তাদের গান, গাইবেন গাঁয়ের জেলে



রুদ্র হক, বার্তা ২৪.কম
ফজলুর রহমান বাবু ও অর্ণব

ফজলুর রহমান বাবু ও অর্ণব

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ২৬ নভেম্বর বড়পর্দায় মুক্তি পেতে যাচ্ছে রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পরিচালিত আলোচিত চলচ্চিত্র ‘নোনাজলের কাব্য’। চলচ্চিত্রটির জন্য দীর্ঘদিন পর সিনেমার আবহসঙ্গীত করলেন সায়ান চৌধুরী অর্ণব, গাইলেন গান। সর্বশেষ গিয়াস উদ্দিন সেলিমের পরিচালনায় ‘মনপুরা’ চলচ্চিত্রে তার সংগীতপরিচালনা দারুণ প্রশংসিত হয়েছিলো। এখনও মানুষের মুখে মুখে ফিরছে সিনেমার গানগুলো । ‘নোনা জলের কাব্য’-চলচ্চিত্রে কেমন করে ধরা দিবেন অর্ণব?

তারই নমুনা হিসেবে চলচ্চিত্রটির দু’টি গান প্রকাশিত হলো সম্প্রতি।

এ সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি অর্ণবের সংগীতায়োজনে পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের গান ‘কী বলিবো রে আর’ কন্ঠে তুলে নিয়েছেন ফজলুর রহমান বাবু। গানটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। তার পরপরই ২০ নভেম্বর মুক্তি পেলো অর্ণবের কণ্ঠে লোকগান ‘ভজোমন’

গানগুলো প্রকাশের পরপরই দারুণ সাড়া পাচ্ছেন নির্মাতা। তিনি বলেন, “অনেকদিন পর তিনি অর্ণব ভাই সিনেমায় গান করলেন। তাই, গানটি নিয়ে সবার মধ্যে একটা উত্তেজনা ছিল। প্রকাশের পর যে ধরনের ফিডব্যাক পাচ্ছি তাতে আমার নিজেরই মন ভালো হচ্ছে। অর্ণব ভাইও বেশ এক্সাইটেড ছিলেন, উনিও বেশ খুশী। অন্য গানটি পল্লীকবি জসিম উদ্দীনের গান। জসিম উদ্দীন ফাউন্ডেশনের অনুমতি নিয়ে করেছি। তারা বলেছে, ‘এটি জসিম উদ্দীনের অসম্ভব প্রিয় একটি গান ছিল, যত্ন নিয়ে করবেন।’ গানটি ফজলুর রহমান বাবু ভাইয়ের কন্ঠে অর্নব ভাই কম্পোজ করেছেন। দুজনই খুবই কমিটেড শিল্পী। আশা করি সে কথা রাখতে পেরেছি। সবাইকে শোনার আমন্ত্রণ রইলো।”

তবে, মজার ব্যাপার হলো সিনেমায় গান দু’টি ব্যাবহৃত হচ্ছে না এই তারকাশিল্পীদের কন্ঠে। সিনেমায় গানগুলো গাইছেন সিনেমার চরিত্ররা। এ দু’টো গানই গাইছেন পটুয়াখালির দুই জেলে। এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, “আমরা আসলে, কীভাবে সিনেমা হিট করবে সেইসব ফর্মুলা মেনে সিনেমটা বানাইনি। সিনেমা একটা আর্টওয়ার্ক। এটা জেলেদের গল্প, গান যেখানে ন্যাচারালি এসেছে, সেখানে জেলেরাই গানটি গেয়েছে।”

সিনেমার আবহ সঙ্গীতেও চমক থাকবে বলে মনে করেন এ নির্মাতা। কেননা, শুটিং লোকেশন এবং অর্ণব, “আমরা যেখানে শুটিং করেছি ওখানে বিদ্যুৎ নেই। তাই পাতার শব্দ, হাওয়া এবং বাঁশির শব্দ, পানির শব্দের মতো খুব সাধারণ কিছু শব্দ নিয়ে কাজ করেছেন অর্ণব ভাই।”

