রুনা লিখলেন, একজন তার প্রেমে-পড়ে পাগল হয়ে গেলো প্রায়



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
দাফন সিনেমার কুলসুম চরিত্রে রুনা খান

দাফন সিনেমার কুলসুম চরিত্রে রুনা খান

  • Font increase
  • Font Decrease

নতুন ছবির খবর জানালেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী রুনা খান। একটু আগে ফেসবুকে বেশকিছু ছবি প্রকাশের মাধ্যমে রুনা জানান তার নতুন সিনেমার নাম ‘দাফন’। এটি পরিচালনা করছেন কৌশিক শংকর দাশ। আর এই সিনেমায় রুনার চরিত্রের নাম কুলসুম।

কুলসুম চরিত্রেরই বেশকিছু ছবি পোস্ট করেছেন রুনা। তাতে দেখা যায়, হলুদ সুতি সালোয়ার-কামিজ পরা রুনা। এই ছবিগুলো রুনার সাম্প্রতিক ফটোশ্যুটের অন্য ছবিগুলো থেকে একেবারেই আলাদা। এই সিনেমায় একেবারেই ছিমছাম পাশের বাড়ির মেয়ের ভূমিকায় দেখা যাবে এই মেধাবী অভিনেত্রীকে। হাতভর্তি কাচের চুড়ি পরা মেয়েটিকে দেখে প্রেমে পড়তে ইচ্ছে হয়।

ছবিগুলো পোস্ট করে ক্যাপশনে রুনা সে কথাই লিখেছেন,

‘একজন তার প্রেমে-পড়ে পাগল হয়ে গেলো প্রায়!

তারপর একদিন কুলসুমও তার প্রেমে সাড়া দিলো..

ফুটলো ফুলের মতন..

হলদে অলকানন্দা যেমন..!

“দাফন”
যে জীবন সিনেমা অথবা সত্যি..!

 

‘দাফন’ ছাড়াও রুনা খান অভিনীত ওয়েব ফিল্ম ‘অসময়’, ‘শোধ’ ও পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘বক’ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। নতুন কাজগুলো নিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্মাতা কাজল আরিফিন অমির ‘অসময়’র কাজ শেষ করেছি। এটি বঙ্গ বিডিতে মুক্তি পাবে। শাহরিয়ার নাজিম জয়ের ‘শোধ’ খুব কাছাকাছি সময় আইস্ক্রিনে মুক্তি পাবে। মাসুদ পথিকের পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘বক’র শুটিং শেষ। এছাড়া কৌশিক শংকর দাস পরিচালিত নারী প্রধান সিনেমা ‘দাফন’ সিনেমারও শুটিং শেষ করেছি। এই তো।’

নাটকে খুব কম কাজ করেন। কারণ কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নাটক, ওটিটি কিংবা সিনেমা- এই তিনটাকে আমি আলাদাভাবে দেখি না। আমি দেখি অভিনয়। আমার কাছে গল্প, চরিত্র ও পরিচালক ভালো মনে হলে কাজ করি। সেটা যে মাধ্যমেই হোক। নাটকে সেরকম গল্প-চরিত্র পাইনি তাই কাজ করিনি। নাটক করছিনা বা করবোনা সেরকম বিষয় আমার একেবারেই নেই।’

বছর প্রায় শেষ। এ বছরের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির প্রসঙ্গে তুললে তিনি বলেন, ‘প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি কি এতো ঠুনকো বিষয়? ধরুন, এ বছর আমি তিনটি কাজ করেছি তাতেই আমার প্রাপ্তি হয়ে গেলো? আবার আমি একটিও কাজ করিনি, তাতে কি আমার অপ্রাপ্তি হয়ে গেল? কতো বেশি কাজ হল কি হল না তাতেই কি জীবনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি হয়ে যায়? এতো সোজা?’

