলে আর কিছু থাকবে না। এটা রকেট সাইন্স নয়, কঠিন অঙ্ক নয়। একটু মাথা খাটালেই বোঝা যাবে।

আবার একটা অনুরোধ, এটা বিনোদন শিল্প। চেনা ভার্সেস-এর ন্যারেটিভ দিয়ে মিটবে না। মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে সবার। মন মরে যাচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে ৮০ সালের পর আবার সেই দিন আসবে, যখন নতুন এসি স্টুডিওগুলো আবার গুদাম হয়ে যাওয়া ছাড়া আর পথ থাকবে না।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

আঞ্চলিক ভাষার বিনোদন ভালবাসা, ঐক্য, সম্মান, আলোচনা ছাড়া বাঁচতে পারে না। প্রয়োজনে সাময়িক সংঘাত হোক, কিন্তু সকলে আরো বেটার পরিবেশ, বেটার অবস্থায়, সকলের জন্য বেটার অবস্থায় পৌঁছতে পারি। সকলের জন্য। জয় বাংলা ইন্ডাস্ট্রির, জয় বাংলা।’

;

নজরুলের যে কবিতার সমসাময়িক আবেদনে মিথিলার চোখে জল



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা বরাবরই সমাজের চলমান ইস্যু নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। শোবিজের পরিচয়ের বাইরে তার একাডেমিক ক্যারিয়ারেরও সুপরিচিতি রয়েছে।

এই তারকা আজ তার ফেসবুকে শেয়ার করলেন এমনি এক অভিজ্ঞতা। তাতে বোঝা যায় সমসাময়িক বাংলাদেশের অস্থিরতা তার মনে কতোটা গভীর ক্ষত তৈরি করেছে।

মিথিলা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘স্কুলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। আব্বু সকাল সকাল আমার মেয়েকে বাংলা পড়াতে বসলো। বাংলা পাঠ্যবই-এর প্রথম কবিতাটাই হলো কাজী নজরুল ইসলামের ‘সংকল্প’। সেই ছোটবেলা থেকেই কবিতাটা আমার মুখস্থ। তাই আমিও যোগ দিলাম কবিতাপাঠে।

‘থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে
দেখবো এবার জগৎ টারে
কেমন করে ঘুরছে মানুষ
যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে
দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
ছুটছে তারা কেমন করে।
কিসের নেশায় কেমন করে
মরছে যে বীর লাখে লাখে
কিসের আশায় করছে তারা
বরণ মরন যন্ত্রনাকে।’’

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা

কবিতার এতোটুকু পড়েই মিথিলা থামতে বাধ্য হলেন। আবার পড়তে লাগলেন শেষ চার লাইন,

‘কিসের নেশায় কেমন করে
মরছে যে বীর লাখে লাখে
কিসের আশায় করছে তারা
বরণ মরন যন্ত্রনাকে।’

লাইনগুলো পড়তে পড়তে চোখ ভিজে এলো তার। মিথিলা সবশেষে লিখেছেন, ‘চোখ ভিজে এলো। মাথা নত হলো।’

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা

মিথিলার এই আবেগের সঙ্গে একাত্ব হয়েছেন অনেক তারকা। কারণ বাংলাদেশের অগণিত মানুষের মনে এখন এই কথাগুলোই ঘুরছে যা জাতীয় কবি নজরুল বহুকাল আগে লিখে গেছেন। কোটা আন্দোলনের জেরে নানা কারণে এতাগুলো ছাত্র, সাংবাদিক, যুবক, শিশু-কিশোরের মৃত্যুর চিত্র মন থেকে সরাতে পারছেন না সচেতন নাগরিকরা।

জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এলিটা করিম লিখেছেন, ‘তুমি আমাকে কবিতাটি পড়তে অনুপ্রাণীত করলে এবং এই লাইনগুলো বার বার কোট করতে।’

;

স্বস্তিকার গানের কমেন্ট বক্সে শুধুই প্রশংসা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘স্বস্তিকার গান’ মিউজিক ভিডিওতে স্বস্তিকা মুখার্জি ও অভিষেক চক্রবর্তী