এ প্রসঙ্গে অর্ণবের বক্তব্য এমন, “সিনেমায় মিউজিকের জন্য বেশি জায়গা দেয়া হয়নি। এটি একটি ভালো সিনেমার লক্ষণ। কারণ ফিল্ম মেকিং যদি ভালো হয়, সেক্ষেত্রে মিউজিকের খুব একটা বেশি প্রয়োজন নেই।”


পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক চরে ১৫-২০ ঘর জেলের বসবাস। সেই জেলেপাড়ায় হঠাৎ এক ভাস্করের আগমন এবং তাকে ঘিরে গ্রামবাসীর জল্পনা কল্পনা, ভালো লাগা এবং পরিশেষে সংঘাত - এই নিয়েই 'নোনাজলের কাব্য'র গল্প। বিশ্বের বিভিন্ন নামি দামি উৎসবে প্রশংসিত চলচ্চিত্রটি সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনেও চলচ্চিত্রটি গুরুত্বের সঙ্গে প্রদর্শিত হয়।

নোনা জলের কাব্য’- প্রযোজনা করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও ফরাসি প্রযোজক ঈলান জিরার্দ। জিরার্দ, ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন‘, ‘গুডবাই বাফানা‘, ‘ফাইনাল পোর্ট্রেট‘-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ, তিনি ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড-এর মনোনয়ন পেয়েছিলেন।


এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান অমিতাভ রেজার হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খ। শব্দ ও রঙ সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল প্যারিসের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে। ছবিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া, এবং তাসনোভা তামান্না। আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব।

   

মগবাজার থেকে চলচ্চিত্র পরিচালকের মরদেহ উদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর হাতিরঝিল থানার মগবাজার দিলু রোডের একটি বাসা থেকে চলচ্চিত্র পরিচালক এম এ আউয়ালের (৬০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি সহযোগী পরিচালক হিসেবে ‘সিটি রংবাজ’ ছবিতে কাজ করেন। এরপর পূর্ণ পরিচালক হিসেবে ‘রাজপথের বাদশা’ ও ‘কাছের শত্রু’ ছবি পরিচালনা করেন।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাতিরঝিল থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।

মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. এনামুল হক বলেন, খবর পেয়ে মগবাজার দিলু রোডের ৩৪৮/১ নম্বর বাড়ির পাঁচতলার একটি মেস থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ওই মেসে তিনিসহ কয়েকজন সহকর্মী মিলে ভাড়া থাকতেন। তার রুমেরটারা যে যার মত কাজে চলে যান। রাতে বাসায় ফিরে রুমের দরজা যখন বন্ধ পেয়ে ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে সেখানে গিয়ে দরজা ভেঙে তাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় রুমের মধ্যে বিছানায় শায়িত অবস্থায় ছিলেন তিনি।

এসআই আরও জানান, ওই চলচ্চিত্র পরিচালক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ঘুমের মধ্যেই অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবুও বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

পরিচালক এমএ আউয়ালের রুমমেট দুলাল হোসেন জানান, রুমটিতে চারজন মিলে মেস করে থাকতেন। তাদের একজন রুমমেট বাড়ি গিয়েছেন। দুলালসহ অন্য রুমমেট সকালে যে যার মত কাজে চলে যান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুলাল হোসেন বাসায় ফিরে রুমে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। তখন অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ পান না। এরপর বাড়ির দারোয়ান ও মালিককে খবর দেন। তারাও অনেক ডাকাডাকি করেন। পরে তারা থানায় খবর দেন।

তিনি জানান, আউয়ালের হার্টের সমস্যা ছিল। এছাড়া কিডনি জটিলতা ছিল দীর্ঘদিনের। চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং বাসায় নিয়মিত ঔষধ সেবন করতেন। বিয়েসাদী করেননি আউয়াল। এছাড়া পরিবারের সাথেও তার কোনো যোগাযোগ ছিল না।

;