ইন্টারনেট বন্ধে বড় অংকের ক্ষতির পথে ওটিটি



মেহনাজ খান, বার্তা২৪.কম
দেশিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মের লোগোর কোলাজ

দেশিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মের লোগোর কোলাজ

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৭ জুলাই রাতে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিসেবাও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হলেও ধীরগতির কারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এর ফলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে অনলাইননির্ভর ওটিটিসহ বিনোদন প্ল্যাটফর্মগুলো। বিনোদন দুনিয়ার সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, ক্ষতির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

দেশে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে বঙ্গ, চরকি, আইস্ক্রিন, দীপ্ত প্লে, বিঞ্জ, বায়োস্কোপ ও হইচই। এছাড়া ‘ক্লাব ১১’, ‘সিএমভি’, ‘জি-সিরিজ’সহ অসংখ্য বিনোদন প্লাটফর্ম রয়েছে- যারা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নাটক নির্মাণ করে ইউটিউবে সম্প্রচার করে।

দেড় বছর বয়সী ওটিটি প্ল্যাটফর্ম দীপ্ত প্লেও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে, বার্তা২৪.কমকে এমনটাই জানালেন প্রতিষ্ঠানটির হেড অব ডিজিটাল মিডিয়া মোহাম্মদ আবু নাসিম। তিনি বললেন, ‘আমরা সাবস্ক্রাইবার সংগ্রহ করছি। সাবস্ক্রাইবারদের কথা ভেবে নতুন কনটেন্টেও বিনিয়োগ করছি। চলতি মাসে একাধিক নতুন কনটেন্টের শুটিংও শুরু করেছিলাম। নতুন একটি কনটেন্ট মুক্তিও দিয়েছিলাম। এসব থেকে যে রিটার্ন আসার কথা, তা পিছিয়ে গেল। আমরা আরও রেভিনিউর জন্য নতুন কিছু পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও আলাপ করছিলাম, কয়েকটি সার্ভিস প্রোভাইডারের সঙ্গেও আলাপ চলছিল—নতুন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সবকিছুতে একটা বড় ধাক্কা খেলাম। আর্থিক ক্ষতি বিবেচনায় এই কয় দিনে ৭০-৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ওটিটি একটি বড় মাধ্যম হলো ফেসবুক। আর ফেসবুকের মাধ্যমে আমরা দর্শকের আগ্রহ বেশি পেয়ে থাকি।ইন্টারনেট সেবার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আগের অবস্থায় না ফিরে এলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।’

জানা গেছে, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘বঙ্গ’র প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার লোকসান গুণতে হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মটির চিফ কন্টেন্ট অফিসার মুশফিকুর রহমান মঞ্জু বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ‘আমরা মাত্রই একটা ওয়েব সিরিজ ইউটিউবে ছেড়েছিলাম, তারপরই ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেল। এছাড়া ৪টা সিঙ্গেল নাটক, ২টা ধারাবাহিক এবং ২টা সিনেমা অনএয়ার করার পরিকল্পনা ছিল। সেগুলো তো আর সম্ভব হয়নি। ইন্টারনেট বন্ধের কারণে বড় রকম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে সবাই। শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে, বলে তার ধারণা।’

সম্প্রতিক সময়ে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকি নতুন সিনেমা, সিরিজ উপহার দিয়ে দর্শকের কাছে জনপ্রিয়ও হয়ে উঠছিল। তবে ইন্টারনেট বন্ধের কারণে বড় ধাক্কা খেতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে।

চরকি অন্তত ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বে বলে জানা গেছে। এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকি প্রতিষ্ঠার তিন বছর পেরিয়ে চারে পড়েছে। প্রতিবছর ১২টি করে ছবি মুক্তি দিয়েছে। এসেছে নতুন নতুন সিরিজও। প্রতিনিয়ত নতুন সাবস্ক্রাইবার তৈরি হয়েছে চরকির। ইন্টারনেট সেবা না থাকায় অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি সাবস্ক্রাইবার কমার আশঙ্কা করছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি। তিনি বললেন, ‘আমাদের ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। আমাদের প্রতিষ্ঠান চরকি প্রতি মাসে একটা বড় কনটেন্ট রিলিজ করে, হোক তা সিনেমা কিংবা সিরিজ। এই সময়ের মধ্যেও আমাদের একটা সিনেমা মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে তা পারিনি। সব মিলিয়ে আমাদের মনে হয়েছে, ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে, যেটা পুষিয়ে আনা কষ্টসাধ্য। সবকিছু আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।’

;

মুম্বাই ফ্যাশন উইকে ঢাকার মডেল রিফাত



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
ইমাম মাহমুদ রিফাত / ছবি : শিল্পীর সৌজন্যে

ইমাম মাহমুদ রিফাত / ছবি : শিল্পীর সৌজন্যে

  • Font increase
  • Font Decrease

কদিন আগেই বার্তা২৪.কমের অফিসে এসে একটি ভিডিও ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন তরুণ প্রজন্মের মডেল ইমাম মাহমুদ রিফাত। সেখানে নিজেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মেলে ধরার স্বপ্নের কথা বলেছিলেন।

তবে সেই স্বপ্নের শুরুটা যে এতো তাড়াতাড়ি হবে তাও আবার এমন একটি সম্মানজনক কাজের মাধ্যমে সে কথা কে ভেবেছে?