‘স্বস্তিকার গান’ মিউজিক ভিডিওতে স্বস্তিকা মুখার্জি ও অভিষেক চক্রবর্তী

  • Font increase
  • Font Decrease

কদিন আগেই জানা গিয়েছিলো কলকাতার তুখোড় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি’র নতুন মিউজিক ভিডিও আসছে। স্বস্তিকা ছোটবেলা থেকেই নাচ, গান দুটোই গুরু ধরে শিখেছেন। এই অভিনেত্রীর কণ্ঠে বিভিন্ন ছবিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে শুরু করে খালি গলায় দু-চার লাইন গানও শোনা গেছে। তাই অনেকেই ভেবেছিলেন এবার বুঝি মৌলিক গান নিয়ে হাজির হচ্ছেন এই তারকা।

‘স্বস্তিকার গান’ শিরোনামের সেই মিউজিক ভিডিও গতকালই ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে। তা দেখে বোঝা গেলো গানটিতে স্বস্তিকা কণ্ঠ দেননি, মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। ‘তুমি পারো যদি দাও গো উঁকি আমার পৃথিবীতে/ তোমায় ফুলের দোলনা সাজিয়ে দেবো শিউলি গাছের নিচে/ তুমি বসবে সেথায় দেখবে আমায় দেখবো তোমায় আমি/ আর ভাসবো দুজন প্রেমের ভেলায় এই অবধি জানি’-এমন কথার গানটি গেয়েছেন অভিষেক চক্রবর্তী। কথা, সুর ও কম্পোজিশন তারই করা।

স্বস্তিকা মুখার্জি

স্বস্তিকার সঙ্গে তিনি মিউজিক ভিডিও’র লিংক ফেসবুকে প্রকাশ করে নায়িকা ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘ঝটপট দেখে জানান আপনাদের কেমন লাগলো আমাদের গান। ভালো লাগলেও জানাবেন, খারাপ লাগলেও জানাবেন, কেমন?’

প্রিয় অভিনেত্রীর কথা ফেলতে পারেন ভক্তরা! তাইতো ছুটে গিয়েছেন অভিষেক চক্রবর্তী নামের ইউটিউব চ্যানেলে, যেখানে ভিডিওটি মুক্তি পেয়েছে। ভিডিও দেখে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভোলেননি কেমন লেগেছে তাদের। তাতে দেখা গেলো শুধুই প্রশংসা!

‘প্রথমেই বলি চমৎকার একটি কাজ। গানের সুর এবং কথা মনোগ্রাহী। চিত্রায়ন ও সম্পাদনা অনবদ্য। পুরো টিমের সদস্য দের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। সকলের পরিশ্রম সার্থক।’

‘বাহ বাহ! গানের রিদমটা দারুণ লাগল।’

‘স্বস্তিকার গান’ মিউজিক ভিডিওতে স্বস্তিকা মুখার্জি ও অভিষেক চক্রবর্তী

‘সব মিলিয়ে মন ভালো করে দেয়ার মত একটি গান।’

‘চমৎকার হয়েছে।’

‘অসাধারণ লাগলো, খুব ভালো হয়েছে। দুজন প্রিয় মানুষ একই ফ্রেমে। কি যে ভালো লাগলো।’

‘গানটা ভীষণ মজাদার আর ভীষণ প্রেমের। কী মিষ্টি একটা গান! যতবার শুনছি বেশ ফুরফুরে হয়ে উঠছে মনটা!’

‘খুব রিফ্রেশিং লাগলো, অসাধারন।’

‘স্বস্তিকার গান’ মিউজিক ভিডিওতে স্বস্তিকা মুখার্জি ও অভিষেক চক্রবর্তী

‘একদম যেরকমটা ভেবেছিলাম, রূপকথার মতো, খুব মিষ্টি গাইলে।’

‘স্বস্তিকার চোখের কাছে চীনের প্রাচীর কেনো, সব প্রাচীরই তুচ্ছ!’