সিনেমা প্রযোজনায় বাঁধন, নির্মাতা দিতিকন্যা লামিয়া



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
আজমেরী হক বাঁধন / ছবি : ফেসবুক

আজমেরী হক বাঁধন / ছবি : ফেসবুক

  • Font increase
  • Font Decrease

নিঃসন্দেহে এ সময়ে শোবিজ অঙ্গনের অন্যতম আলোচিত তারকা আজমেরী হক বাঁধন। অকারণে নয়, শুধু ভালো কাজ আর ভালো উদ্যোগের জন্য আলোচিত তিনি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নিজের কাজ দিয়ে বাংলাদেশকে করে চলেছেন গর্বিত।

এই তারকা এবার নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চলেছেন। একটু আগেই বার্তা২৪.কমকে জানালেন সে কথা। বাঁধন বলেন, ‘আমি একটি সিনেমার এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হতে চলেছি। গল্প, নির্দেশক সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে। এখন ফাইন্যান্সার খুঁজছি। সবকিছু ঠিক হয়ে গেলে বড়পর্দার জন্যই ছবিটি করব।’

আজমেরী হক বাঁধন / ছবি : ফেসবুক

বাঁধন আরও জানালেন, তার প্রযোজিত প্রথম সিনেমাটির নাম ‘মেয়েদের গল্প’। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এটি একটি নারীকেন্দ্রীক সিনেমা হতে চলেছে। মেয়েদের দৃষ্টিভঙ্গিতে আমাদের সমাজ কেমন সেটি ফুটে উঠবে এই ছবিতে। ছবিটি পরিচালনা করবেন লামিয়া চৌধুরী। নিশ্চয়ই তিনি নিজের মেধার জোরেই শোবিজে একদিন জায়গা করার স্বপ্ন দেখেন। তবে পাঠকের অবগতির জন্য বলা, লামিয়া একজন স্টারকিড। তার মা এ দেশের চলচ্চিত্রঅঙ্গনের অন্যতম তারকা প্রয়াত চিত্রনায়িকা দিতি।

লামিয়া চৌধুরী ও আজমেরী হক বাঁধন

বাঁধনের ভক্তরা হয়ত জেনে থাকবেন, দিতির সঙ্গে তার সম্পর্ক কতোটা গভীর ছিল। দিতির বিভিন্ন কাজ ও গুণাবলীর দ্বারা একসময় প্রভাবিত হয়েছেন বাঁধন। ফলে সেই সম্পর্কের খাতিরেই কি লামিয়ার মতো একজন নতুন পরিচালকের ওপর ভরসা করে কাজ করছেন বাঁধন? তিনি এখন প্রতিটি কাজ যতোটা বিচার বিশ্লেষন করে করছেন, এই কাজটিও কি সেই মান বজায় রাখতে সক্ষম হবে?

সরাসরি এমন প্রশ্নের জবাবে বাঁধন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে চাই কাজটি খুব ভালো হবে। লামিয়া আমার ওপর কিছুই চাপিয়ে দেয়নি। ইনফ্যাক্ট সে একবারও আমাকে কাজটি করার অনুরোধ করেনি। গল্প আমাকে দিয়েছে, আমার পছন্দ হয়েছে বলে নিজেই তার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী হয়েছি। গল্পের কিছু জায়গায় আমার ইনপুটও দিয়েছি। সে সাদরে সেগুলো গ্রহণ করেছে।’

আজমেরী হক বাঁধন / ছবি : ফেসবুক

বাঁধন আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন আমার পথচলা সহজ ছিল না। আমি সমস্ত বাঁধা ঠেলে নিজের মতো করে পথ চলতে চেষ্টা করেছি এবং এতোদূর এসেছি। আমি জানি, প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নেওয়া একটি রিস্কি কাজ। তারওপর আবার পরিচালক ও গল্পকার লামিয়া একেবারেই নতুন। কিন্তু আমি নিজেই চেয়েছি কাজটি করতে। আপনারা একটু খেয়াল করলে দেখবেন, আমি বহুবার বহু জায়গায় বলেছি যে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে নারী লেখক ও নির্দেশক আসা প্রয়োজন। মেয়েদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমাজ কেমন সেটিও আমাদের কাজে ফুটে উঠুক সেটা চাই। আমি অনেক চেষ্টাও করেছি নারী নির্মাতার সঙ্গে কাজ করার। সেই জায়গা থেকে লামিয়ার গল্প যেহেতু আমাকে ভীষণ আলোড়িত করেছে সেহেতু আমি চেয়েছি তার পাশে থাকতে। এজন্যই এখনই প্রযোজকের দায়িত্বটা নিজের কাঁধে নিয়ে নিয়েছি।’