ইমাম মাহমুদ রিফাত / ছবি : শিল্পীর সৌজন্যে

হ্যাঁ, ফ্যাশন মডেল রিফাত এখন মুম্বাইতে। ‘মুম্বাই ফ্যাশন উইক’-এ হাটবেন এই বাংলাদেশি মডেল। আগামী ৩০ জুলাই ভারতের একজন বিশিষ্ট ফ্যাশন ডিজাইনারের পোশাক পরে র‌্যাম্পে হাটবেন রিফাত। এই শোতে অংশ নিতে গত ২৫ জুলাই মুম্বাই গেছেন তিনি।

রিফাত বলেন, ‘মুম্বাই ফ্যাশন উইকে কাজ করাটা একজন বাংলাদেশি ফ্যাশন মডেল হিসেবে দারুণ সুযোগ। মুম্বাই ফ্যাশন উইক প্রতিটি মডেলের জন্য একটি স্বপ্নের প্রকল্প। স্বভাবতই এ কাজটি আমার জন্য একটি স্বপ্নের কাজ!’

ইমাম মাহমুদ রিফাত / ছবি : শিল্পীর সৌজন্যে

রিফাতের ভারত সফর এবার শুধু মুম্বাই ফ্যাশন উইকেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। শুরুটা হচ্ছে মুম্বাই দিয়ে। আরও নানা ধরনের কাজ করবেন তিনি।

রিফাতের মিডিয়া যাত্রা শুরু হয় ‘মিস্টার অ্যান্ড মিস ফটোজেনিক ২০২২’-এ দ্বিতীয় রানার আপ হওয়ার ভেতর দিয়ে। সম্প্রতি এই তরুণ মডেল আন্তর্জাতিক কিছু ব্র্যান্ডের সাথেও কাজ করার দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছেন।

;

করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল পর্যন্ত ববিতা



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফরিদা আক্তার ববিতা

ফরিদা আক্তার ববিতা

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ঢালিউডের কিংবদন্তি নায়িকা ববিতা। শুধু তাই নয়, টানা চার দিন হাসপাতালে তিনি। তবে এখন আর ভয়ের কিছু নেই। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি এখন করোনা নেগেটিভ। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি বাসায় ফিরে যান। আপাতত সুস্থ আছেন তবে শারীরিক দুর্বলতা এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেননি ববিতা। এ খবর বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন তার ছোট বোন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা চম্পা।

তিনি জানান, কয়েক দিন ধরে শরীরে ব্যথা অনুভব করছিলেন আপা। জ্বর ছিল না, তবে অস্বস্তি লাগছিল। এরপর পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে জানতে পারেন করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরটি। কালক্ষেপণ না করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১৮ জুলাই ববিতাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে।

ফরিদা আক্তার ববিতা

চম্পা আরও বলেন, ‘এমনিতে দেশের সার্বিক অবস্থা ভালো নয়। এর মধ্যে আপার করোনায় আক্রান্তের খবরে আমরা ঘাবড়ে যাই। একা মানুষ, কীভাবে কী করবে, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তারপর বড় আপা (প্রখ্যাত নায়িকা সুচন্দা) ও আমরা মিলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নিই। টানা চার দিন থাকার পর করোনা নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।’

এর আগেও একবার করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ববিতা। চম্পা জানান, সেবার এতটা কষ্ট পাননি, এবার যেমনটা পেয়েছেন।

ববিতা, সুচন্দা, চম্পা- ঢালিউডের তিন কন্যা

ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক বেশ কয়েক বছর ধরেই কানাডায় থাকেন। পড়াশোনা শেষে সেখানেই চাকরি করছেন। ছেলের কাছে সময় কাটাতে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় পর সেখানে যান ববিতা। এর মধ্যেও কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই অসুখের কারণে টিকিট বাতিল করতে হয়েছে তাকে। 