এমন অসংখ্য প্রশংসাবার্তায় ভরা গানটির কমেন্ট বক্স।

;

‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ নির্মাতার ছবিতে রণবীর, আছেন একঝাঁক তারকা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
রণবীর সিং, ইয়ামি গৌতম ও আদিত্য ধর

রণবীর সিং, ইয়ামি গৌতম ও আদিত্য ধর

  • Font increase
  • Font Decrease

‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ছবিটির মাধ্যমে পরিচালনায় অভিষেক ঘটে আদিত্য ধরের। ভিকি কৌশল অভিনীত ছবিটি দারুণ ব্যবসা করে। এখন পর্যন্ত ভিকির ক্যারিয়ারের সবচেয়ে হিট সিনেমা সেটি। এই ছবির জন্য আদিত্য ধর সেরা নির্মাতা এবং ভিকি কৌশল সেরা অভিনেতা ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান।

তবে ২০১৯-এ ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর পর আর কোন সিনেমা নির্মাণ করেননি আদিত্য ধর! এবার আসছেন তার দ্বিতীয় ছবি নিয়ে। আর তাতে প্রধান চরিত্রে বেছে নিয়েছেন বলিউড সুপারস্টার রণবীর সিংকে। যদিও রণবীরের সর্বশেষ একাধিক ছবি বক্সঅফিসে মার খেয়েছে, তারপরও আদিত্য তাকে নিয়ে এতো বড় বাজি কেন ধরছেন তা হয়তো সময়ই বলে দেবে।

বলিউড সুপারস্টার রণবীর সিং

আপাতত ছবিটি নিয়ে রণবীর সিং এটুকু বললেন, ‘ছবিটি আমার হৃদয়ের খুব কাছের। এমন একটি সিনেম্যাটিক এক্সপেরিয়েন্স যা আগে কখনো হয়নি।’

এই ছবির ঘোষণার পর দর্শক স্বাভাবিকভাবেই বেশ এক্সাইটেড। নাম ঠিক না হওয়া ছবিটিতে রণবীর সিং ছাড়াও অভিনয় করবেন সঞ্জয় দত্ত, আর মাধবন, আর্জুন রামপাল ও অক্ষয় খন্নার মতো শক্তিমান অভিনেতারা। ছবিটি নির্মানের পাশাপাশি প্রযোজনাও করছেন আদিত্য ধর। তার সহ-প্রযোজক হিসেবে আছেন জিও স্টুডিওস’র জ্যোতি দেশপাণ্ডে এবং বি৬২ স্টুডিওস’র লোকেশ ধর।

আদিত্য ধরের (নিচের সারিতে মাঝে) নতুন ছবির লুকে সঞ্জয় দত্ত, রণবীর সিং, আর মাধবন (উপরের সারিতে), অক্ষয় খন্না ও আর্জুন রামপাল (নিচের সারিতে)

খবরটি একটু আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন বলিউডের নামকরা বানিজ্য বিশ্লেষক তরণ আদর্শ। তার পোস্টের কমেন্ট বক্সে খেয়াল করলে দেখা যায়, এতো দক্ষ অভিনেতাদের ভিড়ে সবাই অক্ষয় খন্নাকে নিয়ে আলাদাভাবে এক্সাইটেড। কেউ লিখেছেন তিনি এদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অভিনয় করেন, কেউ আবার বলছেন মেধা অনুযায়ি অক্ষয় খন্না বরাবরই আন্ডাররেটেড! ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ছবিটি ছিলো ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ওপর। তাই পাকিস্তানের কয়েকজন কমেন্ট করেছেন, নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরেকটি ছবি হতে চলেছে!

ইয়ামি গৌতম ও আদিত্য ধর দম্পতি

ছবির অভিনেতাদের নাম জানা গেলেও এখনো জানা যায়নি ছবির নাম ও নায়িকাদের নাম। আদিত্যর প্রথম ছবি ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর নায়িকা ছিলেন ইয়ামি গৌতম। এই ছবি করতে গিয়েই তারা প্রেমে পড়েন ও করোনার মধ্যে বিয়েটাও সেরে ফেলেছেন। স্ত্রীকে নিজের নতুন সিনেমায় তিনি রাখছেন কিনা তা নিয়েও কৌতুহল রয়েছে দর্শকের মনে।

;