;

রুনা খানের চোখে তার সেরা ৫ চরিত্র



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
লাল জামদানিতে মোহনীয় রুনা খান /  ছবি : নূর এ আলম

লাল জামদানিতে মোহনীয় রুনা খান / ছবি : নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে তারকারা নানা চরিত্র হয়ে হাজির হন পর্দায়। চরিত্রগুলো কখনো দর্শকে হাসায়, কখনো কাঁদায়, কখনো বিষন্ন করে আবার কখনো ভাবনার জগতে নিয়ে যায়। এতো এতো চরিত্রের ভীড়ে তারকার কাছে তার অভিনীত সেরা চরিত্র কোনগুলো, তা নিয়ে জানাবে বার্তা২৪.কমের নতুন বিভাগ ‘তারকার সেরা ৫ চরিত্র’। এ বিভাগের প্রথম তারকা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী রুনা খান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ

ডাস্ট কোট-এর বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের ব্লাউজ নজর কাড়বে সবার /  ছবি : নূর এ আলম

আপনার অভিনীত সেরা ৫টি চরিত্র নিয়ে কথা বলতে চাই...


আইডিয়াটা আমার খুব ভালো লেগেছে। এখন এতো অযথা কথার ভীড়ে আমি আসলে নিজের কাজ নিয়েই কথা বলতে চাই। তবে এটাও ঠিক যে, শিল্পী হয়ে নিজেই নিজের সেরা কাজগুলো নিয়ে বলাটা কঠিন। কারণ সবকটি কাজই তো সর্বোচ্চ অনেস্টি দিয়ে করার চেষ্টা করে থাকি। তারপরও নিজের ভালোলাগা তো বটেই, সেই সঙ্গে দর্শক ও সমালোচকপ্রিয়তার কথা বিবেচনা করে তালিকাটি প্রস্তুত করব। যারা আমাকে চরিত্রগুলো করার সুযোগ দিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

তবে শুরুতেই একটা কথা বলে রাখি, এখনো সেরা চরিত্রগুলো পাইনি। সেই চরিত্রগুলোর অপেক্ষায় আছি। আর যে কাজগুলো করেছি, সেগুলোও যে অনেক অসাধারণ বা আমার খুব মনমতো হয়েছে তা মনে করি না। খুব বলবার মতো কিছু করেছি সেটি আমার মনেই হয় না। শিল্পীর এই ক্ষুধা থাকাটা দোষের কিছু নয়।

জামদানিতে চিরচেনা রুনা, কিন্তু এদিন রূপ যেন তার ঠিকরে পড়ছে /  ছবি : নূর এ আলম

সিসিমপুরের ‘সুমনা’


তালিকাটা আমি ক্যারিয়ারের শুরু থেকে করছি। ২০০৫ সাল থেকে পেশাদার অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করছি। আমি ভাগ্যবান যে, ক্যারিয়ারের শুরুর চরিত্রটিই সেরা চরিত্রের তালিকায় ফেলতে পারছি। সেটি বিটিভির অত্যন্ত জনপ্রিয় শিশুতোষ শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ‘সিসিমপুর’-এর সুমনা চরিত্রটি।