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের অন্যতম অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। তিনি আটবার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ পেয়েছেন। তার অভিনীত অসংখ্য চলচ্চিত্র কালজয় করেছে। তবে দীর্ঘদির তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় থেকে দূরে আছেন। মনের মতো চরিত্র পাননি বলে আর অভিনয় করেননি এমনটিই জানান সবসময়।

তরুণী ববিতা

;

নিজের ইন্ডাস্ট্রির সংকটে উদ্বিগ্ন প্রসেনজিৎ, সমাধান খুঁজতে দিশেহারা!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিও আমাদের দেশের মতো ধুকে ধুকে বেঁচে আছে। সেখানেও একের পর এক সিনেমা মুখ থুবড়ে পড়ছে। কমে গেছে সিনেমা নির্মাণের সংখ্যাও। আমাদের দেশে যেমন বছরে দু-একটি ছবি ঈদের সময় ভালো ব্যবসা করে তেমনি কলকাতাতেও বছরে অল্প সংখ্যক ছবি বক্স অফিসে ভালো ফল আনতে পারছে। প্রতিনিয়ত হিন্দি সিনেমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে হচ্ছে সেখানের ছবির ইন্ডাস্ট্রিকে।

এমন পরিস্থিতিতেও কলকাতার মেগাস্টার প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জির একাধিক সিনেমা সম্প্রতি হিট হয়েছে। তারমধ্যে সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ‘অযোগ্য’ ছবিটি সিনেমা হলে ৫০ দিনের বেশি অতিক্রম করেছে। এটি প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির ৫০তম সিনেমা। গতকালই প্রসেনজিৎ তার ফেসবুক পেজে এই সুখবর শেয়ার করেন ভক্তদের সঙ্গে।

প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির ৫০তম সিনেমা ‘অযোগ্য’ সিনেমা হলে ৫০ দিনের বেশি অতিক্রম করেছে

তবে সিনেমার এই মন্দা বাজারের মধ্যে আবার ফেডারেশনের অনেক ধরনের নিয়ম কানুনে অতিষ্ঠ অনেকেই। বিশেষ করে ছবির টেকনিশিয়ানরা অনেকদিন ধরেই নিজেদের অধিকার আদায় নিয়ে কথা বলছেন। এখন তা এক প্রকারের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েই যে প্রসেনজিৎ ভীষণ উদ্বিগ্ন তা তার আজকে বিকেলের দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে। তার লেখার বিষয় ‘বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে কিছু সংকট, কিছু তর্ক ও সমাধানের ইচ্ছে।’ কয়েকটি পরিচ্ছদে লেখাটি শেষ করেছেন জনপ্রিয় এই নায়ক।

প্রথম পরিচ্ছদে তিনি লিখেছেন, ‘আজ সকালে টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে বাংলা ছবির, টেলিভিশনের পরিচালকরা ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের সামনে কিছু প্রশ্ন রেখেছে। বহুদিন ধরেই রাখছে, আজ ভঙ্গিটা মুভমেন্টের। তার অনেক কারণ রয়েছে। এই মুভমেন্টের গোড়ায়, আগায়, সামনে, পিছনে, ডানদিক, বাঁদিক, সিনিয়র, জুনিয়রসহ সমস্ত রকমের টেকনিশিয়ান, সিনে শ্রমিকদের স্বার্থহানির এক ফোঁটা উদ্দেশ্য নেই। বিষয়টা পলিসির।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

দ্বিতীয় পরিচ্ছদে প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি লিখেছেন, ‘বিষয়টা বনাম বা ভার্সেস এর নয়। যে ভার্সেস সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, পলিটিক্যাল রঙের, তার নয়, বিশ্বাস করুন না করুন, নয়। বিষয়টা একই পরিবারের মধ্যে। পরিবারটা বাংলা বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি। তাই যে কোনো রাজনৈতিক বনাম এর, অন্য যে কোনো বনাম এর বাইরে এই আলোচনা। কিন্তু বললেই তো আর হয় না। বনাম নিয়েই বেশি আলোচনা হবে। ‘এরা বনাম ওরা’, এই মর্মেই আলোচনা হয়, কারণ তাতেই লাভ হয় বেশি, মজাও হয় বেশি। তাই ঐটাই চলতে থাকে। আর কোনো সমস্যার সমাধান হয় না। তাতে বিপদ বাড়তে থাকে গোটা ইন্ডাস্ট্রির। অভিনেতার, পরিচালকের, ফোকাস পুলারের, ট্রলি সেটিং ভাইয়ের, ইলেকট্রিশিয়ানের, হেয়ার ড্রেসারের, মেকআপ আর্টিস্টের, সহকারী পরিচালকের, লাইটের কর্মীদের আরো সকলের মুখ কালো হতে থাকে।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