এতো বছর পরও কোথাও গেলে সুমনা চরিত্রের কথা শুনতে পাই। একটা সময় আমাকে সুমনা নামেই সবাই চিনত। কারণ একটা প্রজন্ম বড় হয়েছে সিসিমপুর দেখে। আমি যখন সিসিমপুর-এ অভিনয় করি তখন ইডেন কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। আর আমার দর্শকরা তখন সিক্স থেকে টেনে পড়ে। ওই বয়সে আমরা যা শিখি বা দেখি তাই কিন্তু স্মৃতিতে সবচেয়ে জ¦লজ¦ল করে। এ কারণেই স্কুল শিক্ষিকা সুমনা সবার মনে গেঁধে আছে। এটা অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

কৃষ্ণচূড়ার দোলায় উচ্ছ্বল রুনা খান / ছবি : নূর এ আলম

গ্রামীনফোনের বিজ্ঞাপনের ‘অরপা’


ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের আরেকটি কাজ অমিতাভ রেজা পরিচালিত গ্রামীনফোনের বিজ্ঞাপন। ট্রেন স্টেশনের ওয়েটিং রুমের গল্প নিয়ে সাজানো সেই বিজ্ঞাপনে আমার চরিত্রের নাম ছিল অরপা। এক মিনিটের বিজ্ঞাপনচিত্র ছিল সেটি। তখন আমি মাস্টার্স শেষ করেছি মাত্র। শুটিংয়ের আগে অমিতাভ ভাই আমাকে বলেছিলেন, তোমার এখনকার বয়স যা তা বিজ্ঞাপনটিতে মাত্র ৫ সেকেন্ডের মতো দেখা যাবে। বাকী পুরোটাই দেখা যাবে ৩৫-৪০ বছর বয়সী একজন পরিণত নারী হিসেবে। কিন্তু গল্পটা আমার এতো পছন্দ হয়েছিল যে আমি চ্যালেঞ্জটা নিয়ছিলাম।

রবীন্দ্রনাথের ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতার ছায়া অবলম্বনে স্ক্রিপ্ট করেছিলেন গাউসুল আজম শাওন। এটা আমার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। বিজ্ঞাপনটি সে সময় তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। শুধু তাই নয়, এই কাজের মান এতোটাই উৎকৃষ্ট যে, দেশের বেশকিছু নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম স্ট্যাডিস বিভাগের পাঠ্যসূচীতে জায়গা পেয়েছে বিজ্ঞাপনটি।

লাল শাড়িতে যেন নতুন বউ রুনা /  ছবি : নূর এ আলম

ছিটকিনি’র ‘ময়মুনা’ ও হালদা’র ‘জুঁই’


এবার একসঙ্গে দুটি চরিত্রের কথা বলতে হবে। কারণ, এই দুটি চরিত্র একই দিনে দর্শকের সামনে এসেছিল। একটা সাজিদুল আওয়ালের ‘ছিনকিনি’ চলচ্চিত্রের ময়মুনা, আরেকটি তৌকীর আহমেদের হালদা সিনেমার জুঁই। এই ছবি দুটি দিয়েই আমার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছিল। হালদা ছবির জন্য আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং বাচসাস পুরস্কার পেয়েছিলাম। আর ছিটকিনি ছবির জন্য পেয়েছিলাম সমালোচক বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার।

হালদা’র জুঁই চরিত্রটি ছিল একজন বন্ধা নারীর, যে সতীনের ঘর করতে বাধ্য হয়। সমস্ত গুণ থাকার পরও শুধু সন্তান না হওয়ায় স্বামীর সোহাগ কিংবা বাড়িতে প্রাপ্য সম্মান না পাওয়ার অন্তর্জালা এই চরিত্রটির মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে। আর ছিটকিনির ময়মুনা চরিত্রটি ছিল একজন পাথর শ্রমিকের। তার জীবনের টানাপোড়েনের গল্প নিয়েই মূলত ছিটকিনি ছবিটি। এই দুটি চরিত্র ঢাকা শহরে সচারচর দেখা না গেলেও আমার সৌভাগ্য যে, গ্রামে বেড়ে ওঠার কারণে আমি চরিত্র দুটি দেখেছি নিজ চোখে। তাই কাজ দুটি আমার জন্য সহজ ছিল।

মোহনীয় রুনা খান /  ছবি : নূর এ আলম

ফ্যামিলি ক্রাইসিসের ‘সালমা’


মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ধারাবাহিক নাটক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’-এর সালমা আমার সাম্প্রতিক সময়ের কাজের মধ্যে একটি। দর্শক জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে এটি আমার অন্য সব চরিত্রকে ছাড়িয়েও যেতে পারে। তবে আমার কাছে যে বিশেষ কারণে চরিত্রটি ভালো লাগে সেটি হলো- এটি একেবারেই আমাদের সমাজের চিরচেনা নারী চরিত্র। যেসব নারী হোমমেকার, তারা সারাটা জীবন পরিবারের সমস্ত কিছু দু’হাতে সামলান। স্বামী-সন্তান থেকে শুরু করে শাশুড়ি, দেবর-ননদ সবার সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব তারা খুশিমনে নিজের কাঁধে নিয়ে নেন। কিন্তু তারা কখনোই তার জন্য কোন পারিশ্রমিক বা সম্মানী পান না।

চরিত্রটি আমার প্রাণের আরও কাছে কারণ, আমার নিজের পরিবারটা হুবহু এমন স্ট্রাকচারের ছিল। আর সালমা চরিত্রটি যেন ৯৮ শতাংশ আমার মায়ের প্রতিচ্ছ্ববি। এজন্য চরিত্রটি আমি খুব কনফিডেন্টলি করতে পেরেছি।

সানগ্লাস রুনার সৌন্দর্যে এনে দিয়েছে আভিজাত্য /  ছবি : নূর এ আলম

অসময়ের ‘এমিলি রহমান’


কাজল আরিফিন অমির পরিচালনায় ওয়েব ফিল্ম ‘অসময়’ আমার অতি সম্প্রতি করা একটি কাজ। কিন্তু এই ছবির এমিলি রহমান চরিত্রটি এরইমধ্যে আমাকে অনেক ভালোবাসা এনে দিয়েছে। তারচেয়ে বড় কথা হলো, দুটি কারণে এই চরিত্রটিকে এখন পর্যন্ত করা আমার কাজের মধ্যে সেরার তালিকায় রেখেছি। একটি হলো, অভিনেতা হিসেবে এই চরিত্র আমাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। বাকী যে চরিত্রগুলোর কথা আমি এতোক্ষন বললাম, সেগুলো সমাজের চোখে নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্ত চরিত্র। পুরো ক্যারিয়ারে আমাকে দিয়ে এ ধরনের চরিত্রে বেশি করানোর কারণে আমার এক ধরনের ইমেজ তৈরী হয়েছিল। এমিলি রহমানই সেই ইমেজ ভেঙে বের হয়ে আসা চরিত্র।

মোহনীয় রুনা খান /  ছবি : নূর এ আলম

এমিলি রহমান আমার প্রিয় চরিত্র হওয়ার আরেকটি কারণ হলো, আমি বরাবরই অভিনয়শিল্পী হিসেবে নিজের পরিধি বাড়াতে চেয়েছি। সব শ্রেণি, পেশা, ধর্ম বর্ণের চরিত্রে কাজ করতে চেয়েছি। এতে অভিনয়ের প্যাটার্ণে চাক্ষুষ পরিবর্তন আনা সম্ভব। সেদিক বিবেচনায় এমিলি রহমান হলো দেশের এলিট সমাজের প্রতিনিধি। যিনি একজন নামকরা ব্যারিস্টার। তাই বলে এই নারীর জীবন একেবারে সোনায় মোড়া তা নয়। কারণ সে নারী, আমাদের সমাজে নারী মানেই সংগ্রাম, সবার সংগ্রাম ভিন্ন কিন্তু দিনশেষে সংগ্রামের পীড়া কোথাও গিয়ে এক, অভিন্ন। মজার বিষয় হলো, ব্যক্তিজীবনে আমি নানা জায়গায় বিলং করার কারণে এই উচ্চবিত্ত নারীদের সংগ্রামও নিজ চোখে দেখা। তাই এমিলি রহমানের চরিত্রে যতোটা ভায়োলেন্স আপনারা দেখেছেন, তার চেয়ে বাস্তবে যে আরও অনেকগুণ বেশি সেটিও আমি দৃঢ় চিত্তে বলতে পারছি। আর্টে আসলে আমরা সবটা বাস্তবের মতো দেখাতে পারি না। বাস্তব আরও নিষ্ঠুর, নিকষ আর হৃদয়বিদারক হয়!