তৃতীয় পরিচ্ছদে অভিনেতা লিখেছেন, ‘পরিবারের কারো শরীর খারাপ হলে ডাক্তার টেস্ট করাতে বলে। পলিসি নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে, তাহলে সকলে বসে সেই টেস্টগুলো করে নেওয়াই উচিত কাজ। যদি সত্যিই গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে হয়, তাহলে সবার মতামত নিয়েই চলতে হয়। শুধু ভোট নয়, মতামত। সুইচ টিপে ভোট দেওয়া নয়, মতামত। কথায়, লেখায়, বলায়। এবং সকলের। পরিচালকের, ট্রলি যিনি ঠেলেন তার, লাইট যিনি লাগান তার, একসঙ্গে। যদি তারজন্য নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম লাগে, লাগুক। ময়দান লাগে, লাগুক। ব্রিগেড লাগে, লাগুক। পয়সা খরচ করে সবার মতামত শোনা হোক। বোঝাই যাচ্ছে প্রস্তাবটা আবস্তব দিকে চলে যাচ্ছে। কারণ এতদিনের যে নিয়ম তৈরির ব্যবস্থা তাতেও সমাধান হচ্ছে না। বাওয়ালের ভিউস, ট্র্যাকশন, কমেন্ট বেড়ে চলেছে আর ইন্ডাস্ট্রির সব কর্মীদের, বিশেষ করে যারা অল্প অর্থ রোজগার করেন, তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ বেড়েই যাচ্ছে।

বাংলা ছবির স্বাস্থ্য ভাল নয়, এটা পার্সেপশন নয়, সত্যি সমস্যা। তাই এর সমাধানও ‘পার্সেপশন’ দিয়ে হবে না। সত্যি সমাধান দিয়েই করতে হবে। সেখানে ক্ষমতার লাফালাফি দেখালে হবে না, ভোট গুনলে হবে না। এটা রাজনৈতিক সমস্যা নয়, রাজনৈতিক কায়দায় এই সমস্যার সমাধান হবে না। সমস্যা বিনোদন শিল্পীদের, তাদের কাজের পরিবেশের, তাদের সম্মানের। তাদের মানে সকলের। যিনি মূল ভূমিকায় অভিনয় করেন, তার, যিনি জল দেন, খাবার দেন, তারও।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

শেষ পরিচ্ছেদে প্রসেনজিতের ভাষ্য, ‘ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের জেরে গোটা ইন্ডাস্ট্রি যেভাবে এক বড় আসন্ন বিপদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা নানা রকম ঘটনা দিয়েই বুঝিয়ে দেওয়া যায়। বাইরের বিজ্ঞাপন না আসা, বাইরের ছবির কাজ না আসা, পাশের দেশের একই ভাষার কাজ এখানে না আসা, এসবেরই পথ সরু হতে হতে বন্ধ হতে চলেছে। আজকের বেশি টাকা কাল যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে পশ্চিমবঙ্গে বিনোদন শিল্প বলে আর কিছু থাকবে না। এটা রকেট সাইন্স নয়, কঠিন অঙ্ক নয়। একটু মাথা খাটালেই বোঝা যাবে।

আবার একটা অনুরোধ, এটা বিনোদন শিল্প। চেনা ভার্সেস-এর ন্যারেটিভ দিয়ে মিটবে না। মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে সবার। মন মরে যাচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে ৮০ সালের পর আবার সেই দিন আসবে, যখন নতুন এসি স্টুডিওগুলো আবার গুদাম হয়ে যাওয়া ছাড়া আর পথ থাকবে না।

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি / ছবি : ফেসবুক

আঞ্চলিক ভাষার বিনোদন ভালবাসা, ঐক্য, সম্মান, আলোচনা ছাড়া বাঁচতে পারে না। প্রয়োজনে সাময়িক সংঘাত হোক, কিন্তু সকলে আরো বেটার পরিবেশ, বেটার অবস্থায়, সকলের জন্য বেটার অবস্থায় পৌঁছতে পারি। সকলের জন্য। জয় বাংলা ইন্ডাস্ট্রির, জয় বাংলা।’

;