;

লাল শাড়িতে আলিয়া ভাট, 'আসল না নকল' তর্কে ভক্তরা



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আগাচ্ছে প্রযুক্তিও। এখন আমরা যে যুগে বাস করছি, সেখান থেকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য খুঁজে বের করা কঠিন হতে শুরু করেছে! ইন্টারনেটে দেখা সবকিছুই বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না আর। কারণ, সাধারণ নারী থেকে সেলিব্রিটিসহ অনেকেই নকল ছবি ও ভিডিওর ভুক্তভোগী হচ্ছেন।

ডিপফেকের ভিডিওর ভুক্তভোগী একগাদা তারকাদের তালিকায় এবার নাম জুড়লো আলিয়া ভাটেরও। লাল শাড়ি, ম্যাচিং ব্লাউজ, বাহারি গহনা পরে মেঝেতে বসে পোজ দিচ্ছেন আলিয়া, এমন একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। আসলে ভিডিওটি আলিয়ার নয়। অন্য এক ভিডিওতে আলিয়ার মুখ বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে নকল ভিডিওটি।

আগে আসলে বা নকল সহজে ধরা যেতো। তবে ইন্টারনেটের কল্যাণে এখন এসবের পার্থক্য কমে আসছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরেই চিত্র একেবারেই বদল গেছে। বিশ্বাসযোগ্য নকল ছবি ও ভিডিওর ছড়াছড়ি অনলাইনে।

আলিয়া ভাটের ফেক ফেস ব্যবহার করায় নেটিজেনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন, ছবি সম্পর্কে, ছবি- সংগৃহীত

এই দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে, 'ডিপফেক' নামের একটা সফটওয়্যার। এর আগেও একাধিকবার তারকাদের নকল ভিডিওর বিষয়ে আলোচনায় আসে ডিপফেক।

এখানে খুব সহজেই একটা ভিডিওতে অন্য একটি মানুষের মুখ বসিয়ে বিশ্বাসযোগ্য ভিডিও তৈরি করা যায়। শুধুমাত্র প্রয়োজন ভুক্তভোগীর ছবি। মুহূর্তেই ভিডিওর চেহারা বদলে বসে যায় ছবির চেহারা। মুখভঙ্গি, নড়াচড়ার সঙ্গে মিলে যায় খাপে খাপ। কিন্তু এর পরিণতি যে কতটা সাংঘাতিক হতে পারে, তার প্রমাণ পেয়েছেন অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দানা ও ক্যাটরিনা কাইফ। হলিউডেও টেইলর সুইফটসহ আরো নামকরা অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।

রশ্মিকা ও ক্যাটরিনার ছবি ডিপফেকে ব্যবহারের পেছনে যে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল তা স্পষ্ট। তবে আলিয়া ভাটের ছবিকে ডিপফেক ব্যবহার করেছেন তার ভক্তরা। প্রথম দেখায় হয়ত ভুল করবেন খোদ আলিয়াও! তবে একটু ভালো করে দেখলে বোঝা যায়, আলিয়ার অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে এ আলিয়ার মিল নেই৷

ক্যাপশনে লেখা হয়েছিল,‘পর্দার বাইরে আলিয়া ভাট’। সেখানে যে আসল আলিয়া বসে নেই, তা বুঝতে পারেন নেটিজেনরা। সে কারণে তারা কমেন্ট করে ব্যাপারটা উল্লেখও করেন। আসলে বলিউডের আরেক অভিনেত্রী ওয়ামিকা গাব্বিবের ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে ডিপফেক ভিডিওতে। তবে এই নিয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি আলিয়ার তরফ থেকে।

 

;